somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অফিস কামাই না দিয়েই ১ দিনের মধ্যেই ঘুরে আসুন সিলেটের অপূর্ব সৌন্দর্য মণ্ডিত স্থান রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্ট এবং জাফলং থেকে।(৩য় পর্ব-শেষ পর্ব)

১০ ই এপ্রিল, ২০১৪ বিকাল ৪:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

২য় পর্বের পরঃ
আপনাদের আগেই বলেছি আমরা ঐ দিনই জাফলং যাবো। আমাদের প্লান ছিল রাতারগুল থেকে ইঞ্জিন চালিত নৌকায় করে গোউয়াইন নদী ধরে জাফলং যাবো। সেই অনুযায়ী নৌকার মাঝিকে বললাম আপনাদের কি কোন ইঞ্জিন চালিত নৌকা আছে কি না। সে বলল আছে তবে আমাদের বাড়িতে , এই তো পাশেই আমাদের বাড়ি, চলেন ঐখান থেকে যাওয়া যাবে। তারপর আমরা এই খাল ধরে গোউয়াইন নদীতে এসে পড়লাম, নদী পার হলেই মাঝির বাড়ি। মাঝির বাড়ির ঘাটে একটা ইঞ্জিন চালিত নৌকা বাধা দেখলাম। কিন্তু নৌকার তো ছই নাই। ঐখান থেকে নদী পথে জাফলং যেতে কমপক্ষে ৩-৪ ঘণ্টা সময় লাগবে। তখনও বৃষ্টি হচ্ছে গুরি গুরি। এমনিতেই সেই ভোর ৪টা থেকে বৃষ্টিতে ভিজতেছি তার উপর আরও ৩-৪ ঘণ্টা ভিজলে নির্ঘাত অসুস্থ হয়ে পরব। আমরা আসলে ছই তোলা নৌকাতে করে যেতে চেয়েছিলাম সেই অনুযায়ী তাসও কিনে নিয়ে গিয়েছিলাম যে তাস খেলতে খেলতে জাফলং যাবো। এতে করে আমাদের জার্নিতে নৌকা ভ্রমণেরও একটা স্বাদ পাওয়া যাবে। মনটা ৪র্থ বারের মত খারাপ হয়ে গেল। তবে আপনারা অবশ্যই রাতারগুল থেকে নদী পথে নৌকায় জাফলং যাবেন অনেক মজা হবে। যাইহোক পরবর্তীতে প্লান পরিবর্তন করে সড়ক পথে জাফলং যাওয়ার চিন্তা করলাম। সেই অনুযায়ী মাঝিকে বলালাম আমাদের আবার মোটর ঘাটে নিয়ে যান। মাঝি যথারীতি রাতারগুলের মধ্য দিয়ে মোটর ঘাটে নিয়ে আসলো। যেহেতু আগে ভাড়া মিটিয়ে আসিনি তাই পরে ভাড়া দেয়ার সময় একটু ঝামেলা হয়েছিল। আপনাদের বলি অবশ্যই নৌকার ভাড়া আগে মিটিয়ে তারপর নৌকায় উঠবেন। আমরা ভাড়া দিয়েছিলাম ৫০০ টাকা তবে স্বাভাবিক ভাড়া ৩০০-৩৫০ টাকা। যেহেতু সড়ক পথে জাফলং যাবো তাই যে রাস্তা দিয়ে আসছিলাম সেই রাস্তা দিয়ে যেতে হবে। তাই ঐ সিএনজি ড্রাইভারকে ফোন দিলাম আমাদেকে সিলেট শহরে নিয়ে যেতে। উনি দূরে ছিল তাই উনার পরিচিত অন্য এক ড্রাইভার আমাদের কাছাকাছি ছিল তাই উনি তাকে ফোন করে দিল যাতে আমাদের সিলেট শহরে পৌঁছে দেয়। আমরা সময় নষ্ট না করে কাচা রাস্তা দিয়ে হাটতে লাগলাম। কিছুক্ষন পর সিএনজি আসলো আর আমরা ঐটাতে করে সিলেট শহরে পৌছালাম ১১ টার দিকে। তখন ভাড়া লেগেছিল ৩০০ টাকা। কারন তখন বৃষ্টি ছিল না এবং ঐ ড্রাইভার আমাদের কাছেই ছিল। যাইহোক আমরা সিলেট শহরে পৌঁছে আমাদের এক কলিগের বন্ধুর বাসায় গেলাম ফ্রেশ হতে কারন ইতিমধ্যে সবাই পুরোপুরি ভিজে গেছি তাই ভেজা কাপড় গুলো শরীর থেকে খোলা দরকার। ভেজা কাপড় গুলো খুলে শুকনা কাপড় পড়ে বাসা থেকে বের হয়ে একটা রেস্টুরেন্টে গেলাম কিছু খেতে। সিঙ্গারা খেয়ে আমরা রেস্টুরেন্টের সামনে থেকেই জাফলং গামী বাসে উঠলাম ১২ টার দিকে। জাফলং এ পৌছাইতে প্রায় ২টা বেজে গিয়েছিল। ভাড়া মনে হয় ৭০-৮০ হবে। জাফলং সম্পর্কে অনেকই জানি তাই বেশি কথা না বলে কিছু ছবি দেয়া যেতে পারে।
জাফলং এর ঘাটে নৌকা গুলো এভাবেই বাধা ছিলঃ



ভারতের দুটি পাহাড়ের মধ্যকার ঝুলন্ত ব্রিজঃ



পাহাড়ের গায়ে মেঘঃ


আরও ছবিঃ



ভ্রমন শেষ করলাম নাম না জানা ফুলের ছবি দিয়েঃ



জাফলং এ ঘণ্টা খানেক ঘুরে ৩.৩০ এর দিক ঐখানে একটা রেস্টুরেন্টে দুপুরের খাবার খেলাম। রেস্টুরেন্ট গুলো উন্নতমানের তাই খাবারের দামও একটু বেশি মনে হল। বিকাল ৪ টার দিক আমরা জাফলং থেকে সিলেটের উদ্দেশে বাসে উঠলাম এবং সন্ধ্যা ৬.৩০ এর দিক সিলেট শহরে পৌঁছাইলাম। আমাদের উদ্দেশ্য ছিল রাতের ট্রেনে ঢাকায় আসব কিন্তু আগে থেকে টিকিট কাটা না থাকায় এবং ট্রেনে প্রচণ্ড ভীরের কারনে ট্রেনের টিকিট পেলাম না। যদিও ঘুষের মাধ্যমে টিকিটের একটা বন্দোবস্ত প্রায় হয়ে গিয়েছিল কিন্তু পরে কোন কারনে পাই নাই। এরপরে সিদ্ধান্ত নিলাম বাসেই ঢাকা যাবো। সেই অনুযায়ী বাস টার্মিনালে গিয়ে সোহাগের স্ক্যানিয়াতে টিকিট কাটলাম। রাতের খাবার খাবার পাশেরই একটা রেস্টুরেন্টে খেয়ে রাত ১১ টার গাড়িতে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করলাম। শনিবার ভোর ৫ টার দিকে ঢাকায় পৌঁছে যাই। ঐখান থেকে সরাসরি অফিসে গেছি। যেহেতু ২ টা রাত ঘুমাতে পারিনি তাই একটু খারাপ লাগতেছিল। তাই অফিস থেকে ছুটির আগেই বের হয়ে যাই। তবে আর যাইহোক জার্নিটা আমাদের অনেক মজার হয়েছিল।
আমাদের ভ্রমনের সামারিঃ
বৃহস্পতিবার রাত ১০ টার গাড়িতে ঢাকা থেকে সিলেটের উদ্দেশে যাত্রা শুরু - শুক্রবার ভোর ৪ টায় সিলেট পৌছাই - সিলেট থেকে সিএনজি করে মোটর ঘাট পৌছাই সকাল ৭ টার দিক - মোটর ঘাট থেকে নৌকায় যাই রাতারগুল - রাতারগুল এ ঘুরে রাতারগুল থেকে সিলেটে আসি সকাল ১১ টার দিক - সিলেট থেকে জাফলং এর উদ্দেশে যাত্রা শুরু করি ১২ টার দিক - জাফলং এ ঘুরে জাফলং থেকে সিলেটের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করি ৪ টার দিক - সিলেটে পৌছাই ৬.৩০ এর দিকে - সিলেট থেকে বাসে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করি শুক্রবার রাত ১১ টায় এবং ঢাকাই পৌছাই শনিবার ভোর ৫ টায়।
গত পর্ব গুলোঃ
পর্ব ০১
পর্ব ০২
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই এপ্রিল, ২০১৪ বিকাল ৪:৩৫
১১টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শ্রমিক সংঘ অটুট থাকুক

লিখেছেন হীসান হক, ০১ লা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৮

আপনারা যখন কাব্য চর্চায় ব্যস্ত
অধিক নিরস একটি বিষয় শান্তি ও যুদ্ধ নিয়ে
আমি তখন নিরেট অলস ব্যক্তি মেধাহীনতা নিয়ে
মে দিবসের কবিতা লিখি।

“শ্রমিকের জয় হোক, শ্রমিক ঐক্য অটুট থাকুক
দুনিয়ার মজদুর, এক হও,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কিভাবে বুঝবেন ভুল নারীর পিছনে জীবন নষ্ট করছেন? - ফ্রি এটেনশন ও বেটা অরবিটাল এর আসল রহস্য

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪

ফ্রি এটেনশন না দেয়া এবং বেটা অরবিটার


(ভার্সিটির দ্বিতীয়-চতুর্থ বর্ষের ছেলেরা যেসব প্রবলেম নিয়ে টেক্সট দেয়, তার মধ্যে এই সমস্যা খুব বেশী থাকে। গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত কমসে কম... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫১




ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।


এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×