somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শাবিপ্রবি শিবিরের সামনে মহাসুযোগ...

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৫:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১০% বা ২০% শিবির কর্মীর জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী এলাকার ৮০% বা ৯০% সাধারণ শিক্ষার্থীকে চরমভাবে হেস্তনা করছে ভার্সিটি প্রশাসন। তাদের নির্দেশেই পুলিশ নোটিশ জারি করেছে এক সপ্তাহের মাঝে শাবির আশেপাশের সকল মেস খালি করে দিতে হবে। (প্রায় শ’খানেক মেস, হাজার খানেক শিক্ষার্থী!!!)

পুলিশের মাধ্যমে এ নির্দেশ জারি করে ভার্সিটি প্রশাসন আসলে নিজের পায়ে নিজে কুড়াল মারলো। গত দেড় বছর যাবত শিবির হলে উঠতে পারছে না। এজন্য তারা ভার্সিটি এবং হলের আশেপাশের এলাকার বিভিন্ন মেসে তাদের অবস্থান শক্ত করতে চাচ্ছে। কিন্তু চাইলেই তো আর সেটা পারা যায় না। কোন মেসে উঠতে হলে তো আগে মেসে সিট খালি থাকা লাগবে। আর সিট খালি হলেই বা কি? ভার্সিটির আশেপাশের কিছু চিহ্নিত মেস বাদে বাকি মেসগুলোতে নতুন কোন ছাত্র উঠানোর সময় অনেক যাছাই-বাছাই করে উঠানো হয় যাতে সে শিবির কর্মী না হয়। এই যাছাই-বাছাইতেও যদি কাজ না হয় এজন্য শর্ত দিয়ে দেয়া হয়, মেসে ওঠার পরও যদি কোন দিন প্রমাণিত হয় তার সাথে শিবিরের কোন সম্পর্ক আছে তাহলে তাকে মেস থেকে নামিয়ে দেয়া হবে।

(মাস দুয়েক আগে নয়াবাজারের একটা মেস থেকে এক শিবির কর্মীকে এ কারণে নামিয়ে দেয়া হয়েছে, এবং নামিয়ে দেয়ার আগে তথ্য গোপন করে মেসে ওঠার অভিযোগে তাকে মেসের সবাই মিলে মিটিং ডেকে নিদারুণভাবে অপমান করেছে)

মেসগুলোর এই শিবির বিরোধী অবস্থান যে সব সময় আদর্শিক কারণে হয় ব্যাপারটা সমসময় এমন নয়। আদর্শিক কারণের সাথে সাথে এই শিবির বিরোধী অবস্থান নেয়া হয় বেশীরভাগ ক্ষেত্রে ব্যক্তিস্বার্থ চিন্তা করে। মেসে যারা থাকে তারা আসলে একটা নির্ঝঞ্জাট জীবন পছন্দ করে। (নয় তো তারা প্রায় বিনা খরচে হলেই থাকতে পারত।) মেসে শিবির থাকা মানেই মেসে ছাত্রলীগ বা পুলিশের হামলার আশংকা থাকা। পুলিশের দ্বারা মেস তল্লাশি মানেই বিরাট ঝক্কি-ঝামেলা! তাই কেউ চায় না মেসে কোন শিবির কর্মী থাকুক। (আর, শিবিরদের জন্য তো তাদের নিজেদের মেস আছেই।)

ভার্সিটির আশেপাশে নিজেদের অবস্থান পোক্ত করার জন্য পুলিশের নির্দেশ শিবির কর্মীদের দারুণ সুযোগ করে দিয়েছে। সাধারণ ছাত্ররা মেস ছাড়তে শুরু করেছে। কিন্তু, মেসগুলো এভাবে কতদিন খালি থাকবে? স্থানীয় সব মেস মালিকরা একজোট হয়ে একটা হুংকার দিলে প্রশাসনের প্যান্ট খারাপ হয়ে যাবে না? (সচেতন সিলেটবাসী নাম দিয়ে জনা বিশেক লোক একত্র হয়ে ভর্তি পরীক্ষার বিরুদ্ধে হুংকার দিয়েছিল; আর তাতেই ভার্সিটি প্রশাসনের প্যান্ট খারাপ অবস্থা এখনও যায় নি!) মেস মালিকদের হাজার হাজার টাকার ব্যবসা নষ্ট করে দিবেন, আর তারা বসে বসে ইয়ের চুল ছিঁড়বে?

সামনের দিনগুলো আমরা স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি...
মেস মালিকদের সাথে ভার্সিটি কর্তৃপক্ষের আপোষ হবে- কোন শিবির কর্মীকে মেস মালিকরা মেসে উঠাবেন না এই শর্তে। মেস চালু হলেও তখন খুব বেশী সাধারণ ছাত্র আর ভার্সিটির আশেপাশের মেসে উঠবে না। কারণ, ইতিমধ্যে তারা যথেষ্ট হেস্তনা হয়েছে, এবং তারা বুঝতে পারবে এই এলাকার মেসে থাকলে সামনের দিনগুলোতে তাদের আরও হেস্তনা হতে হবে।

(শিবির ভার্সিটিতে ভাঙচুর চালাবে আর পুলিশ রাতের আঁধারে চিরুনী অভিযান চালিয়ে ধরে নিয়ে যাবে সাধারণ ছাত্রদের। শিবির তারা ধরতে পারবে না। শিবিররা কিভাবে কিভাবে খোঁজ পেয়ে আগেই সরে পরে। শুরু সাধারণ ছাত্ররা কোন খবর পায় না। তারা নাক ডেকে ঘুমাতে থাকে। ঘুম থেকে ডেকে তুলে তাদের ধরে নিয়ে যায় পুলিশ। আর যে শিবিরগুলো ধরা পরে সেগুলোও সাধারণ ছাত্রদের সাথে ছাড়া পেয়ে যায়। কারণ, পুলিশ সাহেবরা বুঝতে পারেন না- কে শিবির আর কে সাধারণ। বুঝবে কি ভাবে? বুঝার জন্য তো চেষ্টা করা লাগে, ফিল্ড ওয়ার্ক করা লাগে, হোম ওয়ার্ক করা লাগে। শুধু উপরের কর্মকর্তাদের দেখাতে “আসলাম, দেখলাম, জয় করলাম” করলে তো হবে না।)

ফলে, ভার্সিটির আশেপাশের যে মেসগুলো আগে সাধারণ বা প্রগতিশীল মানুষিকতার ছাত্র আর সাংস্কৃতিক কর্মী দ্বারা ভরপুর থাকত, সে মেসগুলোই একসময় শিবির তার অসাধারণ গোছানো সাংগঠনিক দক্ষতা দিয়ে দখলে নিয়ে নিবে। আর, সেখান থেকে আরও বিপুল উদ্যোমে ভার্সিটি প্রশাসন ও ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে তাদের কারিশমা দেখাতে থাকবে। আর...

শিবিরকে কিছুতেই দমানো যাচ্ছে না। কিভাবে কি করলে তাদের দমানো যাবে- এই ভেবে ভার্সিটি প্রসাশনের অতি মেধামীরা তখন মাথার চুল ছিঁড়তে থাকবে।

তোমরা যারা শিবির করো, তারা একটা কাজ করতে পারো, তোমাদেরকে এভাবে চমৎকারভাবে সহযোগিতা করার জন্য ভার্সিটি প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানিয়ে চমৎকার একটা চিঠি দিতে পার।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৫:২১
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিপ্লবের নিঃশব্দ মূল্য: অর্থনৈতিক বৈষম্য ও বাংলাদেশি ছাত্র আন্দোলন

লিখেছেন মুনতাসির, ১২ ই অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ৯:২৫

এ লেখাটি বেশ বড়ো। এখানে ছোট করে দেয়া হল। পুরো লেখাটি যদি কেও পড়তে চান, তবে নীচের লিঙ্ক থেকে পড়তে পারবেন।


সাম্প্রতিক ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনে হতাহতের সংখ্যা নিয়ে বিভিন্ন পর্যালোচনা চলছে। জাতিসংঘের... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিরহ

লিখেছেন গোধুলী বেলা, ১২ ই অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ৯:৪৪

একটি কবিতা লিখা হবে বাদে কিছুক্ষণ
মেঘমালারা বারি পাত করিছে ক্ষণে ক্ষণ।
গগনভেদি কামান গোলা পরিছে মুহুর্মুহু
দুরুদুরু ভয়েতে কাপিছে বুক বাদ যায়নি কেহ।

জানালার পাশে  প্রেমিকার ছলছল চোখ
বৃষ্টিরো সাথে সে কেঁদে  ভাসাইছে বুক।
হাজারো... ...বাকিটুকু পড়ুন

কিছু কিছু মানুষ বলার শুরু করেছে, "আমরা আগেই ভালো ছিলাম"।

লিখেছেন সোনাগাজী, ১২ ই অক্টোবর, ২০২৪ দুপুর ২:০২



একাধিক কারণে মানুষ ইহা বলার শুরু করেছেন: (১) সাধারণ মানুষ কোমলমতিদের ক্রমেই চিনতে পারছেন, ইহা ভীতি ও অনিশ্চয়তার সৃষ্টি করছে; কোমলমতিরা সরকারের গুরুত্বপুর্ণ অনেক পদে আছে ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি - একাল সেকাল

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ১২ ই অক্টোবর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮



টানা বৃষ্টির মধ্যে মরিচের দাম বেড়ে হয়েছে ৪০০ টাকা কেজি । অন্যদিকে ফার্মের মুরগির এক পিছ ডিমের দাম বেড়ে হয়েছে ১৫ টাকা।শুধু মরিচ নয়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কমলা যদি পরাজিত হয়, "দ্রব্যমুল্য"ই হবে ১ নম্বর কারণ

লিখেছেন সোনাগাজী, ১২ ই অক্টোবর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৩৭



দ্রব্যমুল্য হচ্ছে অর্থনৈতিক সুচকগুলোর ১ টি বড় প্যারামিটার; ইহা দেশের অর্থনীতি ও চলমান ফাইন্যান্সের সাথে সামন্জস্য রেখে চলে; টাস্কফোর্স, মাস্কফোর্স ইহার মুল সমাধান নয়; ইহার মুল সমাধন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×