তাড়াহুড়া করে হলে ঢুকছি, হল ক্যান্টিনে খেয়ে আবার ছুটতে হবে অফিসে । একটা খন্ডকালীন চাকরী পেয়েছি অবশেষে । ক্লাশ শেষেই তাই দৌড় । ওমা, হলের লবিতে একটা কি সুন্দর পিচ্চি ! তাড়া ভুলে কাছে চলে গেলাম । কি যেন একটা অসংগতি ওর চেহারায়, বয়সের তুলনায় একটু বেশি পাকা চেহারা । পাত্তা দিলাম না । সে ও আমার কাছে এসে একটা হাত ধরল----------এই প্রথম একটা পিচ্চি নিজ থেকে আমার কাছে এল, হাত ধরল, কি যে ভাল লাগল ! কিন্তু একি!!!!!!!! সে আমার হাতে কামড় বসিয়ে দিয়েছে, কিন্তু ব্যথায় কঁকিয়ে উঠার অবস্থা নাই । সামনে তার মা, ভদ্রমহিলা রীতিমত অপ্রস্তুত । এর মাঝেই সে শুরু করেছে "কুত্তার বাচ্চা" জাতীয় গালিগালাজ । "না, না, ও তো বাচ্চা মানুষ" ----------- আমি ওর মাকে স্বান্ত্বনা দিলাম । সত্যি বলছি আমার এতটুকু খারাপ লাগেনি ।
কিছুদিন পরে আমার কাছে খবর এল "বি পজেটিভ রক্ত প্রয়োজন, আপু, তারিফের ব্লাড ক্যান্সার, অনেক রক্ত দরকার " । তারিফ, সেই পিচ্চিটা, আমি নিয়মিত খবর রাখতাম । ওর ব্লাড ক্যান্সার ???????!!!!!!!!
এরপর তারিফের ভারত আর বাংলাদেশ যাওয়া আসা, তারিফের এই উন্নতি, এই অবনতি । তারপর অনেকদিন খোঁজ নেওয়া হয়নি । তারপর আবার জানতে গেলাম ওর খবর । "আপু জানেন না?!!! তারিফ মারা গিয়েছে" । একফোঁটা চোখের পানি সামলে নিলাম অনেক কষ্টে । তখন কি আর জানতাম এই একফোঁটা পানি আমার চোখে দিনে দিনে সমুদ্র হয়ে যাবে?
তারিফ, তুমি জানোনা কতটা ছুঁয়ে যাওয়া যায় মানুষকে--------অপরিচিত কাউকে-------৪ বছরের এক জীবনে । ভাইয়াটা, তুমি অনেক অনেক ভাল থেকো ।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



