somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঢাকায় আসার বছর পার

১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ১১:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


করোনার সময়টায় এলাকায় ছিলাম। সেখানে ব্যবসা শুরু করে ক্ষতিগ্রস্ত। টিউশনিতেও টাকা নেই। একসময় মনে হলো ঢাকায় গিয়ে কিছু করা দরকার। চলে এলাম। এবং স্কুল ও হাউজ প্রোপারটিজের অ্যাকাউন্টটেন্ট হিসেবে কাজ শুরু করলাম। মালিকের অবর্তমানে তার ছেলের অধীনে কাজ করি। ডিউটি ১০-৫। কিন্তু দেখা গেল আমাকে সকাল ৯ টা থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত থাকতে হয়। বেতন মাত্র ১৫ হাজার।

বিল তৈরি করি। টাকা নিতে হয়, চেক নিতে হয়, ব্যাংকে দৌড়াদৌড়ি করতে হয়। আলাদা খরচ পাই না। তাই টাকা বাঁচাতে হেঁটে এখানে সেখানে যাই।

চাকরিটা দরকার ছিল। কিছু চিনি না, জানি না। যাব কই? তাই ধৈর্য ধরে রইলাম। ভাবলাম ঠিকমত কাজ করলে ভালো করতে পারব।
অফিসের কাজ তো বটেই। মালিকের বাসায়ও কাজ করতে হয়। ছাদ পরিস্কার। কেয়ারটেকার বাথরুম পরিস্কার করে আর আমাকে তার দেখাশোনা করতে হয়। অতিরিক্ত কোন পারিশ্রমিক নেই।

বিশেষ দিবসেও কোন ছুটি নেই। অফিসের কাজ না থাকলে নিচে এসে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। দাড়োয়ানকে সাহায্য করতে হয়।

মালিকের ব্যবহার জঘন্য। সবার সাথে দুর্ব্যবহার করে। নিজের মায়ের সাথেও সম্পর্ক ভালো না। বনানীতে ওনাদের বাসায় গেলে মহিলা একবার নাস্তা দিয়েছিলেন। ওনার ছেলে এটা পছন্দ করেনি। এরপর নাস্তা তো দূরে থাক বসতেও বলেনি। একবার অবশ্য বলেছিল। সদর দরজার কাছে একটা টুলে। মনে হয় ফকিরকেও কেউ এখানে বসতে দেয় না।

লেবাসে ধার্মিক মনে হয়। প্রথমদিন সালাম দিতে ভুলে গিয়েছিলাম। এটা নিয়ে অনেক কথা। দেয়ালে দেয়ালে দোয়া টাঙানো। যে কেউই বলবে এরা চ্যালচ্যালাইয়া বেহেশতে যাবে।

একবার ওনার রুমে গেলাম। বসতে বললেন। কাজের মহিলা চা দিল আমাকে। কয়েক চুমুক দেওয়ার পর ওনার কাছে মনে হলো চা খেয়ে বেয়াদবি করছি। কাজের মহিলাকে ডেকে চা নিয়ে যেতে বললেন। পাশের রুমে অন্যরা সব শুনছে। বেশিরভাগই আমার জুনিয়র। এমন লজ্জায় খুব কমই পড়েছি। শুনেছি খাওয়ার সময় আজরাইলও জান কবচ করে না অথচ...

খাওয়ার বিষয় বাদ। কত রাত না খেয়ে ছিলাম! কিন্তু লাঞ্ছনার বিষয় বাদ দেই কেমনে। একসময় অসুস্থ হয়ে পড়লাম। কিন্তু বিরাম নেই। মালিককে বললাম অফিসের একটা রুম মাঝেমাঝে ব্যবহার করতে চাই। এত লম্বা সময় বিশ্রাম ছাড়া থাকা যায় না। রাজি হলেন না। আমাকে অন্য চাকরি দেখতে বললেন।

আমার বদলি হিসেবে একজন এল। তাকে কাজ বুঝিয়ে দিলাম। কিন্তু সে করবে না। মালিক হয়ত ভেবেছিল আমি হয়ত তাকে না করেছি। যখন জানল এ নিয়ে কিছুই বলিনি, তখন আমাকে বলল চাইলে থাকতে পারি।

স্কুলের একটা তলা ভাড়া দেবে। আমি যেন আমার নাম্বারটা টু লেটে দেই। আমি না করলাম। আজাইরা প্যারা নেওয়ার মুড নেই। মালিক বলল, তোমাকে কেন রাখব তাহলে?
”আমি থাকতেও চাই না।” মুখের ওপর বলে দিলাম। আমার এমন জবাব শোনার জন্য হয়ত প্রস্তুত ছিল না।

এরপর আর ওই চাকরিতে যাইনি। কিছুদিন পর ২ হাজার টাকা কেটে রেখে ১৩ হাজার টাকা বিকাশে পাঠিয়ে দেয়। ২ হাজার কম দেওয়ার কারণ।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ১১:৪১
১০টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।

লিখেছেন সাইয়িদ রফিকুল হক, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:১৫



ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।
সাইয়িদ রফিকুল হক

বিএনপি ২০২৪ খ্রিস্টাব্দে দেশে অনুষ্ঠিত “দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে”-এ অংশগ্রহণ করেনি। তারা এই নির্বাচনের বহু আগে থেকেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×