somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার আমি হবে ?

১৭ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ২:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রথম পর্ব

দ্বিতীয় পর্ব

হৃদিতার হাত ধরার পর বেশ ভালো ই চলছিল আমাদের। প্রতি সেমিস্টার এ একসাথে কোর্স নিতাম ক্লাসের ব্রেকে পুরা শহরটা চষে বেড়াতাম দুজনায় । পড়াশুনার প্রতি আমার আজীবন অনীহা . পাগলীটা তারপরও পরীক্ষার আগে আমাকে জোর করে পড়াত । শেষ পর্যন্ত দেখা যেত ওটুকু পড়েই বেশ ভাল রেজাল্ট চলে আসতো ।

পাগলী আর আমি দুইজন ই দুজনকে ভালবাসি এটা আমরা দুজন ই জানি কিন্তু কখন হৃদিতা কে প্রপোজ করা হয় নি! হঠাৎ একদিন পাগলীর কি এক ভূত চাপল , অগ্নিমূর্তি নিয়ে আমার সামনে আসলো !

- ঐ তুমি আমাকে প্রপোজ করবা কবে ?
- প্রপোজ ? প্রপোজ করার কি আছে ?
তুমি তো জানো যে আমি তোমাকে ভালবাসি , জানো না ?
- এসব বললে হবে না, তোমাকে আমি এক সপ্তাহ টাইম দিলাম . এই এক সপ্তাহের মধ্যে তোমাকে প্রোপোজ করতে হবে। আমি কিছু শুনতে চাই না।
- আরে বললেই হলো নাকি ? নেক্সট উইক থেকে সেমিস্টার ফাইনাল , এর মধ্যে এতো কিছু কিভাবে করবো ?
- আমি কিছু শুনতে চাই না ! আমি যা বলসি তাই করতে হবে ।
- কালকে রাতে কোন মুভি দেখসো বলো তো !
- " The Vow " , কত জোশ মুভিটা ! কত ভালবাসে ছেলেটা মেয়েটাকে !
- কেন কি করসে ? মাইয়াটার জন্য সুইসাইড খাইছে ?
- না , মেয়েটার মেমরি চলে গিয়েছিল ! তাও হাল ছাড়ে নি ছেলেটা । কত্ত ভালবাসে আর তুমি !! তুমি আমাকে মোটেও ভালবাসো না !
- আরে আজব! কি পাগলামী শুরু করছো ! মুভিতে যা যা করে তাই করা লাগবে নাকি আমার এখন ?
- নাহ! খালি প্রপোজ করতে হবে নাহলে ব্রেকআপ !
- এই সামান্য বিষয় নিয়ে তুমি আমার সাথে ব্রেকআপ করবা !
-আমি কিছু শুনতে চাই না ! প্রপোজ করতে বলসি করবা , নাহলে আমি তোমার কেউ না !
- আচ্ছা মা ! করবো প্রপোজ তোকে ! এখন ক্লাসে চল !

ওকে তো বললাম প্রপোজ করবো কিন্তু এরপর কয়েকদিন প্রপোজ কিভাবে করবো সে চিন্তায় আমার রাতের ঘুম হারাম হলো । কি থেকে কি করবো কিছু বুঝতে পারলাম না । এক এক ফ্রেন্ড এক এক রকম আইডিয়া দিল । অনলাইনে আবার হাজার রকম আইডিয়া ! এতো আইডিয়া পেয়ে বুঝতে পারলাম না কোনটা রেখে কোনটা করবো ।

শেষ পর্যন্ত ভাবলাম সাধারণ কিছু করা ই ভাল হবে!এজন্য নূপুর কিনলাম সুন্দর দেখে , এর সাথে হৃদিতার পছন্দের চকোলেট আর ১ টা লাল গোলাপ ! তারপর একটা বক্স এ সবকিছু রেখে বক্সটা ব্যাগে রাখলাম ।

সেদিন ক্লাস ছিলো না আমাদের । হৃদিতাকে ফোন দিলাম ,

-বনানী আসো তো !
-কেন ?
- আসতে বলছি তাই আসবা !
- আজকে তো ক্লাস নাই আমাদের !
- সেটা মনে হয় আমি জানি ।
- তো ?
- এমনি ভালো লাগতেছে না , তোমাকে দেখতে ইচ্ছা করতেছে !
- আচ্ছা ! আসতেছি স্যার

হৃদিতা আধা ঘন্টার মধ্যে চলে আসলো । এসেই শুরু করলো

- তোমাকে না বলসি এই সপ্তাহের মধ্যে প্রপোজ করতে ! সপ্তাহ তো শেষ !
- কিসের প্রপোজ ? আমার দ্বারা এগুলা হবে না !
- না হতেই হবে !
- না আমার দ্বারা এসব ন্যাকামি হবে না ! মাফও চাই , দুয়াও চাই!
- আচ্ছা !

বুঝতে পারলাম ম্যাডাম রাগ করেছে ! রাগে গজগজ করতে করতে আগে আগে হাঁটতে লাগলো ! একটা রেস্টুরেন্ট এ ঢুকলাম দুপুরের খাবার খেতে , এরপর গেলাম একটা পার্ক এ । পুরো রাস্তায় মেয়েটা আমার সাথে একটা কথা ও বলে নি ! রাগলে আমার পাগলীটাকে যা লাগে না!!! সব কিছু আমার ব্যাগের বক্সটাতে ছিল , হৃদিতাকে নিয়ে পার্কের একটা বেঞ্চে বসলাম , চুপিসারে বের করে নিলাম গোলাপটা , আর নূপুর জোড়া পকেটে ঢুকিয়ে রাখলাম । এরপর হৃদিতা যখন রাগে অন্য দিকে তাকিয়ে ছিল , তখন আস্তে করে ওর সামনে হাঁটু গেড়ে বসলাম

- হৃদিতা !!
- কি? তুমি এভাবে বসছো কেন ?
- ( পিছন থেকে গোলাপ টা নিয়ে )
আমার আমি হবে ?
আমার সত্ত্বা হবে ?
দিন শুরু করে দিন শেষে ?
সবটা জুড়ে ?
(এরপর পকেট থেকে বের করে নূপুর পরিয়ে দিলাম পায়ে )

দেখি পাগলীটার চোখে পানি ! হঠাৎ করে কান্নার আওয়াজ শুরু হল ! তারপর উঠে আমাকে জড়িয়ে ধরলো !

- না হবো না কিছু! তোমার জীবন তছনছ করো দিব একদম !
- কি?
- আজ থেকে যদি কোন মেয়ের দিকে তাকাইছো তাহলে তোমার চোখ খুলে আমি বাস্কেটবল খেলবো!
- কি পাপ করলাম আমি প্রোপজ করে?
- চুপ থাক! নড়বে না !

তারপর এরকম কতক্ষণ কেটে গেল আমি আর হৃদিতা টের পাই নি , আস্তে আস্তে যখন দিনের অ্যালো কমতে থাকল তখন হুঁশ ফিরলো ! তাঁরপর হৃদিতা কে বাসায় দিয়ে এসে আমিও বাসায় ফিরলাম ! শেষ হল জীবন এর এক অন্যতম স্মৃতিমুখর দিন ! এখন যখন দিনটা নিয়ে ভাবি , হাসি চলে আসে মুখে , অফিস এ বসে সেদিনের কথা ভাবছিলাম আর হৃদিতার ফোন আসলো

- আসার সময় এক কেজি আলু আর এক কেজি লবণ নিয়ে আইসো তো!
- আর কিছু?
- সাথে নিজেকেও একটু নিয়ে আইসো তাড়াতাড়ি!
- কেন ? আমি তো এমনিতেই ফ্রি আসি !
- আজ কতো তারিখ মনে আছে?
- ও তাই তো আজকে তো ১৪ মে, এই দিনেই তো আমি তোমাকে প্রপোজ করেছিলাম!আমি এক্ষুনি আসতেছি !
- জ্বি জনাব, আপনার বৌ আপনার ওয়েট করতেছি আপনার প্রিয় খাবার নিয়ে



(লেখাটি আবেগ আর কল্পনা নিয়ে লেখা । বাস্তব জীবনের সাথে মিল থাকতে পারে । ভবিষ্যৎ কেমন হবে কেও বলতে পারে না , কল্পনা করতে পারে মাত্র ।আর আমার বাংলা ভাষায় অনেক ভুল ত্রুটি আছে , আশা করি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন । )

সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ২:৫০
৩টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

কৃষ্ণচূড়া আড্ডার কথা

লিখেছেন নীলসাধু, ১৯ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:০২



গতকাল পূর্ব নির্ধারিত কৃষ্ণচূড়ায় আড্ডায় মিলিত হয়েছিলাম আমরা।
বছরের একটি দিন আমরা গ্রীষ্মের এই ফুলটির প্রতি ভালোবাসা জানিয়ে প্রকৃতির সাথে থাকি। শিশুদের নিয়ে গাছগাছালি দেখা, ফুল লতা পাতা চেনাসহ-... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×