somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রিয় নক্ষত্র, খোলা চিঠি তোমার কাছে।

১২ ই নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



প্রিয় নায়ক ম্যাশ। আহত হলাম। আপনাকে অনেক পছন্দ করতাম শুধু খেলার জন্য নয়। একদিন আপনি একটা কথা বলেছিলেন আমার মনে গেঁথে আছে। অনেক গভীর থেকে আসা কথাটায় আপনাকে মনের আকাশে একজন অনন্য উজ্বল নক্ষত্র হিসেবেই দেখে আসছিলাম মনের মণিকৌটায়। সবাই যখন ক্রিকেট পাগল হয়ে আপনাদের নায়ক মহানায়ক বানিয়ে মাথায় তুলে নাচতে শুরু করল আপনি বলেছিলেন এমনটা আমাদের প্রাপ্য নয়, আমরা দেশের জন্য শুধুমাত্র খেলছিমাত্র। দেশের জন্য আন্য আরো অনেকে পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। খেলাকে এতো উপরে উঠানো উচিত নয়। সম্ভবত উদাহরণ দিতে গিয়ে আপনি পোষাক শ্রমিকদের কথা বলেছিলেন। এইযে নিজেকে অতিমানব না ভাবা এবং সরলতা ও বিচক্ষণতা এবং দেশপ্রেম সব মিলিয়ে আপনাকে আমি অনেক ব্যতিক্রম একজন হিসেবেই ভাবতাম। রাজনীতির লোভটা সামলাতে পারলেননা এখানেই এসে আমার সেই মনো নক্ষত্র এর পতন হয়ে গেল।

দেশে এমন কোন লোক ছিলনা আপনাকে পছন্দ করতনা, করেনা না বলে আমি করতনা বলছি এই কারণেই যে, রাজনীতির জার্সি গায়ে দেয়ার সাথে সাথে আপনি বিভক্ত হয়ে গেলেন রাজনীতি বিচারে। আর আমার অভিব্যাক্তি হলো আপনি স্বাভাবিক সময়ে স্বাভাবিক রাজনীতিতে আসেননি। আপানি এসেছেন এমন একটা সময়ে যখন একটা দল বা সরকার তার গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রতিনিয়ত প্রশ্নের সম্মুখিন, যারা উন্নয়নের জোয়ার তুলে মানুষকে ভোলাতে চায়, শেয়ার লুট, ব্যাংক লুট, ইলায়াস আলীদের মতো হাজার হাজার গুম, সাগর রুণির মতো হাজার হাজার হত্যার দায়ে প্রশ্নের সম্মুখীন। আরো একটা বিশেষ শব্দ ইচ্ছে করে ব্যাবহার করলামনা কেননা সময় স্বাভাবিক নয়, আমার মতো সাধারণ মানুষ কথা বলতে ভয় পায় এবং যাদেরকে প্রতিনিয়ত মানুষ ভয় পাচ্ছে আপনি সেই পালে হাওয়া দিচ্ছেন এখানেই আমার নক্ষত্রের পতন।

আপনি এই পালে হাওয়াটা এই দুঃশাসন এর আগের টার্মে কিংবা ভবিষ্যতে স্বাভাবিক হলে তখন আসলে নক্ষত্র তার স্থানচ্যুতি হতোনা সেটা নিশ্চিত। অনেকেই বলছেন নতুনরা আসুক, ভালরা আসুক, রাজনীতি পরিবর্তন হোক। কিন্তু সমস্যা হল সেই পালের অনেক ভালদেরকেইতো তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে ফেলে দেয়া হচ্ছে, আপনার ভাল ইমেজটা কেটে গেলে আপনাকে ছুড়ে ফেলবেনা তার নিশ্চয়তাও কোথায়! আজকে আপনাকে লাগছে একটা চমক দেখাবে বলে, আমরা চমকিতও হলাম! ইতিমধ্যে আপনার পক্ষে বিপক্ষে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে গেছে পুরো জাতি। আপনি আর সবার রইলেননা। যারা বলছে ভাল লোক রাজনীতিতে আসা প্রয়োজন কিন্তু এসবতো আবেগি গদবাঁধা কথা, রাজনীতির মতো বিশাল এক প্লাটফর্মে আসারওতো একটা প্রস্তুতি প্রয়োজন, আপনার ইচ্ছা, দর্শন, কী করতে চান, কী বার্তা নিয়ে আসলেন? কী কী পরিবর্তন করতে ইচ্ছুক কিভাবে করতে চান ইত্যাদি এসব বিষয়ে হোম ওয়ার্ক ছাড়ায় নেমে পড়া এটা অন্য সবাই করে, আপনি সেই তথাকথিত পথে আসলে আর ব্যাতিক্রম রইল কোথায়? লোকাল উন্নয়ন, সাহায্য সহযোগিতা যেটা এলাকা কেন্দ্রিক সেটা রাজনীতি না করলেও করা যায় এবং মানুষ উপক্রিত হয়। ইলিয়াস কাঞ্চন অনেক মহৎ কাজ করেও তার মূল্যায়ন হয়না উল্টো হুমকি খায়। রাজনীতিতে না আসাতে তাকে কেউ ভাল না বাসতে পারে অশ্রদ্ধা বা ঘৃণা করবেনা।

অনেকে বলতে চায় রাজনীতি বদলানোর জন্য আপনাদের প্রয়োজন, কিন্তু এসবতো ঠুনকো জবাব, বদলানোর লক্ষণতো প্রথমেই দেখলাম কোন পালে হাওয়া দিলেন, যে পাল বৈধতা খুঁজে ফেরে সারাক্ষণ। এবার আসা যাক দুই কদম সামনে এগোয়, বর্তমান নির্বাচনে ব্যালট ছিনতায়, কেন্দ্রে আসতে না দেয়া, জাল ভোট হওয়া এসব যখন হবে তখন আপনার কী অবস্থান হবে? আপনিতো একটা দল থেকে মনোনয়ন নিচ্ছেন সেই দলের সমর্থক এবং কর্মীরা যখন এসব করবে তার দায়টা কে নেবে? আপনার কাঁধে নিশ্চয়!

পরিশেষে বলি আমি দুঃখিত, আমার নক্ষত্রটার পতন হয়ে গেছে। আপনাকে দেখলে এখন আর বাংলাদেশের ছবি ভেসে উঠবেনা, খেলার ছবি ভেসে উঠবেনা, আপনি পুরো দেশের মানুষের ভালবাসাটাকে নিজ হাতেই বিভক্ত করে নিলেন। আপনার জন্য শুভ কামনা। ভাল থাকুন। সুস্থ্য রাজনীতি করুন।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:৩১
১১টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহমিকা পাগলা

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


এক আবেগ অনুভূতি আর
উপলব্ধির গন্ধ নিলো না
কি পাষাণ ধর্মলয় মানুষ;
আশপাশ কবর দেখে না
কি মাটির প্রণয় ভাবে না-
এই হলো বাস্তবতা আর
আবেগ, তাই না শুধু বাতাস
গায়ে লাগে না, মন জুড়ায় না;
বলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩




তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×