ভালোবাসার নকশীকাথাঁটা বড়ই বেমানান ছিল, যেন আধুনিকতার লাল, নীল আর সবুজের মাঝে মধ্যযুগীয় কোন শিল্পীর আঁকা ধূসর আল্পনা। তোমার অসম সমীকরণের সহজ সমাধানের জন্যে অনেক আগেই আমাকে অগ্রাহ্য করেছ। তবুও আমার আমিত্ব আমার হৃদয়ে আধুনিকতার ছোয়া লাগতে দেয়নি। পাপড়ির ভাজে ধুলো জমা পথের ফুলের কাছে ফুলদানির প্রত্যাশা আর তোমার পাশে আমার থাকতে চাওয়ার মাঝে তুমি কোন পার্থক্য খুঁজে পাওনি।
অথচ সেই আমি সবার অগোচরে তোমার মুখ হতে শব্দের মালা হয়ে ঝরে পড়ছি। তুমি কারো বুকে মাথা রেখে মহাসুখে আমায় নিয়ে গল্প তৈরি করে যাচ্ছ। আর তাই আমি কখনো তোমার কাছে হয়ে যাচ্ছি অনাকাঙ্খিত কবিতা। কারো ঘুম ডোবা চোখে ছড়িয়ে দিচ্ছি উষ্ণতা, আবার সারাদিনমান শত ব্যস্ততার মাঝে মনের কুড়ে ঘরে একটা অযাচিত ভাবনা হয়ে কড়া নেড়ে যাচ্ছি। তপ্ত রোদে ভেজা দুপুরে যখন তুমি কান্তির বিছানায় শুয়ে, তখন আমি বারবার তোমার চোখের ঘুমের মলাট খুলে দিচ্ছি। এপাশ ওপাশ ফিরে কি যেন খুঁজে বেড়াও। তুমি আমাকে খোঁজ না। তুমি তোমার গল্প দীর্ঘায়িত করার জন্য ভাবনার সাগর সাঁতরে বেড়াও। টেবিলের পাশে ফেলে রাখা, থেকে থেকে ধূলো জমা আমি যেন এক গল্পের বই। যে গল্পের শুরু ছিল শেষ ছিল না......
একটা সময় তুমি গল্পের উপসংহার তৈরি করবে। গল্পটা শেষ হবে। কিন্তু সত্যিকার অর্থে গল্পটা কি আদৌ শেষ হবে? না শেষ হবে না। তবুও গল্পের সামঞ্জস্যতা রক্ষার্থে যে উপসংহার তৈরি করবে, সেটা যেমন বাস্তবতার সাথে বড় বেমানান তেমনি ঠিক আমার সাথেও। আমি তোমার কাছে গল্প হতে চাইনি, শব্দ হতে চেয়েছিলাম।
আমার অস্তিত্ব জুড়ে আজ আধো আলো আধো ছায়া। অনেকেই ভাববে জোছনা ধোয়া। কিন্তু তুমি সেটা ভাবতে পারনা। আমার সব জোছনা তোমার আঁচলে ভরে দিয়েছিলাম, তুমি ছড়িয়ে দিয়েছ তোমার উঠোনে। সিগারেটের নীল ধোঁয়া আমার অধর ছুয়ে যাচ্ছে, ভিতরের কষ্টগুলো বেদনার উৎসবে মেতে উঠে উল্লাসে। রোদেলা দুপুরে পথ চলা, বৃষ্টিস্নানে যাওয়া, চাদের সাথে মেঘের লুকোচুরি এসব কিছু আমাকে আর আগের মত আবেগ আপ্লুত করেনা। দিনের আলোয়, শিশিরের বর্ষণে আজ আমি চার-দেয়ালে বন্দী আসামী। কৃষ্ণাঅষ্টমীর সাথে জমে উঠছে সখ্যতা। আধারের মায়ায় জড়িয়ে গেছি। আধারে বিচরন তবু আরও আধার খুজি। শামুক চলার গতিতে গুটি গুটি পায়ে হেটে চলেছি দ্বিতীয় মৃত্যুর পথে...............
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা জানুয়ারি, ২০১০ বিকাল ৫:১৩

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



