রবি বাবু,
অনেকদিন তোমার কোনোকিছুর সাথে যোগাযোগ নেই অনেক দিন হয়। ইচ্ছে করেই কাজটা করা। তোমার ১৫১ তম জন্মদিনে একটা চিঠি দেয়ার চিন্তা করলাম। এই যন্ত্র যুগে কে কাকে কতক্ষণ মনে রাখে? আর তুমি তো অনেকেরই অনেক দূরের। হয় তো তোমার সেই চির চেনা রুপে তুমি আছো। কিন্তু আমি নেই। জানি না। এই যন্ত্র যুগে মানুষগুলো কেমন যেন! কেউ আপন না। তোমার কবিতা গান উপন্যাস গল্পই আপন মনে হয়। কতজনে জানেই না তুমি কে। কতজনে তোমাকে... পাগল বলে। কতজনে তোমাকে পরকীয়াকারী বলে। কতজনে বলে তোমার গান শুনলে ঘুম আসে। মূর্খের দল শুধু মানুষের কথা শুনেই এমন কথা বলে। নিজে একবারও নিজের বুদ্ধি দিয়ে দেখে না তোমার লেখার মাঝে এক আনন্দ। তোমাকে এরা পরকীয়াকারী বলে। এরাই তো প্রেম করে। এরাই তো রোমান্টিক কবিতা-গান পরে শুনে। তোমার যে লেখার রোমান্টিক লেখার আঁধার, কয়জনে জানে? কতজনে তোমার গানের মাঝে হারিয়ে যাবার অভিজ্ঞতা জানে না। কতজনে তোমার ছোট গল্পে সূক্ষ জীবন দর্শন খুঁজে পায় না।
রবি বাবু জানো, এরা তোমার নোবেল পাবার কথা জানে না। তোমার জন্মদিন মনে রাখে না। মনে রাখলে অনেকে উলটা ভয়ঙ্করভাবে অবাক হয়। তোমাকে নিয়ে ব্যঙ্গ করে ঠিক আছে। আমিই ক্ষমা চাই এদের পক্ষ হয়ে। ধার্মিক মুসলিম বাঙালি তোমাকে মালাউন আখ্যায়িত করে কুতসা ছাড়ায়। বাম্পন্থিরা তোমাকে জমিদার বলে বিরোধিতা করে। আসলে বাম্পন্থিরা জানতই না তোমার প্রজা বাৎসল্যের কথা। জানত না মহা জনের হাত থেকে প্রজাদের বাঁচাতে ক্ষুদ্র ঋণ দেয়ার কথা। নিন্দুকেরা বলে, হাতে টাকা ছিল, যা ইচ্ছা লেখে গেছে। কত জনে জানে তোমার অর্থাভাবে কে মারা গিয়েছিল? যাই হোক। কিছু বলার নাই। এরাই তো বাঙালি। বাঙ্গালিকে কিছু বলতে হয় না। এরা জন্মগত প্রতিবন্ধি। ক্ষমা করে দিলেই ভালো। যাই হোক। খোলা চিঠি দিলাম।
একটা গান আছে না?
"শরতবাবু, খোলা চিঠি দিলাম তোমার কাছে,
সে চিঠি পাবে কিনা জানে না।"
সেরকমই বলি,
"রবিবাবু, খোলা চিঠি দিলাম তোমার কাছে,
সে চিঠি জানি তুমি পাবে না।"
ইতি,
তোমারই একজন পাঠক।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



