somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাবনিক-৩য় পর্ব (দ্বিতীয় খন্ড)

২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০২১ সকাল ১০:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আগের পর্বের জন্যঃ Click This Link
লিনার সাথে এর মাঝে কয়েকবার দেখা সাক্ষাৎ হয়েছে। দু-য়েকবার পার্কে আর বাকি সময় বাসাতেই। ওর মায়ের সাথে গল্প হয়েছে- তিনি একদিন আমাকে ঐতিহ্যবাহী বোরিশ স্যুপ রান্না করে খাইয়েছেন।
ওর ছোট বোন চঞ্চলা চপলা নাদিয়ার সাথেও বেশ ঘনিষ্ঠ হয়েছি। নজর ওর দিকেও পড়ে মাঝে মাঝে- কিন্তু বাবনিক মনকে শাসন করি সব হারানোর ভয়ে!
নারীদের ঘনিষ্ঠ হবার জন্য – কিংবা খুব সহজে কাছে পাবার জন্য আমাদের আরেকটা ফর্মুলা আছে। সেটা জন্মদিন ফর্মুলা।
এবছর আমারই জন্মদিন বার তিনেক হয়ে গেছে- এবার চতুর্থ বার আয়োজনের পালা!
সুমনকে আমার মনের কথা বলতেই- সে খুশীতে ঝলমলিয়ে উঠে বলল, -জন্মদিনটা আমার করলে হয়না?
আমি বললাম,- আলবৎ হয় কিন্তু যার জন্য এ আয়োজন সে যদি না আসে?
-ও- তা ঠিক, তা হলে কর।
এখানকার সব বাঙালি ছোকরারাই জানে জন্মদিন মানে হল ফালতু একটা উৎসবের বাহানা। রাতভর মদ আর জাকোজকা খাওয়া মেয়েমানুষ লেপটে জড়িয়ে ধরে নাচ-গান ফুর্তি করা।
এলিনার ধারনা নেই কেউ মিথ্যে জন্মদিন পালন করতে পারে। তাদের কাছে জন্মদিন মানে ব্যাপক ব্যাপার! পরিচিত কারো জন্মদিনের পার্টি এরা মিস করেনা বিশেষ।
বেছে বেছে অল্প কয়েকজনকে দাওয়াত দিলাম। বেশী লোকজন থাকলে ঝামেলা- সবাই সবাইকে নিয়ে নাচতে চায়- আর একটু আধটু ছোঁক ছোঁক তো করে। মদ খেলে সব দোষ মাফ!
এলিনাকে জন্মদিনের কথা বলতেই বেশ উৎফুল্ল হল বলেই মনে হয়। তাছাড়া নাদিয়াকে দাওয়াত দেয়াতে সে বেশ খুশী হল। একা একা কোথাও যেতে মনে হয় না স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। যেহেতু বেশীরভাগ অপরিচিত ভিনদেশীদের আড্ডা যেখানে সেখানে সেখানে আসতে একটু ভয়-ডর লাগেই।
আমাদের আয়োজন বেশ জাঁকজমকপূর্ণ-ই ছিল। নিজেদের হাতে বানানো কিছুই নেই-রান্না করা মাংস ছাড়া।সব কিছুই কিনে এনে সাজিয়ে রাখা।
মদ আর খাবারের প্রাচুর্যতা দেখে রুশীয় অভ্যাগতদের চক্ষু চড়ক!
নাদিয়া-তো সব দেখে এসে অব্দি তিড়িং বিড়িং লাফাচ্ছে। খাবার আগেই গান ছেড়ে নাচ শুরু করে দিল! ওর এই বেহায়াপনা দেখে এলিনা বেশ লজ্জা পাচ্ছে। সে এসে অব্দি সোফার এককোণে চুপ মেরে বসে আছে।
বন্ধুদের সবাই প্রায় জোড়ায় জোড়ায় আসছে। সিঙ্গেলদের দাওয়াত করিনি। ওরা সবাই এলিনার দিকে আড়ে ঠারে তাকাচ্ছে। সুমন মারফত দু-দণ্ডেই খবর এ কান ও কান ছড়িয়ে পড়ল- এটা সৌম্যের নতুন শিকার।

তার সাথে ইচ্ছে করেই এক অনুষ্ঠানে মাতাল হয়ে অনেক্ষন নেচে ছিলাম। রেনেতা’র বিদায়ের পর মদটা পাকাপোক্ত ভাবে ধরেছিলাম। প্রথম পর্ব নাচের শেষে ওর বোন নাদিয়া আমাকে অনুরোধ করল তার সাথে নাচতে। সবাই তখন ঘুমে ঢুলু ঢুলু। আমি রাজী হতেই সে মেয়ে নাচতো নয় যেন শুরু করল ঢলাঢলি। দু-হাতে শক্ত করে আমার গলা জড়িয়ে ধরে আমার দেহে সাঁটঙ্গে সেটে গানের তালে তালে শরীর দুলাতে লাগল। পুরুষ আমি! উত্তেজিত হবোই। স্রোতে আমিও গা ভাসিয়ে দিলাম। হঠাৎ নাদিয়া আমার ঠোটে তার ঠোট চেপে ধরে চকাস করে গভীর একটা চুমু খেল। আমি ঠোটটা সরিয়ে নিতে নিতে আড় চোখ চেয়ে দেখি এলিনা আমাদের দিকে পুর্নদৃস্টি মেলে মিটিমিটি হাসছে। তবে চোখের কোনে ব্যথার আভাস। আমি সঙ্গে সঙ্গে নাদিয়াকে ছেড়ে দিয়ে তার হাঁটুর কাছে গিয়ে বসলাম।

তেমনি একটা বিটকেলে হাসি দিয়ে সে আমাকে ব্যাঙ্গ করে বলল কি ব্যাপার নাচ বন্ধ করলে কেন? নাচো আরো নাচো। আমি অপরাধীর মত মাথা নিচু করে বললাম ‘তোমাকে ছাড়া আর কারো সাথে নাচব না ।
অনেক্ষন রাগল তার মান ভাঙ্গাতে। অতিরিক্ত মদ্যপান আর নেচে গেয়ে ক্লান্ত হয়ে ততক্ষণে সবাই ঘুমিয়ে পড়েছে।
তখন ডেক সেটে বাজছে আমার খুব প্রিয় ‘ফিল কলিন্স’ এর সেই গানটা;
~You can tell from the lines on her face
You can see that she's been there
Probably been moved on from every place
'Cause she didn't fit in there

Oh, think twice, 'cause it's another day for you and me in paradise
Oh, think twice, it's just another day for you
You and me in paradise
বাকি রাত শুধু আমরা দুজনে নেচেছিলাম ‘ফিল কলিন্স’ এই গানের সুরে।
সে রাতে প্রথমে একটু দুরে দুরে থাকলেও গভীর রাতে দু’জনে অনেক ঘনিষ্ঠ হয়েছিলাম তবে রুশ দৃষ্টিতে সেটা শালীনতার সীমা লঙ্ঘন করেনি। আমার ইচ্ছে ছিল এগোনোর কিন্তু সে এড়িয়ে গেছে । হাতটা কোমর ছাড়িয়ে একটু এদিক ওদিক গেলেই সে একহাত বাড়িয়ে সরিয়ে দিয়েছে। ভারী বুকের উষ্ণ মোলায়েম স্পর্শ পেয়ে গভীর আবেগে ঠোট দুটো তাকে চুম্বনের জন্য এগিয়ে যেতেই সে চকিতে মুখ সরিয়ে নিয়েছে। মাঝেমধ্যে গলায় কপোলে দুয়েকটা চুমু খেয়েছি। তবে বেশী এগুতে বা জোড় করতে সাহস পাইনি ‘যদি সে রাগ করে ফিরে যায় আর না আসে। তার সাথে প্রেম করা ছিল আমার মনের সাথে আমার একটা চ্যালেঞ্জ- এটাতে হারতে আমি রাজী নই।
তবে শরীর শরীরকে টানে। এখানে একচ্ছত্র দায় শুধু পুরুষের নয়।
দু’য়েকবার সে আমার বুকের উপর মাথা রেখে শরীরের পুরো ভর ছেড়ে দিয়ে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরে নেচেছে। তবে অল্প সময়ের জন্য। মনে হয় ক্লান্ত হয়ে।
রাশিয়া গিয়ে ভুলে গিয়েছিলাম কারো শরীর দেখতে সাধনা করতে হয়।
তবে এবারে আমাদের প্রেম পর্বটা শুরু না হয় হল। সে-ই বা মন্দ কি!

পরের পর্বের জন্যঃ Click This Link
এলিনাকে নিয়ে প্রথম পর্বের জন্যঃ Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই আগস্ট, ২০২২ সকাল ১১:১৯
২১টি মন্তব্য ২১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গণতন্ত্র আর বাক-স্বাধীনতার আলাপসালাপ

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:২৩


একাত্তর সালে আওয়ামী লীগের লোকজন আর হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা ছিল পাকবাহিনীর প্রধান টার্গেট। যদিও সর্বস্তরের মানুষের ওপর নিপীড়ন অব্যাহত ছিল। গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধা আর তাদের পরিবারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাফের কুফফারদের দেশে বাস করা হারাম।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:১৩

ফেসবুকে বাঙালিদের মধ্যে ইদানিং নতুন এক ফতোয়া চালু হয়েছে, এবং তা হচ্ছে "দাওয়াতের নিয়্যত ছাড়া কাফের কুফফারদের দেশে বাস করা হারাম।"
সমস্যা হচ্ছে বাঙালি ফতোয়া শুনেই লাফাতে শুরু করে, এবং কোন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×