প্রায় ১৯৫০ সালের কথা। ভারতের বিহারের ছোট্ট গ্রাম গ্যালোর। এখানেই থাকেন গরিব কৃষক দশরথ মাঝি। গ্রামের নানা সমস্যার মধ্যে সবচেয়ে বড় আস্ত একটা পর্বত। এই পাহাড়ের কারণেই প্রায় ৭৫ কিলোমিটার ঘুরে গ্রামবাসীকে যেতে হয় নিকটস্থ হাসপাতাল আর সবচেয়ে কাছের শহরে। কিছুতেই যখন কিছুই হচ্ছিল না, তখন দশরথ মাঝি নিজেই উদ্যোগ নিলেন সমাধানের। নিজের গাইতি আর হাতুড়ি নিয়ে নেমে গেলেন পাহাড় কেটে রাস্তা তৈরির কাজে। মানুষ হাসল, মাঝি কিন্তু নিজের লক্ষ্যে অনড়। প্রায় ২২ বছর পর দশরথ মাঝির একার চেষ্টায় ৩০০ ফুট পাহাড় কেটে তৈরি হলো ৩০ ফুট রাস্তা। রাতারাতি দশরথ মাঝির নাম বদলে হলো 'মাউন্টেনম্যান'। তাঁর এই অনবদ্য কীর্তি সেলুলয়েডে ধারণ করেছেন কেতন মেহত। আগামীকাল মুক্তি পাচ্ছে বিহারের 'পাহাড়মানব'খ্যাত দশরথ মাঝির জীবনকাহিনী নিয়ে ছবি মাঝি-দ্য মাউন্টেনম্যান।

যুগে যুগে মানুষ নিজেদের কীর্তিকে বড় করে প্রকাশ করতে আনন্দ পেয়েছে। এজন্য আমাদের উপমহাদেশে রচিত হয়েছে মহাভারত, রামায়ন, গ্রীসে ইলিয়াড, ওডিসি। এসব মহাকাব্যে স্থান পেয়েছে মানুষের কীর্তি।

তবে যিনি সৃষ্টি করলেন আমাদের। শক্তি দিলেন এসব কিছু করার। তাকে আমারা খুব কমই স্মরণ করি। তবে আমরা যা কিছু করি আমাদের এসব গুণাবলি দিয়ে আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন বলে আমরা করতে পারছি।
আমাদের সৃষ্টি সম্পর্কে আল্লাহ বলছেন-

“আসলে আমি মানুষকে কষ্ট ও পরিশ্রমের মধ্যে সৃষ্টি করেছি।
(সূরা- বালাদ, আয়াত-৪)”

এ আয়াতের তাফসীরে বলা হচ্ছে- মানুষকে কষ্ট ও পরিশ্রমের মধ্যে সৃষ্টি করার মানে হচ্ছে এই যে, এই দুনিয়ায় আনন্দ উপভোগ করার ও আরামের শুয়ে শুয়ে সুখের বাঁশী বাজাবার জন্য মানুষকে সৃষ্টি করা হয়নি। বরং তার জন্য এ দুনিয়া পরিশ্রম, মেহনত ও কষ্ট করার এবং কঠিন অবস্থার মোকাবেলা করার জায়গা। এই অবস্থা অতিক্রম না করে কোন মানুষ সামনে এগিয়ে যেতে পারে না। এই মক্কা শহর সাক্ষী, আল্লাহর কোন এক বান্দা এক সময় কঠোর পরিশ্রম করেছিলেন বলেই আজ এই শহরটি আবাদ হয়েছে এবং আরবের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।

তথ্য সূত্র- আল-কোরআন, তাফসীর ও কালের কণ্ঠ অনলাইন।