আ লীগের কন্ট্রোভার্সাল হিপোক্রেসি দেখলে এখন জাস্ট হাসি পায়। কয়েক দিন ব্যাস্ততার কারণে সকালে পত্রিকা হাতে নিলেও পড়া হত না। আজ কালের কন্ঠে সংবাদ শিরোনামটা দেখে মোটেই অবাক হইনি। জামাতকে আ লীগের প্রয়োজন। কেন প্রয়োজন সেটা ভোটের রাজনীতি যারা বুঝেন তারা সহজেই অনুমান করতে পারছেন।
খবরের শিরোনাম '' সরাসরি জামাতকে নিষিদ্ধ করতে চায় না সরকার''।
পুরো নিউজ পড়ে যা বুঝলাম সরকার ট্রাইবুনাল আইন পুনরায় সংশোধনের অজুহাত দেখাচ্ছে। আইনজীবীরা দুই শিবিরে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। আ লীগের আইনজীবীরা যারা মুখে জামাত নিষিদ্ধের কথা বললেও অন্তরে জামাত লাললের আকাঙ্ক্ষা তারা প্রচলিত ট্রাইবুনাল আইনের সীমাবদ্ধতার অজুহাত দেখাচ্ছেন এবং কাদের মোল্লার ফাঁসির বিরুদ্ধে আপীলের পর যে রায় হবে তার অপেক্ষায় আছেন। ওই রায়ে যদি বিচারক কাদের মোল্লার আপীল রায়ের পাশাপাশি যুদ্ধপরাধীদের সংগঠন নিষিদ্ধের বিষয়ে কিছু বলেন তাহলে সরকার সে অনুযায়ী জামাত নিষিদ্ধের ব্যাবস্থা নিবেন।
অন্য দিকে নিরপেক্ষ আইনজীবী এবং সংবিধান বিশেষজ্ঞ যারা জামাত নিষিদ্ধের পক্ষে , তাদের বক্তব্য সম্পূর্ণ বিপরীত। তাদের মতে জামাত নিষিদ্ধের জন্য সংশোধিত ট্রাইবুনাল আইনের সীমাবদ্ধতাকে জামাত নিষিদ্ধ করার জন্য অন্তরায় হওয়া সত্ত্বেও তা অজুহাত হিসেবে দেখানো পরোক্ষভাবে জামাত নিষিদ্ধ না করার পক্ষেই ইঙ্গত বহন করে। তাদের মতে সংবিধানের ৩৮ অনুচ্ছেদ এবং বিশেষ ক্ষমতা আইন ও সন্ত্রাস দমন আইনে সরকার নির্বাহী আদেশ দিয়েই জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে পারে। এ জন্য আদালতের রায়ের জন্য অপেক্ষার প্রয়োজন নেই। এমনকি কোনো আইন সংশোধনেরও প্রয়োজন নেই। চারদলীয় জোট সরকার ২০০৫ সালে জামা'আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশকে (জেএমবি) নিষিদ্ধ করেছিল। বর্তমান সরকার হিযবুত তাহ্রীরকে নিষিদ্ধ করে। সন্ত্রাসী কার্যকলাপ ও জঙ্গি তৎপরতায় যুক্ত থাকার কারণে এ দুটি সংগঠনকে নিষিদ্ধ করা হয়।
আরেকটি সম্পূরক খবরে বলা হয়েছে প্রধানমন্ত্রী জামাত নিষিদ্ধের ব্যাপারে তাঁর মন্ত্রীসভার সদস্য এবং আ লীগের সংসদ সদস্যদের মিডিয়ার কাছে কোন কিছু বলতে নিষেধ করেছেন। আ লীগের জামাত নিষিদ্ধ করণে এত পরষ্পর বিরোধী মনোভাব দেখে এই ব্যাপারে সন্দেহ দানা বাধা অমুলিক নয়, আ লীগ আসলেই জামাতকে নিষিদ্ধ করবে না তদের কোন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে পূরণের জন্য। পুনরায় যুদ্ধাপরাধীর বিচার মূলো ঝুলানো ছাড়া আ লীগের কাছে ভোটারদের নিকট উপস্থাপনের মত কোন ট্রাম্পকার্ড অপাতত নেই। শাহবাগ আন্দোলনকে নিজেদের পক্ষে ব্যাবহার করতে গিয়ে লেজে গোবরে করে ফেলেছে অনেক আগে।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



