পুরুষের পর্দা পুষিদা
পর্দা নিয়ে আমি খু্বই সেনসিটিভ। কেউ কিচ্ছু বললে সহ্য করতে পারি না। কিন্তু আমি দু:খিত, এই ধরণের কোন কথাও আমি সহ্য করতে পারি না। কারণ ইসলামে এই ধরণের কথা বলার অধিকার দেয়া হয় নি।
আমার এই পোস্টটা যদি কেউ 'ওভার রিয়েকশন' মনে করে, তাহলে বলি--আমার ইসলামের ভিতরে থাকার দাবী করে কেউ যদি কোন অন্যায় করে, তাহলে তাকেই আমি ধরব সবচেয়ে শক্ত করে।
কাউকে 'এই ধরণের মেয়েরা' বলে একটা গ্রুপে ফেলে দিয়ে 'কাপড় খুলে চলার' ইংগিত দেয়াটা কিন্তু খুব নোংরা ইংগিত। হাইপোথেটিক্যালি রাগ আপু বলেছেন তিন হাত লম্বা বোরখা তাঁর কাছে অদ্ভূত লাগে, কিন্তু কাউকে আঙ্গুল উচিয়ে বলেন নি, 'তুমি যা পড়ো তা আমার অদ্ভূত লাগে'। একজন ব্যক্তিকে ব্যক্তিগত ভাবে জড়িয়ে ফেলা মানেই খুব নোংরামি করা। আর এই নোংরামি করার অধিকার কিন্তু আল্লাহ দেন নি।
ইসলামে প্রত্যেকটা ব্যক্তির উপর শ্রদ্ধাশীল করতে বলা হয়েছে। মিথ্যা, গীবত, গালি, অপবাদ, যত যা কিছু আছে যা আরেকজনের মনে আঘাত দিতে পারে, সব কিছুর কাঁটা একটা একটা করে তুলে ফেলা হয়েছে। কেউ শত্রুপক্ষের হলেও তার সাথে 'অভদ্র' হওয়ার অধিকার দেয় হয় নি।
এই ক্ষেত্রে নারী পুরুষের কোন পার্থক্য নেই।
কোন মানুষের সাথে অসম্মানজনক আচরণ করে পার পাওয়া যাবে না, আর কোন নারীর সাথে অসম্মানজনক ব্যবহার করে পার পাওয়া যাবে--এই কি হয়?
কুরআনের যেই জায়গায় মেয়েদের পর্দার নির্দেশ দেয়া হয়েছে, সেখানে সবার আগে ছেলেদের দৃষ্টি সংযত করতে বলা হয়েছে, তারপরে মেয়েদের কথা বলেছেন আল্লাহ। মেয়েদের পর্দা নিয়ে এত কমোশন, ছেলেদের নিয়ে কিছুই দেখি না, কুরআনের অনুসারীদের এই অনুসরন দেখলে বড় দু:খ হয়!
আমাদের এখনকার সমাজে 'পর্দা' নিয়ে যত বই, যত কথা, যত তক্ক, যত ওয়াজ, বক্তৃতা তার অন্তত শতকরা নিরানব্বই ভাগই 'মেয়েদের' পর্দা নিয়ে।
কিন্তু অত্যন্ত দু:খের সাথে জানাচ্ছি, হাদীস গ্রন্থগুলোতে মেয়েদের পোশাক আশাক নিয়ে যত হাদীস আছে, ছেলেদের পোশাক আশাক, সে সংক্রান্ত নির্দেশাবলী নিয়ে হাদীস আছে 'অনেক বেশি!'
অনেক বেশি!
শুনেছেন ঠিক মতো--মেয়েদের চেয়ে ছেলেদের পোশাক নিয়ে আল্লাহর রসুল বেশি চিন্তিত ছিলেন!
মেয়েদের হিজাবের চেয়ে ছেলেদের দৃষ্টি সংবরন নিয়ে আল্লাহ বেশি চিন্তিত ছিলেন, তাই সেটা আগে বলেছেন!
আমি এটা জেনে হতাশায় মাথা নাড়লাম!
ইসলামে ছেলে আর মেয়েদের 'মর্যাদা' এক, 'মানুষ', আল্লাহর বান্দা হিসেবে মর্যাদা এক!
মুসলিমদের এ কি রোগ শুরু হয়েছে, 'মেয়েদের' পর্দার উপর গ্রন্থের পর গ্রন্থ, ছেলেদের পর্দার উপর কিছুই নেই!কেউ কি আজ অব্দি একটা বইও দেখেছেন শুধু ছেলেদের পর্দার উপর লেখা?
সবচেয়ে খুশি হবো সেই দিন যেই দিন পুরুষদের পর্দার বিস্তারিত আইন কানুন নিয়ে কোন বই একজন নারী লিখবেন! মেয়েদের কাপড়ের দৈর্ঘ্য, রং, হাঁটাচলা, কথাবার্তা নিয়ে বিস্তারিত ব্যবচ্ছেদ পুরুষরা তো যথেষ্ট করলো! আর কত!
কিন্তু চিন্তা করুন ব্যাপারটা কেমন হবে। আমাদের সমাজে (অনাত্মীয়--বাবা না, চাচা না, ভাই না, স্বামী না) ছেলেরা (যাদের মোড়লীপনা করার কোন অধিকারই দেয়া হয় নি), তারা যেভাবে মেয়েদের পর্দার সীমাপরিসীমার উপদেশ দিতে দিতে রাতে ঘুমাতে পারে না, সেই কাজগুলো মেয়েরা শুরু করলে কেমন হতো?
কেমন লাগবে, রাস্তায় কোন ছেলে তাকালে যদি কাছে গিয়ে বোরখাওয়ালী মেয়েরা বলা শুরু করে, ওই ব্যাটা তাকাবি তো চোখ কানা করে দিব। (একটা হাদীসে কারও ঘরে মানে প্রাইভেসীতে উঁকি দিলে চোখ কানা করে দেয়ার হুমকি দেয়ার অনুমতি দেয়া হয়েছে! হিজাব পড়ার পরেও পুরুষরা যখন বলে এতেও 'ঠিকমত' পর্দা হয় নি, কিংবা কোন নারীর পোশাক আশাকের ব্যপারে মন্তব্য করে, তখন ইচ্ছা করে সত্যি সত্যি চোখ কানা করে দেই! এই অভদ্রতার অধিকার কে দিল?)
একটা হাদীসে পড়ছিলাম সেদিন, রাসূল (সা) কখনও গায়ের জামা খুলতেন না নিজের খুব কাছের ছাড়া অন্যদের সামনে। 'আজকালকার ছেলেরা' যে কোন উপলক্ষ্যে (গরম লাগা, ক্রিকেট পরবর্তী উল্লাস, সমুদ্র বিলাস) গায়ের জামা খুলতে একটুও দ্বিধা করে? কিংবা শার্টের বোতাম খোলা রাখা। ওহ, রাসুলের সুন্নত কিন্তু পুরুষদের জন্যও 'ঢিলা ঢালা' কাপড় চোপড় পড়া, এখন মেয়েরা গজ ফিতা নিয়ে পুরুষদের কাপড়ের প্রস্থ মেপে মোড়লীপনা শুরু করলে কেমন লাগতো?
কেমন হতো বোরখা পড়া খালাম্মা টাইপের কেউ গিয়ে যদি হুমকি দিত, পর্দা পুশিদার ঠিক নাই তোর!
অথবা নিজের চেয়ে বয়সে ছোট কোন বোরখাওয়ালী মেয়ে ভাব নিয়ে বলতো, আপনের ভাব সাব দেখে মনে হয় আপনে কাপড় খুলে ঘুরতে পারলেই বাঁচেন!
দাড়ি নিয়ে তো যথেষ্ট কড়া হাদীস আছে, ক্লীন শেভড প্রত্যেককে ধরে কিশোরী তরুনীরা যদি বলা শুরু করতো, আপনের সমস্যা কি? মুখে দাড়ি নাই কেন? আজকালকার মরদরা...
কেমন লাগতো?
খুব শালীন মনে হতো?
খুব স্বাভাবিক মনে হতো?
ওমর (রা) যখন একটা ভুল সিদ্ধান্ত দিলেন, তখন একজন নারী উঠে দাঁড়িয়ে কিন্তু প্রতিবাদ করতে দ্বিধা করেন নি। ওমর (রা) মাথা পেতে মেনে নিয়েছিলেন।
মুসলিম সমাজের সমস্যা নিয়ে হাজারটা প্রবন্ধ লিখেও কোথাও যাওয়া যাবে না... সমস্যাটা যে প্রায়েই থাকে নিজেরই খুব ভিতরে!
(আমি দু:খিত রাগ আপু। মেয়ে হয়ে অমন ইংগিত শোন কতটা কষ্টকর আমি জানি। ভালো থেকো।)
![](https://s3.amazonaws.com/somewherein/assets/css/images/generic-ads-580x400.jpg)
শোকের উচ্চারণ।
নিত্যদিনের জেগে উঠা ঢাকা - সমস্তরাত ভারী যানবাহন টানা কিছুটা ক্লান্ত রাজপথ, ফজরের আজান, বসবাস অযোগ্য শহরের তকমা পাওয়া প্রতিদিনের ভোর। এই শ্রাবণেও ময়লা ভেপে উঠা দুর্গন্ধ নিয়ে জেগে... ...বাকিটুকু পড়ুন
যা হচ্ছে বা হলো তা কি উপকারে লাগলো?
৫ হাজার মৃত্যু গুজব ছড়াচ্ছে কারা?
মানুষ মারা গিয়েছে বলা ভুল হবে হত্যা করা হয়েছে। করলো কারা? দেশে এখন দুই পক্ষ! একে অপর কে দোষ দিচ্ছে! কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন
আন্দোলনের নামে উগ্রতা কাম্য নয় | সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যবাদকে না বলুন
প্রথমেই বলে নেয়া প্রয়োজন "বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার সমস্ত অপচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে" ধীরে ধীরে দেশে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসছে। ছাত্রদের কোটা আন্দোলনের উপর ভর করে বা ছাত্রদের... ...বাকিটুকু পড়ুন
কোন প্রশ্নের কি উত্তর? আপনাদের মতামত।
এখানে মাত্র ৫টি প্রশ্ন রয়েছে আপনাদের নিকট। আপনারা মানে যত মুক্তিযোদ্ধা বা অতিজ্ঞানী, অতিবুদ্ধিমান ব্লগার রয়েছেন এই ব্লগে প্রশ্নটা তাদের নিকট-ই, যদি তারা এর উত্তর না দিতে পারেন, তবে সাধারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন
চাকুরী সৃষ্টির ব্যাপারে আমাদের সরকার-প্রধানরা শুরু থেকেই অজ্ঞ ছিলেন
আমার বাবা চাষী ছিলেন; তখন(১৯৫৭-১৯৬৪ সাল ) চাষ করা খুবই কষ্টকর পেশা ছিলো; আমাদের এলাকাটি চট্টগ্রাম অন্চলের মাঝে মোটামুটি একটু নীচু এলাকা, বর্ষায় পানি জমে থাকতো... ...বাকিটুকু পড়ুন