somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

শের শায়রী
অমরত্বের লোভ কখনো আমাকে পায়না। মানব জীবনের নশ্বরতা নিয়েই আমার সুখ। লিখি নিজের জানার আনন্দে, তাতে কেউ যদি পড়ে সেটা অনেক বড় পাওয়া। কৃতজ্ঞতা জানানো ছাড়া আর কিছুই নেই।

বিষন্ন রমযান কথকতা

১৪ ই মে, ২০২০ রাত ১:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



অদ্ভুত এক রমযান পার করছি। কোথা দিয়ে রোযা আসল, কিভাবে সেহেরী খাচ্ছি, কিভাবে ইফতার করছি আবার কিভাবে যেন বিছানায় গড়াগড়ি খেয়ে সেহেরীর সময় পার করে দিচ্ছি। এর মাঝে নিয়ম করে নামায পড়া। সবই যেন কেমন অদ্ভুত লাগছে। আসলে কিছুই ভালো লাগছে না, শীতের সময় যদি গরম লাগে আরে গরমের সময় যদি সারা দিন বৃষ্টি পরে তবে খুব স্বাভাবিক ভাবেই কিছুটা অস্বস্তি লাগে। সেই রকম এক অস্বস্তি নিয়েই এবারের রোযার অর্ধেক পার হয়ে গেল।

রমযান মানে তো ইফতার আর সেহেরী খেয়ে বাসায় নামায পড়ে দিন কাটানো না। রমযান মুসলিম উম্মাহর এক আনন্দের সময় তা যে কোন দিক দিয়েই দেখুন না কেন। আফ্রিকান বা আরব মুসলিম দেশ গুলোতে সাধারনতঃ ইফতারি করে ফ্যামিলি নিয়ে কোন রেষ্টুরেন্ট বা খোলা ময়দান অথবা মসজিদ চত্বরে ফ্যামিলি মেম্বারদের নিয়ে নিয়ে আড্ডায় সময় পার করে সেহেরী করে এক সাথে ঘরে ফেরার একটা কালচার দেখছি। আমাদের দেশেও ইদানিং এই কালচারটা কিছুটা দেখা যাচ্ছিল কিন্তু এই রোযায় …….

সারা বছর অনেক বন্ধু বান্ধবের সাথে দেখা হত না, প্রতিবার ইফতারিতে তাদের সাথে দেখা হবার একটা উপলক্ষ্য হয়ে দাড়াত। অনেক দিনের পুরানো সব মুখ, দেখ হলে “বন্ধু কি খবর বল?” বলে এক জন আর একজনকে জড়িয়ে ধরা, অনেক অনেক মিস করছি এই আড্ডাটা। ভার্সিটির হল মেটদের সাথে হাকিম চত্বরে প্রতি বছর অন্তত একবার ইফতারের একটা রেওয়াজ ছিল এখন মনে হয় সেটা দূর কোন অতীত কালের স্মৃতি। ডিপার্টমেন্টের বন্ধুদের নিয়ে বিভিন্ন ভাবে অন্তত দুটো ইফতারে এক সাথে জমায়েত হওয়া হত। উচ্ছ্বল আনন্দে কোথা দিয়ে যে কিছু সময় পার হয়ে যেত টেরই পেতাম না। কিন্তু এই রোযায়…..

আবার প্রতি রোযায় বাসার কথা বাদ দিলাম, অন্তত বন্ধুদের সাথে একদিন পুরানো ঢাকার ইফতারি এক সাথে না করলে মনে হত রোযা বোধ হয় পরিপূর্ন হয় নি। বিশ শতকের গোড়ার দিকে যেমন, এখনও তেমনি রমজানে ইফতারীর সময় চকবাজারে প্রচন্ড ভিড় হয়। ইতিহাস থেকে জানা যায়, মুঘল আমলে চকবাজারের পত্তন হয়। মুঘল আমলে সেনাপতি মানসিংহ পূর্ববঙ্গে এসেছিলেন বিদ্রোহ দমন করতে। ১৬০২ সালে তিনি ভাওয়াল থেকে সদর দফতর স্থানান্তর করেছিলেন বর্তমান কেন্দ্রীয় কারাগারের জায়গায়। সেখানেই মুঘল দুর্গ স্থাপিত হয়েছিল। মুঘল দুর্গের পাশেই গড়ে উঠে চকবাজার। তবে, একসময় এই চকবাজারকে বহুলোক চৌক বন্দর নামে ডাকতেন। মানসিংহের আমল থেকে চকবাজার যাত্রা শুরু করলেও এটি পূর্ণতা লাভ করেছিল মুর্শীদকুলি খাঁর সময়ে। মুর্শিদ কুলি খাঁর পর ওয়াল্টার সাহেব নতুন করে চকবাজার তৈরি করেন। সে সময় তিনি কোমর পর্যন্ত উচু দেওয়াল দিয়ে চকবাজার ঘিরে দিয়েছিলেন এবং বাজারে প্রবেশের জন্য ১৬ টি গেট করে দিয়েছিলেন। পুরান ঢাকার চকবাজারের ইফতারির খ্যাতি আর ঐতিহ্যের কথা এখন আর কারও অজানা নেই। রমজান উপলক্ষে প্রতিবারই জমে ওঠে এ ইফতার বাজার। রোজার শুরুতেই বাহারি ইফতারের পসরা সাজানো হয় ঢাকার এ প্রাচীন স্থানটিতে, যা থাকে মাসজুড়েই। এই বারো কি তেমন আছে? আমার সন্দেহ আছে।

যদিও ব্যাক্তিগতভাবে আমার তারাবীর নামায পড়া হয়ে ওঠে না, কিন্তু যারা বছরের পর বছর খতম তারাবী অথবা সুরা তারাবী পড়ে এই রমযানে নিশ্চয়ই তাদের বুক হু হু করে কেঁদে উঠছে কারন প্রায় কেউই তারাবীর নামায জামাতে পড়তে পারে নি। আমি না পড়লেও যারা রেগুলার এই নামায পরে তাদের জন্য বুকের কোথায় যেন এক ব্যাথা অনুভব করছি।

সেহেরীর আগে আমি সাধারনতঃ অনেক বছরই ঘুমাই না, এক সাথে সেহেরী খেয়ে তারপর ম্যারাথন ঘুম, এবারো সে নিয়মের ব্যাতয় ঘটছে না, কিন্তু তারপরো কি যেন একটা মিস করছি, কি মিস করছি? হ্যা মনে পড়ছেঃ

এল রে দেখ ওই মাহে রমজান
জাগো রে মুসলমান।

অথবা
আমরা কাসিদাওয়ালা
যাই ডেকে যাই
ওঠ ওঠ মমিন
সেহরির সময় নাই।

কাসিদা। প্রতি বছর পাড়ার কিছু পোলাপান সুর করে গানের শব্দে রাত আড়াইটা পৌনে তিনটা থেকে ডেকে যেত। এবার নেই সেই কাসিদা। যদিও কাসিদা কালচার এখন মৃত প্রায়। তাও এই সুর শুনতে শুনতে এটাকেও রোযার একটা অঙ্গ হিসাবে মনে হত। কাসিদা গেয়ে রোজাদারদের ঘুম ভাঙানোর কাজটি সাধারণত তরুণরাই করত। উৎসবের আমেজে। মোগলদের হাত ধরে এ অঞ্চলে, মানে বাংলায় কাসিদার প্রবেশ। তখন কাসিদা লেখা হত ফার্সিতে। কারণ মোগলদের দরবার আর প্রশাসনিক ভাষা ছিল ফার্সি। পূর্ববঙ্গে কাসিদার প্রাচীনতম তথ্যটি পাওয়া যায় মির্জা নাথানের ‘বাহারিস্তান-ই-গায়বি’ গ্রন্থে। তিনি ছিলেন একজন মোগল সেনাপতি। ১৬০৮ সালে ইসলাম খান চিশতির সঙ্গে মোগল নৌবহরের সেনাপতি হিসেবে বঙ্গে এসেছিলেন নাথান। এক সামরিক অভিযানে গিয়েছিলেন যশোরে। তাঁর সেই যশোরের আস্তানায় সে সময় এক বিশাল আনন্দোৎসবের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে কবিরা নিজেদের লেখা কবিতা বা কাসিদা পরিবেশন করেন। সবার অনুরোধে যশোরের আবহাওয়া নিয়ে স্বরচিত কাসিদা আবৃত্তি করেন কবি আগাহি।

রমজানে সেহরির সময় গাওয়ার জন্যই কেবল কাসিদা রচনা করা হত না। কোনো বিষয়ের প্রশংসা করেও কাসিদা রচনা করা হত। লেখা হত বিশেষ কোনো উৎসবকে আরও বেশি আনন্দময় করার জন্যও। প্রাক-ইসলামি যুগ থেকেই কাসিদার শুরু। তবে কাসিদার পরিচিতি আসে ‘কাসিদা বারদা’ থেকে। ইমাম আর বাসিরি এবং ইবনে আরাবির সংগ্রহ করা ধ্রুপদী কাসিদার সংকলন এটি।

কাসিদার একদম প্রাচীন যে রূপটি, যেটাকে বলা যায় কাসিদার ধ্রুপদী রূপ। সেটি মূলত এ রকম- যে কোনো একটি বিষয়কে কবিতার মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়। কবিতার প্রতিটা লাইনে ছন্দ-অন্ত্যমিল থাকবে। আকারে পঞ্চাশ লাইনেরও বেশি হবে। কখনও কখনও ছাড়িয়ে যাবে একশ’ লাইনও। কাসিদার বিস্তার একশ’ লাইনেরও বেশি ছাড়িয়ে যাওয়ার এ রীতিটি মূলত পারস্যের কবিদের। আর যাই হোক, কাসিদার মূল উৎস তো পারস্য থেকেই। আরবের লেখক ইবনে কুতাইবাহ আরবি কাসিদাকে তিনটি অংশে বিভক্ত করেছেন। কাসিদা নিয়ে তিনি একটি বই লেখেন নবম শতকে; নাম- ‘কিতাব আল-শির ওয়া-আল-শুয়ারা’ বা ‘বুক অব পোয়েট্রি অ্যান্ড পোয়েটস’। এখানেই রয়েছে তাঁর নিজস্ব কাসিদার গঠনতত্ত্ব।

কিছুদিন আগেও পত্রিকায় দেখতাম, পুরানো ঢাকায় রোযার শেষের দিকে বিভিন্ন মহল্লার মাঝে কাসিদা প্রতিযোগিতা হত। সে এক উৎসব আমেজ। এবার কোথায় যেন মৃত্যুর বিষন্নতায় এই কাসিদা হারিয়ে গেছে। সেহরী খাওয়ার সময় এখনো কিভাবে যেন মহল্লার ছেলেপেলের বেসুরো গলায় গাওয়া সেহরী খাওয়ানোর জন্য ঘুম ভাঙ্গানী কাসিদার শোনার জন্য মনটা আনচান করে।

মুসলিম উম্মাহর সব থেকে বড় আনন্দ উৎসব ঈদ। এইবার ঈদ যে কত পরিবারের জন্য আনন্দ আর কত পরিবারের জন্য স্বজন হারানোর বেদনায় সিক্ততা আনে তা এক মাত্র মহান আল্লাহ তায়ালা জানে। মনে হয় না এবার ঈদের জামাতও সেই জৌলুসের সাথে অনুষ্ঠিত হবে। হয়ত নিয়ম রক্ষার নামায হিসাবে পালিত হলেও ঈদের যে মুল সুর কোলাকুলি করা দোস দুসমান ভুলে গিয়ে তা বোধ হয় সম্ভব হবে না। বড় কষ্ট। জাতীয় কবি নজরুলের রচিত গত ৮৯/৯০ বছর যে গানটা ঈদের আগে আমাদের উদ্বেলিত করত এই বার তা কতটা তা করবে তা সময়ই বলে দেবে।

ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ
তুই আপনাকে আজ বিলিয়ে দে, শোন আসমানী তাগিদ।
তোর সোনা-দানা, বালাখানা সব রাহে লিল্লাহ
দে যাকাত, মুর্দা মুসলিমের আজ ভাঙাইতে নিঁদ
ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ।
আজ পড়বি ঈদের নামাজ রে মন সেই সে ঈদগাহে
যে ময়দানে সব গাজী মুসলিম হয়েছে শহীদ।
ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ।
আজ ভুলে যা তোর দোস্ত-দুশমণ, হাত মেলাও হাতে,
তোর প্রেম দিয়ে কর বিশ্ব নিখিল ইসলামে মুরিদ।
ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ।
যারা জীবন ভরে রাখছে রোজা, নিত্য উপবাসী
সেই গরিব ইয়াতীম মিসকিনে দে যা কিছু মুফিদ
ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ
আপনাকে আজ বিলিয়ে দে শোন আসমানী তাগিদ।
ঢাল হৃদয়ের তশতরীতে শিরনি তৌহিদের,
তোর দাওয়াত কবুল করবেন হজরত হয় মনে উম্মীদ।
ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ।
তোরে মারল' ছুঁড়ে জীবন জুড়ে ইট পাথর যারা
সেই পাথর দিয়ে তোলরে গড়ে প্রেমেরই মসজিদ।
ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ
আপনাকে আজ বিলিয়ে দে শোন আসমানী তাগিদ।

রোযাগুলো কোথা দিয়ে কিভাবে যাচ্ছে কিছুই বুজতে পারছি না, আনন্দের থেকে মৃত্যু আর অসুস্থ্যের সংখ্যা গুনতে গুনতে আল্লাহর কাছে মাগফেরাত কামনা করাই এখন একমাত্র চাওয়া হয়ে দাড়িয়েছে। সবাই সুস্থ্য থাকুন।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই মে, ২০২০ রাত ১:২৬
২১টি মন্তব্য ২১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×