somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মেন্সট্রুয়েশন, ইসলাম কম্পেটিবলিটি সম্পর্কিত আরিফুর রহমানের কাছে রাগইমনের প্রশ্ন ও আমার বক্তব্য: পর্ব-২

০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১০ দুপুর ২:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রথম পর্ব

এইবার আসি গণতন্ত্রের আরেক কন্সেপ্ট ফ্রিডম অব স্পীচ এর ব্যাপার।শরীয়াহতে ফ্রিডম অব স্পীচ এর কোন অবস্থান নাই।ইসলামকে নিয়ে কোনরুপ প্রশ্ন শরীয়াহতে জায়েজ নাই এবং চরম অসহনশীল।১২৮৪ খ্রিষ্টাব্দে ইবন কাম্মুনা ইসলামের প্রোফেসীর ফ্যালাসী নিয়ে প্রশ্ন করার কারনে ইসলামী সমাজ তাকে আমৃত্যু তাড়া করে।তাকে একটা চামড়ার ব্যাগের মধ্যে পুরে দেশ ছাড়া করা হয়।দেশে আর ফেরার ভাগ্য হয়নি।আলী দাশতী তার ’২৩ বছর’ লেখার অপরাধে ৮৩ বছর বয়সে খোমেনীর জেলখানায় মারা যান, বলাই বাহুল্য বৃদ্ধ বয়সেও শারিরিক ভাবে জেলখানায় নির্যাতিত।বইটি যদিও লিখেছিলেন অনেক আগে, শরীয়াহ সমাজে প্রকাশ করতে পারেননি।আন্ডারগ্রাউন্ড থেকে পাবলিশ করান তবু শেষ রক্ষা হয়নি, মৃত্যুর আগে তার একটাই আক্ষেপ ছিলো, বলেছিলেন ‘ইশ যদি ১৯৭৯ এর আগে বইটি প্রকাশ করতে পারতাম, তবে হয়তো ইরানে এমন একটি বিপ্লব কখনওই মুখ দেখতোনা (৭৯ এর আগে ইরান সেক্যুলার ছিলো)’।এরকম উদাহরন কযেকশ হাজির করতে বড়জোড় পাঁচ থেকে ছয় মিনিট লাগবে সে আপনিও জানেন আমিও জানি, তাই আর কলেবরে বাড়ালামনা। আজ যেই কারনে আমাদের হিটলার নিগ্রহকারী, সেই কারনে মোহাম্মদকে কেন নিগ্রহকারী বলা হবেনা বলতে পারেন (মদীনায় বসবাসরতা ইহুদী গোত্রদের কথা স্মরণ করুন)?শুধু কি সেটা গডের আদেশ ছিলো বলে? সেই পন্থায় যখন খোমেনীরা উৎসাহী হয়ে উঠে শরীয়াহ ভিত্তিক ফতোয়া দেয়, তখন গড ছাড়া কাঠগড়ায় দাঁড়া করানোর জন্য আর কাউকেতো পাইনা, শরীয়াহ এর কম্প্যাটিবিলিটিও খুঁজে পাইনা। ইসলামী সাম্রাজ্যবাদীতার নামে ইসলাম ধর্মাবলম্বী না হইলেই শরীয়াহ কি বলে দেখেন, নবী আয়াতোল্লাহ খোমেনীর বক্তব্য: “Islam makes it incumbent on all adult males, provided they are not disabled and incapacitated to prepare themselves for the conquest of [other] countries so that the writ of Islam is obeyed in every country in the world…..But those who study Islamic Holy War will understand why Islam wants to conquer the whole world…those who know nothing of Islam pretend that Islam counsels against war. Those [who say this] are witless. Islam says: Kill all the unbelievers just as they would kill you all.” (Ibn Warraq, Why I am not a muslim). জিহাদের সংজ্ঞায় Dictonary of Islam-এ বলা আছে “A religious war with those who are unbelievers in the mission of Muhammad. It is an incumbent religious duty, established in the quran and the traditions as a divine institution, institution, enjoined specially for the purpose of advancing of Islam and of repelling evil from Muslims”. এই যখন ইজম, সে ইজম দ্বারা মধ্যযুগীয় কোন শাসনতন্ত্র চলতে পারে, এই যুগে তাকে যদি কেউ অচল বলে আমি দ্বিমত করবোনা।রাগইমন, লক্ষ্য করে দেখেন, ডারউইনের নাম শুনলে ধর্মবাদীরা খড়গ হাতে তিনহাত উচুতে লাফ দেয়, আবার ধর্মের নামে তারাই যখন ডারউইনের সার্ভাইভাল দ্যা ফিটেষ্ট থিওড়ী এপ্ল্যাই করে রিলিজিয়াস ডারউইনিজম চালায় তখন এই তত্ত্ব আবিষ্কারের জন্য ডারউইন সাহেবকে তাদের কোন ক্রেডিট দিতে দেখিনা।

এবার আসি হিউম্যান রাইটস এর প্রসঙ্গে।উপরেই শরীয়াহ ভিত্তিক হিউম্যান রাইটস এর ভায়োলেশন কি ভাবে হয় তা বলেছি।এবার একটু আর্টিক্যাল ভিত্তিক:

হিউম্যান রাইটস ডিক্লেয়ারেশন আর্টিক্যাল, ১৯৪৮:


আর্টিক্যাল ১:
সম্মান ও স্বাধীনতার ক্ষেত্রে সব মানুষই সমান: শরীয়াহ এটা মানেনা।অন্তত পুরুষ=নারী নয়।

আর্টিক্যাল ২: ধর্ম, বর্ণ, জন্ম, লিঙ্গ, জাতি, নির্বিশেষে সকল মানুষ সমান ভাবে সকল অধিকার ভোগের দাবীদার।: শরীয়াহতে ফিট করেনা।শরীয়াহ ভিত্তিক রাষ্ট্রের অধীনে আর সব ধর্ম ইনফেরিওর, তা না হলে উপরে বলা জিহাদের সংজ্ঞা খাটেনা।

আর্টিক্যাল ৫:
No one shall be subjected to torture, or to cruel, inhuman or degrading treatment or punishment: শিরচ্ছেদ, প্রস্তর নিক্ষেপ, হাতকাটা….

আর্টিক্যাল ১৮: Everyone has the freedom of thought, conscience and religion: শরীয়াহতে আনফিট।ফ্রিডম অব রিলিজিওন??? শরীয়াতে? পাগলেও চিন্তা করবেনা।

আরও অনেক আছে, আনলামনা. অনেকগুলোই ওভারল্যাপ হয়ে যাবে, তাই।কিন্তু বিশ্বাস করেন হিউম্যান রাইটস এক্ট ফিট করেনা শরীয়াহতে।ইসলামিক গড ইজ এ টাইরানিক রুলার, তার কথা চোখ বুজে সহ্য করতে হবে, মানতে হবে।না মানলে জীবনগতি নাই।

রাষ্ট্রযন্ত্রে ইসলামিক অর্থনীতি

দেখেন, আমি কখনওই মোহাম্মদ, জেসাসদের গালাগালি দেয়ার পক্ষপাতি নই।সমাজের প্রয়োজনে এক সময় তারা এসেছিলো, সেসময় যেটা প্রয়োজন সেটা করে গেছেন। এরা সবাই সমাজ প্রবর্তক।চিন্তায় চেতনায় এরা অবশ্যই সাধারণের থেকে আলাদা ছিলেন এটা অনস্বীকার্য।সময়ের প্রয়োজনে সমাজ প্রবর্তনের তাদের আকাঙ্খাকে আমি সম্মান জানাই।যেমন ধরুন সুদ।ইসলামে সুদ খাওয়া কেন হারাম করলো বা এর অর্থনৈতিক শানে নুযুল কি?মুহাম্মদ যখন দেখলো আরবের লোকেরা কোন কাজ কর্ম করেনা, শুধু সুদের ব্যবসা করে, যার মূল ক্লায়েন্ট ছিলো আরবের (মূলত:মক্কা)বাইরের ইহুদী ব্যবসায়ীরা, যার ফলে টাকা সব আরবের বাইরে চলে যেতে লাগলো।আজকের সব কেইন্সিয় অর্থনীতিবিদরা নিজ দেশে বিনিয়োগ বৃদ্ধির কথা বলে, যে কথা মূহম্মদ অনেক আগেই বলেছিলো সুদ খাওয়া হারাম করে।কারন সুদ খাওয়া হারাম করা মানে আরবের লোকদের সুদ বানিজ্য বন্ধ আর বিনিয়োগটাও নিজ দেশে হবে।তখনকার প্রেক্ষাপটে এই কথা প্রোযোজ্য, কিন্তু এখন সুদ ছাড়া ব্যাংকিং চিন্তা করা যায়?আপনি হয়তো শরীয়াহ ব্যাংকিং এর কথা বলবেন, কিন্তু ব্যবসাটা আর কিছুইনা আইডিয়া মার্কেটিং।আসলে যেই লাউ সেই কদু।পশ্চিমা বিশ্বে অমুসলিম কোন দেশ এর শরীয়াহ ব্যাংকিং এর উদাহরন যদি টানেন, তাহলে বলবো, সেই সব দেশে সীমিত আকারে শরীয়াহ ব্যাংকিং এর প্রচলন তার মুসলিম কম্যুনিটির কথা চিন্তা করে, শরীয়াহ ব্যাংকিং এর কোন মহাত্মতে আকৃষ্ট হয়ে নয়।এটা আর কিছুইনা রেস্পেক্ট টু ডেমোক্রেসি এন্ড রেস্পেক্ট টু ক্লায়েন্ট, সাথে আইডিয়া মার্কেটিং, সেলস ভলিউম ইনক্রিজ ইত্যাদিতো আছেই।ঐ সমস্ত দেশ শরীয়াহ ব্যাংকিং ছাড়াই রাষ্ট্রখাতে ব্যাংকের প্রভূত উন্নতি সাধন করছে।শরীয়াহ ব্যাংকিং ইটসেল্ফ ইজ এ প্রোডাক্ট অব দ্যা ব্যাংক, মার্কেটিং অফ এন আইডিয়া টু দ্যা ক্লায়েন্ট।ইসলামের বয়স যেখানে ১৪০০ বছর, সেখানে শরীয়াহ ব্যাংকিং এর ধারনা ৫০ ও পুরো হয় নাই কেন ব্যাপারটা ভাবায়না?মূলত টোটাল বিষয়টাই কনভেনশনাল ব্যাংকিং সিষ্টেম এর ধারনার উপর দাঁড়া করানো, প্রোফিট-লস আর রিবা’র ব্যাপারটা ছাড়া।আর টার্মগুলো শরীয়া টার্ম।

এই যখন শরীয়াহর রাষ্ট্রনীতি, ইসলাম কি ভাবে আজকে কম্প্যাটিবল হয় সেটা আমি জানার চেষ্টা করছি।আরও অনেক লেখা যেত।তবে বাকী গুলো আলোচনায়ও আনা যেতে পারে।সকল আলোচনার জবাব বাংলাদেশ সময় রাত দশটা নাগাদ থেকে দেয়া শুরু হবে।

ধন্যবাদ।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১০ রাত ১০:০৯
২৭টি মন্তব্য ২৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×