somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কোরআনের আলোকে নারী: সঠিক অবস্থান ও অভিযোগের জবাব

১৫ ই মার্চ, ২০০৯ দুপুর ২:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ইসলামে নারীদের মর্যাদা ও অধিকার নিয়ে বিশ্বব্যাপী এমনভাবে অপপ্রচার চালানো হয়েছে যেনো সবগুলো ধর্মের মধ্যে ইসলামেই নারীদেরকে সবচেয়ে বেশী অবমাননা করা হয়েছে এবং সবচেয়ে কম অধিকার দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে অনেকেই এই অপপ্রচারকে বিশ্বাসও করা শুরু করেছেন। অথচ বাস্তবতা কিন্তু ঠিক তার বিপরীত। প্রকৃতপক্ষে কোরআনে নারীদের নিয়ে আলাদাভাবে আলোচনা করতে যাওয়া মানে তাদেরকে বরং হেয় করা। কারণ কোরআনে নারী-পুরুষকে তো আলাদা দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা হয়নি। যে দু-চারটি তুচ্ছ বিষয় নিয়ে সমালোচনা করা হয় সেগুলো বাস্তবিক দৃষ্টিকোণ থেকে কিছুই না। সামান্য যৌক্তিক ব্যাখ্যার মাধ্যমে সেগুলোকে খুব ভাল ভাবেই ডিফেন্ড করা সম্ভব। তাছাড়া কোরআনে কিছু কিছু ক্ষেত্রে যেমন নারীকে বিশেষ মর্যাদা ও অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে তেমনি আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে পুরুষের উপরও অতিরিক্ত বোঝা চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। অতএব, সবকিছু যোগ-বিয়োগ করে এবং নারী-পুরুষের মধ্যে যে প্রকৃতিগতভাবে কিছু পার্থক্য আছে সেটা বিবেচনায় রেখে কোরআনে নারী-পুরুষের মধ্যে পার্থক্য করা কিন্তু খুবই কঠিন। তবে কোরআনের ক্ষেত্রে বাস্তববাদী ও যুক্তিবাদী হতে হবে। এক্ষেত্রে আবেগের কোনো স্থান নেই।

কোরআনই সম্ভবত মানব জাতির ইতিহাসে প্রথম লিখিত গ্রন্থ যেটি নারী-পুরুষকে মানুষ হিসেবে সমান মর্যাদা দিয়ে নারীদের পক্ষেও অবস্থান নিয়েছে। পুরুষ মানেই পুরুষের পক্ষে এবং নারীদের বিপক্ষে – হাজার বছরের এই মানসিকতাকে কোরআনই প্রথম ভেঙ্গে দিয়েছে। নিচের আয়াতগুলো পড়ে দেখুন, কোরআনে নারী-পুরুষের মধ্যে আদৌ কোনো পার্থক্য করা হয়েছে কি-না।

“হে মানব-জাতি! তোমরা ভয় কর তোমাদের রবকে, যিনি সৃষ্টি করেছেন তোমাদের এক আত্মা থেকে এবং যিনি সৃষ্টি করেছেন তার থেকে তার জোড়া, আর ছড়িয়ে দিয়েছেন তাদের দু’জন থেকে অনেক নর ও নারী।” (আন-নিসা ৪:১)

“যে ব্যক্তি ভাল কাজ করবে, হোক সে পুরুষ কিংবা নারী, এবং সে ঈমানদার হবে, এরূপ লোক জান্নাতে দাখিল হবে, আর তাদের প্রতি বিন্দুমাত্র অবিচার করা হবে না।” (আন-নিসা ৪:১২৪)

“আর তাঁর নিদর্শনাবলীর মধ্যে একটি এই যে, তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের নিজেদের মধ্যে থেকে সঙ্গী সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা তাদের কাছে শান্তি লাভ কর এবং সৃষ্টি করেছেন তোমাদের মধ্যে ভালবাসা ও দয়া।” (আর-রূম ৩০:২১)

“আমি বিনষ্ট করি না তোমাদের কোন পরিশ্রমকারীর কর্ম, তা সে হোক পুরুষ কিংবা নারী। তোমরা একে অন্যের সমান।” (আল-ইমরান ৩:১৯৫)

“বিশ্বাসী পুরুষ ও বিশ্বাসী নারী একে অপরের বন্ধু। তারা ভাল কাজের নির্দেশ দেয় এবং মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে, তারা সালাত কায়েম করে, যাকাত দেয় এবং আনুগত্য করে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের। এদেরই উপর আল্লাহ রহমত বর্ষণ করবেন।” (আত-তওবা ৯:৭১)

“তারা তোমাদের পোশাক এবং তোমরা তাদের পোশাক।” (আল-বাকারা ২:১৮৭)

“হে মানুষ! আমি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি একজন পুরুষ ও একজন নারী থেকে এবং তোমাদেরকে পরিণত করেছি বিভিন্ন জাতিতে ও বিভিন্ন গোত্রে, যাতে তোমরা পরস্পরকে চিনতে পার। নিশ্চয় আল্লাহর কাছে তোমাদের মধ্যে সর্বাপেক্ষা অধিক মর্যাদাবান সেই ব্যক্তি, যে তোমাদের মধ্যে সর্বাপেক্ষা অধিক মোত্তাকী।” (আল-হুজরাত ৪৯:১৩)

“যে ভাল কাজ করে এবং বিশ্বাসী, হোক সে পুরুষ কিংবা নারী, আমি তাকে অবশ্যই দান করব এক পবিত্র শান্তিময় জীবন এবং তারা যা করত তার জন্য তাদেরকে শ্রেষ্ঠ পুরস্কার দান করব।” (আন-নাহল ১৬:৯৭)

“যে ব্যক্তি মন্দ কাজ করে সে কেবল তদনুরূপ প্রতিফল পাবে। আর যে ব্যক্তি ভাল কাজ করে সে পুরুষই হোক কিংবা নারীই হোক, সে যদি বিশ্বাসী হয় তবে এরূপ লোকেরাই জান্নাতে প্রবেশ করবে, সেথায় তাদেরকে দেয়া হবে বেহিসাব রিযিক।” (আল-গাফির ৪০:৪০)

“আমি মানুষকে তার মাতা-পিতা সম্বন্ধে নির্দেশ দিয়েছি তাদের সাথে সদাচরণ করতে। তার মাতা কষ্টের পর কষ্ট সহ্য করে তাকে গর্ভে ধারণ করেছে এবং দু’বছরে তার দুধ ছাড়ানো হয়। সুতরাং শোকরগুজারী কর আমার এবং তোমার মাতা-পিতার।” (লুকমান ৩১:১৪)

“নিশ্চয় মুসলিম পুরুষ ও মুসলিম নারী, ঈমানদার পুরুষ ও ঈমানদার নারী, অনুগত পুরুষ ও অনুগত নারী, সত্যবাদী পুরুষ ও সত্যবাদী নারী, ধৈর্যশীল পুরুষ ও ধৈর্যশীল নারী, বিনয়ী পুরুষ ও বিনয়ী নারী, দানশীল পুরুষ ও দানশীল নারী, রোজাদার পুরুষ ও রোজাদার নারী, স্বীয় লজ্জাস্থান হেফাযতকারী পুরুষ ও স্বীয় লজ্জাস্থান হেফাযতকারী নারী এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণকারী পুরুষ ও অধিক স্মরণকারী নারী–এদের জন্য আল্লাহ প্রস্তুত রেখেছেন ক্ষমা ও বিরাট প্রতিদান।” (আল-আহযাব ৩৩:৩৫)

“সেদিন আপনি দেখতে পাবেন ঈমানদার পুরুষ ও ঈমানদার নারীদেরকে যে, তাদের নূর ছুটাছুটি করছে তাদের সামনে ও তাদের ডানে। তাদেরকে বলা হবে: আজ তোমাদের জন্য সুসংবাদ এমন জান্নাতের, যার নিম্নদেশ দিয়ে প্রবাহিত হয় নহরসমূহ, সেখানে তোমরা অনন্তকাল থাকবে। ইহাই মহা সাফল্য।” (আল-হাদীদ ৫৭:১২)

“পুরুষ যা অর্জন করে সেটা তার প্রাপ্য অংশ এবং নারী যা অর্জন করে সেটা তার প্রাপ্য অংশ।” (আন-নিসা ৪:৩২)

“পুরুষদের জন্য অংশ আছে সে সম্পত্তিতে যা পিতা-মাতা ও নিকট-আত্মীয়রা রেখে যায়; এবং নারীদের জন্যও অংশ আছে সে সম্পত্তিতে যা পিতা-মাতা ও নিকট-আত্মীয়রা রেখে যায়, হোক তা অল্প কিংবা বেশী। তা অকাট্য নির্ধারিত অংশ।” (আন-নিসা ৪:৭)

“হে যারা ঈমান এনেছ! তোমাদের জন্য বৈধ নয় নারীদের জবরদস্তি উত্তরাধিকার গণ্য করা। আর তাদের আটকে রেখ না তাদের যা দিয়েছ তা থেকে কিছু আত্মসাৎ করতে, কিন্তু যদি তারা কোন প্রকাশ্য ব্যভিচার করে তবে তা ব্যতিক্রম। তোমরা তাদের সাথে সদ্ভাবে জীবনযাপন করবে।” (আন-নিসা ৪:১৯)

“যারা কোন ভাল নারীর প্রতি অপবাদ আরোপ করে, তারপর চারজন সাক্ষী উপস্থিত করে না তাদেরকে আশিটি বেত্রাঘাত করবে এবং কখনও তাদের সাক্ষ্য কবুল করবে না। এরাই প্রকৃত দুষ্ট ও মিথ্যাবাদী।” (আন-নূর ২৪:৪)

“এ কথা সত্য যে, নারীদের উপর পুরুষের যেমন কিছু অধিকার আছে তেমনি পুরুষের উপরও নারীদের কিছু অধিকার আছে।” (মুহাম্মদ সাঃ)

এগুলো ছাড়াও আরো কিছু আয়াত আছে। তবে বাস্তবতা দেখলেন তো। এই পৃথিবীর দ্বিতীয় কোন গ্রন্থে নারী-পুরুষকে এত বেশীবার পাশাপাশি সম্বোধন করা হয়নি এবং নারীদেরকে এভাবে সরাসরি মর্যাদা ও অধিকারও দেওয়া হয়নি।

এবার আসা যাক কোরআনে নারীদের বিরুদ্ধে বহুল প্রচলিত অভিযোগগুলো নিয়ে। তার আগে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়, যেটা অনেকেই কৌশলে এড়িয়ে যায়, সেটা হচ্ছে, যেভাবে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে সেভাবেই যদি ইসলামে নারীদেরকে দেখা হতো তাহলে তো পশ্চিমা বিশ্বের নারীরা ইসলামের দিকে ফিরেও তাকাত না। অথচ পশ্চিমা বিশ্বে ইসলাম গ্রহণকারীদের মধ্যে নারীদের সংখ্যাই বেশী।

অভিযোগ: কোরআনে যেহেতু একজন পুরুষের স্থলে দু’জন নারী সাক্ষীর কথা বলা আছে সেহেতু নারীর বুদ্ধিমত্তাকে পুরুষের চেয়ে কম মনে করা হয়েছে!

জবাব: প্রথমত, কোরআনের কোথাও বলা হয়নি যে পুরুষের চেয়ে নারীর বুদ্ধি কম। দ্বিতীয়ত, যে আয়াতের নামে এই অভিযোগ উত্থাপন করা হয় সেটি সম্ভবত কোরআনের মধ্যে সবচেয়ে বড় আয়াত (২:২৮২)। অথচ পুরো আয়াত না পড়ে সামান্য একটি অংশ বারংবার উদ্ধৃত করে তোতা পাখির মতো বুলি আউড়ানো হয়। আয়াতটি পুরোটা পড়লে কারো মনেই এই ধরণের অস্বাভাবিক চিন্তা-ভাবনার উদয় হওয়ার কথা নয়। কোরআনে একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে ও একটি নির্দিষ্ট প্রেক্ষাপটে একজন পুরুষের স্থলে দু’জন নারী সাক্ষীর কথা বলা আছে, আর সেটি হচ্ছে ঋণ লেন-দেন। তবে তার মানে কিন্তু এই নয় যে, পুরুষের বুদ্ধিমত্তা নারীর বুদ্ধিমত্তার দ্বিগুণ। অতিরিক্ত একজন নারীকে পাশে থাকতে বলা হয়েছে এ কারণে যে, আসল সাক্ষী কোনো কারণে ভুল করলে অপরজন স্মরণ করিয়ে দেবে। এর পেছনে যুক্তি হচ্ছে, কোরআনে যেহেতু পুরুষকে অর্থনৈতিক বিষয়ে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে সেহেতু ধরে নেয়া হয়েছে যে তারা এ বিষয়ে পারদর্শী হবে। একমাত্র ঋণ লেন-দেন ছাড়া অন্যান্য সকল ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের সাক্ষী সমান। তাছাড়া নারীদের কিছু সমস্যা যেমন গর্ভাবস্থা ও রজঃস্রাবও তো মাথায় রাখতে হবে। গর্ভাবস্থায় ও রজঃস্রাব কালে নারীদের যে কিছু সমস্যা হয় সেটা তো প্রমাণিত সত্য, যে সমস্যাগুলো পুরুষদের নেই।

অভিযোগ: বোরখা-হিজাব হচ্ছে পশ্চাৎপদতা ও নির্যাতন-নিপীড়ন এর হাতিয়ার!

জবাব: আধুনিকতা বা সভ্যতা’র অর্থ যদি অর্ধ-উলঙ্গ বুঝায় তাহলে তো আদিম যুগের মানুষ পুরোপুরি আধুনিক ও সভ্য ছিল। কারণ তারা সম্পূর্ণ উলঙ্গ হয়ে ঘুরে বেড়াত। অথচ তাদেরকে অসভ্য বলা হয়! রাস্তা-ঘাটের উলঙ্গ পাগলা-পাগলিকেও তো তাহলে পুরোপুরি আধুনিক ও সভ্য বলতে হয়। কিন্তু সেটা তো কেউই মেনে নেবেন না। পোশাক-পরিচ্ছদ হচ্ছে মানব সভ্যতার নিদর্শনগুলোর মধ্যে একটি। মানুষ আর পশুর মধ্যে মৌলিক দুটি পার্থক্য হচ্ছে সত্য-মিথ্যা বা ভাল-মন্দ বিচারের ক্ষমতা এবং পোশাক-পরিচ্ছদ। এই দুটি মৌলিক পার্থক্য ছাড়া মানুষ আর পশুর মধ্যে তেমন কোনো পার্থক্য নেই।

যাহোক, কোরআনে নিকাব সহ প্রচলিত বোরখার কোনো ইঙ্গিত নেই (২৪:৩০-৩১, ৩৩:৫৯)। হিজাবের ক্ষেত্রে অবশ্য মুসলিম স্কলারদের মধ্যে দ্বিমত আছে। বেশীরভাগ স্কলার কোরআনের আলোকে হিজাবকে সমর্থন করেন। তবে কোরআনে নারীদের পোশাক-পরিচ্ছদের ব্যাপারে স্বাধীনতা ও নমনীয়তা রাখা হয়েছে যেটা দেশ-কাল-পাত্র ভেদে কিছুটা পরিবর্তনশীল হতে পারে। মজার ব্যাপার হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের পুরুষ-সহ প্রায় সকল ইমাম-মৌলভি-মুন্সিরাও কিন্তু বোরখা-হিজাব এর মতো পোশাক পরিধান করেন। অথচ তাদেরকে নির্যাতিত-নিপীড়িত বলা হয় না। এমনকি নারীদেরকে যে উলঙ্গ-অর্ধউলঙ্গ করে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলারের পর্ণগ্র্যাফি ব্যবসা করা হচ্ছে – তার বিরুদ্ধেও টু-শব্দটি পর্যন্ত করা হয় না। গোঁড়া সমালোচকদের দৃষ্টি শুধুই মুসলিম নারীদের পোশাকের দিকে। পোশাক-পরিচ্ছদ হচ্ছে মানুষের ব্যক্তিগত পছন্দের ব্যাপার। সেই ব্যক্তিগত পছন্দ যে কীভাবে মানুষকে নির্যাতিত-নিপীড়িত করতে পারে – তা কোনো ভাবেই মাথায় আসে না। যারা এমন উদ্ভট অপপ্রচার চালায় তাদের অসৎ কোনো উদ্দেশ্য আছে। শারীরিক গঠনের ভিন্নতার কারণে কোরআনে নারীদেরকে কিছুটা বেশী সতর্ক করা হয়েছে মাত্র। অন্যথায় নারী-পুরুষ উভয়কেই শালীন পোশাকের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। নারী-পুরুষ উভয়কেই সততা ও শালীনতা রক্ষার উপরই বেশী গুরুত্ব দেয়া হয়েছে (৭:২৬-২৮, ২:২৬৮, ১৭:৩২)। এ প্রসঙ্গে কোরআন আরো বলে: তাকওয়ার পোশাকই সর্বোত্তম (৭:২৬); তিনি দ্বীনের ব্যাপারে তোমাদের উপর কোনো রকম সংকীর্ণতা আরোপ করেননি (২২:৭৮); দ্বীনের ব্যাপারে কোনো জোর-জবরদস্তি নেই (২:২৫৬)।

অভিযোগ: কোরআনে স্ত্রীকে প্রহারের অধিকার স্বামীকে দেওয়া হয়েছে কিন্তু একই অধিকার স্ত্রীকে না দেয়াতে নারী-পুরুষকে সমান মনে করা হয়নি!

জবাব: প্রথমত, এই ধরাধামে কোরআন আসার আগে থেকেই আস্তিক-নাস্তিক নির্বিশেষে পুরুষরা নারীদেরকে প্রহার করে আসছে। আর তা-ই যদি হয় তাহলে এটি একটি বিশ্বজনীন ফিনমিন্যান এবং কোরআনের সাথে তার কোনো সম্পর্ক নেই।

দ্বিতীয়ত, বিষয়টি মোটেও সেরকম কিছু নয় যেভাবে অপপ্রচার চালানো হয়। কোরআনের ৪:৩৪ আয়াতের সামান্য একটি অংশ উদ্ধৃত করে স্ত্রীকে প্রহার করার কথা লিখা আছে বলে অভিযোগ করা হয়। কিন্তু তারা যেমন পুরো আয়াতটা পড়ে না তেমনি আবার কোরআনে এরকম একটি কথা কেনো লিখা আছে সে বিষয়ে প্রশ্নও করে না। কোনো কারণ ছাড়াই কাউকে প্রহার করার কথা লিখা থাকতে পারে না নিশ্চয়। আস্তিক-নাস্তিক নির্বিশেষে সকল সমাজেই নারীদেরকে কম-বেশী প্রহার করা হয়। এই অতি কমন ফিনমিন্যানকে কোরআনে পজিটিভ থেরাপি হিসেবে ব্যবহার করে পরিবারের অভ্যন্তরীণ সমস্যার সম্ভাব্য একটি সমাধান দেওয়া হয়েছে। তবে প্রহারকে শেষ থেরাপি হিসেবে রাখা হয়েছে। তার আগে দুই ধাপ থেরাপির কথা বলা হয়েছে। তার মানে প্রহারকে উৎসাহিত করা হয়নি নিশ্চয়। এই তিন ধাপ থেরাপিতে কাজ না হলে পরের আয়াতে চতুর্থ একটি সমাধান দেওয়া হয়েছে (৪:৩৫)। এই আয়াত পড়লে যে কেউ বুঝতে পারবেন যে, তার আগের আয়াতে আসলে গুরুতর সমস্যার কথাই বুঝানো হয়েছে। কোরআনের এই ধাপগুলো এতটাই স্বাভাবিক যে, আস্তিক-নাস্তিক নির্বিশেষে অনেকেই কিন্তু প্রয়োজনে ঠিকই প্রয়োগ করেন। অথচ একই কথা কোরআনে লিখা থাকাতে তথাকথিত নারীবাদীদের চোখ নাকি লজ্জায় অন্ধ হয়ে যায়, যেনো মায়ের চেয়ে মাসির দরদই বেশী!

তৃতীয়ত, কোরআনের এই আয়াতে যে আরাবিক শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে সে অনুযায়ী ‘প্রহার’ ছাড়াও নাকি আরো কিছু অর্থ আছে। অনুবাদকরা যদি আগে থেকেই জানতেন যে, কিছু মাসি এই তুচ্ছ একটি বিষয় নিয়ে মশা মারতে কামান দাগাবে তাহলে তারা হয়ত দেখে-শুনে সেরকম একটি শব্দই বসিয়ে দিতেন। সেক্ষেত্রে কিন্তু কারো মুখ খোলারই সুযোগ থাকতো না। অনুবাদকদের দূর্ভাগ্যই বলতে হবে!

চতুর্থত, কোরআন যদি মুহাম্মদ (সাঃ)-এঁর নিজস্ব বাণী হতো এবং তাঁর যদি পুরুষের হাতে অসৎ স্ত্রীকে অচ্ছামতো পিটিয়ে নেয়ার ইচ্ছা থাকতো, যেভাবে অপপ্রচার চালানো হয়, তাহলে ধাপে-ধাপে এত কিছু না বলে সরাসরি বেধরক প্রহার করার কথাই লিখা থাকতো। অতএব, কোরআন যে মুহাম্মদ (সাঃ)-এঁর নিজস্ব নিজস্ব বাণী হতে পারে না – তার স্বপক্ষে অসংখ্য যুক্তি-প্রমাণের মধ্যে এটিও একটি। কোরআন এমন একটি গ্রন্থ যার বিরুদ্ধে যে কোনো সমালোচনা বুমেরাং হতে বাধ্য।

অভিযোগ: কোরআনে যেহেতু নারীদের মাসিক রজঃস্রাবকে রোগ ও অসুচি বলা হয়েছে সেহেতু কোরআন একটি অবৈজ্ঞানিক ধর্মগ্রন্থ!

জবাব: কিছু গোঁড়া সমালোচক কোরআনের ২:২২২ আয়াতের পিকথালের অনুবাদ থেকে ‘Illness’ শব্দের অর্থ ‘রোগ’ বানিয়ে দিয়ে কোরআনকে শুধু অবৈজ্ঞানিক বলেই ক্ষান্ত হয়নি, সেই সাথে আবল-তাবল অনেক কিছুই বলেছে। অথচ ‘Illness’ শব্দের অর্থ হচ্ছে অসুস্থতা, রোগ নয়। রোগ আর অসুস্থতা কিন্তু এক জিনিস নয়। মাসিক রজঃস্রাব কালে নারীরা একটু-আধটু অসুস্থতা অনুভব করতেই পারে। আর রজঃস্রাব কালে যেহেতু শরীর থেকে দুষিত পদার্থ বের হয় সেহেতু এই অবস্থাকে ‘অশুচি’ বলা হয়েছে। যার ফলে আয়াতটাতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কথা এসেছে। পিকথালের অনুবাদে ‘Illness’ শব্দটা দেখেই 'রোগ' বানিয়ে দেয়া হয়েছে। অথচ তার পরে যে “পবিত্র বা পরিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত তাদের নিকট যাবে না” লিখা আছে সেটা দেখার আর প্রয়োজন বোধ করেনি। 'রোগ' আবার 'পরিষ্কার' করা যায় নাকি!

অভিযোগ: কোরআনে স্ত্রীকে শষ্যক্ষেত্রের সাথে তুলনা করে হেয় করা হয়েছে (২:২২৩)!

জবাব: এক্ষেত্রেও কোনো কোনো অনুবাদক ‘শষ্যক্ষেত্র’ শব্দটা ব্যবহারই করেননি। আবারো অনুবাদকদের দূর্ভাগ্য! আয়াতটাতে প্রকৃতপক্ষে কী বুঝাতে চাওয়া হয়েছে সেটা যে কোনো প্রাপ্তবয়স্ক মানুষেরই বোঝার কথা। স্বামী-স্ত্রীকে একটি ন্যাচারাল সিস্টেমের সাথে তুলনা করা হয়েছে। এরকম একটি ন্যাচারাল উদাহরণকে যারা অন্য দৃষ্টিকোণ থেকে দেখে তাদের মন-মানসিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে। নাকি উদাহরণটা কোরআনে আছে বলে নোংরা হয়ে গেছে কিন্তু কোনো সাহিত্যের গ্রন্থে থাকলে সেটা হতো আধুনিকতা ও প্রগতিশীলতা! আস্তিক-নাস্তিক নির্বিশেষে সবাই কিন্তু স্ত্রীকে ‘শষ্যক্ষেত্র’ হিসেবে ব্যবহার করে ঠিকই ফসল/সন্তান ফলাচ্ছেন। অথচ কোরআনের ক্ষেত্রে কারো কারো যেনো লজ্জার সীমা নেই। এই ন্যাচারাল সিস্টেমকে এড়াতে হলে অবাস্তবধর্মী তথা সাধু-সন্ন্যাসী জীবন যাপন ছাড়া অন্য কোনো পথ কিন্তু খোলা নেই। মজার ব্যাপার হচ্ছে কোরআনের ২:২২২ আয়াতে নারীদের মাসিক রজঃস্রাবকে ‘অসুস্থতা’ বা ‘অশুচি’ বলাতে এবং ২:২২৩ আয়াতে স্ত্রীকে ন্যাচারাল শষ্যক্ষেত্রের সাথে তুলনা করাতে কিছু গোঁড়া সমালোচক যেখানে কোরআনকে ‘নারী-বিদ্বেষী ও অবৈজ্ঞানিক’ বলে অপপ্রচার চালাচ্ছে সেখানে প্রফেসর টিভিএন পারসাউড ও প্রফেসর কেইথ মূর এর মতো বিজ্ঞানীরা তারই মধ্যে আবার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা খুঁজে পান!

অভিযোগ: কোরআনে যেহেতু নারীকে পুরুষের অর্ধেক সম্পত্তি দেয়া হয়েছে সেহেতু নারী-পুরুষকে সমান অধিকার দেয়া হয়নি!

জবাব: প্রথমত, কোরআনের আগে কোনো ধর্মগ্রন্থে নারী-পুরুষকে সমান-সমান সম্পত্তি দেয়া তো দূরে থাক নারীকে আদৌ কোন সম্পত্তিই দেয়া হয়নি। এমনকি মুসলিমদের মধ্যে অনেকেই তাদের নারীদেরকে পুরুষের অর্ধেক সম্পত্তিও দেয় না। এই যখন বাস্তবতা তখন ‘অর্ধাংশ’ নিয়ে হৈ-চৈ করার তো কোনো মানে হয় না। দ্বিতীয়ত, সার্বিকভাবে সবকিছু বিচার-বিবেচনা করে কোরআনে নারীকে কিছুটা কম সম্পত্তি দেয়ার পেছনে যথেষ্ট যুক্তি আছে (৪:৭, ৪:১১-১২, ৪:৭৬)। যেমন:

- কোরআনে নারী-পুরুষ উভয়কেই রোজগারের অনুমতি দেওয়া হয়েছে (৪:৩২) অথচ পরিবারের সকল প্রকার ভরণপোষণের দায়িত্ব শুধু পুরুষের ঘাড়েই চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে (৪:৩৪)। অর্থাৎ একজন নারী যা রোজগার করবে সেটা তার নিজস্ব কিন্তু পুরুষের রোজগার থেকে সংসারের সকল প্রকার খরচ বহন করতে হবে। নারীকে কি এখানে বিশেষ সুবিধা দেয়া হলো না? পরিবারের সকল প্রকার ভরণপোষণের ভার নারীদের ঘাড়ে চাপিয়ে দেয়া হলে গোঁড়া সমালোচকদের সারা জীবনের ঘুমই হয়ত হারাম হয়ে যেত!

- বিবাহ বিচ্ছেদের পরও নারীর ভরণপোষণের ভার পুরুষের উপর ন্যাস্ত করা হয়েছে (২:২৪১)। এমনকি বিধবাদের ভরণপোষণের কথাও বলা হয়েছে (২:২৪১)।

- কোরআন অনুযায়ী একজন নারী তার স্বামীর সম্পত্তিরও অংশ পাবে।

- নারী-পুরুষকে সমান-সমান সম্পত্তি দেয়া হলে পুরুষদের ক্ষেত্রে কিছু সমস্যার সৃষ্টি হতো। কারণ নারীরা বিয়ের পর স্বামীর বাড়ি যেয়ে স্বামী-সন্তান সহ সেখানেই স্থায়ী হয়ে যায়। ফলে ভাইয়ের পরিবারের এতগুলো সম্পত্তি কীভাবে স্বামীর বাড়িতে নিয়ে যাবে – এ নিয়ে সমস্যা দেখা দিত। প্রকৃতপক্ষে স্বামীর অর্থনৈতিক অবস্থা খুব খারাপ না হলে অনেক নারীই তাদের পিতার পরিবার থেকে কোনো সম্পত্তি নেয় না।

এবার দিন শেষে সবকিছু যোগ-বিয়োগ করার পর নারীদের ‘অর্ধাংশ’ কি প্রকৃতপক্ষে ‘অর্ধাংশ’-ই থাকবে নাকি বেশী হওয়ার কথা? বিষয়টাকে ইসলামের আলোকে বিচার-বিশ্লেষণ না করে কোরআনকে হেয় করার উদ্দেশ্যে লোক দেখানো নারীবাদী সেজে অযথায় মায়াকান্না করলেই তো আর হবে না।

অভিযোগ: কোরআনে যেহেতু শুধু পুরুষকে একই সাথে একাধিক স্ত্রী রাখার অধিকার দেয়া হয়েছে সেহেতু নারী-পুরুষকে সমান অধিকার দেয়া হয়নি! এমনকি কোরআনে পুরুষের বহুবিবাহ একটি অমানবিক প্রথাও বটে!

জবাব: প্রথমত, পুরুষকে কোনো অধিকার দেয়া মানে সেই একই অধিকার নারীকেও দিতে হবে, তাহলেই কেবল নারী-পুরুষকে সমান অধিকার দেয়া হবে – মুসলিমরা এই ধরণের অবাস্তব যুক্তিতে বিশ্বাস করে না। কারণ নারী-পুরুষের মধ্যে মৌলিক কিছু পার্থক্যের কারণে বাস্তবিক দৃষ্টিকোণ থেকে সর্বক্ষেত্রে সমান অধিকার দেয়া সম্ভব নয়।

দ্বিতীয়ত, মুসলিম নারীরা একই সাথে একাধিক স্বামী রাখার জন্য কান্নাকাটি করে না। কারণ তারা খুব ভাল ভাবেই অবগত যে, একই সাথে একাধিক স্বামী রাখাটা যৌক্তিক বা সুখের কিছু নয়।

তৃতীয়ত, কোরআনের কোথাও সরাসরি বলা হয়নি যে নারীরা একই সাথে একাধিক স্বামী রাখতে পারবে না। নৈতিক ও যৌক্তিক কিছু কারণের উপর ভিত্তি করে এটি মুসলিমদের একটি অবস্থান। ফলে কেউ একই সাথে একাধিক স্বামী রাখতে চাইলে তাকে মুসলিম সমাজের বাইরে যেয়ে এই কাজ করতে হবে।

চতুর্থত, পুরুষের বহুবিবাহ প্রথা যদি এতটাই অমানবিক কিছু হতো তাহলে আব্রাহামের একাধিক স্ত্রী থাকে কীভাবে! সলোমনের এক হাজার স্ত্রী ও উপ-পত্নী থাকে কীভাবে! ডেভিডের একাধিক স্ত্রী ও উপ-পত্নী থাকে কীভাবে! কৃষ্ণের ষোল হাজারেরও বেশী স্ত্রী ও গোপি থাকে কীভাবে! অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরা এতদিন ধরে বহুবিবাহ প্রথা চালু রেখেছিল কীভাবে! এখনও কোনো কোনো সমাজে এই প্রথা চালু আছে। এই তো মাত্র কিছুদিন আগে পশ্চিমা বিশ্বে পুরুষের বহুবিবাহ প্রথার বিরুদ্ধে আইন করা হলো। তার মানে কি এই আইন পাশ করার আগ পর্যন্ত পুরুষের বহুবিবাহ প্রথা মানবিক ছিল? অথচ ইসলামে পুরুষের বহুবিবাহ প্রথার বিরুদ্ধে এমনভাবে অপপ্রচার চালানো হয় যেনো তারা জীবনে কখনো এই প্রথার নামই শোনেনি!

পঞ্চমত, ইসলামে পুরুষের বহুবিবাহ অবশ্য করণীয় কোনো কর্তব্য নয়। বহুবিবাহের জন্য কেউ ভাল মুসলিমও হবে না। বাস্তবে মুসলিমদের মধ্যে খুব কম পুরুষেরই একই সাথে একাধিক স্ত্রী আছে। তার মানে এটি জনপ্রিয় কোনো প্রথা নয় নিশ্চয়। তাছাড়া কাউকে জোর করে হয়ত ধর্ষণ করা যায় কিন্তু জোর করে বিয়ে করে স্ত্রী হিসেবে তো আর রাখা যায় না। এক্ষেত্রে জোর-জবরদস্তির কোনো স্থান নেই (৪:১৯, ২:২৫৬)। তবে কোনো নারী যদি স্ব-ইচ্ছায় অন্য কারো স্ত্রীর সাথে যৌথভাবে থাকতে চায় এবং সেই পুরুষের পক্ষে যদি একাধিক স্ত্রীর দায়িত্ব নেয়া সম্ভব হয় সেক্ষেত্রে তো কারো গাত্রদাহ হওয়ার কথা নয়। একই সাথে একাধিক অবৈধ উপ-পত্নী রাখা গেলে একাধিক বৈধ স্ত্রী রাখা যাবে না কেনো? বরঞ্চ অবৈধ উপ-পত্নীর ক্ষেত্রে কোনো দায়িত্ব যেমন নিতে হয় না তেমনি আবার বিভিন্ন সমস্যারও সৃষ্টি হতে পারে।

ষষ্ঠত, ইসলামে পুরুষের বহুবিবাহকে মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা হয়। কারণ কোরআনে মূলত বিধবা নারীদেরকে বিয়ে করে স্ত্রীর মর্যাদা দিতে বলা হয়েছে (৪:২-৩)। পাশাপাশি তাদের প্রতি ন্যায়বিচারও করতে বলা হয়েছে। তবে এও বলা হয়েছে যে, স্ত্রীদের মধ্যে ন্যায়বিচার করতে না পারলে একজনই যথেষ্ট। অতএব, ইসলামে পুরুষের বহুবিবাহ কোনো সামাজিক সমস্যা তো নয়-ই বরঞ্চ প্রয়োজনে সামাজিক সমস্যার যৌক্তিক ও মানবিক একটি সমাধান হতে পারে।

সপ্তমত, যে পশ্চিমা বিশ্বের অতি সাম্প্রতিক কিছু নিয়ম-নীতিকে ‘আদর্শ’ ধরে নিয়ে ইসলামের সমালোচনা করা হচ্ছে সেই পশ্চিমা বিশ্বেরই হাজার হাজার নারী-পুরুষ প্রতি বছর ইসলাম গ্রহণ করে ইসলাম সম্পর্কে কী বলেন সেটা জানাটা কিন্তু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ বিষয়ে কিছু নমুনা দেখা যেতে পারে:



অভিযোগ: কোরআনে অপ্রাপ্তবয়স্ক বালিকাদের বিয়ে করার কথা লিখা আছে!

জবাব: কোরআনের ৬৫:৪ আয়াতের অংশবিশেষ উদ্ধৃত করে অভিযোগ করা হয় এই বলে যে, কোরআনে অপ্রাপ্তবয়স্ক বালিকাদের বিয়ে করার কথা লিখা আছে। অথচ সেই অংশবিশেষ ‘Those who have no courses’ বলতে বুঝানো হয়েছে যে, শারীরবৃত্তীয় বা অজানা কোনো কারণে নারীদের রজঃস্রাব সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ থাকতে পারে। এখানে অপ্রাপ্তবয়স্ক বালিকাদের বুঝানো হয়নি। তাছাড়া এই আয়াতের কোথাও অপ্রাপ্তবয়স্ক বালিকাদের বিয়ে করার কথা বলা হয়নি। কোরআনে বরঞ্চ প্রাপ্তবয়স্ক বালিকাদের বিয়ে করার ইঙ্গিতই দেয়া আছে (৪:১৯-২১)। এমনকি কোরআনে বিয়েকে "পবিত্র চুক্তি" বলা হয়েছে। অপ্রাপ্তবয়স্ক বালিকাদের সাথে "পবিত্র চুক্তি" করা সম্ভব নয়।

অভিযোগ: কোরআনে অমানবিক হিল্লা বিয়ের কথা লিখা আছে!

জবাব: প্রথমত, কোরআনে "হিল্লা বিয়ে" নামে কোনো বিয়ের কথা লিখা নেই। তাছাড়া তথাকথিত হিল্লা বিয়ের নামে বাংলাদেশে যে প্রথা প্রচলিত আছে সেটি একটি কোরআন-বিরোধী প্রথা। দ্বিতীয়ত, ইসলামে তালাকপ্রাপ্তা নারীকে তার পছন্দ অনুযায়ী অন্য কাউকে বিয়ে করার পূর্ণ স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে (২:২২৯-২৩২)। তৃতীয়ত, ইসলাম নিয়ে যারা অধ্যয়ন করেছেন তারা খুব ভাল করেই জানেন যে, স্ত্রীকে তালাক দিতে চাইলে কিছু ধাপ অতিক্রম করতে হয় (২:২২৬-২৩০)। গোঁড়া সমালোচকদের মনগড়া অপপ্রচারকে ইসলাম সমর্থন করে না। প্রকৃতপক্ষে, ইসলামে তালাককে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে এবং স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কোনো সমস্যা হলে পুনর্মিলনের জন্যও কিছু দিক-নির্দেশনা ও বিভিন্নভাবে তাগাদা দেয়া হয়েছে (৪:৩৪-৩৫, সূরা তালাক)। এই ধাপগুলো অনুসরণ করার পরও তিন তালাক হয়ে গেলে সেই নারী-পুরুষ একে অপরের জন্য অবৈধ হয়ে যায় (২:২৩০)। বিয়ে কোনো পুতুল খেলা নয় যে, ইচ্ছেমতো তালাক দেয়া যাবে আবার ইচ্ছেমতো গ্রহণ করা যাবে। দু’দিন পর হয়ত আবারো তালাক দেয়া হবে। এর পরও তিন তালাকপ্রাপ্তা কোনো নারী যদি অবৈধ সম্পর্ককে বৈধ করে সেই পুরুষের সাথেই আবার ঘর করতে চায় সেক্ষেত্রে সেই নারীকে অন্য কোনো পুরুষের সাথে স্বাভাবিক বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হতে হবে। দ্বিতীয় স্বামী যদি কোনো কারণে তাকে তালাক দেয় সেক্ষেতেই কেবল সেই নারী তার প্রথম স্বামীকে বিয়ে করতে পারবে। এখানে স্মরণ রাখতে হবে যে, কোনো নিরীহ নারীকে কিন্তু জোর করে কারো সাথে বিয়ে করিয়ে দেয়া হচ্ছে না। ফলে বল কিন্তু তিন-তালাকপ্রাপ্তা নারীদের কোর্টেই থাকছে। তারা ইচ্ছে করলেই অন্য কাউকে বিয়ে করে কোরআনের এই শাস্তি এড়াতে পারেন। তবে এখানে অমানবিকতার কোনো প্রশ্নই ওঠে না। বিয়ে আবার অমানবিক হয় কীভাবে! বড়জোর অবমাননাকর হতে পারে।

অভিযোগ: কোরআনে নারী-নারী ব্যভিচারের ক্ষেত্রে মৃত্যু পর্যন্ত ঘরে আবদ্ধ করে রাখার বিধান আছে অথচ পুরুষ-পুরুষ ব্যভিচারের ক্ষেত্রে কোনো শাস্তির বিধান নেই! এমন বৈষম্যপূর্ণ বিধান থাকার পরেও নারী-পুরুষ সমান হয় কীভাবে!

জবাব: প্রথমত, গোঁড়া সমালোচকরা কখনোই কোরআনের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগকে সঠিকভাবে উপস্থাপন করে না। কারণ কোরআনে পুরুষ-পুরুষ ব্যভিচারের ক্ষেত্রেও শাস্তির বিধান আছে। এই বিষয়টি কোরআনের ৪:১৫-১৭ আয়াতে পাওয়া যাবে। দ্বিতীয়ত, যে কোনো সমাজের দৃষ্টিতে ব্যভিচারকে একটি অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়। ফলে কেউ নিজে অপরাধী না হলে শাস্তির জন্য তো ভয় পাওয়ার কথা না, তা যে ধরণের শাস্তিই হোক না কেনো। তৃতীয়ত, নারী-নারী ব্যভিচারের ক্ষেত্রে সরাসরি শাস্তির কথা বলা হয়নি। তাদের ক্ষেত্রে শাস্তি তখনই হবে যখন নিদেনপক্ষে চারজন লোক ব্যভিচারের পক্ষে সাক্ষ্য দেবে, যেটি বাস্তবিক দৃষ্টিকোণ থেকে প্রায় অসম্ভব। চতুর্থত, নারীদের ক্ষেত্রে কোনো রকম শারীরিক শাস্তির বিধান নেই। তাদেরকে আমৃত্যু পর্যন্ত ঘরে আবদ্ধ করে রাখতে বলা হয়েছে। এও বলা হয়েছে যে, “তাদেরকে ঘরে আবদ্ধ করে রাখবে যে পর্যন্ত না তাদের মৃত্যু হয় অথবা আল্লাহ তাদের জন্য অন্য কোনো ব্যবস্থা করেন।” অন্যদিকে পুরুষ-পুরুষ ব্যভিচারের ক্ষেত্রে কোনো সাক্ষী ছাড়াই সরাসরি শাস্তির বিধান আছে। সর্বোপরি, তার পরের আয়াতে খুব পরিষ্কার করেই বলা আছে, “অবশ্যই আল্লাহ তাদের তওবা কবুল করেন, যারা ভুলবশত মন্দ কাজ করে ফেলে, তারপর অবিলম্বে তওবা করে; এরূপ লোকের তওবাই আল্লাহ কবুল করেন।” (৪:১৭) অতএব, আল্লাহর কাছে নারী-পুরুষ আসলেই সমান। তবে প্রকৃতিগতভাবে নারী-পুরুষের মধ্যে কিছু পার্থক্যের কারণে পার্থিব দু-একটি ক্ষেত্রে উনিশ-বিশ হতে পারে।

অভিযোগ: কোরআনে যেহেতু ক্রীতদাসীদের সাথে সেক্স করার কথা লিখা আছে সেহেতু কোরআন একটি অমানবিক ধর্মগ্রন্থ!

জবাব: প্রথমত, কোরআনের কোথাও ক্রীতদাস প্রথার কথা লিখা নেই। ক্রীতদাস প্রথা সম্পূর্ণ ভিন্ন জিনিস। কোরআনে যুদ্ধবন্দীদেরকে রক্ষণাবেক্ষণ বা আশ্রয় দানের জন্য নিজের অধীনে রাখার কথা বলা আছে এবং কেউ চাইলে নারীদের সাথে সেক্স করার অনুমতি দেয়া হয়েছে। তবে তাদের সাথে সেক্স করা যেমন কর্তব্য বা পবিত্র কিছু নয় তেমনি আবার তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধেও কিছু করা যাবে না (২৪:৩৩)। প্রকৃতপক্ষে তাদের সাথে কেউ সেক্স করতে চাইলে তাদেরকে বিয়ে করার জন্য তাগাদা দেয়া হয়েছে (৪:২৫)। তবে যুদ্ধবন্দীদের ব্যাপারটা সময়ের সাথে পরিবর্তিত হয়েছে বিধায় তাদের সাথে সেক্স করার প্রশ্ন আর আসে না। দ্বিতীয়ত, কোরআনে সেক্স এর কথা শুনলে কারো কারো মুখমন্ডল লজ্জায় ফেকাসে হয়ে যায় কেনো, সেটাও কিন্তু বোঝা যায় না। তারা সাধু-সন্ন্যাসী নাকি! নাকি তারা নতুন করে নৈতিকতার উপর ওহী পেয়েছে, যেখানে যুদ্ধবন্দী নারীদের সাথে সেক্সকে অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে! সেক্স অমানবিক কিছু না হলে যুদ্ধবন্দী নারীদের সাথে সেক্স করা অমানবিক হবে কেনো। কোরআনে যুদ্ধবন্দী নারীদের সাথে সেক্স নিয়ে কারো কারো লজ্জার সীমা নেই। এ যেনো মায়ের চেয়ে সৎ-মায়ের দরদই যেন বেশী! অথচ কোরআনে দাস-দাসী ও যুদ্ধবন্দীদের সাথে সদ্ব্যবহার এবং তাদেরকে মুক্ত করে দেওয়ার কথা বিভিন্নভাবে এবং বহুবার বলা হয়েছে। এও বলা হয়েছে যে, এটি একটি অত্যন্ত মহৎ কাজ (৯০:১২-১৩, ২:১৭৭, ৪৭:৪, ৯:৬০, ৫:৮৯, ৪:২৫, ৪:৯২, ২৪:৩৩, ৫৮:৩)।

লক্ষ্যণীয় বিষয়:

- ধর্মীয় প্রভাব ছাড়াও বিভিন্ন সমাজে বিভিন্ন রকম পোশাকের প্রচলন আছে। নারীদেরকে উলঙ্গ-অর্ধউলঙ্গ করে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলারের পর্ণগ্র্যাফি ব্যবসাও করা হচ্ছে। অথচ বিশেষ একটি ধর্মের অনুসারীদের মধ্যে নারীদের পোশাককে পশ্চাৎপদতা ও নির্যাতন-নিপীড়ন এর হাতিয়ার হিসেবে দেখানো হচ্ছে, যেখানে নির্যাতন-নিপীড়ন বা অধিকার হরণের কিছুই নাই।

- কোরআনে একটি নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে ও একটি নির্দিষ্ট প্রেক্ষাপটে একজন পুরুষের স্থলে দু’জন নারী সাক্ষীর কথা বলা আছে, যেটি আসলে খুবই বিরল ঘটনা এবং যেখানে নির্যাতন-নিপীড়ন বা অধিকার হরণের কিছুই নাই।

- পরিবারের মঙ্গলের জন্য শুধুমাত্র অসৎ স্ত্রীকে ধাপে ধাপে কিছু থেরাপির মাধ্যমে সঠিক পথে নিয়ে আসার সমাধান দেয়া হয়েছে, যেখানে সার্বিকভাবে নারীদের নির্যাতন-নিপীড়ন বা অধিকার হরণের কিছুই নাই।

- মাসিক রজঃস্রাব কালে নারীরা অসুস্থতা অনুভব করতেই পারে। আর রজঃস্রাব কালে যেহেতু শরীর থেকে দূষিত পদার্থ বের হয় সেহেতু এই অবস্থাকে অশুচি বলা হয়েছে। এখানে নির্যাতন-নিপীড়ন বা অধিকার হরণের কিছুই নাই।

- সন্তান জন্মানোর জন্য স্বামী-স্ত্রীকে একটি ন্যাচারাল সিস্টেমের সাথে তুলনা করা হয়েছে, যেখানে নির্যাতন-নিপীড়ন বা অধিকার হরণের কিছুই নাই।

- সার্বিকভাবে সবকিছু বিবেচনা করে নারীকে কিছুটা কম সম্পত্তি দেয়ার পেছনে যথেষ্ট যুক্তি আছে, যেখানে নির্যাতন-নিপীড়ন বা অধিকার হরণের কিছুই নাই।

- একই সাথে একাধিক স্ত্রী রাখার অধিকার দিয়ে পুরুষকেই নির্যাতন-নিপীড়ন করা হয়েছে। কারণ একই সাথে একাধিক স্ত্রীর ভরণপোষণ করা সহজ ব্যাপার নয়। স্রেফ সেক্স এর জন্য কেউ ইচ্ছে করলে তো উপ-পত্নী রাখতে পারে কিংবা পতিতালয়ে যেতে পারে। ফলে এখানে নির্যাতন-নিপীড়ন বা অধিকার হরণের কিছুই নাই।

- কোরআনের কোথাও অপ্রাপ্তবয়স্ক বালিকাদের বিয়ে করার কথা বলা হয়নি। বরঞ্চ প্রাপ্তবয়স্ক বালিকাদের বিয়ে করার ইঙ্গিতই দেয়া আছে।

- তথাকথিত হিল্লা বিয়ের ক্ষেত্রে তিন তালাকপ্রাপ্তা নারীদের কোর্টেই বল ছুঁড়ে দেয়া হয়েছে। তারা ইচ্ছে করলেই এই শাস্তি বা অপমানকে এড়াতে পারেন। এখানে সার্বিকভাবে নির্যাতন-নিপীড়ন বা অধিকার হরণের কিছুই নাই।

- নারী-নারী ও পুরুষ-পুরুষ ব্যভিচারের ক্ষেত্রে কিছুটা আলাদাভাবে শাস্তির বিধান দেয়া হয়েছে। এখানে নিরীহ নারীদের উপর নির্যাতন-নিপীড়ন বা তাদের অধিকার হরণের কিছুই নাই।

- কোরআনে দাস-দাসীদের সাথে সদ্ব্যবহার এবং তাদেরকে মুক্ত করে দেয়ার কথা বিভিন্নভাবে এবং বহুবার বলা হয়েছে। যুদ্ধবন্দী নারীদের সাথে কেউ সেক্স করতে চাইলে তাকে বিয়ে করার তাগাদাই দেয়া হয়েছে। এখানে সার্বিকভাবে নির্যাতন-নিপীড়ন বা অধিকার হরণের কিছুই নাই।

এই একবিংশ শতাব্দীতেও যেখানে কোনো কোনো ধর্ম বা কালচারের প্রভাবে প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ নারী শিশুকে হত্যা করা হচ্ছে সেখানে কোরআনে এই চরম অমানবিক প্রথাকে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে (১৬:৫৮-৫৯, ৮১:৮-৯, ১৭:৩১)। এই অধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞানের যুগেও যেখানে কোনো কোনো দেশে ধর্ম বা কালচারের প্রভাবে যৌতুকের জন্য অনেক নারীকে বিভিন্নভাবে নির্যাতিত-নিপীড়িত থেকে শুরু করে হত্যার শিকার পর্যন্ত হতে হচ্ছে সেখানে কোরআনে উল্টোদিকে নারীকেই বিয়ের সময় উপহার দিতে বলা হয়েছে (৪:৪)।

কোরআনে নারীদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগগুলো তুলে ধরা হলো তার বেশী কিছু নেই এবং এই অভিযোগগুলোর প্রায় সবই আস্তিক-নাস্তিক নির্বিশেষে সকল সমাজেরই কম-বেশী সাধারণ ফিনমিন্যান। অথচ নারীদের বিষয়ে কোরআনের মূল শিক্ষাকে কৌশলে এড়িয়ে যেয়ে এখানে সেখানে থেকে বিচ্ছিন্নভাবে কিছু আয়াতের অংশবিশেষ বেছে নিয়ে সেগুলোর সাথে মুসলিম পরিবারে সংঘঠিত বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনাকে যোগ করে মনের মাধুরি মিশিয়ে কোরআনকে নারী-বিদ্বেষী বলে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।

আমি ব্যক্তিগতভাবে নারী-পুরুষের সম-অধিকারে বিশ্বাসী। তবে এক্ষেত্রে মিলিয়ন ডলার প্রশ্ন হচ্ছে নারী-পুরুষের সম-অধিকার বলতে আসলে কী বুঝানো হয়? কে এই সম-অধিকার নির্ধারণ করবে? সবাই সেটা মেনে নেবে কেন? অত্যন্ত স্বাভাবিকভাবেই এ বিষয়ে নানা মনির নানা মত থাকবে। এমনকি স্থান-কাল-পাত্র ভেদেও বিভিন্ন রকম মতামত থাকতে পারে। ফলে এই বিষয়টি নিয়ে কোনো ভাবেই ঐক্যমতে পৌঁছানো সম্ভব নয়। আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে কোরআনে নারী-পুরুষকে সার্বিকভাবে সমান মর্যাদা ও অধিকার দেয়া হয়েছে। ফলে কোরআনের কোনো বিষয়ে সমালোচনা করতে চাইলে অবশ্যই একটি গ্রন্থ হাতে করে নিয়ে আসতে হবে। কারণ যৌক্তিক বা বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে রেফারেন্স ছাড়া ব্যক্তিগত মতামতের কোনো মূল্য নেই।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১০:০৮
৭৭টি মন্তব্য ৩১টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছায়ানটের ‘বটমূল’ নামকরণ নিয়ে মৌলবাদীদের ব্যঙ্গোক্তি

লিখেছেন মিশু মিলন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



পহেলা বৈশাখ পালনের বিরোধীতাকারী কূপমণ্ডুক মৌলবাদীগোষ্ঠী তাদের ফেইসবুক পেইজগুলোতে এই ফটোকার্ডটি পোস্ট করে ব্যঙ্গোক্তি, হাসাহাসি করছে। কেন করছে? এতদিনে তারা উদঘাটন করতে পেরেছে রমনার যে বৃক্ষতলায় ছায়ানটের বর্ষবরণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

বয়কটের সাথে ধর্মের সম্পর্কে নাই, আছে সম্পর্ক ব্যবসার।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৫০


ভারতীয় প্রোডাক্ট বয়কটটা আসলে মুখ্য না, তারা চায় সব প্রোডাক্ট বয়কট করে শুধু তাদের নতুন প্রোডাক্ট দিয়ে বাজার দখলে নিতে। তাই তারা দেশীয় প্রতিষ্ঠিত ড্রিংককেও বয়কট করছে। কোকাকোলা, সেভেন আপ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানুষের জন্য নিয়ম নয়, নিয়মের জন্য মানুষ?

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৫:৪৭



কুমিল্লা থেকে বাসযোগে (রূপান্তর পরিবহণ) ঢাকায় আসছিলাম। সাইনবোর্ড এলাকায় আসার পর ট্রাফিক পুলিশ গাড়ি আটকালেন। ঘটনা কী জানতে চাইলে বললেন, আপনাদের অন্য গাড়িতে তুলে দেওয়া হবে। আপনারা নামুন।

এটা তো... ...বাকিটুকু পড়ুন

একজন খাঁটি ব্যবসায়ী ও তার গ্রাহক ভিক্ষুকের গল্প!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৪


ভারতের রাজস্থানী ও মাড়ওয়ার সম্প্রদায়ের লোকজনকে মূলত মাড়ওয়ারি বলে আমরা জানি। এরা মূলত ভারতবর্ষের সবচাইতে সফল ব্যবসায়িক সম্প্রদায়- মাড়ওয়ারি ব্যবসায়ীরা ঐতিহাসিকভাবে অভ্যাসগতভাবে পরিযায়ী। বাংলাদেশ-ভারত নেপাল পাকিস্তান থেকে শুরু করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×