somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইলেকট্রিক সার্কিট নিয়ে সংক্ষিপ্ত টিউটরিয়াল (পর্ব-৬)

১৫ ই জুন, ২০১১ রাত ৯:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

[পর্ব-১|পর্ব-২|পর্ব-৩|পর্ব-৪|পর্ব-৫] আজকের পর্বে থেভেনিন’স ও নর্টন’স থিয়রেম এবং তাদের প্রয়োগ নিয়ে আলোচনা করা হবে। ইলেকট্রিক সার্কিট বিশ্লেষণের জন্য থেভেনিন’স থিয়রেম একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়োজনীয় থিয়রেম। পাওয়ার সিস্টেমের ক্ষেত্রে এই থিয়রেম বিশেষ ভাবে ব্যবহার করা হয়। থেভেনিন’স থিয়রেম অনুযায়ী একাধিক সোর্স ও রোধকের সমন্বয়ে গঠিত যে কোন দুই-টার্মিনাল বিশিষ্ট লিনিয়ার সার্কিটকে একটি ভোল্টেজ সোর্স ও একটি সিরিজ রোধক দ্বারা প্রতিস্থাপন করা যায়। নিচের ডায়াগ্রামটি লক্ষণীয় যেখানে বাম পাশের ব্ল্যাক বক্সের মধ্যে একাধিক ভোল্টেজ সোর্স, একাধিক কারেন্ট সোর্স, ও একাধিক রোধক আছে। ব্ল্যাক বক্সের মধ্যে জটিল সার্কিটকে একটি ভোল্টেজ সোর্স ও একটি সিরিজ রোধক দ্বারা প্রতিস্থাপন করা হয়েছে, ডান পাশের সার্কিট লক্ষণীয়। ডান পাশের সরল সার্কিটকে মূল সার্কিটের থেভেনিন-সমতুল্য সার্কিটও বলা হয়।



দুই-টার্মিনাল বিশিষ্ট যে কোন জটিল সার্কিটের থেভেনিন-সমতুল্য সার্কিট (Rth ও Vth) পেতে হলে নিম্নের ধাপগুলো অনুসরণ করতে হবে:

ধাপ-১: সবগুলো ভোল্টেজ ও কারেন্ট সোর্সকে নিষ্ক্রিয় করে টার্মিনাল A ও B এর মধ্যে তুল্য রোধ বের করতে হবে। এই তুল্য রোধই হচ্ছে Rth. Rth কে থেভেনিন-সমতুল্য রোধও বলা হয়। এই পদ্ধতি শুধুমাত্র ইনডিপেনডেন্ট সোর্স এর ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।

ধাপ-২: মূল সার্কিটে টার্মিনাল A ও B এর মধ্যে কোন রোধক থাকলে সেটিকে খুলে ফেলে যে কোন পদ্ধতির সাহায্যে A ও B এর মধ্যে ভোল্টেজ নির্ণয় করতে হবে। A ও B এর মধ্যে ভোল্টেজই হবে Vth, যাকে ওপেন-সার্কিট ভোল্টেজও বলা হয়।

ধাপ-৩: Rth ও Vth এর মান পাওয়ার পর থেভেনিন-সমতুল্য সার্কিট আঁকতে হবে। উপরের ডায়াগ্রামে ডান পাশের সার্কিট দ্রষ্টব্য।

উল্লেখ্য যে, ধাপ ১ ও ২ একে-অপর থেকে স্বতন্ত্র। ফলে যে কোনটি আগে সম্পন্ন করা যায়। এবার একটি উদাহরণ দেয়া যাক। নিচের সার্কিটে একটি ভোল্টেজ সোর্স ও চারটি রোধক আছে। টার্মিনাল A ও B এর মধ্যে থেভেনিন-সমতুল্য সার্কিট বের করতে হবে।



ধাপ-১ অনুযায়ী ভোল্টেজ সোর্সকে নিষ্ক্রিয় করলে নিচের সার্কিট পাওয়া যাবে। এই সার্কিটে টার্মিনাল A ও B এর মধ্যে তুল্য রোধের মান হবে, RAB = Rth = R1 + [(R2 + R3)||R4] = 1 + [(1 + 1)||2] = 2 kΩ.



ধাপ-২ অনুযায়ী মূল সার্কিটে টার্মিনাল A ও B এর মধ্যে ভোল্টেজ হবে, VAB = Vth = V1 (R2 + R3)/(R2 + R3 + R4) = 15 (1 + 1)/(1 + 1 + 2) = 7.5 V. উল্লেখ্য যে, টার্মিনাল A ও B যেহেতু ওপেন সেহেতু রোধক R1 এর মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত কারেন্ট হবে শূন্য; ফলে R1 এর আড়াআড়ি বিভব পার্থক্যও শূন্য হবে।



Rth ও Vth এর মান পাওয়ার পর নিচের মতো করে থেভেনিন-সমতুল্য সার্কিট আঁকতে হবে। মূল সার্কিটে টার্মিনাল A ও B এর মধ্যে কোন রোধক খুলে থাকলে সেটিকে এখানে পুনরায় যুক্ত করতে হবে।



নর্টন’স থিয়রেম: নর্টন’স থিয়রেম অনুযায়ী একাধিক সোর্স ও রোধকের সমন্বয়ে গঠিত যে কোন দুই-টার্মিনাল বিশিষ্ট লিনিয়ার সার্কিটকে একটি কারেন্ট সোর্স ও একটি সমান্তরাল রোধক দ্বারা প্রতিস্থাপন করা যায়। নিচের ডায়াগ্রামে বাম পাশের ব্ল্যাক বক্সের মধ্যে একটি জটিল সার্কিট ও ডান পাশে সেটির নর্টন-সমতুল্য সার্কিট দেখানো হয়েছে।



এখানে RNo হচ্ছে নর্টন-সমতুল্য রোধ এবং INo হচ্ছে নর্টন-সমতুল্য কারেন্ট। নর্টন-সমতুল্য সার্কিট দু-ভাবে পাওয়া যেতে পারে। ইতোমধ্যে যদি থেভেনিন-সমতুল্য সার্কিট জানা থাকে তাহলে খুব সহজেই সোর্স রূপান্তরের সাহায্যে নর্টন-সমতুল্য সার্কিট পাওয়া যায়, এবং বিপরীতটাও সত্য। এজন্য থেভেনিন-সমতুল্য সার্কিট ও নর্টন-সমতুল্য সার্কিটকে একে-অপরের সমতুল্য বলা হয়। সম্পর্কগুলো নিম্নরূপ,

Rth = RNo

INo = Vth/Rth

Vth = INo RNo



উপরে বাম পাশের সার্কিটকে নর্টন-সমতুল্য সার্কিট এবং ডান পাশেরটিকে থেভেনিন-সমতুল্য সার্কিট বলা হয়। স্বতন্ত্র পদ্ধতিতেও নর্টন-সমতুল্য সার্কিট পাওয়া যায়। যেমন Rth ও RNo বের করার পদ্ধতি একই এবং প্রকৃতপক্ষে Rth = RNo. অন্যদিকে নর্টন-সমতুল্য কারেন্ট INo পেতে হলে টার্মিনাল A ও B কে শর্ট সার্কিট করে যে কোন পদ্ধতির সাহায্যে A ও B এর মধ্যে কারেন্ট বের করতে হবে। এই কারেন্টই হবে INo, যাকে শর্ট-সার্কিট কারেন্টও বলা হয়। RNo ও INo এর মান পাওয়ার পর উপরে বাম পাশের সার্কিটের মতো করে নর্টন-সমতুল্য সার্কিট আঁকতে হবে।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে ডিসেম্বর, ২০১১ ভোর ৪:৫৪
১১টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×