আমেরিকার সরকার তার ৪বছর মেয়াদে কি পরিমাণ ঋণ নিতে পারবে, উহার পরিমাণ নির্ধারিত করা থাকে; যদি কোন বিশেষ কারণে ইহার চেয়ে বেশী ঋণ নিতে হয়, কংগ্রেস থেকে উহা পাশ করায়ে নিতে হয়। কিন্তু বাংলাদেশ সরকার যখন ঋণ নেয়,পার্লামেন্ট সদস্যরা হয়তো মিডিয়া থেকে শোনে।
বাংলাদেশের ঋণ ১০৫ বিলিয়নের উপরে চলে গেছে, যথাসম্ভব; আমেরিকার বর্তমান ঋণ সাড়ে ২৪ ট্রিলিয়নের কাছাকাছি, ইহা ফাইন্যান্স ইতিহাসের জন্য এক বিশাল ঘটনা; আমেরিকান সরকারের ঋণ মেইনটেইন করতে প্রায় ৫০ বিলিয়ন ডলার খরচ হয়, ইহা বাংলাদেশের আসল বাজেটের সমান, কিংবা কাছাকাছি; কিন্তু আমেরিকা বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতি ( ২১ ট্রিলিয়ন)।
বাংলাদেশের অর্থনীতির সাইজ ( ৪৩ তম স্হান ), সরকারী আয়, বাজেট ও মাথাপিছু আয়ের তুলনায় ১০৫ বিলিয়ন ডলার ঋণ হচ্ছে, খুবই ভারী ঋণ।
বাংলাদেশ সরকারের সাম্প্রতিক আইএমএফ ঋণ নিয়ে আমি ব্লগে ১টি পোষ্ট দিয়েছিলাম, বাংলাদেশ সরকার ঋণ পাচ্ছে; কোন একজন ব্লগার কমেন্টে বারবার বলছিলেন যে, বাংলাদেশ ঋণ চেয়েছে, তবে, উহা পাচ্ছে কিনা পরিস্কার নয়, আমি কেন বলছি পাচ্ছে! এতে একটা ব্যাপার পরিস্কার হলো যে, অনেকেই এসব ব্যাপারে খোঁজ খবর রাখেন না। ব্লগারেরাই যদি এসব ব্যাপার না জানেন, দেশের বাকীদের অবস্হা কি?
গত ২সপ্তাহে মিডিয়ার সংবাদ ও ব্লগের ২/৩টি পোষ্ট পড়ে বুঝলাম যে, আইএমএফ সেসব শর্ত দিয়েছে, সেগুলো ভয়ংকর কঠিন শর্ত, অনেকটা 'স্বাধীনতা বিক্রয়' করে দেয়ার মতো। আমার মতে, আইএমএফ এবারই প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ সরকারকে কিছু দরকারী শর্ত মানতে বাধ্য করতে পেরেছে।
এবারের শর্তগুলো খুবই সাধারণ ও বাংলাদেশের জন্য দরকারী শর্ত; বাংলাদেশের প্রশাসনের লোকেরা এই বিপদের দিনে সব শর্তে অবশ্যই "হ্যাঁ" বলেছে, যা তারা কোন দিনও মেনে চলবে না; সর্বোপরি, আজ থেকে ২/৩ বছরে বিশ্বের অর্থনীতি একটু ভালো হলে, আইএমএফ নিজেই এসব শর্তের কথা ভুলে যাবে, এবং আইএমএফ'এর কর্মচারীরা কে কোথায় থাকবে কেহ জানে না। বাংলাদেশের ব্যুরোক্রটরা কোন নিয়ম মেনে চলে?
আসলে, দেশের অবস্হা দেখে মনে হচ্ছে, বর্তমান অবস্হায় ঋণটার খুব একটা দরকার নেই; সরকার নিয়েছে রিসেশানের ভয়ে, ইহাকে ব্যবহার করার জন্য কিসব প্ল্যান জমা দিয়েছে শুধু আল্লাহ জানেন; যদি বিশ্ব রিসেশানে গার্মেন্টস থেকে রেভেনিউ কমে, তখন হয়তো দরকার হবে; না'হয় বরাবরের মতো ইহা কোথায় গেছে হদিস থাকবে না।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই নভেম্বর, ২০২২ সকাল ১০:৩৮