somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রসঙ্গ 'লেখাজোকা সংকলন', কিছু উচ্ছ্বাস এবং অন্যান্য ।

১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ১০:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

একটা সময় ছিল দু চার পাড়া মহল্লা ঘুরে একজন লেখক কিংবা কবি পাওয়া দুষ্কর হতো। আর বই বের করার মত লেখক ছিলো হাতেগোনা। সে সময়কার একটা প্রবাদ ছিলো, বই কিনে কেউ দেউলিয়া হয় না। কিন্তু আজকের সময়ে এই প্রবাদ কতটা সত্য তা আমার জানা নেই । তবে ভাবার্থে মানুষ বই কিনে যেমন দেউলিয়া না হওয়ার কথা বলা হয়েছে সে যায়গায় এখন বই কিনে মানুষ ঠকে এই কথাটার গুরুত্ব বেড়েছে বহুগুণ। কারণ এখন লেখক কবি ঘরে ঘরে জন্ম নিচ্ছে! প্রতি বই মেলায় শত শত বই বের হয় নতুন লেখকদের, বছরজুড়ে তো আরো কিছু বের হয়। এই দূর্মূল্যের বাজারে মানুষের মৌলিক চাহিদাগুলো নিজ গরজে মেটাতে যে হিমশিম খেতে হয় সেখানে বইও অনেক হিসেব নিকেশ করে কিনতে হয়।এছাড়াও বছরজুড়ে অনেক পাঠ্যপস্তুক, খাতাপত্রতো কিনতেই হয় । এই শিক্ষিত হওয়ার দৌড়ঝাঁপের ফাঁদে পড়ে 'আউট অফ দ্যা বক্সের' বইপত্র ক্রয় করাটা হয়ে গেছে সামর্থের ব্যাপার ! তাই মানুষকে বই কিনতে হিসেব নিকেশ করতেই হয়! ধরুন দু'শত টাকা দিয়ে আপনি একটা বই কিনেছেন, যদি বইটা না কিনতেন সেই টাকা দিয়ে দেশের আর্থিক মাপকাঠির হিসেবে ৪ থেকে ৫ কেজি চাল কিনতে পারতেন। সেই চালে আপনার ৮ থেকে ১০ দিন চলতো। এক কেজি মাছ কিংবা মুরগিও কিনতে পারতেন, আট দশ কেজি আলুও কিনতে পারতেন। এতে আপনার পরিবারের পুষ্টি সাধন হয়। আপনার পরিবারের স্বাস্থের সুরক্ষা হয়। তাহলে শুধু শুধু একটা বই কেন কিনবেন?

মুলত বইয়ের ব্যাপারটা মানসিক স্বাস্থের সাথে সম্পর্কিত। আপনার পরিবারের মনস্ত্বাত্বিক পুষ্টির জন্য আপনি বই কিনবেন। কিন্তু যদি অনুরোধ রাখতে গিয়ে টাকা গচ্ছা দিয়ে মানহীন বই কিনে আনলেন। আদতে আপনার পরিবারের মানসিক পুষ্টি তো মিটলোই না উল্টো মানসিক পুষ্টিহীনতা দেখা দিলো! বইগুলো পড়ে আফসোসে ভুগলেন এই ভেবে যে অর্থটা জলে গেল এবং কিছুদিন পর পুরানো পেপার পত্রের সাথে বইগুলো কেজি দরে বিক্রি করে দিলেন! যে লেখক নিজের পকেটের টাকা খরচ করে সখ আহ্লাদ মেটানোর জন্য কিংবা নিজেকে লেখকের তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করার জন্য মানহীন একটা বই বের করলো তার খরচ হওয়া অর্থ উঠানোর দায়িত্ব আপনার না মোটেও। আমার মনে হয়, এমন অনুরোধ না রাখাতে কোন পাপ নেই। এর জন্য উল্টো ওই লেখকদের জবাবদিহি করা দরকার কেন তারা সাহিত্যের ক্ষতি সাধন করলো। তাই আমি মনে করি আপনার লেখক হওয়াকে যদি আপনি জরুরী মনে করেন সেক্ষেত্রে নিজেকে সেভাবে গড়ে তুলুন। অন্যের পকেটের ক্ষতি সাধন করার জন্য লেখক হওয়ার দরকার নেই।

যাই হোক, এসব বিক্ষিপ্ত ভাবনাগুলো আমাকে বই বের করা থেকে একশো হাত দূরে রাখে। লেখক হওয়ার জন্য যে যোগ্যতা, যে ভাবনার বিস্তৃতি, যে কল্পনা শক্তি এবং যে ধৈর্য্যশীলতার দরকার এর কোনটাই তেমনভাবে আমার মধ্যে নেই। তাই ওইদিকে আগানো থেকে নিজেকে বিরত রাখি।

একদিন অথবা রাতে সামহ্যোয়ার ইন ব্লগের 'শায়মা' নক দিয়ে বললো, ওরা একটা সংকলন করছে আমার একটা কবিতা চাই। এটা শুনে আমি ঘাবড়ে যাই। সংকলনে আরো অনেকের লেখা থাকবে জানালো। সে আশ্বাস থেকে আমি তাকে স্বাধীনতা দিয়ে দেই যে আমার ব্লগের যে কবিতাগুলো আছে সেখান থেকে বেছে নিতে। এবং সে একটা বেছে নিলো 'হৃদয়ের খামে ফাল্গুন'। বেছে নেয়ার স্বাধীনতা তাকে দিয়েছি মূলত নিজে বাঁচার জন্য! হা হা! কারণ আমার লেখা সম্পর্কে আমার সুস্পষ্ট ধারণা নেই। আমি যা লিখি তাই আমার কাছে মনে হয় ভালো লেখা হয় নি। কেন এমন মনে হয় তার সুনির্দিষ্ট কারণ আমার জানার বাইরে।

যখন বইয়ের সূচিপত্রের স্ক্রিনশট ফাঁস হলো তখন দেখলাম আরো যারা যারা লিখেছে তাদের মধ্যে অনেকের লেখা ব্লগ অথবা ফেসবুকে পড়েছি। সে লেখাগুলো আমাকে হতাশ করে নি, পড়ে আনন্দ পেয়েছি। ঠিক তখনি আমার মনে হলো যাক এই লেখিয়েদের লেখার ফাঁকে দিয়ে আমি বেঁচে গেলাম ! এবং মজার ব্যাপার হলো আমার কবিতাটা কবিতার লিস্টে সবার শেষে, তাই আমার ধারণা এর আগের লেখাগুলো পড়ে পাঠক আর্থিক দিক থেকে ঠকা থেকে রক্ষা পেয়েই যাবেন । আর আমার লেখাটা বোনাস হিসেবে লসের খাতায় গেলেও ব্যালেন্সশিটে তেমন একটা ইফেক্ট পড়বে না ! হা হা !

যে বইটা নিয়ে এতক্ষণ বললাম সে বইটার নাম '' লেখাজোকা সংকলন'' । সম্পাদনায় ছিলেন শায়মা এবং গিয়াস উদ্দিন লিটন যৌথভাবে । এই সংকলনের শুরুর দিকের গল্প নিয়ে কিছু পোস্ট এসেছে ব্লগে । এই সংকলন বের করার গল্পে আমার চরিত্রটি সম্পূর্ণ বেখালেই রয়েছে মানে দায়িত্বের কাজে কোন সম্পৃক্ততাই নেই ! ব্যাপারটা হচ্ছে অন্যের মাথার উপর কাঁঁঠাল ভেঙ্গে খাওয়ার মত ! হা হা ! বইটা কোন এক বিকেলে আধো আলো আধো অন্ধকারের ভিড়ে 'এক রঙ্গা এক ঘুড়ি' থেকে বগলদাবা করে এনেছি !





সম্পৃক্ত সকল স্বেচ্ছাসেবীদের প্রতি রইলো অশেষ ধন্যবাদ লেখালেখির একটা সম্মিলিত গল্পকে বাস্তবে রূপ দেয়ার জন্য এবং আমার সংযুক্তির জন্য রইলো অশেষ কৃতজ্ঞতা । হ্যাপি রিডিং !

লেখাজোকা সম্পর্কিত পোস্টগুলোঃ

লেখাজোকা সংকলন

যাঁদের লেখা নিয়ে সমৃদ্ধ হয়েছে ‘সংকলন লেখাজোকা’।

" লেখাজোকা-১" নিয়ে যত লেখা

গ্রন্থমেলা বা বইমেলা ২০১৯ - আমার বই কঙ্কাবতীর কথা, আমাদের বই লেখাজোকা.....
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সকাল ১১:১১
২০টি মন্তব্য ২০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×