somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ব্যালিস্টিক মিসাইল

০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মিসাইল সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা থাকলেও বেশিরভাগ পাঠক ব্যালিস্টিক মিসাইলে এসে বুঝতে ভুল করেন। এজন্য এককথায় ব্যাখা দেয়া যাক। যেসব লংরেঞ্জ মিসাইল ফায়ারের পর ballistic trajectory (পরাবৃত্তাকার পথ) অনুসরণ করে, তাদেরকেই ব্যালিস্টিক মিসাইল বলে। এ ধরনের মিসাইল ভূমি থেকে নিক্ষেপ করতে রোড মোবাইল লঞ্চার ভেহিকেল, রেইলরোড ভেহিকেল (মিসাইলবাহী ট্রেন) অথবা ভূগর্ভস্থ ‘মিসাইল সাইলো’ ব্যবহার করা হয়। সাগর থেকে নিক্ষেপ করতে নিউক্লিয়ার ব্যালিস্টিক মিসাইল সাবমেরিনকে কাজে লাগানো হয়। ফলে যেসব দেশের এ ধরনের সাবমেরিন হাতে আছে, তারা প্রথমে পারমাণবিক হামলায় গোটা দেশ ধ্বংস হয়ে গেলেও পাল্টা আঘাত হানতে সক্ষম।

ব্যালিস্টিক মিসাইলকে রেঞ্জের দিক দিয়ে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন- Tactical Ballistic Missile (TBMs) গুলোর রেঞ্জ ৩০০ কি.মি.-র মধ্যে, এবং Short-Range Ballistic Missile (SRBMs) গুলোর রেঞ্জ ১,০০০ কি.মি. এর মধ্যে হয়ে থাকে। প্রথাগত যুদ্ধে ক্রুজ মিসাইলের পাশাপাশি এগুলোর ব্যবহার আমরা প্রায়ই দেখে থাকি। অন্যদিকে, ১,০০০-৩,০০০ কি.মি. রেঞ্জেরগুলোকে Medium-Range Ballistic Missiles (MRBMs) এবং ৩,০০০-৫,৫০০ কি.মি. রেঞ্জেরগুলোকে Intermediate-Range Ballistic Missiles (IRBMs) বলে। খুব গুরুত্বপূর্ণ স্ট্র্যাটেজিক টার্গেট না হলে এসব মিসাইলের ব্যবহার হয় না বললেই চলে। এতে কনভেশনাল বা নিউক্লিয়ার– দুই ধরনের বিস্ফোরক পদার্থই ব্যবহার করা যায়। এছাড়া কেমিক্যাল ও বায়োলজিক্যাল ওয়ারহেড (জীবাণু অস্ত্র) এগুলো দিয়ে ডেলিভারি দেয়া সম্ভব।

এরপর চলে আসা যাক সকল মিসাইলের গডফাদার InterContinental Ballistic Missiles (ICBM) এর কাছে। ৫,৫০০ কিঃমিঃ এর অধিক রেঞ্জের এই মিসাইলগুলো ব্যবহার হলে মানবসভ্যতা যে একেবারে ধ্বংস হয়ে যাবে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। বর্তমানে আন্ডারগ্রাউন্ড সাইলো বা ভূমিভিত্তিক আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক মিসাইলের মধ্যে রাশিয়ার ১৮,০০০ কি.মি. রেঞ্জের RS-28 Sarmat সর্বাধিক রেঞ্জের মিসাইল, যা ২০২২ সালে সার্ভিসে এসেছে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের LGM-118 Peacekeeper (১৪,০০০ কি.মি.), সাবমেরিন থেকে উৎক্ষেপণে সক্ষম মার্কিন-ব্রিটিশ Trident II (১১,৩০০ কি.মি.)। এর বাইরে চীনের DF-41, DF-5A (১২,০০০-১৫,০০০ কি.মি.), ফ্রান্সের M51.2 (৮,০০০-১০,০০০ কি.মি.), ভারতের Agni-V (৫,৫০০-৮,০০০ কি.মি.) উল্লেখযোগ্য। ইসরায়েল ও উত্তর কোরিয়ার আইসিবিএম থাকলেও এর সম্পর্কে পরিষ্কার তথ্য পাওয়া যায় না।

ক্রুজ মিসাইল যেমন ফায়ারের পর রাডার ফাঁকি দিতে খুব নিচু হয়ে সাগর-পাহাড়-পর্বত ঘুরে তারপর টার্গেটের দিকে যায়, ব্যালিস্টিক মিসাইলের ধর্ম ঠিক তার উল্টো। এটি ফায়ারের পর পরাবৃত্তাকার পথে উপরের দিকে উঠে যায়। শর্ট এবং মিডিয়াম রেঞ্জ ট্যাক্টিক্যাল ব্যালিস্টিক মিসাইলগুলোর গতিপথ বায়ুমণ্ডলের ভেতরেই থাকে। অন্যদিকে, আইসিবিএমগুলো ফায়ারের পর বায়ুমণ্ডলের বাইরে চলে যায়। এজন্য এতে একাধিক স্টেজের বুস্টার রকেট ব্যবহার করা হয় বিধায় এর কার্যপ্রণালী অনেকটাই মহাকাশ গবেষণার কাজে ব্যবহৃত স্পেস রকেটের ন্যায়। অতঃপর এক বা একাধিক নিউক্লিয়ার ওয়ারহেড আলাদা হয়ে টার্গেটের দিকে ধেয়ে যায়। বায়ুমণ্ডলে পুনরায় প্রবেশকে 'রি-এন্ট্রি', এবং ওয়ারহেডকে যে মাধ্যমে সুরক্ষিত রাখা থাকে তাকে ‘রি-এন্ট্রি ভেহিকেল’ বলে। একই মিসাইলে একাধিক ওয়ারহেড থাকার প্রযুক্তি তথা Multiple Independently Targetable Re-Entry Vehicle (MIRV) যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, চীন, ও রাশিয়ার হাতে রয়েছে, এবং ভারত, পাকিস্তান, ও উত্তর কোরিয়া বানানোর কাজ করছে। এ সময় মিসাইলের নিজের গতি এবং অভিকর্ষজ ত্বরণের কারণে ওয়ারহেডের বেগ অত্যন্ত বেশি (সেকেন্ডে ৬-৮ কিলোমিটার!) হওয়ায় একে সাধারণ এয়ার ডিফেন্স মিসাইল দিয়ে প্রতিহত করা বেশ কঠিন

সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×