somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

(আবার ফিরে যাই ঝুমতলি)

২৭ শে জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ৮:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রেললাইন বয়ে যায়।ভোরের প্রার্থনার বিপুল শক্তি।অন্ধকারকে আলো দিতে দিতে সকাল এগোয়! এমন সকাল এলেই ঝুমতলি যেতে ইচ্ছে করে! কুয়াশাঘেরা এক স্টেশনের রেললাইন ধরে হেঁটে যেতে ইচ্ছে করে। কালো রং শাড়িতে কুঁচ ফলের সমাহার! ও হেঁটে যাচ্ছে !
কখন যে ওর পাশে হাঁটতে শুরু করেছি! ও গুনগুন করে গাইছে,”যেতে যেতে, ওগো প্রিয়, কিছু ফেলে রেখে দিয়ো
ধরা দিতে যদি নাই রুচে…..”
গানটার শেষ দুটো লাইন ও বারবার ঘুরেফিরে গাইছিল আর আমি শুরুটা শুনবো বলে তখন কান পেতে আছি!
ও বুঝতে পারে, ও আমার দিকে না তাকিয়েও বুঝতে পারে আমি ওর পাশেই আছি! ও গলাটা একটু উঁচু করে গাইতে শুরু করে, “কুসুমে কুসুমে চরণচিহ্ন দিয়ে যাও, শেষে দাও মুছে।
ওহে চঞ্চল, বেলা না যেতে খেলা কেন তব যায় ঘুচে॥”
আমি মুগ্ধ হয়ে যাই! ওকে ভীষন জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছে করে।
দূরথেকে সিগন্যালে আ্টকে পড়া ট্রেনের ইঞ্জিনের আলো দেখি। কুয়াশা ভেদ করে আসতে থাকে পু ঝিকঝিক করে,
আমি ওর হাত ধরে হলুদ সরিষা ক্ষেতের আইল ধরে এগোই। ও হলো আমার স্বপ্নের অপরুপা! কতবার কত জায়গায় ওর সাথে দেখা হয় আমার!
মহাসড়কের পাশেই বাস স্টপেজ টা।দূরের এক শহরের বাসযাত্রায় আজ ওকে সংগে নেই। পাশে বসেই খুশিতে কলকল করতে থাকে ও। অনর্গল ফরাসি ভাষায় কথা বলে! আমার অবাক হওয়াকে অবাক করে দিয়ে একটা কবিতা বলতে থাকে!
আমি বুঝতে পারি এটা অন্য কারো লেখা নয়!
এটা এই মূহূর্তের একদম ফেনা ওঠা কফির মত সতেজ কবিতা!
ও ওর ঝোলানো ব্যাগের ছোট্ট ফ্লাস্ক থেকে কফি বের করে আমাকে দেয়। মুখের মাস্ক সরাতেই আমি ওর দিকে মুগ্ধ তাকাতেই ও হেসে গলে পড়ে। ও হাসলে ওর মুখ, ওর চোখ ওর কোঁকড়া চুল, সব হাসে!
ইশারাতে ও কফির গ্লাসে চুমুক দিতে বলে!
আজ এখানে তাপমাত্রা এক! মেঘলা দিন, বাতাসে শীত ঘন হয়ে আছে! ও বলে এই শীত ওর কাছে কিছুই না। ও হলো উত্তর থেকে উড়ে আসা তুষার কন্যা !
কথার মাঝেই ও চাপিয়ে নিয়েছে লাল ওভারকোট।বাসের ড্রাইভার ওকে শাড়ির সৌন্দর্য নিয়ে প্রশংসা করে! ও হাসিতে ঝলমল করে ওঠে আবার!
আমার চোখ সরেনা!
আমি পথের ধারের লেনিনের মত মূর্তি হয়ে যাই!
ওকে নিয়ে আমি ঘুরে বেড়াই!
জলপাইগুড়ির চা বাগান থেকে রাশিয়ার কত শহর!
ভেনিসে যাবার কথা বলেছিলাম একবার! মাথা নেড়ে বলেছিল, ওর সবচেয়ে প্রিয় মানুষকে নিয়ে সেখানে যাবে ও!
সারারাত নৌকায় ঘুরে বেড়াবে!
ওর সেই প্রত্যাশার চোখ দেখে, আমার ইচ্ছে করেছিল ব্যাংকের মেশিন থেকে সব অর্থ তুলে এনে ওর জন্য একটা প্রেমিক কিনে আনি! যে,ওকে ওর চাওয়ার মত ভালোবাসবে!যে,ওর চোখের থেকে ঝরে পড়া প্রতিটা চোখের জল দিয়ে একটা পাতাবাহার বাগান বানাবে।যে, ওর বুকের ভিতর একটা নক্ষত্রের বাগান বানাবে!
আমি ওর মতই বিশ্বাসী হয়ে যাই! ওর জন্য শুভবোধের অর্ঘ্য সাজাই!
এভাবেই চলতে থাকে জীবন!
ঝুমতলি থেকে শুরু হওয়া সেই স্বপ্নরা চোখের ভিতর কত স্বপ্নর মালা বোনে!
সেখানে পাত্রপাত্রী হয়ে যাই, আমি তুমি সে ও সবাই….
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ৮:১৯
১১টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শোকের উচ্চারণ।

লিখেছেন মনিরা সুলতানা, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ সকাল ১০:১৬

নিত্যদিনের জেগে উঠা ঢাকা - সমস্তরাত ভারী যানবাহন টানা কিছুটা ক্লান্ত রাজপথ, ফজরের আজান, বসবাস অযোগ্য শহরের তকমা পাওয়া প্রতিদিনের ভোর। এই শ্রাবণেও ময়লা ভেপে উঠা দুর্গন্ধ নিয়ে জেগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আন্দোলনের নামে উগ্রতা কাম্য নয় | সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যবাদকে না বলুন

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ বিকাল ৫:২৭



প্রথমেই বলে নেয়া প্রয়োজন "বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার সমস্ত অপচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে" ধীরে ধীরে দেশে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসছে। ছাত্রদের কোটা আন্দোলনের উপর ভর করে বা ছাত্রদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

কোন প্রশ্নের কি উত্তর? আপনাদের মতামত।

লিখেছেন নয়া পাঠক, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৬

এখানে মাত্র ৫টি প্রশ্ন রয়েছে আপনাদের নিকট। আপনারা মানে যত মুক্তিযোদ্ধা বা অতিজ্ঞানী, অতিবুদ্ধিমান ব্লগার রয়েছেন এই ব্লগে প্রশ্নটা তাদের নিকট-ই, যদি তারা এর উত্তর না দিতে পারেন, তবে সাধারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাকুরী সৃষ্টির ব্যাপারে আমাদের সরকার-প্রধানরা শুরু থেকেই অজ্ঞ ছিলেন

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ রাত ৯:০৭



আমার বাবা চাষী ছিলেন; তখন(১৯৫৭-১৯৬৪ সাল ) চাষ করা খুবই কষ্টকর পেশা ছিলো; আমাদের এলাকাটি চট্টগ্রাম অন্চলের মাঝে মোটামুটি একটু নীচু এলাকা, বর্ষায় পানি জমে থাকতো... ...বাকিটুকু পড়ুন

পঁচে যাওয়া বাংলাদেশ আর্মি

লিখেছেন রিয়াজ হান্নান, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ রাত ৯:২৫


একটা দেশের আর্মিদের বলা হয় দেশ রক্ষা কবজ,গোটা দেশের অব্যবস্থাপনা থেকে শুরু করে বহিরাগত দুশমনদের আতংকের নাম। ছোটবেলা থেকে এই ধারণা নিয়ে কয়েকটা জেনারেশন বড় হয়ে উঠলেও সেই জেনারেশনের কোন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×