
কিছু দিন ধরে যেসব বই পড়ছিলাম, একটাও মনে ধরছিল না। তাই ভাবলাম— এবার হুমায়ূন আহমেদের একটা প্রেমের বই পড়া যাক। হাতে নিলাম ‘নবনী’।
শুরুর অংশটা দারুণ লাগল। নবনীকে তার মা বিকেলের ঘুম থেকে ডেকে তোলে, কারণ আজ তার বিয়ে। ধীরে ধীরে বিয়ের প্রস্তুতির দৃশ্যগুলো খুব সুন্দরভাবে এগোতে থাকে। সেই সঙ্গে গল্পের ফাঁকে ফাঁকে ধরা পড়ে নবনীর অতীতের একটা পুরনো সম্পর্কের ইঙ্গিত। লেখক খুব ধীরে, নরমভাবে সেই গল্পটা বলেছেন—বর্তমান জীবনের সঙ্গে অতীতের টানাপোড়েন মিলেমিশে গেছে বেশ স্বাভাবিকভাবে।
বিয়ের পর নবনীর ছোট সংসার, গরিব স্বামী। পাশে আছে ধনী বন্ধু আর তার কালো কিন্তু সুন্দরী স্ত্রী। গল্পটা সুন্দরভাবে এগোচ্ছিল, কিন্তু হঠাৎ করেই শেষ হয়ে গেল—এমনভাবে, যেন মাঝপথে আলো নিভে গেল। মনে হলো, গল্পটা কোথাও গিয়ে থেমে গেছে, অপূর্ণ রয়ে গেল।
যাই হোক, হুমায়ূন আহমেদের অনেক লেখায়ই এমন থাকে—কিছু না বলা কথা, কিছু অন্ধকারে ফেলে রাখা প্রশ্ন। এই বইতেও তেমনটা আছে। তাই হয়তো আমার কাছে বইটা অপূর্ণ মনে হয়েছে। অবশ্য ‘অপূর্ণ’ বলাটা পুরোপুরি ঠিকও নয়। কারণ, হয়তো এটিই লেখকের শিল্প—প্রশ্ন রেখে দেওয়া। কিন্তু পাঠক হিসেবে আমার মনে কিছু প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে—
নবনী কি সত্যিই মারা গিয়েছিল, নাকি কেবল হারিয়ে গিয়েছিল?
নবনীর স্বামী যখন জানবে, নবনীর একটা মেয়ে আছে—যে বড় হচ্ছে অনাথ আশ্রমে—তখন সে ব্যাপারটা কীভাবে নেবে?
আদৌ কি নবনীর সত্যিই কোনো মেয়ে ছিল?
এই প্রশ্নগুলো মাথার মধ্যে ঘুরছে, আর ঘুরতেই থাকবে—যতদিন না আরেকটা নতুন বইয়ে ডুবে যাই। তাই হাতে নিলাম হুমায়ূন আহমেদের আমার পড়া ১১৮তম বই, ‘তিথির নীল তোয়ালে’।
যে বইয়ের নামের উল্লেখ আছে সদ্যপঠিত বই ‘নবনী’-তেই।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে অক্টোবর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:১৫

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


