somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গল্পের দোকান : প্রহরীর ছায়া

২১ শে নভেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



মাথার ওপরের সূর্যটা আজ অদ্ভুত রকম খিটখিটে। মনে হচ্ছে—রেগে গিয়ে একের পর এক আগুনের গোলা ছুঁড়ে দিচ্ছে পৃথিবীর দিকে। চারপাশে এমন একটা ভাব… যেন বাতাসও হাঁপিয়ে উঠেছে। গাছপালা, মাটি, পশুপাখি—সবাই থমথমে। কেউই ঠিক বুঝে উঠতে পারছে না, আজ সূর্য এত তেজি কেন।

ধূধূ জায়গাটার পাশ দিয়ে একটি নদী বয়ে গেছে। দূর থেকে মনে হয়—সূর্যের উত্তাপে নদীর গা থেকে বাষ্প উঠছে ধোঁয়ার মতো। পুড়ে যাওয়া রোদের মধ্যে মানুষগুলো নিজেদের মতো কাজ করে যাচ্ছে— কেউ কোদাল দিয়ে মাটি কাটছে, কেউ ঝুড়ি মাথায় করে মাটি বয়ে নিয়ে যাচ্ছে, কেউ চাষের কাজে ব্যস্ত।

তবে সবাইকে এক নজরে দেখা যায় না। ব্যতিক্রম আছে।
যাদের কাঁধে বন্দুক ঝুলছে— তারা কেউ গাছের ছায়ায় বসে আছে, কেউ আবার গুহার মুখে বসে অলসভাবে চারপাশ দেখছে।

এই উত্তাপের মধ্যে একজন মধ্যবয়স্ক মহিলা নদীর ধারে হাঁটছে। মাথায় ছোটখাটো একটা বস্তা—ভেতরে কী আছে বোঝা যায় না। মহিলার পেছনেই হাঁটছে একটা ছোট বাচ্চা— বয়স চার কিংবা পাঁচ হবে। বাচ্চাটা হাঁটছে মায়ের ঠিক পেছনে, কিছুটা অবাক হয়ে, কিছুটা ক্লান্ত হয়ে।
হঠাৎ পাশের মাঠ থেকে কোলাহলের শব্দ ভেসে এলো। মাঠের চারপাশে গোল হয়ে দাঁড়িয়ে আছে অনেক মানুষ। কী দেখছে তারা—বুঝতে পারার উপায় নেই।

বাচ্চাটার কৌতূহল চেপে রাখতে পারল না। সে বারবার চেষ্টা করছিল সামনে যাওয়ার— কিন্তু বড়দের ভিড় ঠেলে আর কতদূর যাওয়া যায়? শেষ পর্যন্ত সে বড়দের পায়ের ফাঁক গলে সামনে চলে গেল।
সামনে গিয়ে সে যে দৃশ্য দেখল— তা তার ছোট চোখ দুটো অবাক হয়ে বড় করে দিল।

একজন মানুষকে কাঠের খুঁটির সঙ্গে শক্ত করে বেঁধে রাখা হয়েছে। চারপাশে বন্দুকধারীরা দাঁড়িয়ে আছে। তাদের একজন চিৎকার করে উঠল—
“উআ আপিকি কেয়া কানাকা ই কো মাকাউ ʻআপু! হে আহা কা হো-ও-পাই কুকুয়া ইয়া ইয়া?”
(এই প্রতারক আমাদের নেতার সঙ্গে বেইমানি করেছে! এর যথাযথ শাস্তি কী হওয়া উচিত?)


দর্শকরা একসাথে গর্জে উঠল—
“হো-ও-মা-কে কা-না-কা (হত্যা করো, হত্যা করো)”

বাঁধা থাকা লোকটি ভয়ে কিছু বলতে চাইছিল। কিন্তু তার সেই চেষ্টা দীর্ঘস্থায়ী হলো না। একজন প্রহরী এগিয়ে এসে খরখরে কণ্ঠে কিছু না বলেই বন্দিটির মুখে কংকর ঢুকিয়ে দিল, তারপর ময়লা একটি নেকড়া কাপড় দিয়ে তার মুখ শক্ত করে বেঁধে দিল। আর মাথায় পরিয়ে দিল একটি কালো, ময়লা টুপি।

টুপি পরানোর সঙ্গে সঙ্গে লোকটি মাথা নাড়তে শুরু করলো— অসহায়, আতঙ্কে, দমবন্ধ হওয়া চেষ্টায়।
তা দেখে আরেকজন প্রহরী এগিয়ে এসে রশি দিয়ে তার গলা শক্ত করে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে দিল। যেন সে শেষবারের মতো নিজের মাথাটুকুও নাড়াতে না পারে।

পিন–ড্রপ নীরবতা নেমে এলো পুরো মাঠজুড়ে। মনে হচ্ছিল—বাতাস পর্যন্ত থেমে গেছে। শুধু শোনা যাচ্ছিল প্রহরীদের হাঁটার শব্দ— ধুপ… ধুপ… ধুপ…
সেই শব্দের দিকেই সবার দৃষ্টি টানছিল, কারণ তিনজন প্রহরী ধীরে ধীরে এগিয়ে এসে
বন্দির ঠিক সামনে দাঁড়াল। তারা বন্দুক উঁচু করে লক্ষ্য ঠিক করল নিখুঁতভাবে। পাশেই দাঁড়ানো একজন প্রহরী চিৎকার করে উঠল—
“পানা পু (গুলি করো)”
কথা শেষ হতেই লক্ষ্য ঠিক করা প্রহরীরা প্রত্যেকে তিনবার করে গুলি ছুঁড়ে মারল।
ট্র‍্যাক-ট্র‍্যাক-ট্র‍্যাক—

বিকট শব্দে মাঠটা যেন কেঁপে উঠল। শব্দে দমে গিয়ে পায়ের ফাঁক দিয়ে সামনে এসে দাঁড়ানো ছোট্ট ছেলেটি ভয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ল। কিছুক্ষণ থমকে রইল— তারপর আবার ধীরে ধীরে উঠে দাঁড়াল, পরের দৃশ্যটা দেখার জন্য। ভয়ে নয়—কৌতূহলে। শিশুরা কখনো কখনো ভয়ের চেয়েও বড় কৌতূহল নিয়ে বাঁচে।

সে দেখল— প্রহরীরা রক্তে ভেজা নিথর দেহটাকে খুঁটি থেকে নামাচ্ছে। তারপর একটা ময়লা কম্বলে মুড়িয়ে গাড়ির ভেতর ছুঁড়ে ফেলছে—যেন মানুষ নয়, কোনো পুরনো জিনিসপত্র সরাচ্ছে।

মাঠে গোল হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষগুলো ধীরে ধীরে নড়েচড়ে উঠল। যেন তাদের সমস্ত উত্তেজনা গুলির শব্দে শেষ হয়ে গেছে।
একজন একপাশে, আরেকজন অন্যপাশে— সবাই আবার যে যার কাজে ফিরে যেতে লাগল। ফিরে গেল সেই ছোট্ট ছেলেটাও। মায়ের পেছনে পেছনে হাঁটছে— তবে তার চোখ বারবার ঘুরে তাকাচ্ছে সেই জায়গাটার দিকে, যেখানে কিছুক্ষণ আগেই একজন মানুষ কাঠের খুঁটিতে বেঁধে দাঁড়িয়েছিল।

৮ বছর পর।

একজন ১৪–১৫ বছরের কিশোর চুপচাপ বসে আছে একটি প্রহরীর গাড়ির পেছনে। গাড়িটি ঠিক এখনই বেরিয়ে এসেছে একটি ভূগর্ভস্থ জায়গা থেকে। ছেলেটির হাত পিছনে বাঁধা—মোটা দড়ি দিয়ে শক্ত করে। চোখ ঢাকা রয়েছে ময়লা একটি কাপড়ে। তার ঠিক পাশে বসে আছে তার বাবা। অবস্থা প্রায় একই— শুধু পার্থক্য হলো, বাবার মাথায় বাঁধা কাপড়ের ওপর রক্তের দাগ ঝকঝক করছে। নতুন নয়— পুরনো শুকনো রক্তের কালচে দাগ।

গত আট মাস ধরে তারা ছিল একটি ভূগর্ভস্থ কারাগারে। এই দীর্ঘ সময়েও তারা জানতে পারেনি— তাদের অপরাধ কী ছিল।
গাড়িটি এসে থামল ছেলেটির খুব চেনা এক মাঠে। যে মাঠে সে বহুবার দাঁড়িয়ে দেখেছে অন্যদের মৃত্যুদণ্ড। আজ সে নিজেই, তার বাবাসহ, এক অজানা অপরাধে দণ্ডিত হয়ে সেই একই মাঠে দাঁড়িয়ে আছে।

মাঠের চারপাশে জড়ো হয়েছে অনেক মানুষ। তাদের মধ্যে বেশ কিছু বাচ্চাও আছে— কৌতূহলী চোখে তারা দেখছে কী হতে যাচ্ছে সামনে। যেমন সে দেখত— যখন তার বয়স ছিল চার কিংবা পাঁচ।

কিশোর ছেলেটি মাঠের মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছে। একজন প্রহরী এসে তার চোখের বাঁধন খুলে দিল, সঙ্গে বাবারটাও। চোখ খুলতেই— চোখের সামনে ভেসে উঠল সেই ফাঁসির মঞ্চ। যেখানে দাঁড় করিয়ে শাস্তি দেওয়া হয়।
মঞ্চটি দেখে সে নিজের অজান্তেই চোখ বন্ধ করে ফেলল। মনে মনে নিজেকে প্রস্তুত করতে লাগল— আজই হয়তো সব শেষ।

ঠিক সেই সময় শোনা গেল এক মহিলার আর্তনাদ। ছেলেটি চোখ খুলে তাকাল। একজন প্রহরী চুলের মুঠি ধরে এক মহিলাকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে আসছে ফাঁসির মঞ্চের দিকে।
মহিলাটিকে দেখে ছেলেটি চমকে উঠল— এ আর কেউ না— তার মা

মাকে সেই অবস্থায় দেখে সে জোরে কেঁদে উঠল। পিছন থেকে এক প্রহরী এগিয়ে এসে রাইফেলের বাট দিয়ে তাকে সজোরে আঘাত করল। ছেলেটি মাটিতে পড়ে গেল। এরপর বুট জুতো দিয়ে তাকে মারতে শুরু করল।
ছেলেটির মা সেই দৃশ্য দেখে, কান্নায় ভেঙে পড়ে চিৎকার করতে লাগল—
“মাই পেপেহি ইয়া ইয়া, এ ওলুওলু, হে কেকি নো ইয়া
(ওকে মেরো না… দয়া করে… ওকে মেরো না। ও ছোট্ট একটা বাচ্চা। দয়া কর… ওকে)”


মায়ের এই আর্তনাদে প্রহরীরা আরও উগ্র হয়ে উঠল। তারা শুরু করল দ্বিগুণ অত্যাচার ছেলেটির ওপর। পাশে দাঁড়ানো বাবা— নীরব। শরীর কাঁপছে, কিন্তু নড়তে পারছে না। কি করবে বুঝতে পারছে না।

ঠিক তখনই মাঠে প্রবেশ করল কালো কোট পরা একজন। তার সঙ্গে আরও কয়েকজন সশস্ত্র প্রহরী। তাদের পাশে দাঁড়িয়ে আছে তিনজন বন্দি—
ছেঁড়া ময়লা কাপড় পরা, চোখ বাঁধা, হাত পিছনে দড়ি দিয়ে বাঁধা, হাতে হ্যান্ডকাফ পরানো।

ওই লোকটিকে দেখেই প্রহরীরা ছেলেটিকে মারা বন্ধ করল। ছেলেটির মাকেও টেনে নেওয়া বন্ধ হলো— যদিও একজন প্রহরী তখনও তার মায়ের চুল শক্ত করে ধরে রয়েছে।

হঠাৎ করে পর্দাটা ঝিঝি শব্দ করতে শুরু করল। পর্দার ওপাশ থেকে নীলু চোখ মেলল, বিরক্তির ছাপ স্পষ্ট। এমন এক দৃশ্যের ঠিক মাঝখানে দাঁড়িয়েই—ডিশ লাইনের সংযোগ চলে গেল। মুভিটির নামও জানা হলো না। মুভির ছেলেটির নামও সে জানে না— তবে একটি ব্যাপার নিশ্চিত—অভিনয়টা ছিল অসাধারণ।

নীলুর মেজাজ আরও বিগড়ে গেল। ডিশ লাইনটা টানা কয়েকদিন ধরে ঝামেলা করছে।
রাত এখন ১০টা ৩০। এতো রাতে ডিশ কোম্পানিকে ফোন করা ঠিক হবে না—
তারপরও বাসায় সে পুরোপুরি একা। ছোট ছেলে অভি ঘুমিয়ে আছে। স্বামী অফিসের কাজে সিলেটে গেছে। আর শ্বশুর শেহাব সাহেব তাঁর বন্ধু লতিফ সাহেবকে নিয়ে কক্সবাজারে।

তাদের দু’জনেরই আজ রাতেই ফেরার কথা। শ্বশুরের পৌঁছানোর কথা ছিল রাত ৯টার মধ্যে, স্বামীর ৯টা ৩০-এর মধ্যে— কিন্তু এখনো কেউ আসেনি। দু’জনের সঙ্গেই মোবাইলে কথা হয়েছে— তারা দু’জনই রাস্তায় আটকে আছে। রাস্তা নাকি আজ বড্ড জ্যাম। তার ওপর প্রচণ্ড বৃষ্টি— ঢাকা শহরের অর্ধেকই প্রায় হাঁটু-পানির নিচে।

এইসব ভাবতে ভাবতেই সে চলে গেল শোবার ঘরে। উঁকি দিয়ে দেখে—অভি গভীর ঘুমে। তার বিছানার পাশে হেলান দিয়ে বসে নীলু মোবাইল স্ক্রল করতে করতে ভাবছিল—
মাঠে প্রবেশ করা লোকটি আসলে কে? সত্যিই কি তাদের ফাঁসি হবে? নাকি অন্য কিছু?
মুভিটার নাম কীভাবে পাওয়া যায়?

ঠিক তখনই বেজে উঠল বাসার কলিং বেল। নীলু বিছানা থেকে উঠে দাঁড়াল। দরজার দিকে হাঁটতে হাঁটতে ভাবল—
কে আসতে পারে?
স্বামী?
নাকি শ্বশুর?

দরজা খুলতেই সে থমকে গেল।
তার স্বামী নেই, শ্বশুরও না। দরজার ওপাশে দাঁড়িয়ে আছে— একজন প্রহরী ।
হুবহু সেই মানুষটার মতো— যাকে সে একটু আগেই সিনেমায় দেখেছিল। যে নৃশংসভাবে মারছিল এক কিশোর বাচ্চাকে। নীলুর বুকের ভেতরটা ধক করে উঠল।

সে কাঁপা গলায় জিজ্ঞেস করল—
“কে আপনি?”

প্রহরী কর্কশ গলায় বলল—
“আজ রাতে ডিশ লাইনে কোনো সমস্যা হয়নি… আপনি যা দেখেছেন… ওটা ‘মুভি’ ছিল না।”

নীলুর শিরদাঁড়া বেয়ে ঠান্ডা স্রোত নেমে গেল।
প্রহরী তার দিকে তাকিয়ে আবার বলল—
“সেই মাঠ… সেই ফাঁসির মঞ্চ… সেই চিৎকার… সবকিছু ঘটেছে—আজই, এই শহরের একেবারে পাশেই।”

নীলুর গলা শুকিয়ে গেল। সে কাঁপা গলায় বলল—
“কিন্তু… আমি তো দেখছিলাম একটা সিনেমা…”

প্রহরী মাথা নেড়ে বলল—
“সিনেমা না। ওটা ছিল লাইভ ফিড। একটা জায়গা আছে… যেখানে এখনো কোনো আইন চলে না… আর সেই জায়গা থেকেই আমরা ধরে এনেছি তিনজন বন্দিকে।”

হঠাৎ নীলুর চোখ চলে গেল প্রহরীর পেছনে।
সেখানে দাঁড়িয়ে আছে তিনজন মানুষ— ময়লা ছেঁড়া কাপড় পরা, চোখ বাঁধা, হাতে হাতকড়া।
তাদের একজনকে দেখেই নীলুর নিশ্বাস থেমে গেল।
সেই কিশোর… যাকে সে দেখেছিল বুট দিয়ে লাথি মারা হচ্ছে— সে-ই দাঁড়িয়ে আছে তার ঠিক সামনে।

নীলু কাঁপতে কাঁপতে জিজ্ঞেস করল—
“এরা কারা? এদের অপরাধ কী?”

প্রহরী গভীর গলায় উত্তর দিল—
“এদের পরিচয় এখনো জানা যায়নি। এদের অপরাধও কেউ জানে না। তবে…”
সে একটু থামল,
“এদের সঙ্গে আর একজনকেও আজ হত্যা করা হবে।”

নীলুর বুকটা হঠাৎ ঢিপ করে উঠল। সে প্রায় কাঁদতে কাঁদতে জিজ্ঞেস করল—
“আরেকজনটা কে? যাকে হত্যা করা হবে?”

প্রহরী ধীরে ধীরে মাথা তুলে তাকাল নীলুর দিকে। ঠাণ্ডা, পাথরের মতো গলায় বলল—
“অভিকে। মানে… আপনার ছেলে অভিকে।”

এই কথাটা শুনে নীলু শব্দহীন হয়ে গেল। মুহূর্তের মধ্যে তার মুখ ফ্যাকাশে হয়ে গেল। তারপর হঠাৎই জোরে চিৎকার করে উঠল—
“আমার ছেলেকে! কেন? তার অপরাধ কী?”

প্রহরী কোনো অনুভূতি ছাড়াই বলল—
“Ko mākou makemake — ʻaʻole mākou e hahai i ke kānāwai.”
(আমাদের ইচ্ছে—আমরা কোনো আইন মানি না।)

এটুকু বলেই সে আদেশের কণ্ঠে চিৎকার করল—
“যাও, ওর ছেলেকে ধরে নিয়ে আসো!”

আদেশ শুনে বন্দিদের পেছন থেকে আরও দুইজন প্রহরী বেরিয়ে এলো— যাদের এতক্ষণ নীলুর চোখে পড়েনি।
প্রহরীরা এগিয়ে আসতে দেখে নীলু তড়িঘড়ি করে সদর দরজাটা জড়িয়ে ধরল, পুরো শক্তিতে আগলে দাঁড়াল—
যেন কেউ ভেতরে ঢুকতে না পারে ।

সে কাঁদতে কাঁদতে চিৎকার করল—
“আমি আমার ছেলেকে নিতে দেব না! দেব না আমার ছেলেকে!”

প্রহরীরা সামনে এগিয়ে এল। একজন হঠাৎ সজোরে নীলুকে ধাক্কা দিল।
ধাক্কা খেয়ে নীলুর শরীর কেঁপে উঠল— সমস্ত দৃশ্য যেন কুয়াশায় ঢেকে গেল। সে হকচকিয়ে পাশ ফিরে তাকাল—
দেখে—
তার ছেলে অভি তাকে ধাক্কা দিচ্ছে। ছেলেটা অবাক চোখে বলছে—
“মা! তুমি এভাবে চিৎকার করছ কেন? কে যেন এসেছে… বেল বাজছে… দরজা খোলো।”

নীলু থমকে গেল। বিশ্বাস করতে পারছিল না—
এটা কি তার ছেলে অভি? তাহলে কি… সবটাই স্বপ্ন ছিল?
তাহলে সে কি কোনো সিনেমাই দেখছিল না ?
নাকি… অন্য কিছু?
কিছুই বুঝতে পারছিল না নীলু। তার বুক ধুকপুক করছে। হাত-পা ঠাণ্ডা হয়ে গেছে।

আর ওইদিকে কলিং বেল— নিরন্তর বেজেই চলেছে ...
টিং… টিং… টিং…

স্বীকারোক্তি :

এই লেখার কিছু জায়গায় আমি একটু “আধুনিক সুবিধা” নিয়েছি।
যেমন— হাওয়াইয়ান ভাষার অংশগুলোতে, আর পোস্টের ছবিটা তৈরির সময়… ওইখানে AI–এর একটু সাহায্য নিয়েছি।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে নভেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫১
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দ্যা এডামেন্ট আনকম্প্রোমাইজিং লিডার : বেগম খালেদা জিয়া

লিখেছেন ডি এম শফিক তাসলিম, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৪

১৯৪৫ সালে জন্ম নেয়া এই ভদ্রমহিলা অন্য দশজন নারীর মতই সংসার নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন, বিয়ে করেছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের অন্যতম সুশাসক শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কে! ১৯৭১সালে এ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×