somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিক্ষিপ্ত খাতা: পৃথিবীর সবচেয়ে দামি কমলা

১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আমার ধারণা—আমি পৃথিবীর সবচেয়ে দামি কমলা খেয়েছি। মোট ছয়টি কমলা কিনেছিলাম। দাম পড়েছিল ১১,৮৫০ টাকা। হিসাব করলে প্রতিটির দাম ১,৯৭৫ টাকা। ডলারে ধরলে প্রতিটা কমলার দাম প্রায় ২৪ ডলার। বলছি ছয়–সাত বছর আগের কথা, যখন ডলারের রেট ছিল ৮৫ টাকা।

এইটুকু শুনে আপনারা ভাবতেই পারেন— মিথ্যা বলছি , না হলে চাপা মারছি । আমি কিন্তু মোটেও মিথ্যা বা চাপা মারছি না। চলুন, পাই পাই করে হিসাব মিলিয়ে দিই।

অফিস শেষ করে সন্ধ্যার দিকে বসে আছি নতুন ঘরের ছোট্ট অফিসে। এই ঘরেই একসময় বাবা আর চাচা বসে গল্প করতেন।ঠিক তখন বাসার দারোয়ান মানিক এসে দাঁড়াল। সে একটু ইতস্তত করে বলল,
“স্যার, একটা কথা ছিল।”
আমি বুঝে গেলাম—এই ‘একটা কথা’ সাধারণত কখনোই ছোট হয় না।
মানিক বলল,
“ছাদের জন্য কিছু গাছ কিনতে হবে। বড় স্যার—মানে আপনার আব্বার—খুব শখ ছিল ছাদ বাগান করবেন।”
আমি কিছুক্ষণ চুপ করে রইলাম। বাবার নাম এলে মানুষ সাধারণত বেশি শক্ত হতে পারে না। আমি তো পারিই না।
খরচের কথা জিজ্ঞেস করতেই মানিক বলল,
“পনেরো থেকে বিশ হাজার টাকার মতো লাগতে পারে। মাটি, সার, ড্রাম—এইসব।”
ওই সময়ে আমার জন্য ওই টাকাটা অনেক বড় অঙ্ক। মাথার উপর ঋণের পাহাড়। তবু ভাবলাম—
বাবার শখ।


এক শুক্রবার তাই গেলাম রায়েরবাজার—বুদ্ধিজীবী কবরস্থানের পাশের নার্সারিগুলোতে। আমি গাছ চিনি না। গাছ সম্পর্কে আমার ধারণা বলতে যা বোঝায়—বিপজ্জনক রকম কম।
তাই সঙ্গে নিলাম দারোয়ান মানিক, সুপারভাইজার আর ড্রাইভার। মনে হচ্ছিল আমরা গাছ কিনতে না, কোনো বড় অপারেশনে যাচ্ছি।

প্রচুর গাছ কিনলাম। মাটি, সার, ড্রাম—যা যা দরকার সব। ফেরার সময় ঠিক তখনই চোখে পড়ল একটা গাছ।মাঝারি সাইজের একটা ড্রামের ভেতর গাছটা দাঁড়িয়ে আছে। তাতে ছয়টা ফল ঝুলছে। দেখতে লেবুর মতো, কিন্তু পুরোপুরি লেবু না।
কৌতূহল নিয়ে জিজ্ঞেস করলাম,
“এইটা কী গাছ?”
বিক্রেতা খুব স্বাভাবিক গলায় বলল,
“কমলা।”
আমি একটু থমকে গেলাম। বললাম,
“বাংলাদেশে কমলা গাছ হয় নাকি? ফলন কেমন হবে?”
বিক্রেতা একরকম দর্শনচর্চার ভঙ্গিতে বলল,
“হয়তো এখন, অনেকে কমলা চাষ করে।”

যেহেতু গাছ সম্পর্কে আমার ধারণা খুবই খারাপ, তাই আর কথা না বাড়িয়ে দাম জিজ্ঞেস করলাম।
উত্তর এলো—
“শুধু মাত্র আপনার জন্য দাম পড়বে ১৯০০ টাকা। অন্য কেউ হলে ২২০০।”
এই ধরনের ‘শুধু আপনার জন্য’ কথায় আমি সাধারণত গলে যাই না। আমি বরং শক্ত হই। দামাদামি শুরু করলাম। এই জায়গায় বলে রাখা ভালো—দামাদামিতে আমি মোটামুটি পটু। তার নমুনা একটু পরেই পাবেন।

আমি খুব শান্ত গলায় বললাম,
“আমি তোমাকে একদাম ১৭০০ টাকা দিতে পারবো। হলে দাও, না হলে আমি গেলাম।”
দোকানি সঙ্গে সঙ্গে তার কর্মচারীকে চেঁচিয়ে বলল,
“ওইইই, গাছটা গাড়িতে তোলো!”
তারপর আমার দিকে তাকিয়ে বলল,
“স্যার, অনেক লস হয়ে যাবে। আর ১০০ টাকা দেন।”
আমি তখন ‘না’ বলার প্রস্তুতি নিচ্ছি। কিন্তু লোকটা ছাড়ে না। আরও ১০০ টাকা নেওয়ার চেষ্টা চলতে থাকে।শেষ পর্যন্ত আমার কাছ থেকেও কিছুটা মানসিক ছাড় আদায় করে নিল। আরও ৫০ টাকা বাড়িয়ে গাছটা কিনে ফেললাম—
১৭৫০ টাকায়।

আমি গাছটা দেখলাম।
গাছটা আমাকে দেখল।
আমরা দুজনেই বুঝলাম— এই সম্পর্কটা সহজ হবে না।

গাছগুলো কিনে সবাইকে বিদায় দিয়ে বাসায় চলে গেলাম। বাড়িতে ঢুকেই খুব গম্ভীর গলায় সবাইকে জানালাম—
“আজকে নতুন বাসার ছাদের জন্য একটা কমলা গাছ কিনেছি। কিছুদিন অপেক্ষা করো, তোমাদের সবাইকে কমলা খাওয়াবো।”
আমি যতটা উৎসাহ নিয়ে কথাটা বললাম, ঠিক ততটাই উৎসাহহীন প্রতিক্রিয়া এলো সবার কাছ থেকে। ব্যতিক্রম শুধু আমার ছেলে। সে সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টা নিজের করে নিল।
“কোমো খাবো! কোমো খাবো!”
এমনভাবে খেনখেন শুরু করল যে বাসার পরিবেশ একেবারে নাট্যমঞ্চে পরিণত হলো। ওর একটা অদ্ভুত স্বভাব আছে—যা শোনে, সেটাই খেতে চায়। কিন্তু সামনে আনলে আর খায় না।
“কোমো খাবো! কোমো খাবো!” বলে পুরো বাসা মাথায় তুলে ফেলল।
এইবার যথারীতি হাজির হলাম আমি। আমি যা বলি, সে তা শোনে—এই আত্মবিশ্বাস আমার আছে।
আমি ওর সামনে হাজির করলাম সিদ্ধ ডিম।
বললাম, “এই নাও কোমো।”
সে এক সেকেন্ড তাকাল।
তারপর এমনভাবে দূরে সরে গেল যেন পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়ংকর বস্তুটা তার সামনে এনে রাখা হয়েছে।কারণ সিদ্ধ ডিম তার কাছে পৃথিবীর সবচেয়ে জঘন্যতম খাদ্য।



ওই দিনই জুমার নামাজ পড়ে, একটু খেয়ে-দেয়ে হাজির হলাম নতুন বাসায়। সাধারণত শুক্রবার বিকেলের দিকে যাই, কিন্তু আজকের দিনটা আলাদা। কারণ আমাদের বাসার ছাদে এসেছে কমলা গাছ। নতুন বাসায় গিয়েই অফিসে ঢুকলাম না। সোজা ছাদে চলে গেলাম।
গিয়ে দেখি, আমার থেকেও দ্বিগুণ উৎসাহ নিয়ে মনিক ব্যস্ত ছাদের গাছ সাজানোর কাজে। ওর চোখেমুখে এমন ভাব—
মনে হচ্ছে এই ছাদে আজ ইতিহাস তৈরি হচ্ছে।

মনিক ঠিক করেছে কমলা গাছটা একটা বড় ড্রামে রাখা হবে। ওই প্রস্তুতিও নেওয়া আছে—সদ্য কেনা মাটি, সার সব মিশিয়ে। এরপর খুব যত্ন করে কমলা গাছটাকে বড় ড্রামে স্থানান্তর করা হলো।
এখন একটাই কাজ বাকি—
ছয়টা কমলার বড় হওয়া।

কমলা বড় হলে কে কতটা পাবে, এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টা আমি হালকাভাবে নিইনি। রীতিমতো খাতা–কলম নিয়ে হিসাব কষে ফেলেছিলাম। আম্মা থেকে শুরু করে কর্মচারী—কেউ বাদ ছিল না। ছয়টা কমলার কোনোটা যেন অন্যায়ভাবে বেশি বা কম না পায়, সেটা নিশ্চিত করাই ছিল আমার প্রধান দায়িত্ব।

বুঝতে পারছেন— আমি কতটা এক্সসাইটেড ছিলাম। এক্সসাইটেড হওয়ার আরও কিছু প্রমাণ দিই।

যেখানে কমলা গাছটা রাখা হলো, সেখানে আলাদা করে একটা সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো হলো— যাতে আমি মোবাইল থেকেই গাছের অবস্থা দেখতে পারি।
আর সেই সময় আমি যত মিটিংয়ে যেতাম, কথার ফাঁকে কোনো না কোনোভাবে কমলা গাছের প্রসঙ্গ তুলতাম। তারপর খুব স্বাভাবিক ভঙ্গিতে মোবাইল বের করে বলতাম—
“এইটা দেখেন, আমাদের ছাদের কমলা গাছ।”

এক মাস কেটে গেল। কমলাগুলো বড় হচ্ছে না।
আমি চিন্তিত।
মানিকও চিন্তিত।

গুগলে খুঁজে জানলাম—কমলা কোন মাটিতে ভালো হয়। সেই সূত্র ধরে এক বন্ধুর মাধ্যমে বান্দরবান থেকে মাটি আনালাম। আবার নতুন করে ড্রামে দিলাম কমলা গাছটা।
এইবার কিছুটা বড় হলো কমলাগুলো।
আমি আর মানিক, আবার আশা করতে শুরু করলাম।

কমলা গাছ আনার পাঁচ মাস পর মনিক একদিন বিরক্ত হয়ে কমলাগুলো ছিঁড়ে ফেলল। সত্যি বলতে কী, এর মধ্যে আমিও কমলা গাছের ওপর বেশ বিরক্ত হয়ে গেছি। যাই হোক, শেষ পর্যন্ত ছয়টা কমলাই ছিঁড়ে ফেলা হলো। কিন্তু মনিক ছাড়া আর কাউকেই কমলা distribution করা হলো না। কারণ খুব সোজা—
ওই কমলাগুলো ছিল পৃথিবীর সবচেয়ে বিখ্যাত টক জিনিসটার থেকেও বেশি টক।মনটা অনেক, অনেক খারাপ হয়ে গেল।

মনিক একটু সান্ত্বনার ভঙ্গিতে বলল—
“স্যার, পরের বার মনে হয় আরেকটু বড় হবে। টকও কমবে। এক সময় মিষ্টি হয়ে যাবে।”
আমি ওর কথা বিশ্বাস করলাম। কারণ আমাদের ছাদে কিছু আখগাছ আছে। প্রথম দিকে আখগুলো পাইন্শা ছিল, পরে আস্তে আস্তে যে আখ পেলাম—দারুণ মিষ্টি।
কিন্তু দুঃখের সাথে বলছি—আমার ওই বিশ্বাস কোনো কাজেই লাগলো না।
আজ প্রায় নয় বছর হতে চললো। কমলা গাছটা এখনো সহি–সেলামতে ভালোই আছে। শুধু কমলা নেই।
একটাও না।

যাই হোক, এখন পুরো হিসাবটা করে দিচ্ছি—
যাতে পরিষ্কার বোঝা যায়, প্রতি কমলার দাম কত পড়েছিলো।
১. গাছ ক্রয় বাবদ — ১৭৫০ টাকা
২. ট্রান্সপোর্ট — ২০০ টাকা
৩. ছাদে ওঠানোর শ্রমিক খরচ — ১০০ টাকা
৪. সিসিটিভি ক্যামেরা এবং অন্যান্য — ৮০০০ টাকা
৫. বান্দরবান থেকে মাটি ক্রয় — ৭০০ টাকা
৬. মাটি বাসায় আনা এবং ছাদ পর্যন্ত ওঠানো — ১১০০ টাকা
সর্বমোট খরচ — ১১,৮৫০ টাকা।
ছয়টা কমলার হিসাবে প্রতি কমলার দাম পড়লো ১,৯৭৫ টাকা। ডলারে ধরলে—৮৫ টাকা রেটে—প্রায় ২৪ ডলার।

আমার ধারণা—
আমি পৃথিবীর সবচেয়ে দামি কমলা খেয়েছি। আর সেই দামি কমলার সঙ্গেই পেয়েছি পৃথিবীর সবচেয়ে টক স্বাদ।

সর্বশেষ একটা কথা—
এখনো আশায় আছি, যদি কোনো দিন আবার কমলা পাই।
আর হিসাব–নিকাশে কোথাও ভুল হলে, দয়া করে চেপে যাবেন।

সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৩৬
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১২



আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফেসবুক বিপ্লবে সেভেন সিস্টার্স দখল—গুগল ম্যাপ আপডেট বাকি

লিখেছেন মহিউদ্দিন হায়দার, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৩০




কিছু তথাকথিত “বাংলাদেশি বিপ্লবী” নাকি ঘোষণা দিয়েছে—ভারতের সেভেন সিস্টার্স বিচ্ছিন্ন করে ফেলবে! সহযোগী হিসেবে থাকবে বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী আর পাকিস্তানি স্বপ্ন।শুনে মনে হয়—ট্যাংক আসবে ইনবক্সে। ড্রোন নামবে লাইভ কমেন্টে। আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গু এনালিস্ট কাম ইন্টারন্যাশনাল সাংবাদিক জুলকার নায়েরের মাস্টারক্লাস অবজারবেশন !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২৬

বাংলাদেশের দক্ষিণপন্থীদের দম আছে বলতে হয়! নির্বাচন ঠেকানোর প্রকল্পের গতি কিছুটা পিছিয়ে পড়তেই নতুন টার্গেট শনাক্ত করতে দেরি করেনি তারা। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ ঘিরে নতুন কর্মসূচি সাজাতে শুরু করেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিবাদ: দিল্লির ছায়া থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র

লিখেছেন কৃষ্ণচূড়া লাল রঙ, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৫:৫৭

একটা সত্য আজ স্পষ্ট করে বলা দরকার—
শেখ হাসিনার আর কোনো ক্ষমতা নেই।
বাংলাদেশের মাটিতে সে রাজনৈতিকভাবে পরাজিত।

কিন্তু বিপদ এখানেই শেষ হয়নি।

ক্ষমতা হারিয়ে শেখ হাসিনা এখন ভারতে আশ্রয় নিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

Grameen Phone স্পষ্ট ভাবেই ভারত প্রেমী হয়ে উঠেছে

লিখেছেন অপলক , ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪৯



গত কয়েক মাসে GP বহু বাংলাদেশী অভিজ্ঞ কর্মীদের ছাটায় করেছে। GP র মেইন ব্রাঞ্চে প্রায় ১১৮০জন কর্মচারী আছেন যার ভেতরে ৭১৯ জন ভারতীয়। বলা যায়, GP এখন পুরোদস্তুর ভারতীয়।

কারনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×