somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মালয়েশিয়া থেকে ঘুরে এসে - (পর্ব ১)- কোন এক কসমোপলিটন দেশে

১৪ ই জুলাই, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মালয়েশিয়ার ট্যুরিসমের একটা ট্যাগলাইন আছে যেটা আমরা বিভিন্ন সময় টিভিতে দেখে অভ্যস্ত। ট্যাগলাইনটা হল ‘Truly Asia in Malaysia.’ প্রথম প্রথম দেখে মনে হতে পারে আরে এ তো দেখি তাজ্জব ব্যাপার! কিভাবে সম্ভব পুরা এশিয়াকে দেখা একটি মাত্র দেশ ভ্রমণের মাধ্যমে? হ্যাঁ সম্ভব; এখানে একটা এলাকার সাথে আরেকটা এলাকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর ভূ–তাত্ত্বিক দিয়ে মিল একবারেই কম এবং কোন জায়গার চেয়ে কোনটা কম সুন্দর নয়। যে যার যার মত ইউনিক। মালয়েশিয়ার সরকার ট্যুরিসমকে সারা বিশ্বের ট্যুরিস্টদের কাছে পৌঁছে দেয়ার জন্য প্রতিনিয়ত নানারকম টিভিসি তৈরি করে যাচ্ছে; দেশের ইকোনমিক অবস্থা শক্তিশালী হচ্ছে ট্যুরিসমের উপর নির্ভর করে।আর তাই ট্যুরিসমের উপর আর সারা বিশ্বের ভ্রমণপিপাসু মানুষদের কাছে অন্যতম ট্যুরিস্ট ডেস্টিনেশন হিসাবে মালয়েশিয়ার গ্রহণযোগ্যতা দিন দিন বাড়ছে। মালয়েশিয়া শুধু দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ার নয় বরং এশিয়ার অন্যতম কসমোপলিটান দেশ। যে যে বৈশিষ্ট্যের জন্য একটা দেশকে কসমোপলিটান বলা যায় তার সবকয়টাই এই দেশটার মধ্যে বিদ্যমান। একটা কসমোপলিটান দেশের মানুষেরা একটি একক কমিউনিটিতে বিশ্বাস করে এবং এই কমিউনিটিটা সাধারণত নিজেদের মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ, মূল্যবোধ,সুন্দর অর্থনৈতিক সম্পর্ক আর শক্তিশালী রাজনৈতিক কাঠামোর উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠে। এই যে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ আর মূল্যবোধের যে সম্পর্ক সেটা যেমন এদেশের নাগরিকেরা মেনে চলে ঠিক তেমনি এটা এখানে যারা বেড়াতে আসে তাদের আচার–আচরণে ও লক্ষ্য করা যায়।

মালয়েশিয়া এত বড় একটা দেশ যে পুরোটা দেখতে হলে বেশ কয়েকবার সেখানে যাওয়া চাই।প্রথমবার ভ্রমণে প্ল্যান ছিল কুয়ালালামপুর শহরের আশপাশ ঘুরে দেখা আর শহর থেকে কাছাকাছি দূরত্বের শহরগুলোতে ঘুরে আসা। প্ল্যান মোতাবেক গত বছরের সেপ্টেম্বরে এক সপ্তাহের জন্য মালয়েশিয়ায় গিয়েছিলাম। সাথে ছিল আব্বু,আম্মু আর ছোট বোন। মালয়েশিয়ার আবহাওয়া সাধারণত গরম এবং আদ্রতা বেশি বাতাসে। বৃষ্টিপাত না হলে সারা বছরের যে কোন সময় মালয়েশিয়ায় ঘুরতে যাওয়া যায়। দেশের পূর্বদিকের এলাকাগুলোতে নভেম্বরের মাঝা–মাঝি হতে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বৃষ্টিপাত বেশি হয় আর পশ্চিমদিকের এলাকাগুলোতে সেপ্টেম্বর আর অক্টোবরের দিকে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা বেশি। বৃষ্টি মৌসুমে ঘুরতে গেলে ঘুরাঘুরি না করে হোটেলে বসে দিন কাটানোর সমূহ সম্ভাবনা থাকতে পারে। তাই যাওয়ার আগে ওয়েদার ফরকেস্ট চেক করে যাওয়া বুদ্ধিমানের কাজ হবে।


কুয়ালালামপুর ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট; ব্যাগেজ ক্লেইমিং মেশিন থেকে লাগেজ কালেক্ট করার পর


কুয়ালালামপুর ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট


কুয়ালালামপুর ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট

সেপ্টেম্বরের আট তারিখ রাতে আমাদের যাত্রা শুরু হল।হযরত শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে মালয়েশিয়াগামী মালিন্দো এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট ছিল রাত ১০:৫০ মিনিটে। প্লেন মালয়েশিয়া থেকে যাত্রী নিয়ে ঢাকায় ফিরতে দেরি করায় ফ্লাইট টাইম ১০:৫০ থেকে পিছিয়ে যায় ১১:৫০ টায়। তো ১১:৫০ এ প্লেন ছাড়ল। মালিন্দো বাজেট এয়ারলাইন্স। প্লেনে খাবারের মান ভালোই ছিল। কিন্ত, এয়ার কন্ডিশনের অবস্থা তেমন একটা ভালো ছিল না। আর ইকোনমিক ক্লাসের সিট বেশ কনগেস্টেড লাগসে আমার কাছে। তবে বাজেট এয়ারলাইন্সের কাছ থেকে খুব ভালো আশা করাটা আসলে বোকামি হবে। যাই হোক ৩:৩০ টার সময় মালয়েশিয়ায় পৌঁছালাম। কুয়ালালামপুর ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টটা খুব সুন্দর, একবারে সাজানো গোছানো। ইজি চেয়ারে শুয়ে রেস্ট নিচ্ছে কেউ কেউ, আবার অনেকে আরামে ঘুমাচ্ছে। আবার, কেউ কেউ ইজি চেয়ারে বসে হাই স্পীড ইন্টারনেটে নেট ব্রাউজিং করতেছে। প্লেন থেকে নেমে হেঁটে হেঁটে এয়ারপোর্টটা ঘুরে দেখলাম, তারপর লাগেজ ক্লিয়ারেন্স আর ইমিগ্রেশন ঝামেলা শেষ করতে করতে ৫:৩০ টা বেজে গেল। আগে থেকে সুইস ইন হোটেলে বুকিং দেয়া ছিল। এয়ারপোর্ট থেকে একটা গাড়ি ভাড়া করে হোটেলের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলাম। সেদিন অবশ্য কুয়ালালামপুরে প্রচন্ড বৃষ্টি হচ্ছিল। ভাগ্য ভালো পরের এক সপ্তাহে আর কোনরকম বৃষ্টির দেখা পাইনি। এম্নিতে প্লেন জার্নি করে ক্লান্ত ছিলাম, তাই ঘুম ঘুম চোখে মালয়েশিয়ার কিছু এলাকা দেখতে দেখতে ১:৩০ ঘন্টা পরে হোটেলে চলে আসলাম।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১:১৮
১১টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১২



আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফেসবুক বিপ্লবে সেভেন সিস্টার্স দখল—গুগল ম্যাপ আপডেট বাকি

লিখেছেন মহিউদ্দিন হায়দার, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৩০




কিছু তথাকথিত “বাংলাদেশি বিপ্লবী” নাকি ঘোষণা দিয়েছে—ভারতের সেভেন সিস্টার্স বিচ্ছিন্ন করে ফেলবে! সহযোগী হিসেবে থাকবে বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী আর পাকিস্তানি স্বপ্ন।শুনে মনে হয়—ট্যাংক আসবে ইনবক্সে। ড্রোন নামবে লাইভ কমেন্টে। আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গু এনালিস্ট কাম ইন্টারন্যাশনাল সাংবাদিক জুলকার নায়েরের মাস্টারক্লাস অবজারবেশন !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২৬

বাংলাদেশের দক্ষিণপন্থীদের দম আছে বলতে হয়! নির্বাচন ঠেকানোর প্রকল্পের গতি কিছুটা পিছিয়ে পড়তেই নতুন টার্গেট শনাক্ত করতে দেরি করেনি তারা। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ ঘিরে নতুন কর্মসূচি সাজাতে শুরু করেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিবাদ: দিল্লির ছায়া থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র

লিখেছেন কৃষ্ণচূড়া লাল রঙ, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৫:৫৭

একটা সত্য আজ স্পষ্ট করে বলা দরকার—
শেখ হাসিনার আর কোনো ক্ষমতা নেই।
বাংলাদেশের মাটিতে সে রাজনৈতিকভাবে পরাজিত।

কিন্তু বিপদ এখানেই শেষ হয়নি।

ক্ষমতা হারিয়ে শেখ হাসিনা এখন ভারতে আশ্রয় নিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

Grameen Phone স্পষ্ট ভাবেই ভারত প্রেমী হয়ে উঠেছে

লিখেছেন অপলক , ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪৯



গত কয়েক মাসে GP বহু বাংলাদেশী অভিজ্ঞ কর্মীদের ছাটায় করেছে। GP র মেইন ব্রাঞ্চে প্রায় ১১৮০জন কর্মচারী আছেন যার ভেতরে ৭১৯ জন ভারতীয়। বলা যায়, GP এখন পুরোদস্তুর ভারতীয়।

কারনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×