এবারের পর্বে ইংল্যান্ড।
বেচারা ইংল্যান্ড এর জন্য আসলেই কষ্ট লাগে।
কেন?
কারণ অনেক গুলো।
* বলার মত একমাত্র সাফল্য ১৯৬৬ এর বিশ্বকাপ জয়।
* বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় জাতীয় লীগ হলো ইংল্যান্ডের প্রিমিয়ার লীগ। অথচ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের অবস্থা বড়ই করুণ!
* ফুটবলের জনক হিসেবে খ্যাত ইংল্যান্ড প্রথম তিনটি বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করতে পারেনি ফিফার সাথে সম্পর্ক নষ্ট করার কারনে।
* ১৯৭৪, ১৯৭৮, ১৯৯৪ এ তারা বিশ্বকাপেই অংশগ্রহণ করতে পারেনি!
[২০০৮ এর ইউরোতেও পারেনি মূল পর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করতে।]
ইংল্যান্ডের ফুটবল ইতিহাস প্রায় ১৫০ বছর এর মতো পুরনো।
তবে প্রাচীন ফুটবল ইতিহাসের কথা বিবেচনা করলে সেটা প্রায় ৯০০ বছর!!!
ইতিহাসের পাতা বন্ধ করি। [কথা ছিলো কৌশল নিয়ে লিখবো, আমি ইতিহাসের লতা-পাতা নিয়ে টানাটানি শুরু করলাম!]
ইংল্যান্ডের ফুটবলের ট্রেডমার্ক কৌশল হলো লব পাস আর গতিময়তা।
আক্রমনে যাওয়ার জন্য যেকোন দলের চেয়ে এরা অনেক কম সময় নেয়। কারন, অতি অল্প পাসে অনেক দ্রুত সামনে এগিয়ে যায়।
সব সময় তো আর গ্রাউন্ড পাস দিয়ে যাওয়া সম্ভব না। তাই আশ্রয় নেয় লব পাস আর লং পাসের। [বেকহামের একটা অনন্য বৈশিষ্ট্য ছিলো, মিডফিল্ড থেকে মাঠের যেকোন পজিশনে লব পাস দেয়ার ক্ষমতা। জাবি অলোনসো ও এই কাজটা ভালো পারে]
কতটা কার্যকরী এই পদ্ধতি?
পরিসংখ্যান ভালো কথা বলছেনা।
কারণ গত ২০ বছরের বিশ্বকাপ ইতিহাসে কোন বড় দলের বিরুদ্ধে তারা ২ গোলের বেশি দিতে পারেনি!!!
বল দখলে রাখা অথবা দখল করার জন্য শারীরিক ক্ষমতাকে কাজে লাগায় বেশি।
ইংল্যান্ডের ভাগ্যটাই আসলে খারাপ। এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপের কোন ট্রাইব্রেকারে তারা জয় লাভ করতে পারেনি।
জার্মানি যেমন খাদের কিনারা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে পারে, ইংল্যান্ড ঠিক তার উল্টো।
ইংল্যান্ড দলে অনেক প্রতিভাবান, পরিশ্রমী খেলোয়াড় আছে। কিন্তু দল হিসেবে গড়ে উঠার জন্য যে রসায়ন দরকার সেটার অভাব কোন কোচ এখন পর্যন্ত তেমন ভাবে পূরণ করতে পারেননি। বিপদের মূহুর্তে তাই তারা এক একজন বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মত।
ফুটবলের বেশিরভাগ টেকনিক, ট্রেনিং-কৌশল এর জন্ম ইংল্যান্ডে। কিন্তু তাদের ব্যর্থতা যেন এ সব উদ্ভাবন কে উপহাস করে।
এবারের বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে ইংল্যান্ডের সাফল্য বেশ ভালো। তুলনামূলক সহজ গ্রুপে পড়েছে। ২য় রাউন্ডেও সহজ প্রতিপক্ষ পড়ার কথা কোন অঘটন না ঘটলে।
ইংল্যান্ডে আপনি হয়তো অনেক ভালো ভালো খেলোয়াড় এর নাম বলতে পারবেন। কিন্তু প্রয়োজনের সময় তাদের মধ্যে কতটুকু বোঝাপড়া থাকবে সেটাই হলো দেখার বিষয়। বাছাইপর্বের সাফল্য মূলপর্বে ধরে রাখতে পারলেই হয়।
........................
স্পেন, পর্তুগাল, ফ্রান্স এদের কৌশল গুলো নিয়ে আলোচনা করলাম না। কারন তাতে নতুন কিছু উঠে আসার সম্ভাবনা কম। নিজ পরিবেশ, স্থানীয় খেলোয়াড়দের শারীরিক কাঠামোর সাথে মিল রেখে এক এক দল তাদের কৌশল নির্ধারণ করে। তাই সবার কাছ থেকে একই কৌশলের আশা করা বোকামি।
আর খেলার এই ভিন্নতা দেখেই আমরা বেছে নেই আমাদের প্রিয় দল কোনটি হবে।
এই সিরিজের জন্য যারা আমাকে উৎসাহ দিয়েছেন তাঁদের সবাই কে অনেক ধন্যবাদ।
চেষ্টা করেছি নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি থেকে লেখার জন্য। সবার পছন্দের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে লেখার চেষ্টা করেছি।
সবাইকে আবারো অনেক অনেক ধন্যবাদ। (বিশেষ করে ব্লগার "হাসান মাহবুব" এর কাছে আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞ। )
সবাই ভালো থাকবেন আশাকরি।
নানা দেশের ফুটবল কৌশল: জার্মানি
নানা দেশের ফুটবল কৌশল : আর্জেন্টিনা
নানা দেশের ফুটবল কৌশল : ব্রাজিল
নানা দেশের ফুটবল কৌশল : ইতালি