আজ আমার বিয়ে করার ২৬ বছর পূর্ন হল, ২৭ বছরে পড়লাম! দুই সন্তান ও স্ত্রী নিয়ে এত বছর বলা চলে সুখেই কেটে গেল, মাঝে মাঝে তার ছিঁড়ে যাবার মত অবস্থা হলেও আবার সামলে নিয়ে এগিয়েছি। বিধাতার কাছে শোকরিয়া জানাতে হয় যে, তিনি এতদিন পার করার যোগ্যতা দিয়েছেন এবং পেরেছি, এটা অনেক দীর্ঘ সময় বটে!
যাই হোক, ইনবক্সে বছর দুয়েক আগের বিবাহিত এক ছোট ভাই বন্ধু কিছুক্ষন আগে জানতে চাইলেন, আপনার অভিজ্ঞতা থেকে বলুন, স্ত্রীর সাংসারিক চরিত্র/অবস্থা বুঝা যায় কিভাবে? মাথায় অনেক পয়েন্ট এল, কোনটা আগে লিখি, কোনটা পরে? চেষ্টা করি! আসুন!
প্রথম পয়েন্ট হল, বাসায় বাজার না করে দুই/চার দিন চুপচাপে থাকুন এবং অবস্থা দেখুন। এই পর্যায়ে তিনি কি কি করেন, তাতেই উনার সংসার প্রেম বুঝা যাবে! মারাত্বক দুব্যবহার, মুখ কালো করা সহ এত দিনের অতীত ভুলে নোংরা কথা শুনানোর স্ত্রীর অভাব নেই এই বাংলাদেশে! ভালবাসার স্ত্রীরা এই সময়ে আরো হাসবে, বিশ্বাস করবে, রাতে জড়িয়ে ধরবে এবং নিজের জমানো টাকা থেকে বাজার করে দুই চারদিন কেন, প্রয়োজনে দশ দিন চালিয়ে দিবে! জাস্ট বাজার না করতে পারলে তিনি কি আচরণ করেন তাতেই সব পরিস্কার বুঝা যাবে!
স্বামীরা স্ত্রীদের কাছে মুলত কি চায়? জ্বি, স্বামীরা তো বলা চলে সারা দুনিয়াই স্ত্রীর কাছে চায় - এটা স্ত্রীদের কমন ডায়ালগ, সারা বিশ্বে! আসলে তা নয়, একেক পুরুষের একেক চাওয়া। রাতের আরাম প্রায় সব পুরুষের অন্যতম চাওয়া! তবে যে আচরনে পুরুষ বেশী কষ্ট পায়, তা হচ্ছে স্ত্রীদের মুখের কটু কথা, ঝাপটা দিয়ে কথা বলা!
আমার অভিজ্ঞতা বা আশে পাশের দেখায় যা দেখি তা হচ্ছে, স্ত্রীরা স্বামীর সাথে খারাপ আচরণ কটু কথা বলে বেশ বাহাদুরি দেখাতে চায় (এটা আবার আত্মীয় পাড়া প্রতিবেশীদের সাথে নয়, প্রতিবেশীরা ভাবতেও পারে না, আপনি বললে তারাও বিশ্বাস করবে না, তারা আবার আপনাকেই দোষী বানাবে), কিন্তু এতে তিনি যে ধীরে ধীরে ঘৃণা কুড়িয়ে সব হারাচ্ছেন তা বুঝতে পারেন না, ভালবাসা ঘৃণা হয়ে যায় এক সময়ে। আর এই কারনে দেখবেন বেশ সুন্দরী, যার পুজা করা উচিত, নাটক সিনেমার নায়কা বটে, অথচ স্বামী পুঁছেও দেখে না! নিঃসন্দেহে স্ত্রী চরিত্রের এটা বিশ্রী বাহাদুরী!
স্বামীরা স্ত্রীদের যে বিষয় গুলো চরম ভালবাসে, তা হচ্ছে স্ত্রীর সময়জ্ঞান (এটার কারনে একজন স্বামী ভাল করে আবার অসন্তুষ্টে সব হারিয়ে ফেলে), ভাল ব্যবহার (মানসিক শান্তি, ব্যবহার ভাল হলে বন্ধু মনে করে), পরিচ্ছন্ন চরিত্র (এটা খারাপ হলে আর সংসার টিকেই না)।
আমাকে মোটামুটি একজন সংসার বিশারদ বলতে পারেন, এই জগত সংসারের এত অভিজ্ঞতা আমার দেখা হয়েছে যে, খুব কদাচিত দুই একটা হয়ত বাকী আছে!
সর্বশেষ, পুরুষ সংসারের মুল যোগান দাতা (আর এই কাজের স্বীকৃতিও পাওয়া যায় না), এই যোগানে আপনি ফেইল করলে, আর যাই হোক সংসার হবে না! সংসারে অর্থের খুব জরুরী প্রয়োজন, আপনার যদি অর্থ উপার্জনের আগ্রহ বা চান্স বা ইচ্ছা না থাকে, তবে বিবাহের দরকার নেই!
সর্বশেষ, স্ত্রীকে চতুমূর্খি খুশি রাখা শয়তানের পক্ষেও সম্ভব নয়! ভাজে ভাজে চলে পরপারে চলে যাবার ইচ্ছাই যথেষ্ট! আমিও সেই ভাজে আছি, এভাবে বছরের পর বছর পার হচ্ছে!

(সংক্ষিপ্ত, ২০২৩ সালের লেখা ঈষৎ পরিবর্তিত, ছবি ২০০৭ সালের)

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



