কিছু ভালবাসা, দেনা পাওনা একদম জায়গাতেই লিখিত পড়িতভাবে দিয়ে দিতে হয়, এটাই নিয়ম, দেরী হলেই তাতে ভেজাল প্রবেশ করে! শেখ হাসিনার পলায়নের পরে প্রফেসর ইউনুস সাহেব সরকার গঠনের পরেই আমরা অনেকেই বলেছিলাম, যারা এই বিজয় অর্জনে প্রাণ দিয়েছে, আহত হয়েছে কিংবা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তাদের লিষ্ট করে একদম সেই সময়েই সেই পরিবার গুলোর কাছে আর্থিক সাহায্য এবং সার্টিফিকেট/চিনিহত পত্র দিয়ে দিতে, আহতদের জন্য একদম ডেডিকেটড হাসপাতাল করে দিত্ যাতে আর একটা প্রাণও না হারায়।
খুব দুখের সাথে দেখলাম, এই ব্যাপারে সরকার প্রধান সহ সবাই কেমন যেন উদাসীন। অনেক বলার পরে, অনেক কথা উঠার পরে দেখলাম স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ে একটা সরকারী লিষ্ট অনলাইন করেছে যারা নিহত হয়েছে, পত্রিকা বা অন্যান্ন সোর্স থেকে, তবে এতে সেই পরিবার গুলোর যোগাযোগ করেছে কি না, তার আর ফলোআপ দেখি নাই। তারা কোন সেবা, পুরুস্কার পেল এখনো জানি না।
সরকারের এই বিষয়ে দেরী করা মোটেই উচিত হয় নাই। দেশ এত দরিদ্র হয় নাই যে, এই পরিবার গুলোকে অন্তত ৪/৫ লক্ষ করে টাকা দিতে পারবে না, যে কোন ফান্ড থেকে এই কয়েক কোটি টাকা বের করাই যেত। এই হাজার খানেক পরিবারকে একদম ডেকে এনে প্রচার করেই টাকা গুলো দেয়া যেত, আমরা এখন বুক ফুলিয়ে সেই পরিবার গুলোকে বলতে পারতাম, আপনারা অন্তত কিছুটা নিশ্চিন্ত থাকুন, আমরা আছি, যারা প্রান দিয়েছে তারা আমার ভাই বোন! আবার আহতদেরও চিকিৎসা ব্যায় বা পরিবারের কাছেও এমন সন্মানী দেয়াই যেত! বিচ্ছিন্ন সামান্য কিছু কাজ হয়েছে, তা যথেষ্ট নয় বলেই মনে হয়। প্রতিদিন কোন না কোন পত্রিকাতে কারো না কারো দুঃখ বের হয়েই আসছে!
সরকারের বেশ কয়েকটা ভুলের মধ্যে আমি মনে করি এই কাজ না করাও বিরাট ভুল। যাদের প্রাণের বা অংগহানীর বিনিময়ে এই স্বাধীনতা বা স্বৈরাচার পতন তাদের আমাদের সব সময়েই মাথায় তুলে রাখতে হবেই। এই একই ভুল হয়েছে ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধেও, আমরা সেই সময়েও একটা নির্ভুল মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা করি নাই, এর ফলাফল আমরা হাতে নাতে পেয়েছি, আমরা পেয়েছি ভুয়াদের যারা কুবুদ্ধি করে আমজনতার হক চিনিয়ে নিয়েছে, অর্থ নিয়েছে, চাকুরী নিয়েছে, পোষ্ট পদবী নিয়েছে, চেতনার নামে দেশকে নিঃস্ব করেছে!
আমি মনে করি, এখনো সময় শেষ হয়ে যায় নাই, এখনো সরকার একদিনও দেরী না করে তাদের সন্মান ও আর্থিক সাহায্য করুক। নিহত আহতদের পরিবার যেন বলতে না পারে, আমার সন্তানের অভাবে আমরা কষ্ট পাচ্ছি! আমাদের বিবেক জাগ্রত করা উচিত। সরকারের যারা নীতি নির্ধারনে আছেন, আপনারা সতর্ক হউক, এই কাজ আগেই সেরে ফেলুন, এখনো সামান্য সময় আছে। যাদের রক্তের বিনিময়ে আপনাদের আজকের এই আসন, তাদের ভালবাসা দিন, তাদের খুশি রাখুন।
সরকারের কেহ না কেন নিশ্চয় আমার এই লেখা পড়ছেন বলে মনে করি, বিষয়টা জরুরী। আমরা স্বৈরাচার তাড়িয়েছি একটা সুশাসন সুবিবেচনায় পরিচালিত দেশের জন্য। আমরা চাই সাধারন মানুষের মনে যেন আর ক্ষোভ না আসে যে, যাদের তাড়িয়েছি আমরা তাদের চেয়েও খারাপ সরকার পেয়েছি।
সত্য সত্যই, যে কাজ আগে করার তা আগেই করুন, সময় গেলে সাধন হবে না!
ব্লগে লিখিত, মালিবাগ, ১৪/১১/২০২৪ইং

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



