somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বৃটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে বৃটিশ ভূমিকা (২০)

০২ রা নভেম্বর, ২০১২ দুপুর ১:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


[শয়তান যে মানুষকে নেক সুরতে ধোকা দেয়, এ বিষয়টি ভালভাবে অনুধাবন করেছিল শয়তানের অনুচর ইহুদী এবং খ্রীষ্টানরা। মসলমানদের সোনালী যুগ এসেছিল শুধু ইসলামের পরিপূর্ণ অনুসরণের ফলে। শয়তানের চর ইহুদী খ্রীষ্টানরা বুঝতে পেরেছিল মুসলমানদের মধ্যে বিভেদ, অনৈক্য, সংঘাত সৃষ্টি করতে পারলেই ইসলামের জাগরণ এবং বিশ্বশক্তি হিসেবে মুসলমানদের উত্থান ঠেকানো যাবে। আর তা করতে হবে ইসলামের মধ্যে ইসলামের নামে নতুন মতবাদ প্রবেশ করিয়ে। শুরু হয় দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা যার মূলে থাকে খ্রষ্টীয় বৃটিশ সম্রাজ্যবাদ। জন্ম হয় ওহাবী মতবাদের। ওহাবী মতবাদ সৃষ্টির মূলে থাকে একজন বৃটিশ গুপ্তচর হেমপার। মিসর, ইরাক, ইরান, হেজাজ ও তুরস্কে তার গোয়েন্দা তৎপরতা চালায় মুসলমানদের বিভ্রান্ত করার জন্য। "Confession of British Spy and British enmity against Islam" গ্রন্থ হচ্ছে হেমপারের স্বীকারোক্তি মূলক রচনা। যা মূল গ্রন্থ থেকে ধারাবাহিকভাবে তার অনুবাদ প্রকাশ করা হচ্ছে। ইনশাআল্লাহ।

২০তম পর্ব

৬। পুনঃ পুনঃ এটা বলবে যে, গীর্জা তৈরী করা হারাম নয় এবং হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং খলীফাগণ গীর্জাসমূহ ধ্বংস করেননি বরং সেগুলোকে সম্মান দেখিয়েছেন। কুরআন শরীফে বলা হয়েছে, “আল্লাহ পাক যদি মানবজাতির একদলকে অপর দল দ্বারা প্রতিহত না করতেন, তবে (খ্রিস্টানদের) নির্জন, গীর্জা, (ইহুদীদের) উপাসনালয় এবং মসজিদসূহ ধ্বংস হয়ে যেত, যেগুলোতে আল্লাহ পাক-এর নাম অধিক স্মরণ করা হয়।
(বিগত যামানায় যত ধর্মের ভিত্তি আল্লাহ রাব্বুল আলামীন-এর পক্ষ থেকে এবং ওহীর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, ইসলাম আসার পর সেগুলো রহিত হয়ে গেছে সেসব ধর্মের উপাসনালয়সমূহের নাম এই আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে। কারণ স্ব স্ব যামানায় তাদের উপাসনালয়গুলো সম্মান ও সংরক্ষণ ফরয ছিল।)

৭। আরব বদ্বীপ থেকে ইহুদীদেরকে বিতাড়িত করবে এবং বদ্বীপে দুটো ধর্ম একত্রে থাকতে পারে না- এ হাদীছ সম্পর্কে মুসলমানদেরকে দ্বিধাগ্রস্থ করবে। এ হাদীছ সত্য হয়ে থাকলে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কোন ইহুদী বা খ্রিস্টান স্ত্রী থাকার কথা নয়। তেমনি নজরান খ্রিস্টানদের সঙ্গেও কোন চুক্তি সম্পাদন হওয়ার কথা নয়।
(কোন উম্মুল মু’মিনীন ইহুদী বা খ্রিস্টান ছিলেন না। প্রত্যেকেই ইসলাম কবুল করেছিলেন। আর মুসরমানদের সাথে শর্ত সাপেক্ষে যে কোন ধর্মের লোকদের সঙ্গে চুক্তি সম্পাদিত হতে পারে যা আল্লাহ পাক বলেন তাতে দোষের কিছু নেই)

৮। মুসলমানদের ইবাদতের মধ্যে বাধা সৃষ্টি করতে হবে এবং উপকারী ইবাদত সমূহের মধ্যে ত্রুটি প্রবেশ করিয়ে দিতে হবে এবং বলবে যে আল্লাহ পাক মানুষের ইবাদত চাননা।
(ইবাদত করা হয় যেহেতু সেটা আল্লাহ পাক-এর নির্দেশ। অবশ্যই আল্লাহ পাক বান্দার ইবাদতের মুখাপেক্ষী নন তথাপি বান্দাদের নিজেদের জন্যই ইবাদতের প্রয়োজন রয়েছে। খ্রিস্টানরা দলবেধে চার্চে যায় অথচ মুসলমানদেরকে মসজিদে যাওয়া থেকে বাধা প্রদান করে।)

৯। যুদ্ধে গণীমতের যে মাল পাওয়া যায় তার এক পঞ্চমাংশ উলামাদের দেয়ার ব্যাপারে শিয়াদের বিভ্রান্ত করতে হবে। ব্যাখ্যা করবে যে, এক পঞ্চমাংশ গণীমতের মালের সাথে ব্যবসায়িক উপার্জনের কোন যোগ নেই। তারপর যোগ করবে যে, খুমুস (এক পঞ্চমাংশ গণীমত) দিতে হয় নবী বা খলীফাকে, উলামাকে নয়। উলামাদের দিতে হবে বাড়ী, প্রাসাদ, প্রাণী এবং উদ্যান। তাদের খুমুস দেয়া বৈধ নয়।

১০। মুসলমানদের মধ্যে বিদায়াত প্রবেশ করিয়ে দিতে হবে এবং ইসলাম সন্ত্রাসের ধর্ম বলে সমালোচনা করবে। প্রচার করবে যে মুসলিম দেশগুলো হচ্ছে অপ্রগতিশীল এবং তারা ধ্বংসের দিকে যাচ্ছে শুধু ইসলামের সাথে সম্পৃক্ততার কারণে।
(অপরদিকে পৃথিবীতে সবচেয়ে সভ্য এবং বড় সাম্রাজ্য মুসলমানরাই তৈরী করেছিল। মুসলমানরা অধঃপতিত হচ্ছে শুধু ইসলাম থেকে সরে যাবার কারণে)

১১। খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যে, সন্তানদের তাদের পিতা থেকে সরিয়ে দিতে উস্কানি দিতে হবে এবং এভাবে পিতার শিক্ষা থেকে বঞ্চিত করতে হবে। আমরা তাদের শিক্ষিত করবো। যে সময়টা তারা পিতার শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হবে তখন আর তাদের কোন সুযোগ থাকবে না তাদের পিতার বিশ্বাস, আদর্শ এবং উলামাদের স্পর্শে যাবার।

১২. নারী জাতিদের প্ররোচিত করতে হবে যাতে তারা তাদের পর্দা থেকে সরে আসে। মিথ্যা কথামালা তৈরী করে বলতে হবে নিজেকে আবৃত রাখা ইসলামের মূল নির্দেশ নয় বরং আব্বাসীয় খেলাফতের সময়কালীন এটি একটি প্রথামাত্র। পূর্বে অন্যান্য পুরুষরা উম্মুল মু’মিনীনদের দেখতে পেতেন এবং তাঁরা সকল সামাজিক কর্মকান্ডে যোগ দিতেন। মহিলাদের তাদের ঐতিহ্যগত পোশাক থেকে সরিয়ে যুবকদের তাদের প্রতি আকৃষ্ট করার চেষ্টা করে একটা অশোভনীয় পরিবেশ তৈরী করতে হবে। ইসলামকে নষ্ট করার এটা একটা কার্যকর পদ্ধতি। প্রথমে অমুসলিম এ কাজে ব্যবহার করতে হবে। সময়ের পরিক্রমায় মুসলমান মহিলারাও ধীরে ধীরে অবনতির দিকে যাবে এবং অমুসলিম মহিলাদের পথ অনুসরণ করবে।

১৩. মসজিদের ইমামের বিরুদ্ধে অপবাদ রটিয়ে জামাতে নামায আদায় বন্ধ করতে হবে এবং এতে সর্বপ্রকার সুযোগ কাজে লাগাতে হবে। যে সকল মুছল্লী সেই ইমামের পিছনে নামায পড়বে তাদের প্রতি দেখাতে হবে অবজ্ঞা এবং বিরূপ মনোভাব।

১৪. সব সমাধি ধ্বংস করে মাটিতে মিশিয়ে দিতে হবে। কেননা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সময় উপস্থিত ছিল না। শুধু তাই নয় মাযার শরীফ যিয়ারতের ব্যাপারে সন্দেহ প্রবেশ করিয়ে দিয়ে নবী আলাইহিস্ সালাম, খলীফা এবং নেককার মুসলমানগণ যেখানে শুয়ে আছেন সে সকল স্থান যিয়ারত করতে বাধা প্রদান করতে হবে।

উদাহরণ হিসেবে বলবে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাতার পাশে শুয়ে আছেন।

হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক্ব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু এবং হযরত উমর ফারুক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু শুয়ে আছেন বাকি নামক গোরস্থানে। হযরত উসমান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুকে কোথায় রাখা হয়েছে তা জানা যায়নি। কাজিমিয়াতে অবস্থিত দু’টো মাযার শরীফ দু’জন খলীফার। কিন্তু তারা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বংশধর কাজিম বা জাওয়াদ নয়। তুস শহরে যে মাযার শরীফ রয়েছে তা হারুন নামীয় কারো। তিনি আহলে বাইতের সদস্য রিদা নামীয় কারো নয়। সামেরাস্থ কবরগুলো আব্বাসীয়দের। সেগুলো আহলে বাইতের সদস্য হাদী, আসকারী এবং মাহদীর নয়্ যেহেতু সব মুসলিম দেশের সমাধি ও গম্বুজ ধ্বংস করা ফরয, সে কারণে জান্নাতুল বাকীর সব কবরসমূহ নিশ্চিহ্ন করতে হবে।

(যদিও কিছু মানুষের ঈমান আক্বীদা বিনষ্ট করতে ওহাবীরা সক্ষম হয়েছে তার মানে এই নয় সব বিষয়েই তারা কামিয়াব। আল্লাহ পাক-এর অসীম রহমতের কারণে বংশানুক্রমে মানুষ ছাহাবা আজমাঈন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ এবং আওলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণের মাযার শরীফসমূহ সঠিকভাবেই চিহ্নিত করে আসছে।)

(ইনশাআল্লাহ চলবে)

এথান থেকে পরুন পর্ব- ১
এথান থেকে পরুন পর্ব- ২
এথান থেকে পরুন পর্ব- ৩
এথান থেকে পরুন পর্ব- ৪
এথান থেকে পরুন পর্ব- ৫
এথান থেকে পরুন পর্ব- ৬
এথান থেকে পরুন পর্ব- ৭
এথান থেকে পরুন পর্ব- ৮
এথান থেকে পরুন পর্ব- ৯
এথান থেকে পরুন পর্ব- ১০
এথান থেকে পরুন পর্ব- ১১
এথান থেকে পরুন পর্ব- ১২
এথান থেকে পরুন পর্ব- ১৩
এথান থেকে পরুন পর্ব- ১৪
এথান থেকে পরুন পর্ব- ১৫
এথান থেকে পরুন পর্ব- ১৬
এথান থেকে পরুন পর্ব- ১৭
এথান থেকে পরুন পর্ব- ১৮
এথান থেকে পরুন পর্ব- ১৯
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদীর পরিবার সংক্রান্ত আপডেট

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯


মার্চ মাস থেকেই বিষয়টি নিয়ে ভাবছিলাম। ক'দিন আগেও খুলনায় যাওয়ার ইচ্ছের কথা জানিয়েও আমার বিগত লিখায় কিছু তথ্য চেয়েছিলাম। অনেক ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও মেহেদীর পরিবারকে দেখতে আমার খুলনা যাওয়া হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×