somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বৃটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে বৃটিশ ভূমিকা (২২)

০৫ ই নভেম্বর, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


[শয়তান যে মানুষকে নেক সুরতে ধোকা দেয়, এ বিষয়টি ভালভাবে অনুধাবন করেছিল শয়তানের অনুচর ইহুদী এবং খ্রীষ্টানরা। মসলমানদের সোনালী যুগ এসেছিল শুধু ইসলামের পরিপূর্ণ অনুসরণের ফলে। শয়তানের চর ইহুদী খ্রীষ্টানরা বুঝতে পেরেছিল মুসলমানদের মধ্যে বিভেদ, অনৈক্য, সংঘাত সৃষ্টি করতে পারলেই ইসলামের জাগরণ এবং বিশ্বশক্তি হিসেবে মুসলমানদের উত্থান ঠেকানো যাবে। আর তা করতে হবে ইসলামের মধ্যে ইসলামের নামে নতুন মতবাদ প্রবেশ করিয়ে। শুরু হয় দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা যার মূলে থাকে খ্রষ্টীয় বৃটিশ সম্রাজ্যবাদ। জন্ম হয় ওহাবী মতবাদের। ওহাবী মতবাদ সৃষ্টির মূলে থাকে একজন বৃটিশ গুপ্তচর হেমপার। মিসর, ইরাক, ইরান, হেজাজ ও তুরস্কে তার গোয়েন্দা তৎপরতা চালায় মুসলমানদের বিভ্রান্ত করার জন্য। "Confession of British Spy and British enmity against Islam" গ্রন্থ হচ্ছে হেমপারের স্বীকারোক্তি মূলক রচনা। যা মূল গ্রন্থ থেকে ধারাবাহিকভাবে তার অনুবাদ প্রকাশ করা হচ্ছে। ইনশাআল্লাহ।

২২তম পর্ব

প্রতি শতাব্দী শেষে এরূপ সংশোধনী আনয়ণ করার ব্যাপারে সিদ্ধান্তও গৃহীত হয়। এভাবে ১২২৪ সালে মার্টিন লথার নামে একজন জার্মান পাদ্রী পোটেষ্ট্যান্ট সম্প্রদায়ের প্রতিষ্ঠা করে। খ্রিস্টানদের মধ্যে যারা রোমের পোপকেঅনুসরণ করে তাদের বলা হয় ক্যাথলিক। ১০৫৪ সালে ইস্তাম্বুলের গীর্জা প্রধান, পোপের অধঃস্তন মাইকেল কিরোলারিয়াস অর্থডক্স (গোড়া) চার্চের গোড়াপত্তন করে। অনুরূপভাবে সিরিয়ান একেশ্বরবাদী দল সৃষ্টি হয় জোকাবাস (কাবাউস) কর্তৃক ও সিরিয়ান ম্যারোনিট সম্প্রদায় সৃষ্টি হয় মাআরো নামক এক ব্যক্তি দ্বারা। জোহাবাস উইটনেস দল গঠিত হয় ১৮৭২ সালের চার্লস রাসেল কর্তৃক।)

“কেমন করে ইসলাম ধ্বংস করা যায়” নামের বইটি যখন পুরোটা পড়ি তখন আমার মনে হল সত্যি বেশ দারুন একটি। আমার দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে এটি একটি মূল্যবান পুস্তক বলে মনে হল। সচিবের কাছে বইটি ফেরত দিতে গিয়ে বললাম, বইটি পড়ে আমি খুব আনন্দ পেয়েছি। সচিব বললো, তুমি নিশ্চিত থেকো এই পথে তুমি একমাত্র ব্যক্তি নও। আমাদের আরো অসংখ্য লোক আছে যারা তোমার ত এই দায়িত্ব পালন করছে। আমাদের মন্ত্রণালয় পাঁচ হাজারেরও বেশী লোককে এ কাজের জন্য নিয়োগ দিয়েছে। মোট গোয়ন্দার সংখ্যা লাখের মত। বাড়াবার চিন্তা-ভাবনাও রয়েছেঠ মন্ত্রণালয়ের। সে লক্ষ্যে পৌঁছতে পারলে, সব মুসলমানকেই আমাদের কব্জায় নিয়ে আসবে এবং সব মুসুলিম দেশগুলো চলে আসবে আমাদের দখলে। সচিব এক পর্যায়ে বললো, তুমি শুনে খুশী হবে যে, এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করতে আমাদের মন্ত্রণালয়ের মাত্র এক শতাব্দী প্রয়োজন। যদিও আমরা সেই সুখের দিনগুলো দেখার জন্য বেঁচে থাকবো না কিন্তু আমাদের সন্তানরা তা দেখবে।

যেহেতু অন্যের বপন করা বীজের ফসল আমরা খাচ্ছি, সে কারণে অন্যের জন্য আজ আমরা বপন করে যাচ্ছি। যদি ব্রিটিশরা এই পরিকল্পনা ভালভাবে বাস্তবায়িত করতে পারে তবে পরবর্তীতে সমস্ত খ্রিস্টান সম্প্রদায় সুখে থাকবে এবং বারশ শতাব্দী জুড়ে বিরাজমান অবস্থা থেকে মুক্তি লাভ করবে। সচিব বলতে থাকলো শতাব্দী জুড়ে বিরাজমান অবস্থা থেকে মুক্তি লাভ করবে। সচিব বলতে থাকলো শতাব্দী পর শতাব্দী ধরে ক্রসেড চালিয়ে কোন ফায়দা হয়নি। মোগল এবং চেঙ্গিস সেনাদলও ইসলামের তেমন কোন ক্ষতি করতে পারেনি। কারণ তাদের কর্মকা- ছিল অতর্কীত ও অপরিকল্পিত। তারা শত্রু দমনের জন্যে শুধু সামরিক অভিযান চালিয়েছে। ফলে অল্পতেই তারা কাহিল হয়ে পরতো। কিন্তু এখন আমাদের দক্ষ প্রশাসন চাচ্ছে একটা পরিকল্পিত পন্থায় দীর্ঘ সময়ে ধৈর্য্য সহকারে ইসলামের বিনাশ করতে। আমরাও সামরিক শক্তিকে কাজে লাগাবো। তবে সেটা আসবে চূড়ান্ত পর্যায়ে। আমরা যখন ইসলামকে পুরোপুরি হজম করতে পারবো এবং যখন ইসলামকে সব দিক থেকে আঘাত হানতে সক্ষম হব, যখন একে চরম বিপর্যস্ত অবস্থায় ফেলে দিতে পারবো, ইসলামকে যখন আর পুররুদ্ধারের মত অবস্থায় পাওয়া যাবে না তখন আমাদের বিরুদ্ধে আর লড়ার যোগ্যতা থাকবে না।

সচিবের শেষ কথা ছিল, ইস্তাম্বুলে আমাদের যে সব পদস্থ কর্মকর্তা আছেন তারা অবশ্যই জ্ঞানী ও মেধা সম্পন্ন। তারা আমাদের পরিকল্পনা খুব সূক্ষ্মভাবে বাস্তবায়িত করছেন। তারা সেখানকার মুসলমানদের সাথে মিশছেন এবং তাদের ছেলে-মেয়েদের জন্য মাদ্রাসা খুলছেন অন্যদিকে গীর্জাও প্রতিষ্ঠা করছেন। শরাব, জুয়া আর অশ্লীলতাকে জনপ্রিয় করার ব্যাপারে এবং ক্লাব ও ফুটবল খেলার মাধ্যমে তাদেরকে দল-উপদলে বিভক্ত করার ব্যাপারে তারা পরিপূর্ণভাবে সার্থক হয়েছে। মুসলমান যুবকদের মনে তারা সন্দেহ প্রবেশ করিয়ে দিয়েছে, তৈরী করেছে সরকার বিরুদ্ধ দল এবং ভিন্ন মতালম্বী। দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে দিয়েছে দাঙ্গা ও সন্ত্রাস এবং অন্যায় কার্যকলাপ। প্রশাসক, পরিচালক ও রাজন্যবর্গ সবার ঘরে ঘরে খ্রিস্টান মেয়েদের চালান করে সবাইকে করেছে নীতিভ্রষ্ট। এসব কুকীর্তির মাধ্যমে তারা সকল শক্তি বিনষ্ট করে, তাদের বিশ্বাসে চিড় ধরিয়েছে। আদর্শের দিক থেকে তাদের অধঃপতিত করে তাদের ঐক্য এবং যোগ্যতাকে বিনষ্ট করেছে। এবার সময় এসেছে যে কোন সময় যুদ্ধ ঘোষণা করার এবং ইসলামকে ধ্বংস করার।

ওহাবী মতবাদ প্রতিষ্ঠার নীল নকশা
প্রথম গোপন বিষয়টি উপভোগ করার পর দ্বিতীয় গোপন বিষয়টি জানার জন্য ইম (হেমপার ব্যাকুল হয়ে উঠি। অবশেষে একদিন সচিব আমাকে দ্বতীয় গোপন বিষয়টি তার প্রতিশ্রুতি মুতাবিক ব্যাখ্যা করলেন। দ্বিতয়ি গোপন বিষয়টি ছিল ৫৩ পৃষ্ঠার একটি স্কীম। এটা তৈরী হয়েছিল মন্ত্রণালয় উচ্চ পর্যায়ের কিছু কর্মকর্তার জন্য যারা এক শতাব্দীর মধ্যে ইসলামকে ধ্বংস করার কাজে ব্যবহার করবে। এই স্কীমটিতে ছিল মোট ১৪টি অনুচ্ছেদ এবং এটি বিশেষভাবে সংরক্ষিত ছিল যাতে কোনভাবে এটা মুসলমানদের হাতে চলে না যায়।

(ইনশাআল্লাহ চলবে)

এথান থেকে পরুন পর্ব- ১
এথান থেকে পরুন পর্ব- ২
এথান থেকে পরুন পর্ব- ৩
এথান থেকে পরুন পর্ব- ৪
এথান থেকে পরুন পর্ব- ৫
এথান থেকে পরুন পর্ব- ৬
এথান থেকে পরুন পর্ব- ৭
এথান থেকে পরুন পর্ব- ৮
এথান থেকে পরুন পর্ব- ৯
এথান থেকে পরুন পর্ব- ১০
এথান থেকে পরুন পর্ব- ১১
এথান থেকে পরুন পর্ব- ১২
এথান থেকে পরুন পর্ব- ১৩
এথান থেকে পরুন পর্ব- ১৪
এথান থেকে পরুন পর্ব- ১৫
এথান থেকে পরুন পর্ব- ১৬
এথান থেকে পরুন পর্ব- ১৭
এথান থেকে পরুন পর্ব- ১৮
এথান থেকে পরুন পর্ব- ১৯
এথান থেকে পরুন পর্ব- ২০
এথান থেকে পরুন পর্ব- ২১
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদীর পরিবার সংক্রান্ত আপডেট

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯


মার্চ মাস থেকেই বিষয়টি নিয়ে ভাবছিলাম। ক'দিন আগেও খুলনায় যাওয়ার ইচ্ছের কথা জানিয়েও আমার বিগত লিখায় কিছু তথ্য চেয়েছিলাম। অনেক ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও মেহেদীর পরিবারকে দেখতে আমার খুলনা যাওয়া হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×