somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বৃটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে বৃটিশ ভূমিকা (২৩)

০৬ ই নভেম্বর, ২০১২ সকাল ১১:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


[শয়তান যে মানুষকে নেক সুরতে ধোকা দেয়, এ বিষয়টি ভালভাবে অনুধাবন করেছিল শয়তানের অনুচর ইহুদী এবং খ্রীষ্টানরা। মসলমানদের সোনালী যুগ এসেছিল শুধু ইসলামের পরিপূর্ণ অনুসরণের ফলে। শয়তানের চর ইহুদী খ্রীষ্টানরা বুঝতে পেরেছিল মুসলমানদের মধ্যে বিভেদ, অনৈক্য, সংঘাত সৃষ্টি করতে পারলেই ইসলামের জাগরণ এবং বিশ্বশক্তি হিসেবে মুসলমানদের উত্থান ঠেকানো যাবে। আর তা করতে হবে ইসলামের মধ্যে ইসলামের নামে নতুন মতবাদ প্রবেশ করিয়ে। শুরু হয় দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা যার মূলে থাকে খ্রষ্টীয় বৃটিশ সম্রাজ্যবাদ। জন্ম হয় ওহাবী মতবাদের। ওহাবী মতবাদ সৃষ্টির মূলে থাকে একজন বৃটিশ গুপ্তচর হেমপার। মিসর, ইরাক, ইরান, হেজাজ ও তুরস্কে তার গোয়েন্দা তৎপরতা চালায় মুসলমানদের বিভ্রান্ত করার জন্য। "Confession of British Spy and British enmity against Islam" গ্রন্থ হচ্ছে হেমপারের স্বীকারোক্তি মূলক রচনা। যা মূল গ্রন্থ থেকে ধারাবাহিকভাবে তার অনুবাদ প্রকাশ করা হচ্ছে। ইনশাআল্লাহ।

২৩তম পর্ব

স্কীমের অনুচ্ছেদগুলো ছিল নিম্নরূপঃ

১. আমাদের এমন একটি শক্তিশালী মিত্র বাহিনী তৈরী করতে হবে এবং রাশিয়ার জারের সাথে চুক্তিতে আসতে হবে যাতে বুখারা, তাজিকিস্তান, আর্মেনিয়া, খোরাসান এবং প্রতিবেশী দেশগুলোর উপর আক্রমণ চালিয়ে দখল করা যায়। রাশিয়ার সাথে অপর একটি চুক্তি করতে হবে যাতে তুরস্ক দখল করা যায়।

২. ফ্রান্সের সাথেও আমাদের সখ্যতা তৈরী করতে হবে যাতে ইসলামকে ভেতর এবং বাহির দু’দিক থেকেই ধ্বংস করা যায়।

৩. ইরান ও তুরস্ক উভয় দেশের মধ্যে তীব্র মতবিরোধ সৃষ্টির লক্ষে বীজ বপন করতে হবে। তাদের উভয়ের মধ্যে জাতীয়তাবোধ এবং সাম্প্রদায়িক ধারণা সৃষ্টিতে জোর প্রচেষ্টা চালাতে হবে।

৪. মুসলিম দেশগুলোর অংশ বিশেষ অবশ্যই অমুসলিম সম্প্রদায়ের হাতে দিতে হবে যেমন মদীনা শরীফকে দিতে হবে ইহুদীদের হাতে। আলেকজান্দ্রিয়া দিতে হবে খ্রিস্টানদের হাতে। তেমনি ইমারা যাবে সাইবার (সার্বিয়া) কাছে। কারমানশাহ (ইরানের একটি প্রদেশ), নুসারিয়া গ্রুপের কাছে। ইরান উপসাগর তুলে দিতে হবে হিন্দুদের নিয়ন্ত্রণে, ত্রিপোলিয়া যাবে দ্রুজদের (এরা ইসমাইলিয়া সম্প্রদায় ভুক্ত) হাতে, কারস (তুরস্কের একটি অঞ্চল) যাবে আলাউসদের হাতে এবং মাসকাট যাবে খারিজী গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে। পরবর্তী কাজ হবে তাদের হাতে অস্ত্র দেয়া যাতে তারা প্রত্যেকে ইসলামের জন্য গায়ের কাটা হায়ে দাঁড়ায়। তাদের দখলী এলাকার সম্প্রসারণ করতে হবে যাতে ইসলাম মুখ থুবড়ে পড়ে এবং শেষে ধ্বংস হয়ে যায়।

৫। মুসলিম দেশ এবং অটোম্যান রাষ্ট্রগুলোকে যতটা সম্ভব ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাষ্ট্রে ভেঙ্গে ফেলতে হবে এবং এমন ষড়যন্ত্র করতে হবে যাতে তারা সব সময নিজেদের মধ্যে ঝগড়া বিবাদে ব্যস্ত থাকে। উদাহরণ হিসেবে আজকের ভারতের কথা বলা যায়। “বিভক্ত করো আর আধিপত্য বিস্তার করো, এবং বিভক্ত করো আর ধ্বংস করো” এটাই হোক সাধারণ থিওরি।

৬। ইসলামের মূল সৌন্দর্যের মধ্যে ভেজাল আনতে হলে বিভ্রান্তিকর ধর্মীয় মতের সংযোজন এবং বিভিন্ন দল-উপদলের মিশ্রণ ঘটানো প্রয়োজন।
এটা বাস্তবায়িত করতে আমাদের অবশ্যই এমন একটা ধর্মের আবিস্কার করতে হবে যা তাদের নফসের ইচ্ছার সাথে খাপ-খাইয়ে যেতে পারে। শিয়া অধুষিত দেশগুলোতে আমরা চার ধরনের ধর্মের প্রচলন করবো।
(ক) এমন এক ধর্ম যার ধর্মীয় নেতা হবেন ইমাম হুসাইন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু।
(খ) এমন এক ধর্ম যাদের ধর্মীয় নেতা হবেন ইমাম জাফর সাদিক রহমতুল্লাহি আলাইহি।
(গ) এমন এক ধর্ম যাদের ধর্মী নেতা হবেন ইমাম মাহদী আলাইহি সালাম।
(ঘ) এমন এক ধর্ম যাদের নেতা হবেন হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু। (আলী রিদা)
প্রথমটার জন্যে কারবালা হচ্ছে উপযুক্ত জায়গা, দ্বিতীয়টার জন্যে ইস্পাহান, তৃতীয়টার বেলায় সামারা আর চতুর্থটির জন্যে খোরাসানই হবে উপযুক্ত স্থান।
ইতোমধ্যে সুন্নীদের চার মাযহাবকে অবনমিত করে চারটি সম্পূর্ণ নতুন ধর্মে রূপান্তরিত করাতে হবে। এলক্ষ্যে নজদে আমরা একটি নৃতন ইসলামী দলের প্রতিষ্ঠা করবো এবং সকল প্রুপের মধ্যে একটা রক্তক্ষয়ী দাঙ্গা হাঙ্গামা বাঁধিয়ে দেয়ার চেষ্টা করবো। চার মাযহাবের যাবতীয় বই-পত্র নষ্ট করে ফেলতে হবে যাতে করে প্রত্যেক দলের লোকেরা নিজেদেরকে একমাত্র বৈধ গ্রুপ বলে মনে করে এবং অন্যদেরকে মনে করে ধর্মবিরোধী, যাদেরকে কতল করে ফেলতে হবে।

৭। অনিষ্ট এবং বিদ্বেষের বীজ হিসেবে শত্রুতা, ব্যভিচার, শরাব, জুয়া ইত্যাদি মুসলমানদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে হবে। সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর অমুসলিমদেরকেও এ ব্যাপারে কাজে লাগানো যেতে পারে। অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌছার জন্য এরকম মানসিকতা সম্পন্ন লোকদের একটি সাংঘাতিক সৈন্যদল তৈরী করতে হবে।

৮। মুসলিম দেশগুলোর দুর্বিনীত, কলুষিত নেতাচক্র এবং নিষ্ঠুর দলপতিদের প্রশিক্ষণ ও শিক্ষাদানে আমরা চেষ্টার কোন ত্রুটি করবো না করা উচিতও নয়।

(ইনশাআল্লাহ চলবে)

এথান থেকে পরুন পর্ব- ১
এথান থেকে পরুন পর্ব- ২
এথান থেকে পরুন পর্ব- ৩
এথান থেকে পরুন পর্ব- ৪
এথান থেকে পরুন পর্ব- ৫
এথান থেকে পরুন পর্ব- ৬
এথান থেকে পরুন পর্ব- ৭
এথান থেকে পরুন পর্ব- ৮
এথান থেকে পরুন পর্ব- ৯
এথান থেকে পরুন পর্ব- ১০
এথান থেকে পরুন পর্ব- ১১
এথান থেকে পরুন পর্ব- ১২
এথান থেকে পরুন পর্ব- ১৩
এথান থেকে পরুন পর্ব- ১৪
এথান থেকে পরুন পর্ব- ১৫
এথান থেকে পরুন পর্ব- ১৬
এথান থেকে পরুন পর্ব- ১৭
এথান থেকে পরুন পর্ব- ১৮
এথান থেকে পরুন পর্ব- ১৯
এথান থেকে পরুন পর্ব- ২০
এথান থেকে পরুন পর্ব- ২১
এথান থেকে পরুন পর্ব- ২২
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদীর পরিবার সংক্রান্ত আপডেট

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯


মার্চ মাস থেকেই বিষয়টি নিয়ে ভাবছিলাম। ক'দিন আগেও খুলনায় যাওয়ার ইচ্ছের কথা জানিয়েও আমার বিগত লিখায় কিছু তথ্য চেয়েছিলাম। অনেক ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও মেহেদীর পরিবারকে দেখতে আমার খুলনা যাওয়া হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×