somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পাহাড় ফের রক্তে লাল !

০৮ ই মে, ২০১৮ রাত ৮:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পাহাড় শান্ত পাহাড় কিন্তু প্রায় ই আমাদের সবুজ পাহাড় রক্তে হয় লাল শান্ত পাহাড় হয়ে উঠে অস্ত্রের ঝন ঝনানিতে অশান্ত । আতি সম্প্রতি আবার আমাদের সবুজ পাহাড় রক্তাত হয়েছে পাহাড়ে উকি দিচ্ছে অশান্ত রুপ । গত ৩ মে রাঙ্গামাটির নানিয়ারচরের উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শক্তিমান চাকমা দুর্বৃত্তের গুলিতে খুন হন থানা থেকে দেড়শত গজের ভিতর । ঠিক এর এক দিন পর তার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় অংশ নেয়ার পথে ফের দুর্বৃত্তের গুলিতে খুন হন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিস ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ-গণতান্ত্রিক) আহবায়ক তপন জ্যোতি চাকমা, জনসংহতি সমিতির সহযোগী সংগঠন যুব সমিতির (এমএন লারমা) নেতা সুজন চাকমা এবং যুব নেতা তন্ময় চাকমা সহ পাঁচ জন । এই ঘটনার পর থেকেই পুরো পার্বত্য অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে আতঙ্ক।

পার্বত্য জনসংহতি সমিতি ও ইউপিডিএফ এর মধ্যে বিরোধ অনেক পুরনো । ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর ঐতিহাসিক শান্তি চুক্তির পর থেকেই ভাঙন আর মতাদর্শিক বিভক্তি দেখা দেয় পাহাড়ে। শান্তিচুক্তির পর পর ই ভাঙ্গনের কবলে পরে সন্তু লারমার জেএসএস । প্রসীত বিকাশ খীসার নেতৃত্বে গঠিত হয় ইউপিডিএফ আর মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার নেতৃত্বে জেএসএস সংস্কারপন্থী গঠিত হয়। ১৫ নভেম্বর-২০১৭ ইউপিডিএফ ভেঙে গঠিত হয় ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) যার আহবায়ক ছিলেন সদ্য খুন হওয়া তপন জ্যোতি চাকমা । ১৯৯৮ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি খাগড়াছড়িতে আনুষ্ঠানিকভাবে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে সন্তু লারমার নেতৃত্বে জনসংহতি সমিতির সদস্যরা যখন অস্ত্র সমর্পণ করছিলেন । ঠিক একই দিনে প্রসীত বিকাশ খীসার নেতৃত্বে শত শত বিদ্রোহী পতাকা উত্তোলন করে অস্ত্র সমর্পণের প্রতিবাদ করেছিল । এর ই ধারাবাহিকতায় ১৯৯৮ সালের ২৬ ডিসেম্বর ঢাকায় সম্মেলনের মধ্য দিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের পূর্ণ স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে প্রসীত বিকাশ খীসার নেতৃত্বে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) গঠিত হয়। শুরু হয় সন্তু ও প্রসীতের নেতৃত্বে দুই সংগঠনের আধিপত্য রক্ষার লড়াই । একের পর এক খুন হত্যা চলতে থাকে পাহাড়ে রক্তাত হতে থাকে সবুজ পাহাড় । শান্তিচুক্তির পর থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ৪৭৬ জন নিহত খুন হয়েছেন পাহাড়ে। আর ২০১৮ সালের ৪ মে পর্যন্ত খুন হন ১৬ জন নিখোঁজের তালিকায় আছেন ৮ জন ।পাহড়ে রক্তপাত ও সংঘাতের মুল কারণ ই হচ্ছে পাহাড়ের বিভিন্ন সংগঠন গুলির নিজেদের মধ্যে ক্ষমতার আধিপত্ত বিস্তার ও বিশ্বাহীনতা । ইউপিডিএফ সহ অন্যান সংগঠংগুলির ধারনা সন্তুলারমার জনসংহতি সমিতি সরকারের সাথে হাত মিলানোর কারনে পাহাড়িদের বিভিন্ন দাবি কোন ভাবেই আদায় করা সম্ভব হচ্ছে না । পক্ষান্তরে সন্তু লারমা ও তার দল আদায় করে নিচ্ছে সরকারের কাছ থেকে বিশেষ সুবিধা । পাহাড়ের ভূমি সংস্কারে জটিলতা সে তো অনেক পুরনো । ভূমি নিয়ে পাহাড়ি বাংগালী সবাই জড়িয়ে পরছে সংঘাতে । আমাদের পাহাড় আজ উত্তপ্ত পাহাড়িদের দাবি দীর্ঘ সময় পার হলেও শান্তি চুক্তির নুন্যতম বাস্তবায়ন হয়নি বঞ্চিত করা হয়েছে তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে। পাহাড়িদের চলমান এই ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত আজ শান্তিচুক্তির ভবিষ্যতকে ও প্রশ্নবিদ্ধ করছে । যা আমাদের দেশের জন্য মোটে ও মঙ্গলজনক নয় ।

তাই পাহাড়ে চলমান রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষকে বন্ধকরতে হলে পাহাড়িদের যেমন একদিকে হিংসা-দ্বেষ-প্রতিহিংসার রাজনীতি বন্ধ করতে হবে।সরকারের ও উচিত হবে পাহাড়ি শান্তিচুক্তির প্রতিটি অধ্যায় যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বাস্তবায়ন করে পাহাড়িদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে পাহাড়কে শান্ত রাখা । আর যারা ক্ষমতা ও নিজেদের হীন স্বার্থের জন্য পাহাড়কে অশান্ত রাখতে চাচ্ছে তাদের কঠোর হস্তে দমনের মাধ্যমে আমাদের সবুজ পাহাড়ে শান্তি স্হাপন করা ।

সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই মে, ২০১৮ রাত ৮:০৪
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=বেনারসী রঙে সাজিয়ে দিলাম চায়ের আসর=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫২



©কাজী ফাতেমা ছবি
মনে কি পড়ে সেই স্মৃতিময় সময়, সেই লাজুক লাজুক দিন,
যেদিন তুমি আমি ভেবেছিলাম এ আমাদের সুদিন,
আহা খয়েরী চা রঙা টিপ কপালে, বউ সাজানো ক্ষণ,
এমন রঙবাহারী আসর,সাজিয়েছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিজ্ঞানময় গ্রন্থ!

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪২

একটু আগে জনৈক ব্লগারের একটি পোস্টে কমেন্ট করেছিলাম, কমেন্ট করার পর দেখি বেশ বড় একটি কমেন্ট হয়ে গেছে, তাই ভাবলাম জনস্বার্থে কমেন্ট'টি পোস্ট আকারে শেয়ার করি :-P । তাছাড়া বেশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

অস্ট্রেলিয়ার গল্প ২০২৪-৪

লিখেছেন শায়মা, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:৪৫


চলে যাবার দিন ঘনিয়ে আসছিলো। ফুরিয়ে আসছিলো ছুটি। ছোট থেকেই দুদিনের জন্য কোথাও গেলেও ফিরে আসার সময় মানে বিদায় বেলা আমার কাছে বড়ই বেদনাদায়ক। সেদিন চ্যাটসউডের স্ট্রিট ফুড... ...বাকিটুকু পড়ুন

আপনি কি বেদ, উপনিষদ, পুরাণ, ঋগ্বেদ এর তত্ত্ব বিশ্বাস করেন?

লিখেছেন শেরজা তপন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫২


ব্লগে কেন বারবার কোরআন ও ইসলামকে টেনে আনা হয়? আর এই ধর্ম বিশ্বাসকে নিয়েই তর্ক বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে সবাই? অন্য ধর্ম কেন ব্লগে তেমন আলোচনা হয় না? আমাদের ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ‘অন্তরবাসিনী’ উপন্যাসের নায়িকাকে একদিন দেখতে গেলাম

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৫

যে মেয়েকে নিয়ে ‘অন্তরবাসিনী’ উপন্যাসটি লিখেছিলাম, তার নাম ভুলে গেছি। এ গল্প শেষ করার আগে তার নাম মনে পড়বে কিনা জানি না। গল্পের খাতিরে ওর নাম ‘অ’ ধরে নিচ্ছি।

... ...বাকিটুকু পড়ুন

×