একটা বিষয় পরিষ্কার করা জরুরী মনে করছি - তা হলো মক্কা বিজয়ের পর সাধারন ক্ষমা। বাংলাদেশে ব্যাপক ভাবে প্রচরিত হয় এই বিষয়টি - যাতে বলা হয় মক্কা বিজয়ের পর মুহাম্মদ (সঃ) কোরাইশের সাধারন ক্ষমা দিয়েছিলেন - এই রেফারেন্স দেখিয়ে মুক্তিযুদ্ধের শত্রুদের ক্ষমা করার জন্যে একটা চাপ তৈরী করা হয়। দুঃখজনক হলো - এই সাধারন ক্ষমার বিষয়ঙটা আংশিক ভাবে উপস্থাপিত হয় - বলাই বাহুল্য রাজাকার-আলবদর এবং তাদের সমর্থক গোষ্ঠী সাধারন মুসলমানের আংশিক বর্ননার সুবাদে বিভ্রান্ত করে রেখেছে - অনেকে এই ফাঁদে পড়ে আছে।
প্রকৃত ঘটনা ছিলো - নিশ্চিত পরাজয় জেনে আবু সুফিয়ান মুহাম্মদ (সঃ) এর কাছে নিরাপত্তা চায় এই শর্তে যে তারা যুদ্ধ করবে না - রসুল (সঃ) উনাকে শুধু নিরাপত্তা দেননি সাথে উনার বাসস্থানকে নিরাপদ আবাস হিসাবে ঘোষনা দিলেন।
বাংলাদেশের বর্ননা এখানে থেমে যায় - কিন্তু দশজন কোরাইশকে যে মৃত্যদন্ড ঘোষনা করা হয়েছিলো এবং তাদের যেখানে পাওয়া যাবে সেখানেই হত্যার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিলো - তা বলা হয় না। কারনটা সহজেই অনুমেয়।
দশজন লোককে মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ দেয়া হল:
১) ইকরিমা ইবনে আবু জেহেল,
২) আবদুল্লাহ ইবনে সাদ ইবনে আবি সারহ,
৩) হাবার ইবনে আসওয়াদ,
৪) মিক্বাস সুবাবাহ লাইসি,
৫) হুয়াইরাস বিন নুকাইদ,
৬) আবদুল্লাহ হিলাল ও
৭-১০) চারজন মহিলা
এরা হত্যার বা অপরাধের দায়ে দোষী ছিল অথবা যুদ্ধ উস্কে দিয়েছিল অথবা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছিল।
এই ঘটনা প্যারালাল যদি ৭১ এর যুদ্ধের সাথে করি - তা হলে দেখবো -
১) রাজাকার-আলবদর বা পাকবাহিনী কখন ক্ষমা চায়নি;
২) এরা ১৯৭৫ সালের আগ পর্যন্ত বাংলাদেশকে মেনে নেয়নি
৩) তদুপরি বঙ্গবন্ধু তাদের ক্ষমা করেছিলো কিন্তু চার ধরনের সুস্পষ্ট অপরাধে অভিযুক্তদের বিচারের জন্যে টাইবুন্যাল তৈরী করেছিলেন
এই ক্ষেত্রে পরিষ্কার - রাজাকার-আল বদর এবং তাদের সমর্থখ গোষ্ঠী দুইবার দুইবার তথ্য গোপন করে এবং দুইটা বিষয়কে তাদের সুবিধামতো প্রচার করে -
১) মক্কা বিষয়ের পর সুস্পষ্ট (যুদ্ধাপরাধের) অভিযুদ্ধকে মুত্যদন্ড দেওয়া হয়েছিলো
২) কোরাইশের নেতা নিরাপত্তা চেয়েছিলো
৩) বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের বিরোধীদের ক্ষমা করেছিলেন কিন্তু চারটা অপরাধে (যুদ্ধাপরাধ) অভিযুক্তদের বিচারে নির্দেশ দিয়েছিলে
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই নভেম্বর, ২০২৩ রাত ৩:২৪