বাংলাদেশে যে কয়টি নির্বাচনকে ভাল বলা যায় তার মধ্যে ২০০৮ এর নির্বাচন উল্লেখযোগ্য। সেই নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত জোটের বাজে ভাবে পরাজয় হয় - যার যৌক্তিক কারন ছিলো এবং সেই নির্বাচনের পর তাদের জন্যে একটা সুযোগ ছিলো একটা গনমুখী রাজনৈতিক দল হিসাবে প্রতিষ্টিত হওয়ার - কিন্তু তা না করে এরা আন্দোলন এর নামে সংসদ বর্জন থেকে শুরু করে অগতান্ত্রিক পথে হাটা শুরু করেছিলো। দল হিসাবে এলোমেলো হয়ে যাচ্ছিলো - মুলত দ্বৈত নেতৃত্বের কারনে দলের আভ্যন্তরীন শৃংখলা ভেংগে পরছিলো - দ্বীর্ঘ দুই বছরেও ওরা সংসদে বিরোধীদলে উপনেতা নিয়োগ দিতে পারেনি - সংসদীয় কমিটিগুলোতে তাদের সদস্যের নামও পাঠাতে পারেনি। নিজেদের দলকে শক্তিশালী করার চাইতে কর্মীদের উত্তেজিত করে সংগঠন চালু রাখতে চাইছিলো।
এক সময় তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বাতিল হলে সেইটা কে ইস্যু করে আন্দোলন শুরু করলো - ২০১৪ সালে নির্বাচন বর্জন থেকে ২০১৮ সালের আগোছালো নির্বাচনে যাওয়ার কারনে কর্মীরা সবচেয়ে বড় ক্ষতির মধ্যে পড়ে গেলো। শুধুমাত্র আওয়ামীলীগের বিরোধীতাই এই দলের একমাত্র লক্ষ্য - পূর্বের ইসলাম আর ভারত বিরোধীতার ইস্যু থেকে ওরা সরে গেছে - এমন কি ফিলিস্থিনি ইস্যুতেও এরা কথা বলে না পাছে আমেরিকা রাগ হয়।
একটা প্রবল গনসমর্থিত দল ধীরে ধীরে ধ্বংশের দিকে চলে যাচ্ছে শুধুমাত্র নেতৃত্বের অভাবে - যে লন্ডন থেকে অনলাইনে দল চালাচ্ছেন - উনি প্রকৃতপক্ষে রাজনীতি বুঝেন না - বুঝেন না যে রাজনীতি হলো একটা আর্ট অব কম্পোমাইজ। উনি একদফা নিয়ে বসে আছেন বাস্তবতা থেকে যোজন দুরে বসে।
(২)
এতক্ষন তো বলা হলো বিরোধী দলে কাহিনী - কারন পরিষ্কার তাদের চলমান সরকার খেদানোর আন্দোলন ইতোমধ্যে ব্যর্থতার দিকে ধাবিত হয়েছে। ফলে সরকার আরামের সাথে একটা নির্বাচন করে ফেলবে - যাতে প্রচুর প্রার্থী থাকবে এবং সুষ্টভাবে বিপুল ভোটারও আসবে - ভোট দেবে। ফলে আগামীতে বিএনপিকে সোজা হয়ে দাড়ানোর জন্যে ভিন্নপথ ধরতে হবে - তার প্রথম পদক্ষেপ হবে একটা কাউন্সিল করে লন্ডনী নেতাকে সরিয়ে একজন প্রাজ্ঞ লোকের হাতে দলকে তুলে দেওয়া। আবেগ আর ছবির রাজনীতি থেকে বের হয়ে বস্তুনিষ্ট বিষয়ে মনযোগী হতে হবে।
(৩)
এখানে একটা বিষয় প্রাসংগিক যে - আওয়ামীলীগও দীর্ঘ ২১ বছরে ক্ষমতার বাইরে ছিলো - তাদের উপর জুলুম অত্যাচার কম হয়নি - জিয়াউর রহমান সামরিক শাসনের অধীনে আওয়ামীলীগকে পিষে ফেলেছিলো - এমন কোন সিনিয়র নেতা ছিলো না যারা কমপক্ষে দুই বছর জেলে থাকে নি - কিন্তু ওরা নির্বাচন থেকে সরে যায় নি - কারন নির্বাচন হলো সাধারনের সাথে সংযোগের একটা সুযোগ - প্রার্থিরা বিপুল অর্থ ব্যয় করে দলের পক্ষে লোকদের টানে - যা দলকে শক্তিশালী করে। কিন্তু এখানে্ই বিএনপি ভুল করেছে - কারন বিএনপি কখনই বিরোধী দলে থাকতে চায় না - আরো গভীর কারন হলো আজও বিএনপি সংসদীয় পদ্ধতিকে বুঝে উঠতে পারেনি। না নিজের দলে না সংসদের - কোথাও ওরা গনতান্ত্রিক পদ্ধতি অনুসরন করে না - এখন দল চলে হাইকমান্ডের নির্দেশে। সেইটা তো কমিউনিষ্টদের পথ।
(৪)
আশা করি নির্বাচনের পর দেশ আবারো উন্নয়নের মহাসড়কে উঠে যাবে - সাথে আশা যে এবার আইনের শাসনের বিষয়ে আগামী সরকার আরো মনোযোগী হবে।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে নভেম্বর, ২০২৩ রাত ১২:৩৩

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



