somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সিলভি যখন একাকী হাঁটছিল তখন রাত্রি

২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১২ দুপুর ১:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সিলভি যখন একাকী হাঁটছিল তখন রাত্রি, অহর্নিশে ঝক ঝক করছে চন্দ্র। তারার আলোতে মায়া দুলতে দুলতে মায়াময় কিছু বৃত্তে এসে দাঁড়িয়েছে। কেউ ছুঁতে পারেনি সিলভিকে। কিছুক্ষণ আগেও চুপচাপ পালাতে গিয়ে সবার কাছে ধরা পড়েছিল প্রায়।
রাহাত লোভী লোভী দৃষ্টিতে সিলভিকে জড়িয়ে ধরতে চেয়েছিল।ফেরদোস পেছন থেকে চুলে হাত দিয়ে বর্বর হয়ে উঠছিল। সিলভি ওদেরকে আমার শৈল্পিক আত্মার কথা মনে করিয়ে দিয়েছে। কেউ ছুতে পারেনি সিলভিকে, কেউ না। একটা ফর্সা লম্বা ছেলে সামনে থেকে এসে ওকে শতবার দেখল। কিন্তু ছুতে পারলনা। বনভোজনে গিয়েই মাসুমের দুটি হাত ধরেছে সিলভি। কিন্তু কি আজব! বারবার চুমো দিতে গিয়েও মাসুম সিলভিকে ছুতে পারলনা!
অনেক দিন পর সেই পুরনো এলাকায় ফিরছে সিলভি। ওই পুরনো কালভারড, পুরনো আমগাছের পাতা মারিয়ে ঘরে ফেরা। সিলভি যেন অনন্তকাল পর নীড়ে ফিরছে। সিলভি যখন ঘরে ফিরল তখন সকাল। সিলভির চারপাশে গুনগুন করছে আকাশ, মুচকি হাসছে প্রকৃতি। কেমন যেন বদলে গেছে বাসাটি। নীচতলার স্কুল রুম থেকে ভেসে আসছেনা ঢং ঢং ঘণ্টা। কিশোরী বেলার বিন্দু মাত্র চিহ্ন কোথাও নেই।
স্কুল রুমের চৌকাঠে ভেঙ্গে পড়লো জড়তা। বেঞ্চির কাঠ থেকে কিছুটা ঘুনে ধরা সেগুন সিলভিকে তার নগ্ন বক্ষ দেখাল। অবাধ্য জেলের শিকের মত ঘরের চারপাশে শেওলা, ঘাস, লতা পাতা ফেপে উঠেছে নিমিষেই। তবুও সব কিছু তুচ্ছ করে এখানে শ্মশান গাড়ছে এখনও হৃদয়।
দুইটি শালিখ দুইটি কাক নির্ভয়ে গাছের ডালে বসেছিল। সিলভি কে চিনতে পেরে উড়ে গেল সালিখ দুটো, আর কাক দুটো ঘ্রান চিনে নিয়ে সিল্ভিকে ছুতে চেষ্টা করল।
হাটতে হাটতে দুই তলার সেই বারান্দায় থেমে গেল সিলভি। অস্থির বারান্দা মুঠো ফোনে কাটিয়ে দেওয়া রাতে এক কালে কতই না প্রেম দিত। আনন্দে হংশ যুগল তাকিয়ে থাকত এপাশ ওপাশ। সিলভির আহবানে একবার ভোর রাতে এই বারান্দায় ওর নিষিদ্ধ কাপড় কুড়াতে এসেছিলাম। সেই সৃতি সেই সৃতি কাদছে এখনও নরকে। বীভৎস খুনির আঘাতে তিন তিন বার খুন হয়েছে সে। উফ...।।
স্কুল ঘরে কেঁদে উঠল প্রেম। পুনরায় ঠোঁট নাড়ল সালিখ। সহজ সরল বেহুশ দরজাকে নাড়িয়ে দিয়ে একটি ইঁদুর দৌড়ে গেল পাশেই। সিলভি ফিস ফিস করে বলল- অনেক কাল কাছে আসনি, অনেক কাল আমার ফুসফুসে কোন অক্সিজেন ছিলনা। একটু ছুঁয়ে দেবে? হাজার বছর সাধনা করেও যে বিবেক সম্পদ সিল্ভিকে জাগাতে পারেনি, সকালের মিষ্টি বাতাসে ঘুম ঘুম স্বপ্নিল নির্জনতায় সেই সিলভি কতই না অনায়াসে একটি স্পর্শের কাছে বন্দী হয়ে গেল। সেই সিলভি কতই না অনায়াসে আমার হাতে হাত রেখে একটি সুবোধ বালিকা হয়ে উঠল।
আমি সিল্ভিকে আলতো করে একটি আলিঙ্গনের মধ্যে জড়িয়ে অনেক সমুদ্রের স্রোত পার হয়ে হৃদয়ের তীরে ফিরিয়ে আনলাম। সিলভি আমার ভেতরে তাকাল। দেখল আমার হৃদয়ের দুই ভাঁজে যেখানে দেভদাস মার্কা পরাজয় ছিল, সেখানে আজ গৌতম বুদ্ধের প্রতিচ্ছবি। আর উঠা নামা সিঁড়ির পাশে ব্রাশ ফায়ারে নিহত হওয়া বোকা সত্ত্বার ঘুমকে জাগ্রত করছে সম্রাট আশকের পশুপ্রেম।
হটাত টোকা পড়লো দরজায়। আবার আমরা বাস্তবে ফিরে এলাম। ওপাশ থেকে রুবেল মামা জানালো-বিকেলে মিরপুর থেকে আসবে সম্রাট, তার হাতে হকিস্টিক ঝুলবে আগের মতই, ইমেইল এ খবর পেয়ে আসছে সাব্বির। আবার তার বাসায় যেতে অনুরধ করবে সিলভিকে। সংবাদ পেয়ে মিল্কভিটার মোড় থেকে আসবে রুপম মমিনুল আর সাভার থেকে গাড়িতে আসবে সিমকি। হাতে চৌদ্দ ইঞ্চি ছুরি নিয়ে মিনেসটা থেকে আসবে রাহাত। সবাই আমাকে গোল করে ঘিরে আগের মতই প্রশ্ন করবে-
তোর শেষ ইচ্ছা কি?
তোর শেষ স্বপ্ন কি?
আমি কোন উত্তর দেবনা। কেবল আমার লাশের কাছে ধেয়ে আসা ওই পাঁচ জোড়া চোখের সিমানা পেরিয়ে চিৎকার করে বলব-
তোমার স্তনে এতো ঘৃণা কেন?
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ১১:৩৫
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্যবহারে বংশের পরিচয় নয় ব্যক্তিক পরিচয়।

লিখেছেন এম ডি মুসা, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৫

১ম ধাপঃ

দৈনন্দিন জীবনে চলার পথে কত মানুষের সাথে দেখা হয়। মানুষের প্রকৃত বৈশিষ্ট্য আসলেই লুকিয়ে রাখে। এভাবেই চলাফেরা করে। মানুষের আভিজাত্য বৈশিষ্ট্য তার বৈশিষ্ট্য। সময়ের সাথে সাথে কেউ কেউ সম্পূর্ণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মহিলা আম্পায়ার, কিছু খেলোয়ারদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব লুকানো যায় নি

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯



গত বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। অভিযোগ উঠেছে, লিগে দুইয়ে থাকা মোহামেডান ও পাঁচে থাকা প্রাইমের মধ্যকার ম্যাচে নারী আম্পায়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

জানা আপুর আপডেট

লিখেছেন আরাফআহনাফ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭

জানা আপুর কোন আপডেট পাচ্ছি না অনেকদিন!
কেমন আছেন তিনি - জানলে কেউ কী জানবেন -প্লিজ?
প্রিয় আপুর জন্য অজস্র শুভ কামনা।



বি:দ্র:
নেটে খুঁজে পেলাম এই লিন্ক টা - সবার প্রোফাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন

বন্ধুর বউ কে শাড়ি উপহার দিলেন ব্যারিস্টার সুমন। বাটার প্লাই এফেক্ট এর সুন্দর উদাহারন।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:০৭



এক দেশে ছিলো এক ছেলে। তিনি ছিলেন ব্যারিস্টার। তার নাম ব্যারিস্টার সুমন। তিনি একজন সম্মানিত আইনসভার সদস্য। তিনি সরকার কতৃক কিছু শাড়ি পায়, তার জনগণের মাঝে বিলি করার জন্য।... ...বাকিটুকু পড়ুন

অধুনা পাল্টে যাওয়া গ্রাম বা মফঃস্বল আর ভ্যাবাচ্যাকা খাওয়া শহুরে মানুষ!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০০


দেশের দ্রব্যমুল্যের বাজারে আগুন। মধ্যবিত্তরা তো বটেই উচ্চবিত্তরা পর্যন্ত বাজারে গিয়ে আয়ের সাথে ব্যায়ের তাল মেলাতে হিমসিম খাচ্ছে- - একদিকে বাইরে সুর্য আগুনে উত্তাপ ছড়াচ্ছে অন্যদিকে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমুল্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

×