বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে ‘জাগো বাংলাদেশ’ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মানুষকে সচেতন করার আহ্বান জানাতে গিয়ে উল্টো নিজেই সমস্যার মুখোমুখি হলেন ছোট ও বড় পর্দার তারকা মোশাররফ করিম। তোপের মুখে পড়ে তিনি দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
তিনি বলেন, ‘আমি সবাইকে বলব, আগে পুরো অনুষ্ঠান দেখুন। যাঁরা সমালোচনা করছেন, তাঁরা হয়তো পুরো অনুষ্ঠানটি দেখেননি। পুরো বক্তব্য না বুঝেই দোষারোপ করছেন।’
আসলেই তাই। মূল বিষয়টা জানার জন্য আমি পুরো ভিডিওটা মনোযোগ দিয়ে দেখলাম। তিনি এমন কিছুই বলেননি যেটা আমাদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানে। আসলে আমরা তো বাঙাল। আর বাঙাল বলে কথা চিলে কান নিয়া গেছে আমরা কান না খুজে চিলের পেছনে দৌড়ায়। এটাই আমাদের স্বাভাব। প্রথাগত ভাবেই আমরা এরকমই। এমন একজন ভাল অভিনেতার ক্যারিয়ারের ১২টা বাজাতে আমরা উস্তাদ।
আরে এরকম অভিনেতা শতাব্দী পর পর জন্মায়। সে কথা অতনু কুমার সেন ভাই তার লেখায় বলে গেছেন, "মোশাররফ করিম আমেরিকায় জন্মালে হয়তো অস্কার পেতেন। তার কারণে বাংলা নাটকের সংজ্ঞাই পরিবর্তন হয়ে গেছে।" আর আমরা তার সংজ্ঞা পরিবর্তনের চেষ্টায় মগ্ন। ব্যক্তিগত ভাবে তিনি অনেক উচু মনের একজন মানুষ। কছু উজবুক তাকে পুজি করে সেলিব্রেটি হতে চাই। যার জন্য তাকে নিয়ে ভিডিও বানাচ্ছে। আমাদের ইউটিবার রা তো তাদের ভিডিও টাইটেলে এমন এমন সব লেখা লিখতেছে নিচের ছবি গুলো দেখলে বুঝবেন।
আর এমন এমন সব থাম্বনেইল লাগাচ্ছে যেটা দেখলে ভিডিওটি দেখার জন্য আপনার আগ্রহ বেড়ে যাবে। থাম্বনেইল গুলো দেখুন অবস্থা।
"আপনি ভাল তো জগত ভাল। আমাদের ঘরে তো মা-বোন আছে। তারা তো আর ঘরের মধ্যে বোরখা পরে না অবশ্যই তারা সিম্পল ড্রেস পরে। রাস্তার সিম্পল ড্রেসের মেয়ে দেখলে যদি আপনার চেতনা দন্ড খাড়া হয়ে যায়। তাহলে বাড়ি ফিরে বাড়ির সিম্পল ড্রেস পরা মেয়েদের দেখেও তো আ্মাদের চেতনা দন্ড খাড়া হওয়ার কথা। সেটা হয় না কেন? কারন আমাদের মানুষিকতার সমস্যা। আগে আমাদের মানুষিকতা ঠিক করতে হবে।" সে কথা মোশারফ ভাই বলেছেন "আমাদের মনের মধ্যে সাপ"। আসলেই তাই। খেয়াল করে দেখবেন যারা টি-টোয়েন্টি ভার্শনের নামাজি পোলাপাইন তারাই এই বিষয় নিয়ে উঠে পড়ে লেগেছে।
টি-টোয়েন্টি ভার্শন নামাজের যুগে মসজিদে গেলে দেখবেন হুজুর যখন সুদ ঘুষ নিয়ে কথা বলে তখন একদল মুখ কাচু মাচু করে। আর হুজুর কে সাইডে ডেকে আচ্ছা মত সাটারিং দেয়। আর ফেসবুকে নব্য সেলিব্রেটিদের অবস্থা এরকম।
এ দেশে ইস্যু পেলে হিসু করার মত ফালতু ছোট মানুসিকাতর মানুষের অভাব নেই!!
মোশাররফ করিমের বক্তব্য নিয়ে যারা না বুঝেই ভুল ব্যাখ্যার দিকে যাচ্ছেন, তাদের উদ্দেশ্যে দুই লাইনের গ্রাম্য প্রবাদ।
"বোঝো না কিছু,
হোলের বিচিরে কয় লিচু"
গোপনে বেশ্যার ভাত এরাই খাই,
পরে মারে ধর্মের দোহাই।
"#মোশাররফ_করিম এখানে বোঝাতে চেয়েছেন, বোরখা পরলেও ধর্ষণ হয়, ছোট পোশাক পরলেও ধর্ষণ হয়। তাহলে আমরা শুধু পোশাকের দোষ কেন দেব। আপনার মনের মধ্যেই সাপ, সেই সাপকে থামান না, পোশাকের দোষ দেন। তার মতে, সবার আগে নিজের মানসিকতা বদলাতে হবে। আমাদের মানসিকতা ঠিক নেই বলেই ধর্ষণের মতো ঘটনা বার বার ঘটছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
আসলের তার কথার মূল বিষয় ছিলো আমাদের মানুষিকতা পরিবর্তন। আর সেটা না বুঝেই জিপিএ-৫ পাওয়া কিছু চুতমারানিরা হুদাই চিল্লাচ্ছে।
এখানে কিছু পাবলিক যুক্তি দেখাচ্ছে যে বোরখা পরলে কত জন রেপ হয় আর না পরলে কত জন রেপ হয়?
আবার অনেকেই বলছে রাস্তার এক মেয়ের জন্য অন্য মেয়ে রেপ হয়। আমি বললাম কিভাবে? তারা বলল মনে করুন আপনি রাস্তায় সিম্পল ড্রেস পরা একটা মেয়েকে দেখলেন আর এতে আপনার চেতনা দন্ড খাড়া হয়ে গেল। এর পর আপনি এই চেতনা দন্ড ডাউন করার জন্য এর শোধ নিচ্ছেন ঐ সব ৮ বছরের মেয়েদের উপর, ওই সব বোরখা পরা মেয়েদের উপর। আমি বললাম আপনি যদি আপনার চেতনা দন্ড ডাউন করার জন্য যদি ৮ বছরের মেয়েকে, বোরখা পরা মেয়েকে বেছে নিতে পারেন তাহলে আপনার বাড়িতে বোন টাকেও তো ব্যাবহার করতে পারেন। সেটা কেন করছেন না? কারন আপনার মানুসিকাতর সমস্যা। কারন আপনার মনের মধ্যেই সাপ, সেই সাপকে থামান না?
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে মার্চ, ২০১৮ সকাল ১১:৩৭