somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পিশাচ কাহিনীঃ নির্ঘুম রাত

০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কেউ একজন আমাকে একবার বলেছিল প্রত্যেক ঘটনার পেছনেই একটা কারণ থাকে। গল্পের খাতিরে ধরে নিলাম সেই কেউ একজনের নাম সাব্বির। সাব্বির বলত আমরা যা-ই করি, আমাদের চারপাশে যা কিছু ঘটে তার সবকিছুই আসলে একটা বিশাল পরিকল্পনার ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশ। লোকজন সাধারণত নিজের জীবনের দুর্ভাগ্যজনক ঘটনাগুলোর ক্ষেত্রে এরকম কথা বলে, হয়ত নিজেকে সান্ত্বনা দেয়ার জন্য। আমার জীবনে এই দুর্ভাগ্যজনক ব্যাপারটি ছিল ইনসমনিয়া।

টানা কয়েক মাস ধরে আমার রাতের বেলা হয় একেবারেই ঘুম হচ্ছিল না, হলেও সেটা খুব অল্পই।প্রায় প্রতিটি রাতই আমার কেটে যেতে লাগল শূন্য চোখে সিলিং-এর দিকে তাকিয়ে থেকে।দেখা গেল প্রায়ই ক্লাসে ঘুমিয়ে পড়ছি, সবকিছুতেই সবার থেকে পিছিয়ে পড়ছি।তারপর, একদিন, হঠাতই চোখে অন্ধকার সয়ে এল। কোনরকম সমস্যা ছাড়াই আমি নির্গুম রাতগুলো পার করে দিতে শুরু করলাম।

একরাতে, বিছানায় শুয়ে ছিলাম।হঠাৎ দরজা খোলার শব্দ শুনলাম।ভাবলাম আব্বু কিংবা আম্মু কেউ হয়ত অফিস থেকে ফিরে এসেছে। আমি ধীরে ধীরে বিছানা থেকে নামলাম।

কিন্তু এ কি?

দরজা দিয়ে ঢুকল সাব্বির।কাপড় ছেড়া, গাল কাটা। দুহাত দিয়ে সাব্বির পেটে চেপে ধরে রেখেছে, কিন্তু তাতে গলগল করে রক্ত গড়িয়ে পড়া থামছে না।সাব্বির দাড়িয়ে থাকতে পারল না, ফ্লোরে পড়ে গেল।

আমি ওর কাছে দৌড়ে ছুটে গেলাম।সাব্বিরকে ধরে আমার বিছানায় শুইয়ে দিলাম।হাসপাতালে খবর দেয়া দরকার, মোবাইলটা হাতে নিয়ে দেখি 'নো সার্ভিস'। শালার এখনই নেটওয়ার্কটা চলে গেল।

নিজেই সাব্বিরকে হাসপাতালে নিয়ে যাব নাকি?

গাড়ির চাবিটা নিতে যাব, সাব্বির হঠাৎ আমার হাত চেপে ধরল।ওর অবস্থা খুবই খারাপ, মুখ খুলতে গিয়ে ওর ঠোটের পাশ দিয়ে রক্ত গড়িয়ে পড়ছে।তবুও সাব্বির কলার চেপে ধরে আমার কানটা ওর ঠোটের কাছে নিয়ে গেল, প্রতিটি শব্দ উচ্চারনের সাথে রক্তের ছিটা এসে পড়ছিল আমার মুখে।

"জেগে ওঠ।"

আমার চোখের পাতা দুটো হঠাত করেই আলাদা হয়ে গেল, আমার চারপাশের পৃথিবী ঘুরতে লাগল। চেয়ে দেখি কিসের বেডরুম, আমি দাঁড়িয়ে আছি জঙ্গলের মাঝখানে, অন্ধকারে।আমার সামনেই রক্তাক্ত সাব্বির দাঁড়িয়ে, ওকে বেধে রাখা হয়েছে একটা গাছের সাথে।

অবাক হয়ে লক্ষ্য করলাম আমার হাতে একটা ছুরি, চাদের আলোয় ছুরির গায়ে লেগে থাকা রক্ত চকচক করছে।

হঠাৎ ঘাড়ের পেছনে ঠান্ডা নিঃশ্বাসের শব্দ পেলাম।পেছনে ফিরতেই দেখি একটা ছায়া আমার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। মুখ বোঝা যাচ্ছে না, কিন্তু আমি জানি ছায়াটা তাকিয়ে আছে আমার দিকেই।

ছায়াটা আমার কাঁধে হাত রাখল, আমাকে আবার ঘুরিয়ে দিল সাব্বিরের দিকে।

"জেগে ওঠ।" সাব্বির গলা ফাটিয়ে চিৎকার করল।

আমি জানি আমাকে কি করতে হবে।আমি এটা মেনে নিয়েছি, ছুরিটা হাতে চেপে ধরে আমি চোখ বন্ধ করলাম।


বিদেশি গল্পের ছায়া অবলম্বনে।ইন্টারনেটে একটা ছবি আকারে পেয়েছিলাম গল্পটা, লেখকের নাম উল্লেখ করা ছিল না। তাই মূল গল্পের লেখকের নাম উল্লেখ করা সম্ভব হল না।

আমার লেখা আরো কিছু পিশাচ কাহিনীঃ

[আমার লেখা অন্যান্য ভৌতিক গল্পগুলোঃ

১.পিশাচ কাহিনীঃ রক্তখেকো ডাইনী পর্ব-১ পর্ব-২ পর্ব-৩
২.পিশাচ কাহিনীঃ জানোয়ারের রক্ত (১৮+)
৩.পিশাচ কাহিনীঃ অন্ধকারে বিলীন
৪.পিশাচ কাহিনীঃ হোটেল একশ তলা
৫.পিশাচ কাহিনীঃ একশ তলায় আবার
৬.পিশাচ কাহিনীঃ রাতের আঁধারে
৭.পিশাচ কাহিনীঃ কন্ঠ
৮.পিশাচ কাহিনীঃ অতিথি
৯.পিশাচ কাহিনীঃ কান্নার শব্দ
১০.পিশাচ কাহিনীঃ শয়তানের পাল্লায়
১১.পিশাচ কাহিনীঃ নির্ঘুম রাত
১২.পিশাচ কাহিনীঃ জঙ্গল মঙ্গলপুর
১৩.পিশাচ কাহিনীঃ একটি ফটোগ্রাফ
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা মার্চ, ২০২৩ রাত ১১:০৪
২০টি মন্তব্য ২৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দাদার দাদা।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৫৫

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী।

আমার দাদার জন্মসাল আনুমানিক ১৯৫৮ সাল। যদি তার জন্মতারিখ ০১-০১-১৯৫৮ সাল হয় তাহলে আজ তার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×