আগের পর্ব-
Click This Link
অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ একজন বহুমুখী প্রতিভাধর মানুষ। ষাটের ভিন্ন ধারার সাহিত্য আন্দোলনের মুখপত্র ছিলো তাঁর সম্পাদিত মাসিক কণ্ঠস্বর। আবদুল মান্নান সৈয়দ, আসাদুল ইসলাম চৌধুরী (আসাদ চৌধুরী), নির্মলেন্দু গুন, শাহনূর খান, আখতারুজ্জামান ইলিয়াসসহ বহু খ্যাতিমান সাহিত্যিকের উত্থান হয়েছে কণ্ঠস্বরের মাধ্যমে। সুরুচি, মননশীলতা আর হাস্যরসের সমন্বয়ে বাংলাদেশ টেলিভিশনে অনেক গুলো জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান করেছেন তিনি। একজন দারুন গদ্য লেখক তিনি। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের মাধ্যমে জাতীয় মননকে জাগাতে ব্যস্ত তিনি। অধ্যাপক হিসাবে জীবন্ত কিংবদন্তীতে পরিনত হয়েছিলেন। তার এক ভাই ড. আবদুল্লাহ আল মামুনও সংস্কৃতি জগতে কিছুকাল সক্রিয় ছিলেন। এখন প্রবাসী। ছোট ভাই আল মনসুর দুর্দান্ত অভিনেতা। মাঝে অনেক দিন প্রবাসে ছিলেন। এখন আবার সক্রিয়। একটি ক্যাণ্ডির বিজ্ঞাপনে আকবরের চরিত্রে দারুন অভিনয় করেছেন। তাঁর স্ত্রী রিটা আবদুল্লাহও এককালের জনপ্রিয় টিভি অভিনেত্রী। রিটার বোন সাদিয়া ইসলাম সুমী এখনকার জনপ্রিয় অভিনেত্রী।
সত্তরের দশকে দিলশাদ রেজা রক্ত করবীতে দারুন অভিনয় করে হৈ চৈ ফেলে দিয়েছিলেন। এখন তিনি প্রবাসী। তার বোর রিনি রেজা জনপ্রিয় অভিনেত্রী ছিলেন। সরকারের আমলাও হয়েছিলেন। এখন প্রবাসী। আরেক বোন শম্পা রেজা অভিনেত্রী ও গায়িকা। এখনো সক্রিয় তিনি।
ড. আবু হেনা মোস্তফা কামাল খ্যাতিমান অধ্যাপক, কবি, গীতিকার, সমালোচক ও টিভি উপস্থাপক ছিলেন। বিশেষ করে গানের অনুষ্ঠান উপস্থাপনায় তিনি আর খান আতা ছিলেন অপ্রতিদ্বন্দ্বী। তাঁর লেখা ''হাতের কাঁকন ফেলেছি খুলে'' রুনা লায়লা দারুন গেয়েছেন। আমার সবচেয়ে প্রিয় গানের একটি। তাঁর দূরদর্শিতার একটি প্রমান পেশ করার লোভ সামলাতে পারছিনা। তিনি তখন বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালক। (এ পদের থাকার সময়ই তিনি মারা যান।) আমি বাংলা একাডেমী লাইব্রেরীতে কিছু নোট নেয়ার কাজ করছিলাম পুরনো পত্রিকা, ম্যাগাজিন আর বই থেকে। লেখক আফসান চৌধুরীর গবেষণা সহকারী হিসাবে কাজটি করছিলাম। দিন দশেক যাবার পর আমাকে লাইব্রেরী গেটে আটকানো হলো। বিনা অনুমতিতে প্রবেশ করা যাবে না। অনুমতি নিতে হবে ডিজির কাছ থেকে। দরখাস্ত লিখে ডিজির রুমে গেলাম। গিয়েই স্যারকে ধরলাম-লাইব্রেরীতে সাধারনের পথ রুদ্ধ করলেন কেন ? স্যার হেসে বললেন, বসো। বললেন, তুমি কোন লাইব্রেরীতে গেছো ? আমি এক দমে ঢা.বি. লাইব্রেরী, পাবলিক লাইব্রেরী, মহানগর লাইব্রেরী, বিটিশ কাউন্সিল, আমেরকিান লাইব্রেরী ইত্যাদির নাম বললাম। এরপর বললেন, আমাদের লাইব্রেরী গুলোতে বইপত্রের অবস্থা কি ? বললাম, করুন। দরকারী পাতা গুলোই কাটা। তখন বললেন, এ জন্যই বাংলা একাডেমী লাইব্রেরী সীমিত সংখ্যক গবেষক ছাড়া সাধারণের জন্য বন্ধ করে দিলাম। আমাদের দেশের ইতিহাসের কিছু দলিল অন্তত একটা জায়গায় যেন থাকে। এরপর আমার বাকী কাজের জন্য অনুমতি দিয়ে দিলেন। তাঁর পুত্র সুজিত মোস্তফা নজরুল সংগীত শিল্পী। পুত্র বধু মুন মুন আহমেদ নৃত্য শিল্পী।
পিযুষ বন্দ্যোপাধ্যায় মঞ্চ ও টিভি নাটকের শক্তিমান অভিনেতা। তার স্ত্রী জয়শ্রী কর জয়াও অভিনেত্রী। তার ভাই মানস বন্দ্যোপাধ্যায়ও টিভি অভিনেতা।
সৈয়দ আহসান আলী সিডনী ছিলেন সত্তর ও আশির দশকের মঞ্চ ও টিভি নাটকের অভিনেতা। তার পুত্র জিতু আহসান এখনকার জনপ্রিয় অভিনেতা।
অভিনেতা আবদুল আজিজ বহুদিন ধরে অভিনয় করে চলেছেন। তার কন্যা প্রমা আজিজও অভিনয়ে এসেছেন। এখন টিভিতে সংবাদও পাঠ করেন।
এখনকার জনপ্রিয় গায়ক বালাম ও গায়িকা জুলি ভাই বোন।
(চলবে)
পরের পর্ব-
Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জুন, ২০১১ দুপুর ১২:১৩