Click This Link
এআইটিতে এক প্রহর
এআইটি তথা এশিয়ান ইন্সটিটিউট অব টেকনোলোজি থাইল্যাণ্ডের এক জগৎখ্যাত প্রযুক্তি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বন্যার জন্য আমাদের সেখানে থাকার প্ল্যান বাতিল হয়ে গেলো। থাকলাম নোনতাবুরী প্রদেশের হোটেল রিচমণ্ডে। ফলে একবারই সেখানে যাবার সুযোগ পেলাম। ব্যাংকের কাজ সেরে আমরা বের হলাম ক্যাম্পাসটি দেখতে। প্রকৃতির কোলে অনেক জায়গাজুড়ে এর অবস্থান। একেকটি ভবন একেক রকম। একেকটি ভবন তৈরী করেছে একেকটি দেশ। দেশের নাম লেখা আছে ভবনের গায়ে। যদিও নাম এআইটি তবু তার দরোজা খোলা বিশ্বের জন্য। তাই ভবনের সামনে আছে বিশ্ব মানচিত্রের গোলাকৃতি প্রতিকৃতি।
এআইটির সামনের দৃশ্য
বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগে বিভিন্ন মেয়াদের কোর্স চলছে। একই রকমের কোর্স চলছে ভারত পাকিস্তানেরও। দক্ষিণ এশিয়ার দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর মাঝে উড়ছে বাংলাদেশের পতাকা।
মাঝে বাংলাদেশের পতাকা বুকের ভেতর ভালো লাগার অনুভূতি জাগায়
এরপর ক্যাম্পাসে ঢুকে মন খারাপ হয়ে গেলো। বন্যার করাল থাবার নিষ্ঠুর ছাপ লেগে আছে সর্বত্র। দেয়ালে শুকিয়ে যাওয়া পানির দাগ বলে দিচ্ছে পানি উঠেছিলো প্রায় দুই মানুষ সমান। সাজানো বাগানগুলো ভরে আছে মরা গাছের দেহাবশেষে।
বন্যার করাল থাবার চিহ্ণ
হায় গাছ
শুনশান নীরবতার ভেতর হাঁটতে হাঁটতে দেখা মেলে নানা জাতের মানুষের। সবাই নিজের কাজে ব্যস্ত। একজনের চেহারা দেখে দেশী মনে হবার পর পরিচয় জানতে চাইলাম। দেশী লোকই বটে। কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউটের মধ্য-তিরিশের এক বিজ্ঞানী। পিএইচডি করছেন। বললেন নানা সমস্যার কথা। আমরা আমাদের সমস্যার কথা জানালাম। বিশেষ করে মোবাইল বিলের আকাশচুম্বি থাবার কথা বলার পর তিনি দিলেন মা-কার্ডের খবর। এই কলিং কার্ড বাঙালীদের সৃষ্ট। খাঁটি বাংলায় লেখা এর সবকিছু। তিনি বললেন, এখনই মা-কার্ডের একজন বিক্রেতা পাঠাবেন।
একটু পরেই এলেন মা-কার্ডের বিক্রেতা। সবাই ভীড় করে কিনলাম। আমরা জানতেও পারিনি তখন আমাদের সহয্গেী থাই বন্ধু সুফিয়ান পকেট ভরে মা-কার্ড কিনে নিয়েছেন।
দুদিন পরে যখন কারো কারো মা-কার্ড ফুরিয়ে এলো তখন সুফিয়ান হাসিমুখে বললেন, কার ক'টা লাগবে বলবেন। তারপর বের করে দেখালেন মা-কার্ডের মোটা বাণ্ডিল। আমরা আবার বুঝলাম, কাবে বলে পেশাদারিত্ব। একই রকম পেশাদারী মনোভাব দেখলাম ব্যাংকের কর্মীদের মধ্যেও। একটা জিনিস আমি দেখলাম এসব দেশ ঘুরে, সবাই বিদেশীদের সাথে আচরণের সময় সতর্ক থাকে, কোনোভাবে যেন তাদের দেশের বদনাম না হয় তাদের কোন কাজ বা আচরণে। আর এসব বিষয়ে ভুলে থাকার ওস্তাদ হলাম আমরা। দেশ চুলায় যাক, চুলায় যাক দেশের সুনাম, আমি কি পেলাম (কিভাবে সেটা কোনও ব্যাপারই না, সুনাম কি ধুয়ে খাবো?) সেটাই আসল। বিধাতা আমাদের সুমতি দিন।
(চলবে)

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



