
সাম্প্রতিক সময়ে দিল্লি এবং ইসলামাবাদ—এই দুই রাজধানীতে ঘটে যাওয়া দুটি ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে এক নতুন সংকটের দিকে ঠেলে দিয়েছে। একদিকে যেমন পেশাদার, উচ্চশিক্ষিত শ্রেণির সন্ত্রাসবাদী নেটওয়ার্কের উত্থান দেখা যাচ্ছে, তেমনই অন্যদিকে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী এই হামলাকে "জেগে ওঠার বার্তা" হিসেবে বর্ণনা করে আঞ্চলিক সংঘাতের আশঙ্কা বাড়িয়ে তুলেছেন ।
পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদের সুরক্ষিত জি-১১ এলাকার জেলা ও দায়রা আদালত ভবনের বাইরে আত্মঘাতী হামলায় অন্তত ১২ জন নিহত হওয়ার ঘটনাটি দেশের নিরাপত্তার দুর্বলতাকে প্রকট করে তুলেছে। হামলার এই স্থানটি প্রমাণ করে যে, সন্ত্রাসবাদ এখন আর কেবল সীমান্ত সংলগ্ন দূরবর্তী এলাকা বা বেলুচিস্তানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং দেশের কেন্দ্রভূমিতেও তার উপস্থিতি জানান দিচ্ছে।
প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি এই ঘটনাকে ‘আত্মঘাতী বিস্ফোরণ’ হিসেবে নিশ্চিত করেছেন। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্যটি করেছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ। তিনি বলেন, "আমরা এখন যুদ্ধের অবস্থায় আছি।" তাঁর এই বক্তব্য স্পষ্টতই ইঙ্গিত দেয় যে, পাকিস্তান সরকার সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থানকে আরও কঠোর করতে প্রস্তুত।
তিনি আরও যোগ করেন, যারা মনে করেন যে এই যুদ্ধ কেবল আফগানিস্তান-পাকিস্তান সীমান্ত অঞ্চলে লড়া হচ্ছে, তাদের জন্য এই হামলাটি হলো একটি 'জেগে ওঠার বার্তা'। একই সঙ্গে, তিনি কাবুলের শাসকদের সঙ্গে সফল আলোচনার আশা না করার পরামর্শ দিয়ে পরোক্ষভাবে আফগানিস্তানের দিকেও সন্দেহের তীর ছুড়েছেন। এই ধরনের মন্তব্য আঞ্চলিক অস্থিরতাকে আরও বাড়িয়ে তুলবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
নয়াদিল্লির লালকেল্লা মেট্রো স্টেশনের কাছে গাড়িতে বিস্ফোরণের ঘটনায় ১২ জন নিহতের পর ভারতীয় তদন্তে যে চিত্রটি উঠে এসেছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এই হামলার মূল সন্দেহভাজন হিসেবে জম্মু ও কাশ্মীরের পুলওয়ামার ৩৩ বছর বয়সী চিকিৎসক ডা. উমর নবির নাম উঠে এসেছে। পুলিশের প্রাথমিক তদন্ত ও জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে দেখা যাচ্ছে যে, ডা. উমর নবিসহ গ্রেপ্তার হওয়া আরও কয়েকজন অভিযুক্ত—যাদের মধ্যে আরও চিকিৎসক এবং পেশাদার ব্যক্তিরা রয়েছেন—এক ভয়াবহ 'উচ্চশিক্ষিত প্রথম শ্রেণির পেশাজীবীদের সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ক' বা 'হোয়াইট-কলার টেরর মডিউলের' অংশ।
হরিয়ানার ফরিদাবাদে এই নেটওয়ার্কের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক (২,৯০০ কেজি) উদ্ধার হওয়ার ঘটনা এই ষড়যন্ত্রের ব্যাপকতা প্রমাণ করে। জইশ-ই-মোহাম্মদ (JeM) এবং আনসার গাজওয়াতুল হিন্দের মতো জঙ্গিগোষ্ঠীর সঙ্গে এই পেশাদারদের যোগসূত্র থাকার দাবি প্রমাণ করে যে, সন্ত্রাসবাদের প্রথাগত ধারণায় পরিবর্তন আসছে। এখানে শুধুমাত্র অশিক্ষিত বা বেকার যুবকরা নয়, বরং সমাজে প্রতিষ্ঠিত ও উচ্চশিক্ষিত ব্যক্তিরাও চরমপন্থায় আদর্শগতভাবে প্রভাবিত হচ্ছেন।
মুল সংবাদ: দিল্লির পর পাকিস্তানের রাজধানীতে আত্মঘাতী বোমা হামলা, নিহত ১২-আজকের পত্রিকা ডেস্ক /মোবাইল ফোন বন্ধ করে লাপাত্তা হন ডা. উমর, তিন দিন পর লালকেল্লায় বোমা হামলা / আজকের পত্রিকা ডেস্ক ।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই নভেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:৩১

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


