ক্লাশ নাইনে ক্লাশ চলছে। ইংরেজীর শিক্ষক টেনস পড়াচ্ছেন। ভাল করে বুঝাচ্ছেন। মাঝে মাঝে একে-ওকে প্রশ্ন করছেন। অনেকেই পারছে আবার কেউ কেউ পারছেনা। স্যার বকা দিচ্ছেন এত সহজ একটা বিষয় বুঝিয়ে দেওয়ার পরও কেন পারছেনা।
এক থেকে দশের মধ্যে যাদের রোল নম্বর তাদের মেধাবী হিসেবে ধরা হয় ক্লাশে। মজিবল এর রোল নম্বরও দশের মধ্যেই আছে। লম্বা, চিকনা-চাকনা মজিবল বেশ কদিন ধরে স্যারকে একটা প্রশ্ন করবো করবো করেও করতে পারছেনা। আসলে সাহসে কুলিয়ে উঠতে পারছেনা।
এর মধ্যে সে টেনস ভালই রপ্ত করে ফেলে। তাকে বাংলা বাক্য বলার পর সে ভালই টেন্সলেট করে। তো একদিন সে সাহস করে স্যারকে বলেই ফেলল- স্যার আমার একটি প্রশ্ন ছিল ?
স্যার-বলে ফেল ?
মজিবল-স্যার কিছু মনে করবেন নাতো ?
স্যার - মানে ?
মজিবল-স্যার, আমি বেশ কদিন ধরে চেষ্টা করেও একটা বাক্যের ট্রান্সলেশন করতে পারছিনা।
স্যার-বাক্যটা বল।
মজিবল- আমি যাকে ভালবাসি তার নাম পূজা।
স্যার-চোখ ছোট করে মজিবলের দিকে তাকিয়ে বলল-‘আবার বল’।
মজিবল-গলা শুকিয়ে কাট। ডোক গিলে বলল-আমি যাকে ভালবাসি তার নাম পূজা।
স্যার- ক্লাশে পূজা নামের কোন মেয়ে আছ কি ?
ক্লাশে গুঞ্জন শুরু হয়। না পূজা নামের কোন মেয়েকে পাওয়া যায়নি। স্যার লক্ষ করেছেন মজিবলের সাথে যারা বসে আছে তারা মজিবলের প্রশ্ন শুনেই মিট মিট করে হাসছে এবং ওদের চোখে মুখে দুষ্টমির ছলা-কলা। বেত হাতে ধীরে ধীরে মজিবলের দিকে এগিয়ে যায় স্যার। পায়চারী থামিয়ে রক্ত চক্ষুর দৃষ্টি হেনে বেত হাতে ঝাপিয়ে পড়েন মজিবলের উপর।
ফলালফ মারাত্মক পিটুনি খেয়ে মজিবল পরের তিন দিন আর স্কুলে আসেনি। বেত ভাঙ্গার আওয়াজে কেউ আর এ ধরনের ট্রান্সলশন স্যার কে জিজ্ঞেস করেনি।
আজও মনে পড়ে সেই ঘটনা। কি দিন গিয়েছে আমাদের কৌশরে যৌবনের প্রারম্ভে।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সকাল ১১:৩০