somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিড়ালের গপ্প

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কনকনে শীতের তাপ দাহ! আমি মূর্ছা যাচ্ছি যাচ্ছি ভাব। কিন্তু গায়ে একের পর এক উষ্ণ পোশাক জড়িয়ে কাটিয়ে নিচ্ছি কোনমতে। এতো হলো আমার নিজের গপ্প। এবার শুরু করি আমার বিছানায় কম্বলে উষ্ণ আদর নিতে আশ্রয় নেয়া সাদা কালো মিশ্রিত পোষা বিড়ালের গপ্পে। একটা নয়,দুটো নয় তিন তিনটে বিড়াল আছে এ বাড়িতে। একটা ধূসর,আরেকটা কুচ কুচে কালো,আরেকটা সাদা কালো মিশ্রিত। কুচকুচে কালোটার শরীর স্বাস্থ্য মোটামুটি ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতোই ভোম্বল টাইপের। বাকি দুটোকে যা খেতে দিই তা সেই ভোম্বল নিজের দখলে নিয়ে পোদ্দারি করে চেটেপুটে খেয়ে নেয়। আর বাকি দুটো ইরাক আফগান শাসকের মতো মিউমিউ করেই ক্ষান্ত। সাহস নেই একবিন্দু, যে কুচকুচে ভোম্বলটার কাছ থেকে নিজেদের অধিকার টা বুঝিয়ে নেবে। তাই ওরা নেহাতই একটু দূর্বল। প্রতিদিন খেতে বসলেই তিনটে একসাথে মিউমিউ শুরু করে। খাবার দিলে কুচকুচে ভোম্বলটা খেয়ে যা বেচে যায় সেটাই বাকি দুটো ভাগবাটোয়ারা করে খেয়ে নেয়। দিনের বেলায় বেশিরভাগ সময় বাড়িতে এঘর থেকে ওঘর,বারান্দায় হেটেহুটে ঘুমিয়েই চলে যাচ্ছে ওদের বছরের পর বছর। বছর দুয়েক আগে এসে জুটেছিলো ওরা। সেই থেকেই আছে এ বাড়িতে। এখনো পোয়াতি হবার বিন্দুমাত্র লক্ষন নেই কারো। এতোদিনে পোয়াতি হলে অন্তত ঘর বারান্দা পরিপূর্ণ হতো কিছুটা। শুধু বছর দুয়েক নয় সেই দাদীর সময় থেকে দেখে আসছি, এ বাড়িতে বিড়ালের কি দাপুটে আনাগোনা! শুনেছি আমার দাদীর চৌকির অর্ধেকটা জুড়ে এনাদের দখলে ছিলো সবসময়। এমনকি এক থালাতেই চলতো আহার। দাদী বিড়ালের খুব ভক্ত ছিলেন। ওরাও দাদিকে ভক্তি শ্রদ্ধার বিন্দুমাত্র কমতি দেখায়নি কখনো। বসে বসে খাবার পাহাড়া দেয়া,মাছ কেটে রাখলে সেসব পাহাড়া দেয়া সবই চলতো ভক্তির কারনে । বিড়ালের গায়ে কেউ হাত তুলেছে তো সেদিনের জন্য তার হয়ে যেতো। দাদী মারা যাবার পরে ওদের আদর যত্নে ভাটা পড়েছে কিছুটা। ওতো খাতির যত্ন করবে কার দায়। সেই বংশপরম্পরা ধরেই বিড়ালের বসবাস টিকে আছে এ বাড়িতে। অবশ্য দরজা জানালায় শক্ত খিড়কীর কারনে এখন আর ওরা কুলিয়ে উঠতে পারে না সেভাবে। তাইতো এই শীতের রাতে ওদের বারান্দায় কাটিয়ে দিতে হচ্ছে রাতের পর রাত। কিন্তু আজ হঠাৎ দেখি আমি বিছানায় গা এলিয়ে দেবার আগেই আমার কম্বলটা দখলে নিয়ে দিব্যি ঘুমোচ্ছে সাদা কালো মিশ্রিত বিড়ালটা। এমনভাবে ঘুমিয়েছে যে, মনে হচ্ছে এই কম্বলে শান্তিতে ঘুমানোটা ওর জন্মগত অধিকার। বাড়িতে থাকতে দিবো, দিন গেলে তিনবার খেতে দিবো অথচ রাতে আরামে ঘুমের ব্যবস্থা করবো না সেটা যেন কিছুতেই মানতে নারাজ এরা। তাইতো পারলে হাইকোর্টে মামলা ঠুকে কিংবা গ্রাম্য শালীস বসিয়ে ন্যায্য দাবি আদায় করতে আন্দোলনে নামবে শীঘ্রই। আসলেই তো অধিকার কেউ কাউকে দেয়না, অধিকার আদায় করতে হয়, পারলে লাথি মেরে ছিনিয়ে আনতে হয়। এই ধরুন এই শীতে কষ্ট করে বারান্দায় ঘুমিয়ে যখন ও নিজের অধিকার আদায়ে নেমেছে এবং ঠিকঠাক আমার বিছানায় কম্বলের দখল নিয়েছে ঠিক তখন আমি কিন্তু ঠিকই ওকে আর বিরক্ত করিনি। ওর ঘুম ভাঙ্গাইনি, বরং ও যেন একটু শান্তিতে,আরামে ঘুমোতে পারে সেজন্য কম্বলের আরেক পাশটা ওর গায়ে জড়িয়ে দিয়েছি। আজ রাতটা ওর বেশ ভালো ঘুম হবে।

সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৪২
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

Grameen Phone স্পষ্ট ভাবেই ভারত প্রেমী হয়ে উঠেছে

লিখেছেন অপলক , ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪৯



গত কয়েক মাসে GP বহু বাংলাদেশী অভিজ্ঞ কর্মীদের ছাটায় করেছে। GP র মেইন ব্রাঞ্চে প্রায় ১১৮০জন কর্মচারী আছেন যার ভেতরে ৭১৯ জন ভারতীয়। বলা যায়, GP এখন পুরোদস্তুর ভারতীয়।

কারনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কম্বলটা যেনো উষ্ণ হায়

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৭


এখন কবিতার সময় কঠিন মুহূর্ত-
এতো কবিতা এসে ছুঁয়ে যায় যায় ভাব
তবু কবির অনুরাগ বড়- কঠিন চোখ;
কলম খাতাতে আলিঙ্গন শোকাহত-
জল শূন্য উঠন বরাবর স্মৃতির রাস্তায়
বাঁধ ভেঙ্গে হেসে ওঠে, আলোকিত সূর্য;
অথচ শীতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৬

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

শহীদ ওসমান বিন হাদি, ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৩

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?


হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×