somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

নতুন নকিব
আলহামদুলিল্লাহ। যা চাইনি তার চেয়ে বেশি দিয়েছেন প্রিয়তম রব। যা পাইনি তার জন্য আফসোস নেই। সিজদাবনত শুকরিয়া। প্রত্যাশার একটি ঘর এখনও ফাঁকা কি না জানা নেই, তাঁর কাছে নি:শর্ত ক্ষমা আশা করেছিলাম। তিনি দয়া করে যদি দিতেন, শুন্য সেই ঘরটিও পূর্নতা পেত!

আল কুরআনের যে একটিমাত্র আয়াত পাল্টে দেয় ড. মরিস বুকাইলির জীবন: ৩০০ তম পোস্টে শুভেচ্ছা সকলকে।

১৯ শে মার্চ, ২০১৯ দুপুর ১২:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



ড. মরিস বুকাইলির নাম জানেন না, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। দেশ-কাল-রাষ্ট্রের সীমানা পেরিয়ে তিনি যেন বিশ্বের সকল দেশের সকল মানুষের কাছের জন। শান্তিকামী এক সাহসী সন্তান। তিনি জন্মগ্রহন করেছিলেন ফ্রান্সের এক খৃস্টান পরিবারে। পরবর্তীতে তার ধর্মীয় বিশ্বাসে পরিবর্তন আসে। তিনি খৃষ্টান ধর্ম ছেড়ে বেছে নেন ইসলামকে। তাঁর খৃস্টান থেকে মুসলিম হওয়ার রোমাঞ্চকর কাহিনীর পেছনে রয়েছে মহাগ্রন্থ আল কুরআনের একটিমাত্র আয়াত। হ্যা, আল কুরআনের একটিমাত্র আয়াতই পাল্টে দেয় এই মহামনিষীর জীবন। তিনি কুরআনের অখন্ডনীয় সত্যতায় মুগ্ধ হয়ে আশ্রয় নেন ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে। তাঁর ইসলাম গ্রহনের হৃদয়ে দাগ কেটে যাওয়া সেই ঘটনাটি কি?

মনমুগ্ধকর সে ঘটনাটিতে যাওয়ার পূর্বে আসুন, তার সম্মন্ধে জেনে নিই সামান্য কিছু-

সংক্ষিপ্ত জীবনী

ডা. মরিস বুকাইলি (Maurice Bucaille) -র জন্ম হয় ১৯ জুলাই, ১৯২০ ইং সালে এবং তিনি মৃত্যুবরণ করেন ১৭ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৮ ইং সালে। তার পিতার নাম মরিস এবং মাতা ছিলেন মারি (জেমস) বুকাইলি। ডা. মরিস বুকাইলি ছিলেন খ্যাতনামা একজন ফরাসি চিকিৎসক। ডাক্তারী তার পেশা হলেও পরবর্তী জীবনে তিনি একাধারে তুলনামূলক ধর্মতত্ত্ব গবেষক, মিশরতত্ত্ববিদ, লেখক এবং ফরাসি সোসাইটির একজন সদস্য হিসেবে সুনাম অর্জন করেন। ডা. বুকাইলি ১৯৪৫-৮২ সাল পর্যন্ত সুদীর্ঘ সময় ডাক্তারী পেশায় ব্যাপৃত থেকে মেডিসিন চর্চা করেন এবং গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজির উপর তিনি একজন বিশেষজ্ঞ চিকিতসক হিসেবে সুনাম অর্জন করেন। ফ্রান্সের সীমানা অতিক্রম করে তার সুনাম এবং সুখ্যাতি এতটাই পরিবিস্তৃত হয় যে, ১৯৭৩ সালে ডা. বুকাইলি সৌদি আরবের সেসময়কার বাদশাহ ফয়সালের পরিবারের চিকিত্সক নিযুক্ত হন। একইসাথে মিশরের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আনোয়ার সাদাতের পরিবারের সদস্যগনও ছিলেন তার রোগী।

সে ঘটনা জানার জন্য আমাদের ফিরে যেতে হবে কিছুকাল পূর্বের ইতিহাসে।

ফেরাউনের মমি গবেষনার প্রস্তাবনা ফ্রান্সের
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট তখন ফ্রাঁসোয়া মিত্রা। তিনি প্রেসিডেন্ট পদে সমাসীন ছিলেন ১৯৮১-১৯৯৫ সাল পর্যন্ত। প্রায় চৌদ্দ ব্ছর। তার সময়কার ঘটনা। আশির দশকের শেষভাগ। ফ্রান্সের পক্ষ থেকে মিসরের কাছে অনুরোধ জানানো হল, তারা ফেরাউনের মমিকে আতিথেয়তার জন্য ফ্রান্সে নিতে চান। উদ্দেশ্য, ফ্রান্স যেন এই মমিটি নিজেদের আয়ত্বের ভেতরে নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রত্নতাত্তিক গবেষণা করতে পারে। সেসময়কার মিসর সরকার ফ্রান্সের এই অনুরোধ বিবেচনা করে তাতে সায় দিল।

যথারীতি মমি নেয়া হল ফ্রান্সে
রাজধানী কায়রো থেকে ফেরাউনের মমি নিয়ে যাত্রা শুরু হল! ফেরাউনকে বহনকারী বিমান যথারীতি পৌঁছে গেল প্যারিস বিমান বন্দরে। মমি হলে কি? ফেরাউন বলে কথা! নিজেকে সৃষ্টিকর্তা দাবী করা এককালের দুর্দান্ত শাসক ফেরাউনের মমিকে স্বাগত জানাতে বিমান বন্দরে স্বয়ং উপস্থিত হয়েছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট। সাথে উজির নাজির আমাত্যবর্গ। প্লেনের সিড়ি থেকে মমি নামানো হচ্ছে ফেরাউনের! টান টান উত্তেজনা সবার ভেতরে! ফেরাউন এসেছেন! প্লেনের সামনে লাইন ধরে দাঁড়িয়ে আছেন প্রেসিডেন্ট, মন্ত্রীবর্গ এবং ফ্রান্সের সিনিয়র অফিসারগণ। মাথা নিচু করে ফেরাউনকে স্বাগত জানালেন তারা!!

জাঁকালো প্যারেডের মাধ্যমে রাজকীয়ভাবে বরণ করা নেয়া হল এককালের মিশর অধিপতি ফেরাউনের মমি করা লাশকে। আনুষ্ঠানিকতা শেষে ফ্রান্সের প্রত্নতাত্তিক কেন্দ্রের একটা বিশেষ ওয়ার্ডে নিয়ে যাওয়া হল ফেরাউনের মমি, যেখানে অপেক্ষমান ফ্রান্সের সবচেয়ে বড় বড় সার্জনগন। তারা ফেরাউনের মমিকে অটপসি (ময়নাতদন্ত) করে সেটা স্টাডি করবেন। এই মমির পেছনের গোপনীয়তা আবিষ্কার করবেন। উদঘাটন করবেন এর হাজার হাজার বছর ধরে অবিকল টিকে থাকার গভীর এবং জটিল রহস্য।

শুরু হল গবেষনা
ফ্রান্সের বিখ্যাত সব ডাক্তারদের তত্ত্বাবধানে ময়নাতদন্ত ও প্রয়োজনীয় গবেষনা হবে ফেরাউনের মমির। গবেষক দলের প্রধান সার্জন প্রফেসর ডা. মরিস বুকাইলি। গবেষক দলে যারা থেরাপিস্ট ছিলেন তারা চাচ্ছিলেন, ক্ষত অংশগুলো ঠিক করে মমিটাকে পুনর্গঠন করবেন। কিন্তু ডা. মরিস বুকাইলির দৃষ্টি ছিল ভিন্ন দিকে। তিনি প্রথমেই উদঘাটন করতে চাচ্ছিলেন যে, ফেরাউন মারা গেল কিভাবে! এ নিয়ে ভাবতে শুরু করলেন তিনি। অবশেষে দীর্ঘ গবেষনার একপর্যায়ে ফেরাউনের মৃত্যুরহস্য পরিষ্কার হল তার নিকট।

মমিটি নিয়ে গবেষনা করে তিনি বুঝতে পারলেন, ফেরাউনের শরীরে লবণ অবশিষ্ট ছিল। আর ফেরাউন যে ডুবে মারা গিয়েছিল এটা তার পক্ষে সবচেয়ে বড় প্রমাণ। ডা. মরিস বুকাইলি এটিও বুঝতে সক্ষম হলেন যে, পানিতে ডুবে যাওয়ার পরপরই সমুদ্র [লোহিত সাগর] থেকে তুলে আনা হয়েছিল ফেরাউনের শরীর! এরপর লাশটি সংরক্ষণ করার জন্য দ্রুত মমি করা হয়। যদিও এখানে একটি প্রশ্ন তার মনে রেখাপাত করে যে, কিভাবে এই মমি অন্যসব মমিদের তুলনায় একেবারেই ভিন্ন! এতটা অরক্ষিত অবস্থায় এটি কিভাবে টিকে থাকল!! যদিওবা এটা সমুদ্র থেকে তোলা হয়েছে! কারণ, যুক্তি অনুসারে, কোনো বস্তু যদি আর্দ্র অবস্থায় থাকে ব্যাকটেরিয়া ঐ বস্তুকে দ্রুত ধ্বংস করে দিতে পারে, কারণ আর্দ্র পরিবেশে ব্যাকটেরিয়া দ্রুত বংশ বৃদ্ধি করে থাকে!

গবেষনার একটি স্টেজে ডা. মরিস ফাইনাল রিপোর্ট তৈরি করলেন, যাতে তিনি উল্লেখ করলেন: 'এটা একটি নতুন আবিস্কার।'

ঠিক সেসময়ে কেউ একজন তাকে জানালেন: 'মুসলিমদের এই ডুবে যাওয়া মমি সম্পর্কে ঝট করে আবার বলতে যেও না!'

কিন্তু তিনি কান কথায় দমে যাওয়ার লোক নন। গেলেনও না। বরং দৃঢ়ভাবে এর সমালোচনা করলেন। তার মতামত তুলে ধরলেন এবং ভাবলেন যে, এরকম একটা বিশাল আবিস্কার- যেটা আধুনিক বিজ্ঞানের উন্নতির জন্য সহায়ক হতে পারে, সেটা অবশ্যই বিশ্ববাসীকে জানানো তার দায়িত্বের ভেতরে পড়ে!

চিন্তার জগতে পরিবর্তন
ইত্যাবসরে তার কোনো এক কলিগের মাধ্যমে তিনি অবগত হলেন যে, ফেরাউনের ডুবে যাওয়া এবং তার লাশ সংরক্ষণের ব্যাপারে মুসলিমদের ধর্মীয় পুস্তক আল কুরআনে বলা হয়েছে। কথাটা বিস্মিত করলো ডা. মরিসকে। তথ্যদাতাকে তিনি পাল্টা প্রশ্ন করলেন, 'এটা কিভাবে সম্ভব? এই মমি পাওয়া গিয়েছে সবেমাত্র সেদিন! মোটে ১৮৮১ সালে! আর কুরআন অবতীর্ণ হয়েছে আজ থেকে ১৪০০ বছর আগে!! আরবের লোকজন প্রাচীন মিসরীয়দের মমি করার পদ্ধতি তো জানতোই না! আমরাই তো এটা জানলাম মাত্র কয়েক দশক আগে!!'

ডা. মরিস বুকাইলি সেই রাতে ফেরাউনের লাশের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে দীর্ঘসময় বসে রইলেন। তিনি গভীরভাবে সেই কথাটিই ভাবছিলেন যেটা তার কলিগ তার কানে ফিশফিশিয়ে বলে গেল যে, মুসলিমদের কুরআনে ফেরাউনের লাশের সংরক্ষণের কথা বিবৃত হয়েছে!!

অদম্য কৌতুহলী প্রফেসর মরিস
তাঁর কৌতুহল বাড়তে থাকলো। তিনি এ বিষয়ে অন্যান্য ধর্মীয় গ্রন্থে যেসব বর্ণনা রয়েছে সেগুলোর খোঁজ নিতে থাকলেন। তিনি জানতে পারলেন, বাইবেলে ফেরাউন কর্তৃক মুসা আলাইহিস সালামের পিছু নেয়ার কথা বলা আছে কিন্তু শেষমেষ ফেরাউনের লাশের কি হয়েছিল সে সম্পর্কে কিছুই বলা নেই। তিনি নিজেকেই প্রশ্ন করলেন যে, এটা কি সম্ভব যে এই মমি যার, সেই ফেরাউনই মুসা আলাইহিস সালামের পিছু নিয়েছিল? এটা কি ধারণা করা যায় যে, মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ১৪০০ বছর আগেই এটা সম্পর্কে জানতেন? একের পর এক প্রশ্ন যেন পিছু ছাড়ছে না তার।

নাছোড়বান্দা প্রফেসর বুকাইলি। প্রশ্নগুলোর উত্তর তাকে পেতেই হবে। তিনি এও বুঝে ফেললেন, এসব প্রশ্নের উত্তর হুবহু পেতে হলে তাকে ধর্মীয় গ্রন্থগুলো অধ্যয়ন করতে হবে। সেগুলোতে উপস্থাপিত তথ্যগুলো যাচাই-বাছাই করে দেখতে হবে।

সে রাতে ঘুমাতে পারলেন না প্রফেসর মরিস। তিনি তাওরাত (তোরাহ্) সংগ্রহ করলেন এবং সেটা পড়লেন। দেখলেন তাওরাতে লেখা রয়েছে, 'পানি আসলো এবং ফেরাউনের সৈন্য ও তাদের যানবাহনগুলোকে ঢেকে দিল, যারা সমুদ্রে ঢুকল তাদের কেউই বাঁচতে পারল না।'

কিন্তু এখানেও প্রফেসর মরিসের আশ্চর্য্য হওয়া ছাড়া উপায় থাকল না। কারণ, তাওরাত (তোরাহ্) -তে ফেরাউনের লাশ সংরক্ষণের বিষয়ে কিছুই বলা নেই!! তিনি এ বিষয়ে বাইবেলেও কিছুই পেলেন না!!!

গবেষনার শেষপ্রান্তে প্রফেসর
এ পর্যায়ে ডা. মরিস সিদ্ধান্ত নিলেন যে, তিনি কোনো একটি মুসলিম দেশে যাবেন এবং সেখানে প্রখ্যাত অটোপসি বিশেষজ্ঞ মুসলিম ডাক্তারদের সাক্ষাৎকার নিবেন। পরিকল্পনামত মুসলিম ডাক্তারের সাথে সাক্ষাত করে তাকে ফেরাউনের লাশ নীল নদে ডুবে যাওয়া এবং তা অবিকল সংরক্ষণের পেছনের রহস্য উদঘাটনে ফেরাউনের মমি গবেষনায় তিনি ফলাফল যা প্রাপ্ত হয়েছেন তা অবহিত করেন এবং এ বিষয়ে কুরআনের কোনো বক্তব্য রয়েছে কি না জানতে চাইলেন। তখন মুসলিম বিশেষজ্ঞ ডাক্তার পবিত্র কুরআন খুললেন এবং সংশ্লিষ্ট আয়াতটি ডা. মরিসকে পড়ে শুনালেন, যেখানে সর্বশক্তিমান আল্লাহ সুবহানাহুওয়া তা’য়ালা বলেনঃ

فَالْيَوْمَ نُنَجِّيكَ بِبَدَنِكَ لِتَكُونَ لِمَنْ خَلْفَكَ آيَةً وَإِنَّ كَثِيرًا مِّنَ النَّاسِ عَنْ آيَاتِنَا لَغَافِلُونَ

"This day shall We save thee in the body, that thou mayest be a sign to those who come after thee! but verily, many among mankind are heedless of Our Signs!"

“অতএব আজকের দিনে বাঁচিয়ে দিচ্ছি আমি তোমার দেহকে যাতে তোমার পশ্চাদবর্তীদের জন্য নিদর্শন হতে পারে। আর নিঃসন্দেহে বহু লোক আমার মহাশক্তির প্রতি লক্ষ্য করে না।” [আল-কুরআন; সুরাঃ ১০, আয়াতঃ ৯২]

খুলে গেল হৃদয়ের চোখ
আল কুরআনের এই একটিমাত্র আয়াত দর্শনে তিনি খুবই প্রভাবিত হয়ে পড়েন প্রফেসর মরিস। উপস্থিত মুসলিম সার্জনদের ভীষণভাবে অভিনন্দিত করলেন তিনি। শুধু এটুকুই নয়। কুরআনের এই অভিনব সত্য দর্শনে সেই মুহূর্তেই তিনি জোর গলায় চিৎকার দিয়ে ঘোষনা দিলেন: 'আমি ইসলামে বিশ্বাস করি, আমি এই কুরআনে বিশ্বাস করি'। [সুবহানাল্লাহ]

নিজের দেশ ফ্রান্সে ফিরে গেলেন প্রফেসর ডা. মরিস বুকাইলি। কিন্তু সম্পূর্ণ ভিন্ন এক মানুষ তখন তিনি। ভিন্ন অবস্থায়। ভিন্ন চেহারায়। ভিন্ন আলোর পথের পথিক হয়ে। বিশ্বাসের হিরম্ময় জ্যোতিতে উদ্ভাসিত যে পথের আদ্যোপান্ত। যে পথ মানুষকে তুলে নেয় মুক্তির উপলোপল তীরে। যে পথ মানুষকে পরিচিত করে দেয় স্রষ্টার সাথে। অদেখা সম্পর্কের সুতো বেধে দেয় আসল মালিকের সাথে। যে পথ তার পথিকদের পৌঁছে দেয় জান্নাতের সবুজ কান্তিময় প্রান্তরে।

ফ্রান্সে প্রত্যাবর্তনের পরে এ ঘটনা পরবর্তী ১০ বছর তিনি তার পেশাগত ডাক্তারি প্রাকটিস্ বন্ধ রাখেন এবং সুদীর্ঘ এই সময়টিতে (এক টানা ১০ বছরে) তিনি শিখে নেন আরবী ভাষা। ব্যুতপত্তি অর্জন করেন এই ভাষায়। অত:পর বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোন থেকে প্রমানিত কোনো বিষয়ে পবিত্র কুরআনের বক্তব্যের বৈপরিত্য রয়েছে কি না তিনি সেদিকে মনযোগী হন। তিনি তার গবেষনার এক পর্যায়ে এমন একটি আয়াত খুঁজে পান যেটি তার অনেক প্রশ্নের জবাব দেয়ার জন্য যথেষ্ট ছিল। সে আয়াতে কারিমায় বলা হয়েছে:

لَا يَأْتِيهِ الْبَاطِلُ مِن بَيْنِ يَدَيْهِ وَلَا مِنْ خَلْفِهِ تَنزِيلٌ مِّنْ حَكِيمٍ حَمِيدٍ

No falsehood can approach it from before or behind it: It is sent down by One Full of Wisdom, Worthy of all Praise.

“এতে মিথ্যার প্রভাব নেই, সামনের দিক থেকেও নেই এবং পেছন দিক থেকেও নেই। এটা প্রজ্ঞাময়, প্রশংসিত আল্লাহর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ।” [আল-কুরআন; সুরাঃ ৪১, আয়াতঃ ৪২]

তার রচনাবলী:
১৯৭৬ সালে ডা. মরিস বুকাইলি একটি বই লিখে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দেন। প্রাচ্য এবং পাশ্চাত্যের সমকালীন জ্ঞানী গুনী আর বিজ্ঞানীদের টনক নাড়িয়ে দেয় তার সে অমর বই। বেস্ট সেলারও হয় বইটি। আর এযাবত প্রায় ৫০ টিরও বেশি ভাষায় অনূদিত হয় তার সে বই। বিখ্যাত এ বইটির নামঃ 'বাইবেল, কুরআন এবং বিজ্ঞান' (The Bible The Quran and Science)। এই বইতে প্রফেসর ড. মরিস বুকাইলির বিখ্যাত একটি উক্তি- 'The Quran does not contain a single statement that is assailable from a modern scientific point of view'.

তিনি বইটির মুখপত্রে লিখেন: “These scientific areas which Qur’an established to the exclusion of other Scriptures filled me with deep surprise early on, since it never struck my mind to see such a large amount of scientific issues in such a variable and accurate way that they are a mirror image of what has recently been discovered in a book which has existed for more than 13 centuries.!!

তার আরেকটি আলোচিত বইয়ের নাম- 'আল কুরআন এক মহাবিস্ময়'। ড. কিথ এল. মূর ও গ্যারি মিলারকে সাথে নিয়ে তিনি এ বইটি লিখেন। বিখ্যাত এ বই দু'টির বাংলা অনুবাদ ডাউনলোড করা যাবে নিচে যুক্ত লিঙ্কে গিয়ে-

Bible-Quran-o-Biggan and Al-Quran-Ek-Mohabissoy

তিনি থিওরি অফ এভ্যুলিউশনকে চ্যালেঞ্জ করে একটি বই লেখেন, যার নাম 'What is the Origin of Man?'

তথ্যসূত্র:
১। The story of Maurice Bucaille’s inspiring conversion to Islam-ARAB NEWS
২। The men who never became Muslims: The cases of Dr. Keith Moore & Dr. Maurice Bucaille
৩। Maurice Bucaille Embraces Islam
৪। Professor Maurice Bucaille and Pharaoh Ramesses
৫। Dr.Zakir Naik
৬। الدكتور موريس بوكاي - القرآن والعلم الحديث متوافقان بشكل مذهل
৭। موريس بوكاي وقصة إسلامه الخرافية / خرافات وأكاذيب ح 1
৮। Dr. Maurice Bucaille Converted to islam after a deeper study about Pharaoh
৯। উইকিপিডিয়া,
১০। বিভিন্ন ব্লগ
১১। এবং প্রফেসর ড. মরিস বুকাইলির বই ও অন্যান্য প্রামান্য তথ্যসূত্রাদি।

ছবি: অন্তর্জাল।



৩০০ তম পোস্টে শুভেচ্ছা
খেয়াল করিনি। কখন যে এতগুলো পোস্ট হয়ে গেছে। আলহামদুলিল্লাহ। এটি ৩০০ তম পোস্ট। ৩০০ তম পোস্টে শুভেচ্ছা সকলকে। ব্লগ হোক মিলনমেলা। কেটে যাক ব্লগের সকল বাধার প্রাচীর। পূর্বের মত হয়ে উঠুক প্রানবন্ত। আলোকোদ্ভাসিত বাংলা ভাষার শ্রেষ্ঠ অনলাইন প্লাটফর্ম।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে মার্চ, ২০১৯ সকাল ১০:০৩
১৯টি মন্তব্য ১৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×