কথোপকথন-১
কথোপকথন-২
কথোপকথন-৩
কথোপকথন-৪
কথোপকথন-৫
-সবসময় এমন নেগেটিভ চিন্তা করো কেন বলো তো?
"নেগেটিভ চিন্তা! আমি তো আর তোমার মতো বেহিসেবি ফর্মূলায় পা-বাড়াতে পারিনা।"
-কী হবে কি এত হিসেব করে? হিসেব মত কি সব পাওয়া যায়? শুধু শুধু সুন্দর সময় গুলোকে এমন টেনশনের মাঝে স্পয়ল করে ফেলছো।
"সুন্দর সময়? কোনটাকে তুমি সুন্দর সময় বলছো? স্বপ্নভঙ্গের বেদনা সারাটা জীবন আমাকে কুরে কুরে খেলো...সেই আমার জীবনে কিভাবে আসবে সুন্দর সময়?"
-শোন, দোকানে জিনিস কিনতে গিয়ে তো মাঝে মাঝে ঠকে যাও, তাই বলে কি দোকানে যাওয়া বন্ধ করে দেবে?
"তোমার কি মনে হয় জীবনটা দোকানের কেনা-বেচা?"
-এই যে, এই হলো তোমার নেগেটিভ চিন্তা। যা হলোনা, তা'নিয়ে আহাজারি করেই গেলে। এখন চাইলে ভালো কিছু হতেই পারে। তবুও তুমি সেপথে পা-বাড়াবে না। বাংলা অভিধানে এর নাম দুঃখবিলাস।
"তোমার কাছে আমার দুঃখকে বিলাস-ই মনে হবে। আর সে জন্যেই তোমার হাত ধরতে আমার ভয়। কোন্ ভরসায় তোমার হাতে হাত রাখবো, বলো? আবার কোন্দিন ছেড়ে দিতে হয়, কে জানে?"
-এভাবে আর কতবার বলবে? বিশ্বাস করতে পারোনা কেন বলো তো?
"এই প্রশ্ন তোমার মুখে মানায় না। তাছাড়া, সত্যি কথা বলতে কি, আমার নিজের উপর থেকেই বিশ্বাস টুটে গিয়েছে। আমি আসলে ভাবতেই পারিনা সম্পর্কের সীমানা কখনও অসীম হতে পারে। আবার রিলেশনশিপ মানে সাময়িক, সেটাও মানতে পারিনা।"
-আহা, শুরু তো করি, তারপর নাহয়...
"শুরুটাতেই তো আমার যত ভয়। শুরু হওয়া মানেই তো শেষের একধাপ কাছে চলে যাওয়া।"
-এর মানে কী? শেষের কথা আসছে কেন বোকা মেয়ে? আর, যে শুরু একসাথে দু'জনে করা যায়, তার শেষটাও একসাথেই হবে। এভাবে ভাবলেই সব দ্বিধা দূর হয়ে যাবে।
"এভাবে ভাবাটা কি খুব সহজ? তুমি বলো? কই, আমাদের তো শুরু এর আগেও হয়েছিল, শেষ করতে পারলাম একসাথে?"
-বারবার ওসব না-বল্লে হয়না? তাকাও আমার দিকে, আমার চোখের দিকে তাকিয়ে বলো, একবার তো বিশ্বাস করতে পারো?
"তোমার চোখের দিকে তাকাতে ভয় হয়। আমার চোখের কথা পড়ে ফেলো যদি!! নিজেকে বড় যত্নে আড়াল করে রেখেছি। সাহস হয়না আড়ালের বেড়া ভেঙ্গে নিজেকে কারো সামনে প্রকাশ করি। আবার যদি আঘাত পেতে হয়?"
-তোমার এই 'যদি' র চিন্তা কখন বন্ধ হবে বলো তো? আর এমন লুকিয়ে বেড়াবে আর কতদিন? সবার কাছ থেকে লুকিয়ে, আমার কাছ থেকে পালিয়ে, নিজের কাছ থেকেই কি নিজেকে আড়াল করতে পারো? নিজেকে নিজে ফেইস করতে পারো তো?
"ভালো বলেছ। নাহঃ নিজেকেও নিজে ফেইস করতে পারিনা। এভাবেই চলে যাক না দিনগুলো, যতদিন পারা যায়!"
-পারছোনা তো এভাবে। পারলে আজকে আমার সামনে তোমাকে এভাবে দাঁড়াতে হতোনা। এত ভয় পেয়োনা। এতদূর পথ একা পাড়ি দিয়েছো, এখন আমি তো আছি, একটা সুযোগ দাও আমাকে!
"আমার সময় লাগবে।"
-সময় তো পালিয়ে যাচ্ছেনা। সময় তো সাথে নিয়েই ঘোরাফেরা হচ্ছে। অনন্তকাল সময় আমি তোমাকে দিলাম। শুধু আমাকে সাথে নিয়ে জীবনটাকে ভাবো, প্লীজ!
"বাহঃ তুমি তো সাথেই আছো। এর বেশী আর কী?"
-ঐ যে, আমারো ভয় ভয় করছে, যদি আবার পালিয়ে যাও?
"পাগল! একবার পালিয়ে তোমাকে যে ফ্রীডম দিয়েছি, সেটা সারাজীবন রিগ্রেট করেছি জানো?"
-আমাকে ফ্রীডম দিয়েছো? তুমি?? আজাইরা কথা বলার জায়গা পাওনা, না?
"না তো কী? আমি তোমাকে এত সহজে ছেড়ে দিয়েই আসলে ভুল করেছিলাম। বরং তোমাকে হাতের নাগালে রেখে জীবনভর পেইন দিতে পারতাম।"
-জীবন তো শেষ হয়ে যায়নি, আমিও তো আছিই তোমার হাতের নাগালে। দাও-না একটু পেইন!!
"হুমম? হুম্, দেখি...পেইন তো আর হাল্কা পাতলার উপরে দিলে হবেনা, একটা মাস্টার প্ল্যান করতে হবে।"
-বান্দা হাজির! শাস্তি মাথা পেতে নিতে উৎসুক!!
"হেহ্, দেখা যাবে। বুঝবা তারপর, সেধে কোন বিপদে ফালাইলা নিজেকে। কিন্তু এরপরে আর মুক্তি নাই!!"
-