somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রায় দু'শ বছর বয়সী বটবৃক্ষ এবং সাইট্রা গ্রাম

২০ শে অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ১২:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


কাজের সুবাদেই একটা সময় অনেক জায়গায় ঘুরেছি; জেলা শহর থেকে শুরু করে উপজেলা, তারপর গ্রাম থেকে গ্রামে । কথা বলেছি বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের সাথে । সেটাও আজকের কথা নয় । এরপর দীর্ঘ বছর আর কোথাও যাওয়া হয়নি আমার । আর পুরানো এই বটবৃক্ষের ছায়ায় নিজেকে দেখতে পাওয়ার তো প্রশ্নই উঠেনা । সেটা যতই দু'শ বছরের প্রাচীনই হোক না কেন ।


যাইহোক, তবুও গিয়েছিলাম এক অবসরে । যদিও আমার ইচ্ছাতে নয়, বলা যায় আমাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল কয়েজন মিলে আমার পরিবারের সাথে সেখানে এক হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের বাড়িতে বেড়ানোর জন্যে । আর ওখানে গিয়ে প্রাচীন এই বটবৃক্ষটিকে দেখে প্রথমে খুব অবাক হয়েছিলাম যে, খোদ ঢাকা জেলার মধ্যেই এত পুরাতন একটা বটগাছ দেখে ।


এবার আসি গাছটির ইতিকথায়, স্থানীয় কয়েকজন মানুষের সাথে কথা বলে জানা গেল, গাছটিকে ঘিরে কিছু আজগুবি কাহিনীসহ কিছু তথ্য । গাছটি প্রায় সাড়ে চার বিঘা জমির উপর অবস্থিত, এর অসংখ্য ঝুড়ি যাকে আমরা বটের ঝুড়ি বলি, তা এতটাই মোটা হয়ে মাটির নিচে পুঁতে গিয়েছে যে, প্রতিটা ঝুড়িকেই মনে হবে এক একটা আলাদা গাছ এবং সব চেয়ে মজার ব্যাপার হল, এসব বটের ঝুড়ির ধাঁধাঁয় আপনি বুঝে উঠতে পারবেন না যে, কোনটি আসলে মূল গাছ ।


গাছটির এক পাশে আছে একটি কালীমন্দির । স্থানীয় লোকজনের ভাষায় এই কালীমন্দিরটির বয়সও প্রায় দেড়'শ বছরের উপরে । যদিও মন্দিরটি নাকি বিভিন্ন সময় সংস্কার করা হয়েছে । কিন্তু এটির বর্তমান অবস্থা দেখে মনে হয়না বড় কোন সংস্কার এটার করা হয়েছে ।


প্রাচীন এই বটবৃক্ষটি সাইট্রা গ্রামে অবস্থিত । যে গ্রামের প্রায় নব্বই ভাগের উপরে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের বাস । একটা সময় মৃত কোন মানুষের স্মৃতির উদ্দেশে মাঠের ভিতর কেউ কেউ এরকম মঠ বানিয়ে রাখত, যেটা সম্পর্কে পূর্বে আমার কোন ধারণাই ছিল না এবং এটি দেখার পর মনে হয়েছিল ছোট বেলায় পড়া বঙ্কিম চন্দ্রের 'আনন্দমঠ' উপন্যাসটির কথা ।


যাইহোক, সাইট্রা গ্রামের মানুষের মধ্যে শিক্ষার হার ভাল হলেও অর্থনৈতিক দিক থেকে তারা ততটা ভাল অবস্থায় যেতে পারেনি । বাংলাদেশের আর দশটা গ্রামের মতই এই গ্রামে সব ধরণের ফসলের চাষ হলেও একটা একেবারে ব্যতিক্রমী ফসলের চাষ করে, আর তা হল লেবু চাষ । মাঠের দিকে তাকালে দেখা যায় প্রচুর লেবুবাগান এবং গ্রামটি ঢাকার পাশে অবস্থিত হওয়ায় কৃষকেরা লেবুর দামও ভাল পায় ।


এ ছাড়াও এই গ্রামের মাঠে পুকুর কেটে করা হয় মাছের চাষ, তবে সেটা করা কিছুটা ব্যায়বহুল । এ ছাড়াও মাঠের ভেতর আছে কয়েকটি ব্রিকফিল্ড, যা কেবল অধিক টাকাওয়ালারাই করতে পারে । সব মিলিয়ে প্রাচীন বটবৃক্ষটি দেখার পাশাপাশি গ্রামটি আমার মন্দ লাগেনি ।


প্রাচীন এই বৃক্ষটিকে দেখতে যাবার লোকেশন হল, প্রথমে ধামরাই বাজার থেকে অটোরিক্সা যোগে ধানতারা যেতে হবে, ওখান থেকে আলাদা অটো রিজার্ভ করে সাইট্রা গ্রামে যাওয়া যায় । ধামরাই বাজার থেকে জনপ্রতি খরচ হবে ৪০/৫০ টাকা । এখানে উল্লেখ্য যে, পৃথিবীর সব চেয়ে বড় রথ বা রথের মেলা প্রতি বছর ধামরাইতে অনুষ্ঠিত হওয়ায় আমরা সবাই মোটামুটি ধামরাইকে চিনি । কারণ রথ যাত্রার ইতিহাসটাই নাকি ধামরাই থেকে শুরু । ধামরাই হল, ঢাকা জেলার (পশ্চিমে সাভারের পর) একটি উপজেলা ।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ১:১৫
৭টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×