somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আন্তর্জাতিক নারী দিবস ও বাংলাদেশ

০৮ ই মার্চ, ২০১৯ রাত ১০:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজ ৮ই মার্চ ২০১৯ইং,আন্তর্জাতিক নারী দিবস।আজকের এই দিনে ১৮৫৭ সালে নিউইয়র্কের সুতাকলের নারী শ্রমিকরা রাস্তায় নামে তাদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবীতে। মজুরী বৈষম্য দূর করা, কর্মঘন্টা নির্দিষ্ট করা ও নারী শ্রমিকদের কাজের অমানবিক পরিবেশের অবসানের জন্য হাজার হাজার নারী শ্রমিক সেদিন রাস্তায় বিক্ষোভ মিছিল করেছিল।নারী শ্রমিকদের সেদিনের দাবি আদায়ের মিছিলে পুলিশ ও লাঠিয়াল বাহিনী বর্বর হামলা করেছিল নারী শ্রমিকদের উপরে।যার ফলে হতাহত হয়েছিলেন অনেক নারী শ্রমিক।

১৯০৮ সালে জার্মান কমিউনিস্ট নেত্রী ক্লারা জেটকিনের নেতৃত্বে নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত হয় প্রথম সোসালিস্ট আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন।এবং তার দু’বছর পর ১৯১০ সালে ডেনমার্কের কোপেন হেগেনে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় সোসালিস্ট আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলনে ৮ মার্চ'কে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে ঘোষনা করা হয় যেখানে ১৭ টি দেশের ১০০ জন নারী প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।এর পর থেকে সমাজতান্ত্রিক দেশ সমূহ দিবসটি পালন করে আসছে ক্রমান্বয়ে।১৯৭১ সালের পর থেকে বাংলাদেশেও দিবসটি রাষ্ট্রিয়ভাবে পালিত হচ্ছে এবং ১৯৭৫ সাল থেকে বিশ্বব্যাপী পালিত হচ্ছে ৮ই মার্চের আন্তর্জাতিক নারী দিবসটি।

এই বছরের নারী দিবসের জাতিসংঘ কতৃক ঘোষিত মূল থিম হচ্ছে

Think equal, Build smart , innovate for change”। "আসুন সমচিন্তায়, সমভাবে সকলে নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠায় অাগুয়ান হই

এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে সারা বিশ্বের মত প্রতিবছরের ন্যায় বাংলাদেশেও পালিত হচ্ছে "আন্তর্জাতিক নারী দিবস ২০১৯"।কিন্তু আমার প্রশ্ন হচ্ছে, 

-সমচিন্তায়,সমভাবে নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় আমাদের স্বাধীন সার্বভৌম গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্র কতটুকু দায়বদ্ধ? কিংবা অগ্রগামী? অপ্রিয় হলেও সত্য যে,আমাদের স্বাধীন সার্বভৌম গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রে প্রতি পদে পদে নারীরা তাদের জীবন নিয়ে সংকিত!!!তার কারণ একটাই বাংলাদেশের প্রতিটা প্রান্তে-দিগ-দিগন্তে নারীরা কোননা কোনভাবে গুটিকয়েক নরপশু ধর্ষক কতৃক হচ্ছে ধর্ষণের স্বীকার।সেসব নরপশু ধর্ষকরা কেবল নারীদের ধর্ষণ করে ক্ষান্ত হয়না।তারা ধর্ষণের পর খুব সহজভাবেই ধর্ষিত নারীটিকে নৃসংশভাবে হত্যা করে তৃপ্তি কুড়িয়ে নেয়।দেশের সমতলের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য ধর্ষিত নারীর নাম হচ্ছে সোহাগী জাহান(তনু),খাদিজা বেগম,রূপা এবং আরো নাম না জানা অনেকে।দেশের গৌরবীয় সন্তান সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রিত কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্টের ভিতরে ধর্ষণ এবং ধর্ষণের পর গুম করে হত্যা করা হয়েছিলো সোহাগী জাহান তনুকে।খাদিজা বেগম,রূপাদের ধর্ষণ করা হয়েছিলো চলন্ত বাসে।আশ্চার্যের বিষয় হচ্ছে খাদিজা এবং রূপাদেরকেও প্রাণে বাঁচতে দেয়নি নরপশু ধর্ষকরা।ধর্ষকদের হয়নি আইনের আওতায় এনে যথাযথ শাস্তির মধ্য দিয়ে বিচার করা।এমনো হয়েছে ধর্ষিতা পরিবারকে সরকারের পক্ষ থেকে লাখ দুয়েক টাকা দিয়েই ধর্ষণের বিচার সেখানে সমাপ্ত!!!



এবার আছি পাহাড়ের বাস্তবতা নিয়ে।স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের একটি বৃহৎ অংশ পার্বত্য চট্টগ্রাম।পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাস ১৩ ভাষাভাষি ১৪টি আদিবাসী জুম্ম জাতিগোষ্ঠীর।তাদের স্বাতন্ত্র্য ধর্ম,বর্ণ,ভাষা,সংস্কৃতি,ঐতিহ্য ও কৃষ্টি।এই পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসী জুম্ম নারীরাও কোনভাবেই ধর্ষক নরপশুর দানবিয় থাবা থেকে মুক্ত নয়।তুলনামূলকভাবে বলা যায় সমতল থেকে পাহাড়ে ধর্ষিত নারীর সংখ্যা অনেকাংশে বেশি।ইতি চাকমা,তুমাচিং মার্মা,ছবি মার্মা,সবিতা চাকমা,কালাবি চাকমা,বলিমিলে চাকমা,৫ম শ্রেণীতে পড়ুয়া ৯ বছর বয়সী শিশু কৃত্তিকা ত্রিপুরা আরো রয়েছে অগনিত আদিবাসী জুম্ম নারী, যারা কিনা ৭০-৮০ দশকে পার্বত্য চট্টগ্রামে অনুপ্রবেশ করা সেটেলার বাঙালী কতৃক ধর্ষিত এবং ধর্ষণের পর নৃসংশ হত্যার স্বীকার।এদের একজনেরও যৌক্তিক আইনের আওতায় ধর্ষণের বিচার হয়নি।সবি বিচার বহিঃর্ভূত বলা যায়।বর্তমানেও চলছে ধর্ষণের এই মহা উৎসব পার্বত্য চট্টগ্রামের বুক জুরে।



আমি ব্যাক্তিগতভাবে মনে করি নারী অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং সমমর্যাদা প্রদানের বলিষ্ট কন্ঠ কেবল বাংলাদেশে একটি মাত্র দিনেই সোচ্ছার থাকে,তুরান্বিত থাকে বা একটি দিনের মধ্যই সীমাবদ্ধ আর সেটি হল ৮ই মার্চ।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×