somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভগবান

১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৫:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নিমাই সিদ্ধান্ত লইয়াছে সন্ন্যাস লইবে, ভগবানের অন্বেষণে সংসারত্যাগী হইবে৷
এই ভাবিয়া সে বাহির হইল, গলির মুখে যাইতে না যাইতেই এক লোক হাত তুলিয়া পথ আগলাইলো, বলিল, থাম বাছা, আমিই ভগবান!
নিমাই এক ঝটকায় তাহাকে পথ হইতে সরাইয়া দিল, ব্যাটা, গুল মারিবার আর জায়গা পাও না, গলির মুখেই ভগবান পাওয়া যায়!

নিমাই চলিতে লাগিল নিরন্তর, মাস পার হইল, পরিধেয় বস্ত্র জীর্ণ হইল, শরীর হইল অস্থিচর্মসার, তাহাকে দেখিলে যে কাহারোই মায়া হইবে৷ সে স্টেশনে বসিয়া আছে, ক্ষুধায় পেট জ্বলিতেছে, এমন সময় এক লোক কলা পাতায় কিছু প্রসাদ লইয়া সামনে আসিল, নে বাছা, খা, আমিই ভগবান!
নিমাই ততক্ষণে সে খাবার মুখে দিয়াছিল, ওই লোক ভগবান শুনিবামাত্রই থুহ করিয়া ফেলিয়া দিল৷ বলিল, দূর হ, ভণ্ড কোথাকার! ভগবান এত সহজ বিষয়? এত সহজে মেলে!!

ছয় বৎসর অতিক্রান্ত হইয়াছে, নিমাইয়ের শরীর গিয়াছে, স্বাস্থ্য গিয়াছে, বস্ত্র তো বহুত আগেই গিয়াছে, সে এখন নাগা সন্ন্যাসী, বেনারসে ঘুরিয়াছে, কাশী গয়া এমনকি রাজস্থান তিব্বত অবধি ঘুরিয়াছে, সন্ন্যাসের চক্কোরে দুই বার বলাৎকারও হইয়াছে, তবু তাহার মনে হইতেছে পর্যাপ্ত সাধনা এখনও হইয়া ওঠে নাই, ভগবানের অনুগ্রহ লাভের আশায় রোজই অশ্রুবিসর্জন করে, তপস্যার তবু শেষ নাই৷

গত ছয় বছরে কমপক্ষে দুই ডজন লোক বিভিন্ন সময়ে সামনে আসিয়া বলিয়াছে, বাছা, আর কষ্ট করিস নে, এবার থাম, আমিই তোর কাঙ্খিত ভগবান৷

নিমাই এসব লোককে প্রতিবারই বিবিধ প্রকারের গালাগাল করিয়া তাড়াইয়া দিয়াছে, ব্যাটা ভণ্ড, ভগবান কি এত সহজে মেলে? এত সস্তায় যে ভগবান ধরা দেয়, তাহাকে তো আমি চাই না!

এভাবেই চলিতেছে তপস্যা, নিমাইয়েরও, ভগবানেরও৷ ভগবান কঠিন হইতে গিয়াও হইতে পারেন না, নিমাইয়ের কষ্ট দেখিলেই ছুটিয়া আসেন, আর নিমাই উহাকে তাড়াইয়া দেয়, যা শালা, ভগবান কী এত সহজ বিষয়????
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৫:০৪
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্যর্থ হলে উপদেষ্টাবৃন্দই তোপের মুখে পড়বেন সবার আগে

লিখেছেন এমএলজি, ১৫ ই অক্টোবর, ২০২৪ রাত ১২:০০

বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাথে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের একটা লক্ষ্যণীয় পার্থক্য হলো, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে সরকারি অফিস আদালতে দুর্নীতিবাজরা ভীষণ অস্বস্তিতে পড়েছিল; কিছুদিনের জন্য দুর্নীতি প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল বলা চলে।

এদিকে,... ...বাকিটুকু পড়ুন

তুমি অথবা শরৎকাল

লিখেছেন আজব লিংকন, ১৫ ই অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ১০:১০


রোদ হাসলে আকাশের নীল হাসে।
গুচ্ছ গুচ্ছ সাদা মেঘ দল ব্যস্ত হয়ে
দূর সীমাহীন দিগন্তে ছুটে।

লিলুয়া বাতাসে তোমার মুখে এসে পড়া চুল আর
ঢেউ খেলানো আঁচলের সাথে—
কাশবনে সব কাশফুল নেচে যায়।
নিভৃতে একজোড়া অপলক... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রসঙ্গঃ স্কুলে ভর্তি.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ১৫ ই অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ১০:৪০

প্রসঙ্গঃ স্কুলে ভর্তি.....

সেই ষাট সত্তর দশকের কথা বলছি- আমাদের শিক্ষা জীবনে এক ক্লাস পাস করে উপরের ক্লাসে রেজাল্ট রোল অনার অনুযায়ী অটো ভর্তি করে নেওয়া হতো, বাড়তি কোনো ফিস দিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মন্দির দর্শন : ০০২ : পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি পূজা মন্ডপ ও নাচঘর বা নাট মন্দির

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৫ ই অক্টোবর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২


পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি বাংলাদেশের জমিদার বাড়িগুলির মধ্যে খুবই সুপরিচিত এবং বেশ বড় একটি জমিদার বাড়ি। পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি সম্পর্কে একটি লেখা আমি পোস্ট করেছিলাম সামুতে।

ঊনবিংশ শতাব্দীর শুরুতে কলকাতা থেকে রামকৃষ্ণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

একদিন সবকিছু হারিয়ে যাবে

লিখেছেন সামিয়া, ১৫ ই অক্টোবর, ২০২৪ বিকাল ৩:৩১



একদিন সবকিছু ফিকে হয়ে যাবে,
সময়ের সাথে হারিয়ে যাবে স্মৃতি।
মনে থাকবে না ঠিক ঠাক কি রকম ছিল
আমাদের আলাদা পথচলা,
হোঁচট খাওয়া।
মনে থাকবে না
কাছে পাওয়ার আকুতি।
যাতনার যে ভার বয়ে বেড়িয়েছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×