somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভালবাসা ভাবনা

০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দুইটা সিরিয়াস বিষয় নিয়ে লিখেছি, এবার একটু মন হালকা করার জন্য লিখতে বসেছি। নিতান্ত ব্যক্তিগত কিছু ভাবনা শেয়ার করব আজ। হেডলাইন দেখেই বোঝা যাচ্ছে প্রেম ভালবাসা বিষয়ক কিছু লিখতে যাচ্ছি।


প্রথমেই বলি আমি প্রেম ভালবাসার কোন সত্তিকারের সংজ্ঞা জানি না। বহুবার বহু ভাবালুতা পূর্ণ সংজ্ঞা পড়েছি কিন্তু মনঃপূত হয় নি। আমার কাছে মনে হয়, দুইজন মানুষ যখন সজ্ঞানে সুস্থ মনে নিজেদের জীবন একসাথে যাপন করার সিদ্ধান্ত নেয় তখন সেটাকে ভালবাসার সম্পর্ক হিসাবে ধরে নেয়া যায়। সিনেমা উপন্যাসে যেসব অসম প্রেম এর বর্ণনা দেখেছি বা পড়েছি সেগুলো আসলে প্রেম না, শুধুমাত্র প্রেমের আকাঙ্ক্ষা থেকে একটি ভুল সিদ্ধান্তের পরিণতি । প্রেম হওয়া উচিত তাদের মধ্যে যারা অর্থ, লেখাপড়া, সম্মান, প্রতিপত্তি কোন দিক দিয়েই একজন আরেকজন থেকে আকাশ পাতাল তফাতে না।

বলা বাহুল্য, যে কয়টা জিনিস এর কথা বললাম ওগুলোর কোনটাতে যদি মেয়ে ছেলের চেয়ে বেশ কিছুটা এগিয়ে থাকে তবে ওই সম্পর্ক কিছু সমস্যার মুখোমুখি হয় । আমাদের সমাজে এটাই প্রচলিত যে বিয়ের সময় ছেলে অবশ্যই যোগ্যতার দিক দিয়ে মেয়ের চেয়ে বেশ কিছু দিক দিয়ে এগিয়ে থাকবে। এখন একটা সম্পর্ক যদি এর উল্টো অবস্থায় অভিভাবকদের অনুমতির আশায় পাঠান হয় তাহলে পরিণতি খুব ই অনুমেয়। এটা তো গেল বিয়ের সময়ের ঝামেলা, সম্পর্ক চলাকালীন কি কি সমস্যা হতে পারে তাও চিন্তা করা প্রয়োজন। যোগ্যতার দিক দিয়ে যে মেয়ে এগিয়ে তার কাছে নিম্ন যোগ্যতার একটা ছেলে আজীবন "ইনফেরিওর কমপ্লেক্সিটি"তে ভোগে। ব্যতিক্রম থাকতে পারে তবে এটাই স্বাভাবিক। আর মেয়েটি যদি স্বভাবগত ভাবে অহংকারী হয় তবে আর কথাই নেই। ওই সম্পর্ক টিকিয়ে রাখা আর জীবিত থেকে নরক যন্ত্রণা ভোগ করা তখন সমান হয়ে যায়।


প্রশ্ন করতে পারেন মেয়েরা কি "ইনফেরিওর কমপ্লেক্সিটি"তে ভোগে না, উত্তর হল ব্যবধানটা যদি খুব বেশি না হয় তবে সম্ভাবনা কম। ব্যবধান একটু বেশি হলে, এটা ছেলের দায়িত্ব তার সঙ্গিনীকে কখনও এটা বুঝতে না দেয়া। কোন ছেলে প্রশ্ন করতে পারেন ," আমি কেন শখ করে লস করতে যাব?" আমি বলব, কিছু লস সাময়িকভাবে করে যদি জীবনভর সুখ পাওয়া যায় তবে মন্দ কি?B-)


এবার পরের প্রসঙ্গে আসি, একটা সাধারণ প্রশ্ন , কোনটা ভাল "লাভ ম্যারেজ" নাকি "অ্যারেঞ্জড ম্যারেজ"? এই নিয়ে দুই পক্ষেই অনেক যুক্তি তর্ক চলতে পারে। আমি শুধু বলব, জীবন কিন্তু একটাই আর এই জীবন "অ্যারেঞ্জড ম্যারেজ" এর মত "ব্লাঙ্ক চেক" এ সই করে বরবাদ করবেন কেন? যাকে জীবনসঙ্গী হিসেবে পেতে চান তাকে নিজে পছন্দ করে নিন। সফল হলে নিজের সফলতা আর ব্যর্থ হলেও নিজেরই ব্যর্থতা।


ভালবাসার সূচনা হয় অবশ্যই ভাললাগা থেকে। সফল ভালবাসার জন্য এই ভাললাগার রুচিটাও একটু উন্নত করতে হবে। সঙ্গী নির্বাচনের সময় সবকিছুই দেখতে হবে, নেগেটিভ বিষয় গুলো নিয়ে ভাবতে হবে, সবগুলো নেগেটিভ বিষয়ই মেনে নেয়া সম্ভব কিনা। কোন একটা বিষয় যদি একেবারেই মানা না যায় তবে অন্যবিষয় আর বিবেচনার প্রয়োজন নেই। কম্প্রোমাইজ একদিনের জন্য চলে, সারাজীবনের জন্য কিন্তু চলে না।


মুদ্রার অপর পিঠের মত ভালবাসার অপর নাম "ব্রেক আপ"।
প্রেম এর আগে সঙ্গীর যেসব গুন অত্যন্ত আকর্ষণীয় লাগে, প্রেম হওয়ার পর সেইগুলোই পুরনো আর অনাকর্ষণীয় মনে হয়। ব্যপারটা "চুইং গাম" এর মতই। এখন সম্পর্ক ভাল রাখার জন্য কি করা উচিত? একবার কোথায় যেন পড়েছিলাম, সম্পর্ক ভাল রাখতে সঙ্গীকে নিয়মিত সারপ্রাইজ করতে হবে। ছোটখাট অনেককিছুর মধ্য দিয়েই এটা করা যায়, আর এতে আকর্ষণ আর নতুনত্ব দুইটাই বজায় থাকবে। ;)

এত কিছুর পরও ব্রেক আপ কিন্তু অনেক স্বাভাবিক একটা ঘটনা, বেশির ভাগ সম্পর্কই ব্রেক আপ হয়ে ভেঙ্গে যায়। অনেক সম্পর্কে আবার "ব্রেক আপ ব্রেক আপ" খেলা চলে। বারবার ব্রেক আপ হয় ও আবার জোড়া লাগে। এই ক্ষেত্রে বারবারই ছেলে বা মেয়ে বলে, "এই বার ই লাস্ট, এরপর আর এমন ভুল কখনও করব না",মেনেও নেয়া হয় । কিন্তু বাস্তব ক্ষেত্রে দেখা যায় এই ভুল করা , ব্রেক আপ এবং নতুন প্রমিজ করা এই তিনটা জিনিস চলতেই থাকে, কখনই শেষ হয় না। এটা হল সবচেয়ে অসুখী সম্পর্ক, এমন সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার কোন মানে হয় না।

তবে সম্পর্ক আসলেই অনেক মূল্যবান, যারা অহেতুক ব্রেক আপ করে তারা সম্পর্ক করার যোগ্য না। আর সবাই ই এক দু বার ভুল শুধরানোর সুযোগ পাওয়ার যোগ্য । আর ঝগড়া, কলহ যাই হোক না কেন, সম্পর্কের সখ্যতা মাপার মাপকাঠি হল সঙ্গীর প্রতি সম্মান। যেদিন সম্মান জিনিসটা পুরোপুরি শেষ হয় , সেইদিন ই ব্রেক আপ করা উচিত। :|


আমার লেখা পড়ে মনে হতে পারে, আসলে প্রেম ভালবাসা হল অনেক হিসাব কিতাব এর কঠিন ব্যপার। না তা না, ভালবাসা প্রানবন্ত এবং প্রানসঞ্চারী। হুমায়ুন আজাদ এর একটা লাইন খুব ভাল লাগে সবসময় "পৃথিবীতে যত সম্পর্ক আছে তার মধ্যে ভালবাসার সম্পর্ক হল সবচেয়ে মহান কারণ এই সম্পর্ককারী দুইজনের মধ্যে কোন রক্তের সম্পর্ক থাকে না,থাকে না কোন স্বার্থ।" এমন নিঃস্বার্থ ভালবাসাই সবার জীবনে একান্ত কাম্য। :)
৩টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ঋণ মুক্তির দোয়া

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৪৯



একদিন রসুল সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে নববিতে প্রবেশ করে আনসারি একজন লোককে দেখতে পেলেন, যার নাম আবু উমামা। রসুল সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, ‘আবু উমামা! ব্যাপার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিরে এসো রাফসান দি ছোট ভাই

লিখেছেন আবদুর রব শরীফ, ১৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৮

রাফসানের বাবার ঋণ খেলাপির পোস্ট আমিও শেয়ার করেছি । কথা হলো এমন শত ঋণ খেলাপির কথা আমরা জানি না । ভাইরাল হয় না । হয়েছে মূলতো রাফসানের কারণে । কারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুমীরের কাছে শিয়ালের আলু ও ধান চাষের গল্প।

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৪০



ইহা নিউইয়র্কের ১জন মোটামুটি বড় বাংগালী ব্যবসায়ীর নিজমুখে বলা কাহিনী। আমি উনাকে ঘনিষ্টভাবে জানতাম; উনি ইমোশানেল হয়ে মাঝেমাঝে নিজকে নিয়ে ও নিজের পরিবারকে নিয়ে রূপকথা বলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×