আওয়ামী লীগ সরকার আইসিটি আইন নামে একটা সাংঘাতিক আইন করেছিল। এই আইনের জ্বালায় কতজনের যে জবান বন্ধ হয়েছিল, তার হিসেব নেই। সমালোচনামূলক কিছু লিখলেই বা বললেই শ্রীঘরবাস কিংবা অজ্ঞাতবাস ! খোদ সরকারের লোকেরাই এ আইনের বিরোধিতা করেছিল। কিন্তু কী এক অদৃশ্য টানে সেটা রয়ে গিয়েছিল। পরবর্তীতে কিছু সংশোধনী আনা হয়েছিল বটে। কিন্তু যা লাউ তাই কদু!
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতন হলো। তার দলের নেতা-কর্মীদের অবস্থা এখন ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি। প্রাণে মরল; অনেকে মরছে এখনও। এমন তো হওয়ারই কথা। তার লোকজন তো কম ভোগায়নি বিরোধীদের। অনেক সাধারণ মানুষও ক্ষমতার অপব্যবহার থেকে রেহাই পায়নি। যতই বলুক ওরা প্রকৃত আওয়ামী লীগার না- এ কথা কি ধোপে টিকবে? এস আলম, সালমান এফ রহমান যে কী চিজ শেখ হাসিনা কি জানতেন না? হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে, দুর্নীতি হয়েছে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। এসব কি উনি দেখেননি? যদি চোখ বন্ধ করে রাখেন, তার খেসারত তো দিতেই হবে?
যাহোক, গত ১৫ বছর যারা আওয়ামী লীগের অত্যাচারে অতিষ্ঠ ছিল, তারা এখন মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। পুরোনো লেনাদেনা মেটাচ্ছে। আইন-কানুনের মায়রে বাপ হয়ে গেছে। আজগুবি সব মামলা হচ্ছে আবার আগের অনেক মামলা বাতিলও হয়ে যাচ্ছে। যদিও বিএনপি-জামায়াতের হাই কমান্ড প্রতিশোধপরায়ণ হতে না করেছে, অনেক ক্ষেত্রে শাস্তিও দিচ্ছে; তাও এদের বেপরোয়া মনোভাব যাচ্ছে না। কেউ যদি প্রতিবাদ করে, এরা বলে, গত ১৫ বছর কোথায় ছিলেন?
মনে হচ্ছে যতদিন এরা থাকবে, অন্যদেরও চুপ করে থাকতে হবে। একটা সময় পর এখনকার অত্যাচারিতরা সুযোগ পেলে তখন প্রতিবাদ করলে তারাও বলবে, এত দিন কোথায় ছিলেন? প্রতিশোধপরায়ণতা চলতেই থাকবে।
সাধারণের হয়েছে বিপদ সবদিকেই। ভালোমন্দ কিছু বলাও যাবে না। আগে কথা বলতে পারত না; আর এখন ঠিক করে দেয় কে কী বলবে, কে কী করবে।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে আগস্ট, ২০২৪ রাত ১:০৪