
শারীরিক প্রতিবন্ধী এক ব্যক্তি, মো. মঞ্জুরুল হক (৩০) নাম; চিরকুট লিখে তিন শিশুসন্তানকে বুকে জড়িয়ে মহাসড়কে এসে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। তবে বেচারার কপাল খারাপ। মরতে পারেননি। স্থানীয়রা এসে তাকে রক্ষা করেন।
বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টার দিকে শ্রীপুর পৌর শহরের মাওনা চৌরাস্তা এলাকায় উড়াল সেতুর নিচে এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
ভুক্তভোগী মঞ্জুরুল হক ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার মধ্যবালা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি শ্রীপুর পৌরসভার লিচুবাগান এলাকায় একটি বাড়িতে সপরিবারে ভাড়া থাকেন। তো এমন কী হলো যে তাকে সপরিবারে মরতে হবে?
গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, কয়েক দিন আগে তিনি ডিজাইন ট্রেক্স কারখানার মূল ফটকে ঝালমুড়ি বিক্রি শুরু করেন। দুই দিন বিক্রি করার পরই আরেক ঝালমুড়ি বিক্রেতা জানান, সেখানে ঝালমুড়ি বিক্রি করতে হলে প্রতিদিন ২০০ টাকা চাঁদা দিতে হবে। তিনিও নিয়মিত ২০০ টাকা করে চাঁদা দেন স্থানীয়দের।
মো. মঞ্জুরুল হক বলেন, ‘এভাবে কয়েক দিন চলেছে। যে টাকার ঝালমুড়ি বিক্রি করি, লাভের অংশ চাঁদা দিতে হয়। স্ত্রী-সন্তানদের মুখে খাবার তুলে দিতে পারছিলাম না। তাই তিন শিশুসন্তানকে (৯ বছর বয়সী মরিয়ম, ৬ বছর বয়সী মাহমুদা ও ২ বছর বয়সী জান্নাতুল) নিয়ে আত্মহত্যা করতে এসেছি। আমার মতো বাবা বেঁচে থাকার কোনো অধিকার নেই। তাই মহাসড়ককে আত্মহত্যা করতে এসেছি।’
এর আগে শারীরিক প্রতিবন্ধী মো. মঞ্জুরুল হক নিয়মিত মাসোহারা দিয়ে মহাসড়কে অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। দালালদের দৌরাত্ম্য আর পুলিশি হয়রানির কারণে একপর্যায়ে অটোরিকশা বিক্রি করে দেন। পরে শুরু করেন ঝালমুড়ি বিক্রি। সেখানেও শান্তি পাননি তিনি। তাই মরা ছাড়া উপায় পাচ্ছিলেন না।
যদিও মাওনা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আয়ুব আলী জানিয়েছেন, ফেসবুক মারফত উনি বিষয়টা জানতে পেরেছেন। খতিয়ে দেখবেন বিষয়টা। কতটুকু কী করতে পারবেন, সেটা সবাই জানে। সারাদেশে চাঁদাবাজির মহোৎসব চলছে। রাষ্ট্রের কর্তাদের যেন কিছুই করার নেই। অন্যরাও কথা বলবে না। কারণ এখানে তো লাভের গুড় নেই।
সূত্র: চাঁদায় অতিষ্ঠ প্রতিবন্ধী ঝালমুড়ি বিক্রেতা, তিন সন্তান নিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে জুলাই, ২০২৫ রাত ১২:৫৪

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।






