somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রোপাগান্ডাঃ ৯৬ সালে আওয়ামীলীগের কারনে ম্যাট্রিক পরিক্ষা ১ মাস পিছিয়ে যায় ।। আসুন আসল ঘটনা জানি ।।

০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৮:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

‪#‎PropagandaVsTruth‬ ‪#‎Education‬ ‪#‎96vs15‬ ‪#‎Bangladesh‬

চারপাশে গুঞ্জন শোনা যায়-

১৯৯৬ সালে বিএনপি সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের সময় আওয়ামী লীগের আন্দোলনের কারনে এসএসসি পরীক্ষা এক মাস পিছিয়ে যায়।

আচ্ছা, বাংলাস্তানীরা এত সুন্দর করে গুছিয়ে মিথ্যে কথা বলে কিভাবে?
আসেন দেখি কি হয়েছিল ১৯৯৬ সালে-

১৫ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৬: প্রহসনমূলক ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় এবং বিএনপি তাদের পুরোনো একনায়কতান্ত্রিক কায়দায় ক্ষমতা দখল করে।
সারাদেশে শুরু হয় আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে অসহযোগ আন্দোলন। সারা দেশের সর্বস্তরের মানুষ এতে যোগ দেয়।

১৯ মার্চ, ১৯৯৬: খালেদা জিয়া ও বিএনপির গঠিত জনঘৃণিত সরকার প্রথম সংসদ অধিবেশন করে।
অসহযোগ আন্দোলন এসময় আরো জোরদার হয়, সর্বস্তরের জনগণ শেখ হাসিনার নেতৃত্ব বিএনপির বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে আসে।

২৩ মার্চ, ১৯৯৬: সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রেস ক্লাবের সামনে "জনতার মঞ্চ" স্থাপন করেন এবং সরকার পদত্যাগ না করা পর্যন্ত অবস্থান ধর্মঘটের ঘোষনা দেন।
মূলত: এই ঘটনার পরেই খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বিএনপি কর্তৃক গঠিত সরকারের মেরুদন্ড ভেঙে যায়, তাদের পতন অবশ্যম্ভাবী হয়ে যায়।

২৬ মার্চ, ১৯৯৬: গণদাবির মুখে বিএনপি সরকার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিল জাতীয় সংসদে পাস করে৷

৩০ মার্চ, ১৯৯৬: খালেদা জিয়া গণ-আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়।

এবার আসেন এসএসসি পরীক্ষার ইস্যুতে-
২৮ মার্চ, ১৯৯৬: এসএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবার কথা ছিল।
সারাদেশে সরকারি কর্মচারী-কর্মকর্তা সহ সর্বস্তরের মানুষ বিএনপি ও খালেদা জিয়ার জনধিকৃত সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে।
এসময় পরীক্ষা পিছিয়ে দেয়া হয়।

৩০ মার্চ খালেদা জিয়া পদত্যাগ করে আর পরের মাসের তথা, এপ্রিলের ০৭ তারিখ এসএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
অর্থাৎ, ১১ দিন পিছিয়ে ছিল এসএসসি পরীক্ষা।

এবার আসেন, ১৯৯৬ ও বর্তমানে ২০১৫ সালের সরকার বিরোধী আন্দোলনের সংক্ষিপ্ত তুলনামূলক বিশ্লেষণে-
০১.
১৯৯৬ সালে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বিএনপি সরকারের বিরুদ্ধে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী সহ সর্বস্তরের জনতা শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে আন্দোলন করেছিল। অর্থাৎ, এটি ছিল গণঅান্দোলন।
কিন্তু বর্তমানে, ২০১৫ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামীলীগ সরকারের বিরুদ্ধে বিএনপি-একাত্তরের পরাজিত শক্তি জামাত এবং ধর্মান্ধ ও দেশবিরোধী শক্তিগুলো আন্দোলন (আন্দোলন না বলে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড বললে যথোপযুক্ত হয়) করছে।
জনগণের সম্পৃক্ততা এই আন্দোলনের সাথে নেই বরং জনগণ এই আন্দোলনে বিরক্ত, শঙ্কিত ও ক্ষুব্ধ।
অর্থাৎ, এটি নির্দিষ্ট একটি চক্রের অপ-আন্দোলন।

০২.
১৯৯৬ সালে যা কিছু সহিংসতা হয়েছিল, তা আওয়ামীলীগের কর্মী আর বিএনপি'র কর্মীদের মাঝে ঘটেছিল, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার প্রেক্ষিতে।
কোন সাধারণ জনতা আন্দোলনকারীদের দ্বারা আহত বা নিহত হয়নি।

বরং সরকারের অনুগত কর্মী ও পেটোয়া বাহিনীর আক্রমনে সাধারণ মানুষ নিহত হয়েছিল।
অর্থাৎ, আওয়ামীলীগ দাবী আদায়ের জন্য সাধারণ মানুষের ক্ষতি করেনি, যেমনটি বর্তমানে বিএনপি করছে। এছাড়া, ১৯৯৬ সালে সর্বস্তরের জনগণ লীগের পক্ষে আন্দোলন করেছিল।
কিন্তু বর্তমানে, ২০১৫ সালে যা কিছু সহিংসতা হচ্ছে, তা সাধারণ জনগণের বিরুদ্ধে বিএনপি-জামাতের কর্মীরা করছে।
বিএনপি-জামাতের কর্মীরা পেট্রোল বোমা মেরে আগুনে পুড়িয়ে, ককটেল মেরে ক্ষতবিক্ষত করে হত্যা করেছে অর্ধ-শতাধিক সাধারণ মানুষ।

বিএনপি-জামাতের পক্ষে কোন সাধারণ মানুষ অংশ নিয়েছে বলে এখন পর্যন্ত এমন কোন খবর পাওয়া যায়নি।
বরং সারা দেশে বেশ কয়েকটি জায়গায় বিএনপি-জামাতের কর্মীরা সহিংসতা করার সময় সাধারণ জনগণের ধোলাই খেয়েছে।

অর্থাৎ, বিএনপি-জামাত দাবী আদায়ের জন্য সাধারণ মানুষের ক্ষতি করছে এবং তাদের আন্দোলনে জনগণের অংশগ্রহণ ও সমর্থন নেই।

সুতরাং, ১৯৯৬ এর আন্দোলন ছিল গণঅান্দোলন এবং ২০১৫ সালেরটি একটি রাজনৈতিক গোষ্ঠীর জন-সমর্থনহীন দাবি আদায়ের জন্য সন্ত্রাসী ও নাশকতামূলক কর্মকান্ড।

পন্ডিতেরা '১৫ এর সাথে '৯৬ এর মিল খুঁজিয়া নিজেকে চুতিয়া বলিয়া জাতির কাছে তাশরীফ আনিবেন না।

ধন্যবাদ...
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু...
[ তথ্যসূত্র: তৎকালীন সকল দেশী-বিদেশী পত্রিকা ঘেঁটে দেখুন ]
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৮:২২
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদিকে shoot করে লাভবান হলো কে?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:২৪


শরিফ ওসমান হাদি যিনি সাধারণত ওসমান হাদি নামে পরিচিত একজন বাংলাদেশি রাজনৈতিক কর্মী ও বক্তা, যিনি জুলাই গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে গঠিত রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র হিসেবে পরিচিত। তিনি ত্রয়োদশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধা রাজাকারি পোষ্ট ......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৬


আমি স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার কাছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বা পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের তুলনা—এসব নিয়ে কোনো আবেগ বা নস্টালজিয়া নেই। আমি জন্মগতভাবেই স্বাধীন দেশের নাগরিক, কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা কেন ভারতীয় বাহিনীকে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন রাখেনি?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২০



কারণ, কোল্ডওয়ারের সেই যুগে (১৯৭১সাল ), আমেরিকা ও চীন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো; ইন্দিরা বাংলাদেশে সৈন্য রেখে বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর সাথে বিতন্ডায় জড়াতে চাহেনি।

ব্লগে নতুন পাগলের উদ্ভব ঘটেছে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

বন্ডাইর মত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নেতানিয়াহুদের থামানো জরুরি...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:২৫

বন্ডাইর মত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নেতানিয়াহুদের থামানো জরুরি...

বন্ডাই সৈকতের হামলাস্থল। ছবি: রয়টার্স

অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই সৈকত এলাকায় ইহুদিদের একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সমবেত মানুষের ওপর দুই অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী অতর্কিতে গুলি চালিয়েছে। এতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহ সর্বত্র বিরাজমাণ নন বলা কুফুরী

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১৪



সূরাঃ ২ বাকারা, ২৫৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৫৫। আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই।তিনি চিরঞ্জীব চির বিদ্যমাণ।তাঁকে তন্দ্রা অথবা নিদ্রা স্পর্শ করে না।আকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সমস্তই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×